NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

সময় বাঁচাতে হবে।

 সে সময়কে লাগাতে হবে নিজেকে গড়ার কাজে। কিছুলোক এমন অনেক কাজ করে, যেগুলো করার প্রয়োজনই নেই। যেগুলোতে কোন লাভ নেই, যেগুলো করার দায়িত্বও তাতদর নয়। এভাবে তারা সময় নষ্ট করে। আমাদেরকে তো জীবনে অনেক এগুতে হবে, অথচ জীবনটা ছোট, সময় খুব কম। তাই আমাদেরকে সময় বাঁচাতে হবে জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার কাজে লাগানোর জন্য।
আমরা সময় বাঁচাতে পারি-
▬▬▬▬▬▬ஜ۩۞۩ஜ▬▬▬▬▬▬
১. সুপরিকল্পিত ভাবে কাজ করলে।
২. সময়ের কাজ সময়ে করলে, সময়মতো করলে।
৩. যা করার তা কম সময়ের মধ্যে করার চেষ্টা করলে।
৪. যা করার প্রয়োজন নেই, তা না করলে।
৫. যা করলে লাভ নেই তা না করলে।
৬. যা করলে ক্ষতি হতে পারে তা না করলে।
৭. যা করার দায়িত্ব নেই তা না করলে।
৮. সুযোগ মতো কাজের ফাঁকে কাজ করলে।
৯. অবসর সময়কে কাজে লাগালে।
১০. অপেক্ষার সময়কে কাজে লাগালে।
১১. বাজে ও অপ্রয়োজনীয় কথা না বললে।

অবসর সময়ে কী করবেন?
▬▬▬▬▬▬ஜ۩۞۩ஜ▬▬▬▬▬▬
পরিকল্পনা ও রুটিন মাফিক কাজ করার পরও দেখবেন আপনার কিছু সময় বেঁচে গেছে। কিংবা বাস, লঞ্চ, ট্রেন বা প্লেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। অথবা কারো সাথে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছেন বা যার সাথে আপনার কাজ তার অপেক্ষা করছেন। ক্লাসে শিক্ষক আসেননি বা পরবর্তী পিরিয়ডে ক্লাস নেই। কিংবা আপনি যানবাহনে ভ্রমণরত অবস্থায় আছেন। এভাবে কিছু সময় প্রতিদিনই আপনার হাতে আসে। এটাকে আমরা অবসর সময়, কিংবা সুযোগ বলতে পারি। এরূপ সময়কে কাজে লাগান, তাতে আপনার কাজ অনেক এগিয়ে যাবে।
হ্যাঁ, এ ব্যাপারে কিছু হিন্স দিয়ে দিচ্ছি। এসব সময়ে আপনি-
১. একটি সুন্দর বই পড়ুন। ক্লাসের পড়া রিভাইজ দিন।
২. যার সাথে কথা বলবেন, কথাগুলো কি কি এবং কিভাবে উপস্থাপন করবেন, তা মনে মনে বা নোট বইতে সাজিয়ে নিন।
৩. কাউকে একটি সুন্দর আইডিয়া দিন।
৪. পরবর্তীতে আপনার কি কি কাজ আছে তা চিন্তা করে নিন।
৫. কুরআনের মুখস্ত অংশগুলো পাঠ করুন।
৬. আল্লাহর যিকির করুন।
৭. আল্লাহর কাছে কিছু চান।
৮. কোন বিদেশী ভাষা শিখুন।
৯. কোন টেকনিক্যাল কাজ শিখুন।
১০. সম্ভব হলে কিছু বাড়তি পয়সা রোজগার করুন।
১১. কোন আত্মীয় বা বন্ধুর খোঁজ-খবর নিন।
১২. যারা সাক্ষাত করতে চায় তাদের সময় দিন।
১৩. বক্তৃতার বিষয় সাজিয়ে নিন।
১৪. নতুন কারো সাথে পরিচয় করুন।
প্রতিদিন একধাপ এগিয়ে যান
▬▬▬▬▬▬ஜ۩۞۩ஜ▬▬▬▬▬▬
সময়কে সর্বোত্তম কাজে লাগিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিন। নিজেকে উন্নত করুন্ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্যদের ছাড়িয়ে যান। অন্যদের ছাড়িয়ে যান জ্ঞানে, কর্মে, দক্ষতায়, চরিত্রে,উদারতায়, সৌন্দর্য্যে, শৃঙ্খলায়, পরিচ্ছন্নতায়, সময়ানুবর্তিতায়, ইবাদতে, বিনয়ে, ধৈর্যে, সেবায়, সাহসে, ভালবাসায়, কৌশলে,ব্যক্তিত্বে। আপনার লক্ষ্য অর্জনে এসব যোগ্যতা অর্জন করুন। এসব যোগ্যতা বলে নিজেকে এগিয়ে নিন। প্রতিদিন একধাপ এগিয়ে যান। প্রতি মাসে অনেক দূর ছাড়িয়ে যান। প্রতি বছর অনেক সিঁড়ি পেরিয়ে যান।
প্রতিদিন নিজের উন্নতির সমীক্ষা নিন। প্রতিমাসে সমীক্ষা নিন। প্রতি বছর সমীক্ষা নিন। সমীক্ষায় ধরা পড়া বিচ্যুতি ঝেড়ে ফেলুন। উন্নতির সাথে আরো একটু বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিন। আপনার কোন দুটি দিন যেন সমান না যায়। কোন দুটি মাস, কোন দুটি বছর যেন একই সমতলে পড়ে না থাকে। প্রিয় রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যার দুটি দিন সমান গেল, সে ক্ষতিগ্রস্ত হলো।” (সুনানে দায়লামী)। -সংকলিত

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযুর্গী সম্মান মুবারক-

‎সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযুর্গী সম্মান মুবারক-

-যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক করেন,

قُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى .
“(হে আমার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন! আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না, প্রতিদান চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। বরং এটা চিন্তা করাটাও কুফরী হবে। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও, যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি রেযামন্দি লাভ করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে আমার নিকট আত্মীয়-স্বজন তথা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-২৩)

আর যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,

وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِيْ لِحُبِّيْ. فَأَحِبُّوْنِيْ لِحُبِّ اللهِ
“তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমাকে মুহব্বত করো। আর তোমরা আমার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ, আল মু’জামুল কাবীর শরীফ, শু’য়াবুল ঈমান শরীফ)

এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা গেলো যে, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক পেতে হলে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!

মূলত উনাদের মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে পবিত্র ঈমান। যারা উনাদেরকে মুহব্বত করে তারাই ঈমানদার আর যারা উনাদেরকে মুহব্বত করেনা তারা ঈমানদার নয়; বরং মুনাফিক্ব ও কাফির।

সেটাই বলা হয়েছে,
حُبُّ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِيْمَانٌ.
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা হচ্ছে ঈমান। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি এই আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক্ব। তাই উনার মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে ঈমান।

যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে, তা’যীম-তাকরীম করবে সে ঈমানদার। আর যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে না, তা’যীম-তাকরীম করবে না সে মুনাফিক্ব-কাফির। কেননা তিনি হচ্ছেন হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। এই সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] دَعَا رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حَسَنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حُسَيْنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ: اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أهل بَيْتِي

“হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।

তিনি বলেন, যখন [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] - এই পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হলো, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদেরকে ডেকে এনে ইরশাদ মুবারক করলেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! উনার হচ্ছেন, আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম।” (পবিত্র মুসলিম শরীফ)

১। জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম:

মুসলমান মহিলাদের সবার জানা উচিত তথা জানাটা ফরয- কে জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদা বা প্রধান। যিনি কুল-কায়িনাতের নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, কলিজার টুকরা, নয়নের মণি হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হলেন জান্নাতবাসিনী মহিলাদের প্রধান তথা সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!

উনার বুযুর্গী, সম্মান, মর্যাদা, মর্তবা, শান-শুয়ূনাত, খুছূছিয়াত, বৈশিষ্ট্য, পবিত্রতা, আজমত, হুরমত বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।

কাজেই, মুসলমান মা-বোনদের উচিত উনার জীবনী মুবারক জানা এবং উনার আমল-আখলাক গ্রহণ করে জান্নাতী হওয়ার জন্য কোশেশ করা।

২। বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের মর্যাদা স্বয়ং আরশে আযীম থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিনি সম্মানিতা আওলাদ, নয়নের মণি সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মর্যাদা মুবারক কতটুকু বেমেছাল। সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কোনো বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসানের পক্ষে সম্ভব নয়।

পবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ উনার ২০ তারিখ যমীনে তাশরীফ এনে সমস্ত পুরুষ ও নারীজাতিকে তিনি ধন্য করেছেন। গোটা উম্মাহর জন্য তিনি হচ্ছেন সুমহান হিদায়েতের নূরানী আলোকবর্তিকা। উনার যে বেমেছাল পর্দা, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি খিদমত, সহানুভূতিশীলতা সেটা আজীবন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে।

কাজেই আমাদের সমস্ত মুসলমানদের উচিত- উনার সম্পর্কে বেশি বেশি আলোচনা করে মানুষকে জানানো এবং উনার সম্পর্কে বেশি বেশি মাহফিল করা যাতে উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করে যেন হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারি।

৩। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল কন্যাই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ:

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৪ জন কন্যা সন্তান ছিলেন। ১. হযরত জয়নব আলাইহাস সালাম ২. হযরত রুকাইয়া আলাইহাস সালাম ৩. হযরত উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম ৪. হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম।
মূলত, উনারা সকলেই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, ত্বহিরা, ত্বইয়্যিবাহ।

অথচ উম্মাহ শুধুমাত্র হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কেই কিছুটা অবগত। অন্যদের সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। অর্থাৎ অন্যদের সম্পর্কে কোথাও কোনো আলোচনা হয় না।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এর পিছনে ইহুদী মুশরিক, নাছারা ও বাতিল ফিরকা শিয়াদের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র কাজ করছে। তাই আমাদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে, এদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে উনাদের সকলের মুবারক শান, মান, ফাযায়িল-ফযীলত ও পরিচিতি সারাবিশ্বের সকলের সম্মুখে তুলে ধরা।

মানুষের ভিতর এই অনুভূতি প্রবেশ করিয়ে দেয়া যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সারাম তিনি যেমন নবীজী উনার আওলাদ, অন্যরাও উনারই আওলাদ। উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে যেমন নবীজী উনার নূরানী রক্ত মুবারক রয়েছে অন্যদের মধ্যেও তা রয়েছে।

তাহলে কেন এতো তারতম্য ও বৈষম্য? তবে হ্যাঁ, একজনের তুলনায় আরেকজনের মর্যাদা বেশি হতে পারে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি কোনো রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না।”

অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার উপর আরেকজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা দিয়েছি।” তবে সকলেই রসূল উনাদের অন্তর্ভুক্ত।

৪। সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে বিশ্বের সকল মু’মিনা মহিলাদের জন্য হাক্বীক্বী পর্দা পালন করা শিক্ষা করতে হবে:

সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি পর্দার পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার পূর্ব থেকেই পর্দা করতেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো জরুরত ব্যতীত তিনি কোথাও বের হতেন না এবং কারো সামনে তিনি যেতেন না।

এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

একদিন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বসে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আলোচনা করতেছিলেন, এমতাবস্থায় হঠাৎ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উঠে ভিতরের কামরায় গিয়ে কিছুক্ষণ পর আবার আসলেন।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো সব জানেনই, কিন্তু উম্মতদেরকে শিক্ষা দিতে হবে, বান্দা-বান্দীদেরকে শিক্ষা দিতে হবে বিধায় তিনি যখন ফিরে আসলেন তখন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনি উঠে চলে গেলেন কেন?

তিনি তখন বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এখানে তো হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এসেছিলেন আর সেজন্যই উনাকে দেখে আমি চলে গেছি। এ বিষয়টাকে স্পষ্ট করার জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন কেন? তিনি তো আপনাকে দেখতেন না, যেভাবে অন্য মানুষ দেখে থাকে। কারণ অন্যান্য মানুষের যে দৃষ্টিশক্তি রয়েছে সেই দৃষ্টিশক্তি তো উনার মধ্যে নেই। যার ফলে তিনি তো আপনাকে দেখতে পেতেন না। তখন উনি বললেন, তিনি আমাকে না দেখলেও আমি তো উনাকে দেখতাম! আর সেজন্যই আমি উঠে চলে গেছি। সুবহানাল্লাহ!

৫। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার গুণাবলী মুবারকঃ

সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ তথা জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা হচ্ছেন উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহিস সালাম! উনার লক্বব মুবারক বা গুণাবলী মুবারক অগণিত; তন্মধ্যে কয়েকটি হলো:

উম্মু আবীহা: অর্থাৎ তিনি উনার পিতা সাইয়্যিদুনা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা মাতা উনার ভূমিকায় ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

বতূল: অর্থাৎ ভোগ লিপ্সা দুনিয়া বর্জনকারিনী। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলি জান্নাহ: অর্থাৎ তিনি জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!

রদ্বিয়াহ-মারদ্বিয়াহ: অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা উনার প্রতি সন্তুষ্ট এবং তিনি উনাদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদা: শ্রেষ্ঠা। তবে সব চেয়ে বড় ও শ্রেষ্ঠা পরিচয় হচ্ছে, তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ তথা সাইয়্যিদুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার আদরের কন্যা। সুবহানাল্লাহ!

৬। মুসলমানদেরকে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে যে, কিভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করতে হয়ঃ

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজোড়া জামা মুবারক তৈরি করে হাদিয়াস্বরূপ পাঠালেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছে।

উনার কাছে যখন সেই হাদিয়া মুবারক পৌঁছানো হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে একজন গরিব মহিলা এসে সাহায্য চাইলো যে, আমাকে দয়া করে একটা জামা যদি দিতেন তাহলে আমার জন্য ভালো হতো।

এখন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, উনার কাছে আগে এক সেট জামা ছিল। তিনি কোনটা দান করবেন এই মহিলাকে; নতুনটা না পুরাতনটা?

তিনি বললেন, যিনি খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি তো নাযিল করেছেন, “তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নেকী ও মুবারক সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তোমাদের পছন্দনীয় বিষয়গুলো দান না করবে।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯২)

তিনি এটা ফিকির করে সেই নতুন জামা গরিব মহিলাকে দান করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!

এই ঘটনা দ্বারা বুঝা যায় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি কতোটুকু পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করেছেন। যা বলার অপেক্ষাই রাখে না।

৭। যিনি রহমতের মূল হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা ফরযে আইনঃ

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হলেন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে এতে আরোহণ করবে সে নাজাত পাবে। যে তাতে আরোহণ করবে না সে ধ্বংস হবে।”

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত ঈমান আর বিদ্বেষ পোষণ কুফরী।”

অতএব, প্রমাণিত হয় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মুহব্বতও পবিত্র ঈমান। উনার অনুসরণ মুক্তি বা নাজাতের কারণ।

অতএব, বর্তমান সরকার যদি নাজাত পেতে চায়, মুসলমান থাকতে চায়, পবিত্র জান্নাত চায়, তাহলে তার জন্য ফরযে আইন হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা।

সরকার যদি বাংলার মহিলা জাতিকে মুক্তি দিতে চায় তাহলে ফরয হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাসভুক্ত করা।

৮। মহিলাদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালন নয়; বরং হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আদর্শই গ্রহণ করতে হবেঃ

সময়ের স্রোতে ভেসে চলছে কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালনকারী কথিত মহিলাবাদীদের দল।

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের পরিভাষায় এদেরকে আখ্যা দেয়া হয় ‘ইবনুল ওয়াক্ত’ অর্থাৎ সময়ের সন্তানরূপে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যে লিপ্ত। তবে তারা ব্যতীত, যারা পবিত্র ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে।” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ)

এখানে শপথ করা হয়েছে সময়ের। আর এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- যে বা যারা যে যুগে, যে কালে, যে সময়ে, যে অবস্থায় আছে সে বা তারা সার্বক্ষণিকভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদেরকে অনুসরণ না করে বরং সার্বক্ষণিকভাবে সময়ের স্রোতে নির্বিচারে গা ভাসিয়ে দিবে অর্থাৎ যারা ইবনুল ওয়াক্ত তারা মূলত ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

এতদ্বপ্রেক্ষিতে বলাবাহুল্য যে, বেগম রোকেয়াকে অনুসরণ করে কোনো মহিলার পক্ষেই আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বরং বর্তমান স্রোতে প্রবাহমান পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী শিক্ষা গ্রহণ করার দ্বারা নিজ আত্মমর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে ‘বেপর্দা মহিলা’ অর্থাৎ দাইয়ূছ হিসেবে পরিগণিত হবে। নাঊযুবিল্লাহ!

গোটা মুসলিম জাহানের মহিলাকুল শ্রেষ্ঠা, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাযিহিল উম্মাহ, আল বতূলু, খাতুনে জান্নাহ হযরত মা ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র থেকে পবিত্রতম দেহ মুবারক উনার অংশ মুবারক, লখতে জিগার, স্নেহের দুলালী, সাইয়্যিদ বংশ উনার উৎস ধারা।

উনার শান মান ফযীলত অপরিসীম। আজ মুসলিম বিশ্বে মুসলিম মহিলাদের যে করুণ পরিণতি, করুণ জিন্দেগী, করুণ অবমূল্যায়ন, করুণ অবহেলার পাত্রী হিসাবে কালাতিপাত করতে হচ্ছে; এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রত্যেক মুসলিমার জন্য ফরযে আইন খাতুনে জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক পাঠ করা, আলোচনা করা এবং উনাকে অনুসরণ করা।

৯ । নূরান্বিত অপরূপ সৌন্দর্য দেখে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে দীক্ষিত
হলো ইহুদী মহিলারা সুবহানাল্লাহ!

একবার কিছু ইহুদী মহিলা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাযির হয়ে আরজি পেশ করলো যে, তাদের এক বিবাহের অনুষ্ঠানে তিনি যেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাওয়ার অনুমতি দান করেন।
যে অনুষ্ঠানটি শুধু মহিলাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদী মহিলাদের আরজি কবুল করলেন।

ইহুদীদের কাজই হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া। তাই দাওয়াত দানকারিণী ইহুদী মহিলাদের উদ্দেশ্যও ভালো ছিল না।

তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ইহুদী মহিলারা দামি দামি পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে এবং হীরা-মণি, মুক্তা ও স্বর্ণালঙ্কারে সুসজ্জিত হয়ে অনুষ্ঠানে যাবে। আর তাদের ধারণা হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো তাদের মতো অতো সাজসজ্জা ও দুনিয়াবী রছম-রেওয়াজ পছন্দ করেন না। অতএব, তিনি স্বাভাবিক লেবাছ মুবারক-এ-ই অনুষ্ঠানে আসবেন। যার ফলে উনার কাছে তারা তাদের বড়ত্ব, মহত্ব প্রকাশ করে উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে। নাঊযুবিল্লাহ!

ইহুদী মহিলাদের এই কূট চক্রান্ত কেউ না জানলেও যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার যিনি হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তো ঠিকই জানেন।

ফলে বিবাহ অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কারাদি পাঠিয়ে দিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে।

অর্থাৎ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি এই পোশাক ও অলঙ্কার আপনার মেয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন এবং আরো বলেছেন, তিনি যেন এগুলো পরিধান করে ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে যান। সুবহানাল্লাহ!

সত্যিই বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার পরিধান করে যথাসময়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে গেলেন। আল্লাহু আকবার! বেহেশতী মানুষ উনার শরীর মুবারকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার কী অপরূপ সৌন্দর্য প্রকাশ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না! তাও আবার সাধারণ বেহেশতী নন, বেহেশতবাসিনী মহিলাকুল উনাদের সাইয়্যিদাহ এবং পোশাক এবং অলঙ্কারও তদ্রƒপ মর্যাদাম-িত।

শুধু কী তাই, তিনি হলেন সমস্ত সৌন্দর্যের মূল- আজমালুল কায়িনাত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই পবিত্র ও নূরানী দেহ মুবারকেরই অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই তিনি যখন উনার এই বেমেছাল শান ও সৌন্দর্য নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে তাশরীফ নিলেন ইহুদী মহিলারা দেখতে পেলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার চেহারা মুবারক হতে নূর বিচ্ছুরিত হচ্ছে এবং উনার অসাধারণ পোশাক ও অলঙ্কার দেখে তারা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, হে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম! এ পোশাক ও অলঙ্কারগুলো আপনি কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, কেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে হাদিয়া করেছেন। তারা পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, আপনার আব্বা এগুলো কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বয়ং মহান খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে হাদিয়া পাঠিয়েছেন। এটা শুনে দাওয়াত দানকারিণী মূল যে ইহুদী মহিলা সে তার স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। উনাদের দেখাদেখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত ইহুদী মহিলা তাদের স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!

সেই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ হলো পবিত্র জুমাদাল উখরা মাস উনার ২০ তারিখে জুমুয়ার দিন ছুবহে সাদিকের সময় আর উনার সুমহান পবিত্র বিছাল শরীফ হলো পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ৩ তারিখে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম অর্থাৎ সোমবার শরীফ বাদ আছর।

কাজেই উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা জেনে-বুঝে উনাকে উত্তমভাবে অনুসরণ করে হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার জন্য প্রত্যেককেই উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ, ওয়াজ শরীফ ইত্যাদির ব্যবস্থা করে এই দিবসসমূহের যে বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাক্বীনা, মাগফিরাত মুবারক রয়েছে তা লাভ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

১০। সরকারকে বলছি- হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করুনঃ

হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত হচ্ছে ‘ঈমান’।

উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকল মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব। তাই সকল মুসলমানের জন্য উনাদের জীবনী মুবারক জানাও ফরয-ওয়াজিব।

সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- উনার পবিত্র জীবনী মুবারক জেনে উনার যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ-অনুকরণ করা।

আর এজন্য উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করার বিকল্প নেই।

এজন্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস থেকে বিধর্মীদের জীবনী বাদ দিয়ে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করুন।‎
-যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক করেন,
قُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى .
“(হে আমার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন! আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না, প্রতিদান চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। বরং এটা চিন্তা করাটাও কুফরী হবে। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও, যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি রেযামন্দি লাভ করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে আমার নিকট আত্মীয়-স্বজন তথা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-২৩)
আর যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِيْ لِحُبِّيْ. فَأَحِبُّوْنِيْ لِحُبِّ اللهِ
“তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমাকে মুহব্বত করো। আর তোমরা আমার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ, আল মু’জামুল কাবীর শরীফ, শু’য়াবুল ঈমান শরীফ)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা গেলো যে, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক পেতে হলে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!
মূলত উনাদের মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে পবিত্র ঈমান। যারা উনাদেরকে মুহব্বত করে তারাই ঈমানদার আর যারা উনাদেরকে মুহব্বত করেনা তারা ঈমানদার নয়; বরং মুনাফিক্ব ও কাফির।
সেটাই বলা হয়েছে,
حُبُّ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِيْمَانٌ.
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা হচ্ছে ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি এই আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক্ব। তাই উনার মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে ঈমান।
যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে, তা’যীম-তাকরীম করবে সে ঈমানদার। আর যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে না, তা’যীম-তাকরীম করবে না সে মুনাফিক্ব-কাফির। কেননা তিনি হচ্ছেন হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। এই সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] دَعَا رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حَسَنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حُسَيْنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ: اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أهل بَيْتِي
“হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, যখন [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] - এই পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হলো, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদেরকে ডেকে এনে ইরশাদ মুবারক করলেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! উনার হচ্ছেন, আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম।” (পবিত্র মুসলিম শরীফ)
১। জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম:
মুসলমান মহিলাদের সবার জানা উচিত তথা জানাটা ফরয- কে জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদা বা প্রধান। যিনি কুল-কায়িনাতের নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, কলিজার টুকরা, নয়নের মণি হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হলেন জান্নাতবাসিনী মহিলাদের প্রধান তথা সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!
উনার বুযুর্গী, সম্মান, মর্যাদা, মর্তবা, শান-শুয়ূনাত, খুছূছিয়াত, বৈশিষ্ট্য, পবিত্রতা, আজমত, হুরমত বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।
কাজেই, মুসলমান মা-বোনদের উচিত উনার জীবনী মুবারক জানা এবং উনার আমল-আখলাক গ্রহণ করে জান্নাতী হওয়ার জন্য কোশেশ করা।
২। বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের মর্যাদা স্বয়ং আরশে আযীম থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিনি সম্মানিতা আওলাদ, নয়নের মণি সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মর্যাদা মুবারক কতটুকু বেমেছাল। সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কোনো বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসানের পক্ষে সম্ভব নয়।
পবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ উনার ২০ তারিখ যমীনে তাশরীফ এনে সমস্ত পুরুষ ও নারীজাতিকে তিনি ধন্য করেছেন। গোটা উম্মাহর জন্য তিনি হচ্ছেন সুমহান হিদায়েতের নূরানী আলোকবর্তিকা। উনার যে বেমেছাল পর্দা, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি খিদমত, সহানুভূতিশীলতা সেটা আজীবন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে।
কাজেই আমাদের সমস্ত মুসলমানদের উচিত- উনার সম্পর্কে বেশি বেশি আলোচনা করে মানুষকে জানানো এবং উনার সম্পর্কে বেশি বেশি মাহফিল করা যাতে উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করে যেন হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারি।
৩। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল কন্যাই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৪ জন কন্যা সন্তান ছিলেন। ১. হযরত জয়নব আলাইহাস সালাম ২. হযরত রুকাইয়া আলাইহাস সালাম ৩. হযরত উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম ৪. হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম।
মূলত, উনারা সকলেই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, ত্বহিরা, ত্বইয়্যিবাহ।
অথচ উম্মাহ শুধুমাত্র হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কেই কিছুটা অবগত। অন্যদের সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। অর্থাৎ অন্যদের সম্পর্কে কোথাও কোনো আলোচনা হয় না।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এর পিছনে ইহুদী মুশরিক, নাছারা ও বাতিল ফিরকা শিয়াদের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র কাজ করছে। তাই আমাদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে, এদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে উনাদের সকলের মুবারক শান, মান, ফাযায়িল-ফযীলত ও পরিচিতি সারাবিশ্বের সকলের সম্মুখে তুলে ধরা।
মানুষের ভিতর এই অনুভূতি প্রবেশ করিয়ে দেয়া যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সারাম তিনি যেমন নবীজী উনার আওলাদ, অন্যরাও উনারই আওলাদ। উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে যেমন নবীজী উনার নূরানী রক্ত মুবারক রয়েছে অন্যদের মধ্যেও তা রয়েছে।
তাহলে কেন এতো তারতম্য ও বৈষম্য? তবে হ্যাঁ, একজনের তুলনায় আরেকজনের মর্যাদা বেশি হতে পারে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি কোনো রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না।”
অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার উপর আরেকজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা দিয়েছি।” তবে সকলেই রসূল উনাদের অন্তর্ভুক্ত।
৪। সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে বিশ্বের সকল মু’মিনা মহিলাদের জন্য হাক্বীক্বী পর্দা পালন করা শিক্ষা করতে হবে:
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি পর্দার পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার পূর্ব থেকেই পর্দা করতেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো জরুরত ব্যতীত তিনি কোথাও বের হতেন না এবং কারো সামনে তিনি যেতেন না।
এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
একদিন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বসে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আলোচনা করতেছিলেন, এমতাবস্থায় হঠাৎ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উঠে ভিতরের কামরায় গিয়ে কিছুক্ষণ পর আবার আসলেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো সব জানেনই, কিন্তু উম্মতদেরকে শিক্ষা দিতে হবে, বান্দা-বান্দীদেরকে শিক্ষা দিতে হবে বিধায় তিনি যখন ফিরে আসলেন তখন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনি উঠে চলে গেলেন কেন?
তিনি তখন বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এখানে তো হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এসেছিলেন আর সেজন্যই উনাকে দেখে আমি চলে গেছি। এ বিষয়টাকে স্পষ্ট করার জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন কেন? তিনি তো আপনাকে দেখতেন না, যেভাবে অন্য মানুষ দেখে থাকে। কারণ অন্যান্য মানুষের যে দৃষ্টিশক্তি রয়েছে সেই দৃষ্টিশক্তি তো উনার মধ্যে নেই। যার ফলে তিনি তো আপনাকে দেখতে পেতেন না। তখন উনি বললেন, তিনি আমাকে না দেখলেও আমি তো উনাকে দেখতাম! আর সেজন্যই আমি উঠে চলে গেছি। সুবহানাল্লাহ!
৫। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার গুণাবলী মুবারকঃ
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ তথা জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা হচ্ছেন উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহিস সালাম! উনার লক্বব মুবারক বা গুণাবলী মুবারক অগণিত; তন্মধ্যে কয়েকটি হলো:
উম্মু আবীহা: অর্থাৎ তিনি উনার পিতা সাইয়্যিদুনা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা মাতা উনার ভূমিকায় ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
বতূল: অর্থাৎ ভোগ লিপ্সা দুনিয়া বর্জনকারিনী। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলি জান্নাহ: অর্থাৎ তিনি জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!
রদ্বিয়াহ-মারদ্বিয়াহ: অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা উনার প্রতি সন্তুষ্ট এবং তিনি উনাদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদা: শ্রেষ্ঠা। তবে সব চেয়ে বড় ও শ্রেষ্ঠা পরিচয় হচ্ছে, তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ তথা সাইয়্যিদুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার আদরের কন্যা। সুবহানাল্লাহ!
৬। মুসলমানদেরকে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে যে, কিভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করতে হয়ঃ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজোড়া জামা মুবারক তৈরি করে হাদিয়াস্বরূপ পাঠালেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছে।
উনার কাছে যখন সেই হাদিয়া মুবারক পৌঁছানো হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে একজন গরিব মহিলা এসে সাহায্য চাইলো যে, আমাকে দয়া করে একটা জামা যদি দিতেন তাহলে আমার জন্য ভালো হতো।
এখন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, উনার কাছে আগে এক সেট জামা ছিল। তিনি কোনটা দান করবেন এই মহিলাকে; নতুনটা না পুরাতনটা?
তিনি বললেন, যিনি খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি তো নাযিল করেছেন, “তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নেকী ও মুবারক সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তোমাদের পছন্দনীয় বিষয়গুলো দান না করবে।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯২)
তিনি এটা ফিকির করে সেই নতুন জামা গরিব মহিলাকে দান করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এই ঘটনা দ্বারা বুঝা যায় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি কতোটুকু পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করেছেন। যা বলার অপেক্ষাই রাখে না।
৭। যিনি রহমতের মূল হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা ফরযে আইনঃ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হলেন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে এতে আরোহণ করবে সে নাজাত পাবে। যে তাতে আরোহণ করবে না সে ধ্বংস হবে।”
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত ঈমান আর বিদ্বেষ পোষণ কুফরী।”
অতএব, প্রমাণিত হয় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মুহব্বতও পবিত্র ঈমান। উনার অনুসরণ মুক্তি বা নাজাতের কারণ।
অতএব, বর্তমান সরকার যদি নাজাত পেতে চায়, মুসলমান থাকতে চায়, পবিত্র জান্নাত চায়, তাহলে তার জন্য ফরযে আইন হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা।
সরকার যদি বাংলার মহিলা জাতিকে মুক্তি দিতে চায় তাহলে ফরয হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাসভুক্ত করা।
৮। মহিলাদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালন নয়; বরং হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আদর্শই গ্রহণ করতে হবেঃ
সময়ের স্রোতে ভেসে চলছে কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালনকারী কথিত মহিলাবাদীদের দল।
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের পরিভাষায় এদেরকে আখ্যা দেয়া হয় ‘ইবনুল ওয়াক্ত’ অর্থাৎ সময়ের সন্তানরূপে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যে লিপ্ত। তবে তারা ব্যতীত, যারা পবিত্র ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে।” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ)
এখানে শপথ করা হয়েছে সময়ের। আর এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- যে বা যারা যে যুগে, যে কালে, যে সময়ে, যে অবস্থায় আছে সে বা তারা সার্বক্ষণিকভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদেরকে অনুসরণ না করে বরং সার্বক্ষণিকভাবে সময়ের স্রোতে নির্বিচারে গা ভাসিয়ে দিবে অর্থাৎ যারা ইবনুল ওয়াক্ত তারা মূলত ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
এতদ্বপ্রেক্ষিতে বলাবাহুল্য যে, বেগম রোকেয়াকে অনুসরণ করে কোনো মহিলার পক্ষেই আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বরং বর্তমান স্রোতে প্রবাহমান পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী শিক্ষা গ্রহণ করার দ্বারা নিজ আত্মমর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে ‘বেপর্দা মহিলা’ অর্থাৎ দাইয়ূছ হিসেবে পরিগণিত হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
গোটা মুসলিম জাহানের মহিলাকুল শ্রেষ্ঠা, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাযিহিল উম্মাহ, আল বতূলু, খাতুনে জান্নাহ হযরত মা ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র থেকে পবিত্রতম দেহ মুবারক উনার অংশ মুবারক, লখতে জিগার, স্নেহের দুলালী, সাইয়্যিদ বংশ উনার উৎস ধারা।
উনার শান মান ফযীলত অপরিসীম। আজ মুসলিম বিশ্বে মুসলিম মহিলাদের যে করুণ পরিণতি, করুণ জিন্দেগী, করুণ অবমূল্যায়ন, করুণ অবহেলার পাত্রী হিসাবে কালাতিপাত করতে হচ্ছে; এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রত্যেক মুসলিমার জন্য ফরযে আইন খাতুনে জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক পাঠ করা, আলোচনা করা এবং উনাকে অনুসরণ করা।
৯ । নূরান্বিত অপরূপ সৌন্দর্য দেখে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে দীক্ষিত
হলো ইহুদী মহিলারা সুবহানাল্লাহ!
একবার কিছু ইহুদী মহিলা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাযির হয়ে আরজি পেশ করলো যে, তাদের এক বিবাহের অনুষ্ঠানে তিনি যেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাওয়ার অনুমতি দান করেন।
যে অনুষ্ঠানটি শুধু মহিলাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদী মহিলাদের আরজি কবুল করলেন।
ইহুদীদের কাজই হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া। তাই দাওয়াত দানকারিণী ইহুদী মহিলাদের উদ্দেশ্যও ভালো ছিল না।
তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ইহুদী মহিলারা দামি দামি পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে এবং হীরা-মণি, মুক্তা ও স্বর্ণালঙ্কারে সুসজ্জিত হয়ে অনুষ্ঠানে যাবে। আর তাদের ধারণা হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো তাদের মতো অতো সাজসজ্জা ও দুনিয়াবী রছম-রেওয়াজ পছন্দ করেন না। অতএব, তিনি স্বাভাবিক লেবাছ মুবারক-এ-ই অনুষ্ঠানে আসবেন। যার ফলে উনার কাছে তারা তাদের বড়ত্ব, মহত্ব প্রকাশ করে উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে। নাঊযুবিল্লাহ!
ইহুদী মহিলাদের এই কূট চক্রান্ত কেউ না জানলেও যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার যিনি হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তো ঠিকই জানেন।
ফলে বিবাহ অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কারাদি পাঠিয়ে দিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে।
অর্থাৎ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি এই পোশাক ও অলঙ্কার আপনার মেয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন এবং আরো বলেছেন, তিনি যেন এগুলো পরিধান করে ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে যান। সুবহানাল্লাহ!
সত্যিই বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার পরিধান করে যথাসময়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে গেলেন। আল্লাহু আকবার! বেহেশতী মানুষ উনার শরীর মুবারকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার কী অপরূপ সৌন্দর্য প্রকাশ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না! তাও আবার সাধারণ বেহেশতী নন, বেহেশতবাসিনী মহিলাকুল উনাদের সাইয়্যিদাহ এবং পোশাক এবং অলঙ্কারও তদ্রƒপ মর্যাদাম-িত।
শুধু কী তাই, তিনি হলেন সমস্ত সৌন্দর্যের মূল- আজমালুল কায়িনাত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই পবিত্র ও নূরানী দেহ মুবারকেরই অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই তিনি যখন উনার এই বেমেছাল শান ও সৌন্দর্য নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে তাশরীফ নিলেন ইহুদী মহিলারা দেখতে পেলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার চেহারা মুবারক হতে নূর বিচ্ছুরিত হচ্ছে এবং উনার অসাধারণ পোশাক ও অলঙ্কার দেখে তারা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, হে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম! এ পোশাক ও অলঙ্কারগুলো আপনি কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, কেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে হাদিয়া করেছেন। তারা পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, আপনার আব্বা এগুলো কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বয়ং মহান খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে হাদিয়া পাঠিয়েছেন। এটা শুনে দাওয়াত দানকারিণী মূল যে ইহুদী মহিলা সে তার স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। উনাদের দেখাদেখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত ইহুদী মহিলা তাদের স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
সেই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ হলো পবিত্র জুমাদাল উখরা মাস উনার ২০ তারিখে জুমুয়ার দিন ছুবহে সাদিকের সময় আর উনার সুমহান পবিত্র বিছাল শরীফ হলো পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ৩ তারিখে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম অর্থাৎ সোমবার শরীফ বাদ আছর।
কাজেই উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা জেনে-বুঝে উনাকে উত্তমভাবে অনুসরণ করে হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার জন্য প্রত্যেককেই উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ, ওয়াজ শরীফ ইত্যাদির ব্যবস্থা করে এই দিবসসমূহের যে বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাক্বীনা, মাগফিরাত মুবারক রয়েছে তা লাভ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১০। সরকারকে বলছি- হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করুনঃ
হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত হচ্ছে ‘ঈমান’।
উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকল মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব। তাই সকল মুসলমানের জন্য উনাদের জীবনী মুবারক জানাও ফরয-ওয়াজিব।
সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- উনার পবিত্র জীবনী মুবারক জেনে উনার যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ-অনুকরণ করা।
আর এজন্য উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করার বিকল্প নেই।
এজন্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস থেকে বিধর্মীদের জীবনী বাদ দিয়ে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করুন।

হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন আল বিদয়াতু মির রসূলি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম


আরবী বারোটি মাস উনাদের মধ্যে জুমাদাল উখরা হচ্ছে ৬ষ্ঠতম মাস। আর এ মাস উনার বিশ তারিখে হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল ব্যক্তিত্ব আহলুয যিকরি, আত তহিরাতু, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি যমীনে তাশরীফ আনেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তখন দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক ৩৭ বছর বয়স মুবারক ছিলেন। সেই সময় তিনি পবিত্র বিলাদত শরীফ লাভ করেন। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কথা-বার্তা, আচার-আচরণ, সীরত-ছূরতের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিদর্শন মুবারক ফুটে উঠতো। সুবহানাল্লাহ!
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আল বিদয়াতু মির রসূলি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দেহ মুবারক উনার একটি টুকরা মুবারক। তাই হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত করা পবিত্র ঈমান।
কাজেই আমাদের উচিত হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত করা এবং উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করা। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সেই তাওফীক দান করেন। আমীন।

পবিত্র কুরআন শরীফ হচ্ছে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার কালাম।

 মানুষের পক্ষে স্বল্প জ্ঞানে উক্ত কালামুল্লাহ শরীফ উনার মর্ম অনুধাবন করা সম্ভব নয়। এ কারনে প্রকৃত তাফসীর করার জন্য ইলমে লাদুন্নী বা আল্লাহ পাক প্রদত্ত বিশেষ জ্ঞান শর্ত করা হয়েছে। কুরআন শরীফ উনার মর্ম ব্যাপক। যে কারনে তাফসীর লেখা শুরু হয়েছে বটে কিন্তু শেষ হয় নাই এবং হবেও না।
এ ব্যাপারে কিতাবে একটা ঘটনা বর্নিত আছে। বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা ইমাম জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ঘটনা, তিনি এতবড় মুফাসসির ছিলেন যে, মানুষ উনার ছাত্র হতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করতো। সেই ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন গাউছুল আযম, মুহীউদ্দীন আব্দুল ক্বদীর জীলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফে গেলেন উনার সাক্ষাৎ লাভ করার জন্য। সেদিনও গাউছুল আযম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মজলিসে প্রাত্যহিক হাফিজ সাহেব কর্তৃক পঠিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর বর্ননা শুরু করলেন। এক এক করে চৌদ্দ প্রকার তাফসীর করে নতুন আগুন্তক ইমাম ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উদ্দেশ্যে করে বলেছিলেন, এসব তাফসীর কি আপনার জানা আছে ? তিনি উত্তরে বললেন, জ্বী হুজুর ! এগুলা আমার জানা আছে।
তখন হযরত গাউছুল আযম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি ঐ একই আয়াত শরীফ উনার চল্লিশ প্রকার তাফসীর করলেন। তারপর বললেন, হে ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ! চৌদ্দ প্রকারের পরবর্তী তাফসীর গুলো কি আপনি জানেন?
ইমাম জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, পরবর্তী তাফসীর আমার জানা নাই, শুধু তাই নয়, এত সুক্ষ্ম থেকে সুক্ষ্মতর তাফসীর হতে পারে তা কখনো চিন্তাও করি নাই। তখন হযরত গাউছুল আযম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, "হে ইবনে জাওজী তুমি সোজা হয়ে বস। আমি কালের থেকে হালের দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম।"
এ কথা বলা মাত্র ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার হাল শুরু হয়ে গেল এবং তিনি লাফাতে লাগলেন।
তখন হযরত গাউছুল আযম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হে ইবনে জাওজী ! এটা ইলিম হাসিলের জায়গা লাফানোর জায়গা নয়। তখন ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি গাউছুল আযম মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদীর জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কদম মুবারকে পরে বাইয়াত হয়ে গেলেন।

এবার চিন্তা করুন তাফসীর কি জিনিস !! বর্তমানে মওদূদী দেওবন্দী মার্কা তাফসীর দিয়ে কখনোই কুরআন শরীফ উনার মর্ম বুঝা সম্ভব নয়। তাফসীর বুঝছে রুহানীয়ত হাসিল করতে হবে এবং ইলমে লাদুন্নী অর্জন করতে হবে।

নবী ইয়াহ্ইয়া ও যাকারিয়ার (আঃ) মৃত্যু :


যাকারিয়ার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল, না তাকে হত্যা করা হয়েছিল, এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। জনৈকা নষ্টা মহিলার প্ররোচনায় শাম দেশের বাদশাহ নবী ইয়াহইয়াকে হত্যা করলে ঐ রাতেই বাদশাহ সপরিবারে নিজ প্রাসাদসহ ভূমিধ্বসের গযবে ধ্বংস হয়ে যান। এতে লোকেরা হযরত যাকারিয়াকেই দায়ী করে ও তাকে হত্যা করার জন্য ধাওয়া করে। তখন একটি গাছ ফাঁক হয়ে তাঁকে আশ্রয় দেয়। পরে শয়তানের প্ররোচনায় লোকেরা ঐ গাছটি করাতে চিরে দু’ভাগ করে ফেলে এবং এভাবেই যাকারিয়া নিহত হন বলে যাকারিয়া (আঃ) নিজেই মে‘রাজ রজনীতে শেষনবী (ছাঃ)-এর সাথে বর্ণনা করেছেন বলে ইবনু আববাস-এর নামে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, সে সম্পর্কে হাফেয ইবনু কাছীর বলেন, هذا سياق غريب جدا وحديث عجيب ورفعه منكر- ‘এটি বিস্ময়করভাবে পূর্বাপর সম্পর্কহীন ও আশ্চর্যজনক হাদীছ এবং এটি রাসূল থেকে বর্ণিত হওয়াটা একেবারেই অমূলক।[5] ওয়াহাব বিন মুনাবিবহ বলেন, গাছের ফাটলে আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তি ছিলেন শা‘ইয়া (شعيا )। আর যাকারিয়া স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করেন।[6] মানছূরপুরী বাইবেলের বর্ণনার আলোকে বলেন, ইয়াহ্ইয়াকে প্রথমে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু বাদশাহর প্রেমিকা ঐ নষ্টা মহিলা তার মাথা দাবী করায় জেলখানায় তাকে হত্যা করে তার ছিন্ন মস্তক ও রক্ত এনে ঐ মহিলাকে উপহার দেওয়া হয়।[7]
অতএব উক্ত দুই নবীর মৃত্যুর সঠিক ঘটনার বিষয়ে আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।
[5]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/৫০।
[6]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/৪৮।
[7]. রহমাতুল লিল আলামীন ৩/১১১ পৃঃ।

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকের ছায়া মুবারক ছিলো না, কারন তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম।


সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি "নূরে মুজাসসাম" বা আপাদমস্তক নূর তার একটি উজ্জ্বল, সুস্পষ্ট, অকাট্য দলীল হচ্ছে উনার "ছায়াহীন কায়া মুবারক"। কারন অসংখ্য অনুসরনীয় ও বিখ্যাত ইমান মুস্তাহীদ, মুহাদ্দিস- ফক্বীহ, এবং আওলিয়ায়ে কিরাম উনাদের অভিমত এই যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দেহ মুবারকের কোন ছায়া ছিলো না, কারন তিনি হচ্ছেন আপাদমস্তক নূর।

এ প্রসঙ্গে অনেক হাদীস শরীফ বর্নিত আছে, এবং অসংখ্য অগনিত ইমাম মুস্তাহিদ, মুহাদ্দিসগন উক্ত হাদীস শরীফের উপর আস্থা স্থাপন করেছেন।
সুবহানাল্লাহ্ !!

উক্ত দলীল সমূহ নিম্নে পেশ করা হলো :

(১) এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাকীম তিরমীযি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেন--

ان رسول الله صلي الله عليه و سلم لم يكن يري له ظل في شمس ولاقمر

অর্থ: নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না।"

দলীল-
√ নাওয়াদেরুল উছুল।

(২) ইমামুল মুহাদ্দিসিন, ফক্বীউল মিল্লাত, আল্লামা হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আরেকটি সনদে হাদীস শরীফ বর্ননা করেন-

وفي حديث ابن عباس قال لم يكن لرسول الله صلي الله عليه و سلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না, এবং সূর্যের আলোতেও কখনো উনার ছায়া পড়তো না। আরো বর্নিত আছে, উনার নূর সূর্যের আলোকে অতিক্রম করে যেত। আর বাতির আলোতেও কখনো উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা, উনার আলো বাতির আলোকেও ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ জামউল ওয়াসিল ফি শরহে শামায়িল ২১৭ পৃষ্ঠা।

(৩) প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, হাফিজে হাদীস, রঈসুল মুহাদ্দিসিন, হযরত জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

اخرج الحكيم الترمذي عن ذكوان في نوادر الا صول ان رسول صلي الله عليه و سلم لم يكن يراي له ظل في شمس ولا قمر

অর্থ: হযরত হাকীম তিরমীযি রহমাতুল্লাহি আলাইহি " নাওয়াদিরুল উছুল" নামক কিতাবে জাকওয়ান থেকে বর্ননা করেন, নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতেও রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না।"

দলীল-
√ খাছায়েছুল কুবরা ১ম খন্ড ১২২ পৃষ্ঠা ।

(৪) বিখ্যাত আলেমে দ্বীন, শায়খুল উলামা, মুহাদ্দিস , আল্লামা ইব্রাহিম বেজরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন--

وفي حديث ابن عباس قال لم يكن لرسول الله صلي الله عليه و سلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না, এবং সূর্যের আলোতেও কখনো উনার ছায়া পড়তো না। আরো বর্নিত আছে, উনার নূর সূর্যের আলোকে অতিক্রম করে যেত। আর বাতির আলোতেও কখনো উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা, উনার আলো বাতির আলোকেও ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ আল মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া আলা শামায়েলে মুহম্মদীয়া ১০৫ পৃষ্ঠা।

(৫) বিখ্যাত মুহাদ্দিস, ফক্বীহ, আল্লামা হযরত ইউছুফ নবেহানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে লিখেন-

وكان اذا مشي في قمر او شمس لا يظهر له ظل

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সূর্য ও চন্দ্রের আলোতে হাঠতেন তখন উনার ছায়া মুবারক পড়তো না।"

দলীল-
√ জাওয়াহিরুল বিহার ১ম খন্ড ৪৫৩ পৃষ্ঠা।

(৬) বাহরুল উলুম, শায়খুল মাশায়েখ, আল্লামা ইবনে সাবা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ان ظله كان لا يقع علي الارض كان نورا فكان اذامشي في الشمس اوالقمر لا ينظر له ظل

অর্থ: নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক যমীনে পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন, নূর। অতঃপর তিনি যখন সূর্য ও চাঁদের আলোতে হাঁটতেন তখন তখন উনার ছায়া মুবারক দৃষ্টিগোচর হতোনা।

দলীল-
√ শেফাউছ ছুদুর।

(৭) আল্লামা সুলায়মান জামাল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

لم يكن له صلي الله عليه و سلم ظل يظهر في شمس ولا قمر

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলনা। এমনকি চাঁদ এবং সূর্যের আলোতেও উনার ছায়া মুবারক প্রকাশ হতো না।"

দলীল-
√ ফতুহাতে আহমদিয়া শরহে হামজিয়া।

(৮) ইমামুল মুফাসসিরিন ওয়াল মুহাদ্দিসিন, হাফিজে হাদীস, আল্লামা ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেন-

وفي حديث ابن عباس قال لم يكن لرسول الله صلي الله عليه و سلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না, এবং সূর্যের আলোতেও কখনো উনার ছায়া পড়তো না। আরো বর্নিত আছে, উনার নূর সূর্যের আলোকে অতিক্রম করে যেত। আর বাতির আলোতেও কখনো উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা, উনার আলো বাতির আলোকেও ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ কিতাবুল ওয়াফা

(৯) হাফিজে হাদীস, মুহাদ্দিস , আল্লামা সাইয়্যিদ যুরকানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

لم يكن له صلي عليه و سلم ظل في شمس و لاقمر لانه كان نورا

অর্থ: চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না। কেননা তিনি ছিলেন নূর।

দলীল-
√ শরহে মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া।

(১০) বিখ্যাত আলেম, হযরত আল্লামা হুসাইন দিয়ার বাকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

لم يقع ظله صلي الله عليه و سلم علي الارض ولايري له ظل في شمس ولا قمر

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক জমিনে পড়তো না। এবং চাঁদ এবং সূর্যের আলোতেও উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না।"

দলীল-
√ খামীছ ফি আহওলে আনফুসে নাফীস

(১১) ইমামুল আল্লাম, জালালু মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

لم يقع ظله علي الارض ولايري له ظل في شمس ولا قمر قال ابن سبع لانه كان نورا قال رزين لغلبة انواره

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক মাটিতে পড়ে নাই। চাঁদ এবং সূর্যের আলোতে উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না। আল্লামা ইবনে সাবা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু সম্পূর্ণ নূর ছিলেন, সেহেতু উনার ছায়া মুবারক ছিলো না। হযরত ইমান রজীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অবশ্যই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সমস্ত কিছুকে ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ আনমুযাজুল লবীব ফী খাছায়েছিল হাবীব- দ্বিতীয় বাব- চতুর্থ অধ্যায় ।

(১২) ইমামুল মুহাদ্দিসিন, শায়খুল উলামা, শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ونبود مر أنحضرت را صلي الله عليه و سلم سايه نه در افتاب ونه قمر

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক চাঁদ ও সূর্যের আলোতে দেখা যেত না।"

দলীল-
√ মাদারেজুন নবুওয়াত- ১ম খন্ড- ১ম অধ্যায় ।

(১৩) ইমামুল জলীল, মুহাদ্দিসুশ শহীর, আল্লামা ইমাম কাজী আয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

وما ذكر من انه لا ظل تشخصه في شمس ولاقمر لانه كان نورا

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরের দেহ মুবারকের ছায়া মুবারক সূর্য ও চাঁদের আলোতেও পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন সম্পূর্ন নূর।"

দলীল-
√ শিফা শরীফ।

(১৪) ইমামুল আইম্মা, হাফিজে হাদীস, আহমদ বিন মুহম্মদ খতীব কুস্তালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

رسول الله صلي الله عليه و سلم كي ليءے سايه نه تها دهوپ مين نه چاندني مين

অর্থ: চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না।"

দলীল-
√ মাওয়াহেবু লাদুন্নিয়া ১ম খন্ড

(১৫) তাজুল মুফাসসীরিন, ফক্বীহুল আছর, আল্লামা শাহ আব্দুল আযীজ মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

سايه ايشان بر زمين نمي افتاد

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক মাটিতে পড়তো না।"

দলীল-
√ তাফসীরে আযীযি-৩০ পারা- সূরা আদ দ্বুহা উনার তাফসীর।

(১৬) ইমামুল জলীল, সাইয়্যিদুল মুফাসসীরিন, আল্লামা মাহমূদ নাসাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قال عشمان رضي الله غنه ان الله ما اوقع ظلك علي الارض لءلا يضع انسن ان قدمه علي ذالك الظل

অর্থ: আমীরুল মু'মিনিন, হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেছিলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক আপনার ছায়া মুবারক মাটিতে পড়তে দেন নাই। যাতে মানুষ আপনার ঐ ছায়া মুবারকে পা রাখতে না পারে।"

দলীল-
√ তাফসীরে মাদারিকুত তানযীল-সূরা নূরের তাফসীর

(১৭) ইমামুল আইম্মা, কাইয়ুমে আউয়াল, মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

اورا صلي الله عليه و سلم سايه نبود در عالم شهادت سايه هر شخص ازشخص لطيف تراست چون لطيف تري ازوي صلي الله عليه و سلم در عالم نباشد او را سايه چه صورت وارد

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না। প্রত্যেক লোকের ছায়া তার দেহ থেকে সুক্ষ্ম। যখন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাইতে আর কোন কিছু সুক্ষ্ম নয়, তখন উনার ছায়া মুবারক কি আকার ধারন করতে পারে ?"

দলীল-
√ মকতুবাত শরীফ-৩য় খন্ড- ১০০ নং মকতুব।

(১৮) বাহরুল উলুম, হযরত শায়েখ মুহম্মদ তাহের রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

من اسماءه صلي الله علي و سلم النو ر قبل من خصاءصه صلي الله عليه و سلم انه اذا مشي في ااشمس والقمر لا يظهر له ظل

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক সমূহ থেকে একটি নাম মুবারক হলো, নূর। বলা হয়, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বৈশিষ্ট্য সমূহ থেকে একটি বৈশিষ্ট্য হলো যে, নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সূর্য ও চাঁদের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার কোন ছায়া মুবারক প্রকাশ পেত না।"

দলীল-
√ মাজমাউল বিহার

(১৯) শায়খুল উলামা, হযরতুল আল্লামা, মুহম্মদ ইউসুফ শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন-

الامام الحيم قال معناه لءلا يطأ عليه كافر فيكون مذلة له

অর্থ: ইমাম হযরত হাকিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক না থাকার হিকমত এই যে, যাতে কোন বিধর্মী কাফেরেরা উনার ছায়া মুবারকের উপর পা রাখতে না পারে।"

দলীল-
√ সুবহুল হুদা ওয়ার রশীদ আল মারুফ বিহী " সীরাতে শামী" ২য় খন্ড ১২৩ পৃষ্ঠা।

(২০) হাফিজে হাদীস,ওলীয়ে কামিল, হযরত ইবনে হাজর মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন,

انه صلي الله عليه و سلم صار نورا انه كان اذا مشي في الشمس و لا يظهر له ظل

অর্থ: নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর ছিলেন। নিশ্চয়ই তিনি যখন চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার ছায়া মুবারক প্রকাশ পেতো না।"

দলীল-
√ আফদ্বালুল ক্বোরা।

(২১) ফক্বীহে মিল্লাত, হযরত আল্লামা মুফতী জালালুদ্দীন আহমদ আমজাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন-

بيشك حضور پرنور سر كار اقدس صلي الله عليه و سلم كي جسم اقدس كا سايه نهين پرتا تها جيسا كه حديث شريف ميت هي لم يكن له ظل لا في الشمس ولا في القمر يعني سورج اور چاندكي روشني مين حضور كا سايه نهين پرتا تها

অর্থ: নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শরীর মুবারক উনার ছায়া মুবারক (জমিনে) পড়তো না । যেমন, হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক পড়তো না।"

দলীল-
√ ফতোয়ায়ে ফয়জুর রসূল ২৭ পৃষ্ঠা।

(২২) বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা শিহাবুদ্দীন খাফফাজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

من دلاءل نبوته صلي الله عليه و سلم ماذكر من انه لا ظل لشخصه لشخصه اي جسده الشريف اللطيف اذاكان في شممس او قمر لانه صلي الله عليه و سلم نور

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুওয়াত মুবারকের প্রমানের মধ্যে একটি প্রমান যে, উনার শরীর মুবারকের ছায়া মুবারক ছিলো না। যখন তিনি চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা তিনি (আপাদমস্তক) নূর।"

দলীল-
√ নাসীমুর রিয়াজ।

(২৩) ওলীউল কামিল, আল্লামা মুহম্মদ বিন ছিবান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

وانه لا فييء له

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ বৈশিষ্ট্য এই যে, উনার ছায়া মুবারক ছিলো না।"

দলীল-
√ ইসআফুর রাগেবীন।

(২৪) বিখ্যাত সুফী সাধক, আল্লামা জালালুদ্দীন রুমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

چو فناشي از فقر. پيرا يه او محمد. وار بے سايه بود

অর্থ: যে ব্যক্তি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জাত মুবারকে ফানা হবে, সে ব্যক্তিও উনার মত ছায়াহীন হয়ে যাবে।

দলীল-
√ মসনবী শরীফ

(২৫) আল্লামা ইমাম রাগিব ইস্পাহানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ومن اسماءه صلي الله عليه و سلم النور قبل من خصاءصه صلي الله عليه و سلم انه اذا مشي في الشمس لاينظر له ظل

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক উনাদের মধ্যে একটি নাম মুবারক হলো নূর। বলা হয়েছে, উনার বৈশিষ্ট্য সমূহের মধ্যে একটি বৈশিষ্ট্য এই, উনি রোদে গেলে উনার ছায়া মুবারক দৃষ্টিগোচর হতো না।"

দলীল-
√ মুফরাদাত ৩১৭ পৃষ্ঠা ।

এছাড়া আরো হাজার হাজার কিতাব মুবারকে বর্নিত আছে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকের ছায়া মুবারক ছিলো না।

দলীল-
(২৬) নূরুল আবছার ফী মানাক্বেবে নাবিয়্যিল আতহার।

(২৭) শরহে মছনবী শরীফ।

(২৮) ফতহুল আজীজ।

(২৯) আনওয়ারে মুহম্মদীয়া

(৩০) মিনহাজে মুহম্মদীয়া

(৩১) মুতাউলিউল মুসাররাত

(৩২) সীরাতে হলবীয়া

(৩৩) আল ইকতেবাছ

(৩৪) কিতাবুল হামছীন ফি আহওয়ালিল নাফসিন নাফিস।
ইত্যাদি..

শুধুতাই নয় , এত বিপুল পরিমান বর্ননার কারনে ওহাবী দেওবন্দী দের প্রধান মুরুব্বী রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী এই বর্ননাকে মুতাওয়াতির বর্ননা মেনে নিয়েছে।

মৌলবী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী লিখেছে --

بتواتر ثابت ثد كه انحضرت صلي الله عليه و سسلم سايه ند اثتند- وظاهر است كه بجز نور همه اجسام ظل مي دارند

অর্থ-- একথা মুতাওয়াতির বর্ননা দ্বারা প্রমানিত যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মোবারকের ছায়া ছিলো না। প্রকাশ থাকে যে নূরের দেহ ছাড়া সকল দেহের ছায়া থাকে।"

দলীল--
√ ইমদাদুস সুলুক ৮৬ পৃষ্ঠা |

এমনকি দেওবন্দী গুরু মৌলবী আশরাফ আলী থানবী বর্ননা করে--

يه بات مثهور ھے كه ھمارے حضرت صلي عليه و سلم كے سایه نهيی تها ( اسلءے كه) همارے حضرت صلي الله عليه و سلم صرتاپا نور هي نور تہے

অর্থ -- একথা প্রসিদ্ধ যে , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মোবারকের ছায়া ছিলো না।কেননা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপাদমস্তক নূর তথা নূরে মুজাসসাম !"

দলীল--
√ শুকরুন নি'মাহ ৩৯ পৃষ্ঠা ।

সূতরাং বিপুল পরিমান দলীল দ্বারা প্রমান হলো, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকের ছায়া মুবারক ছিলো না। এবং এ ব্যাপারে জগতের সকল উলামায়ে কিরামগন একমত। এখান যারা এই মতের বিরোধিতা করবে তারা হাদীস শরীফ অস্বীকার করে মুরতাদ হয়ে যাবে।

অনেকে আবার উক্ত হাদীস শরীফ জয়িফ বা মওজু বলার অপচেষ্টা করে। নাউযুবিল্লাহ !!

এত ব্যাপক সংখ্যাক উলামায়ে কিরাম, হাফিজে হাদীস গনের ঐক্যমত্যের বিপরীতে উক্ত হাদীস শরীফ জয়ীফ বা মওজু বলা চরম স্তরের গোমরাহী।
যেটা উছুলের কিতাবে বলা হয়েছে-

فان الحديث يتقوي بتلقي الاءمة بالقبول كما اشر اليه الامام التر مذي في جامعه وصرح به علماءنا في الاصول

অর্থ: কোন হাদীস শরীফকে ইমামগন নিঃসংকোচে কবুল করে নেয়াই উক্ত হাদীস শরীফ খানা শক্তিশালী বা সহীহ হওয়ার প্রমান। ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "জামে" তে এদিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন আর আলেমগন তা উছুলের কিতাবে সুস্পষ্ট ভাবে বর্ননা করেছেন।"

এই উসূল অনুযায়ী আমরা দেখলাম অগনিত ইমাম মুস্তাহিদগন হাদীস শরীফের ব্যাপারে একমত। এমনকি দেওবন্দী মৌলবীদের গুরুরাও মুতওয়াতির বর্ননা হিসাবে উক্ত হাদীস শরীফ মেনে নিয়েছে।
সূতরাং এরপরও যারা বলবে, উক্ত হাদীস শরীফ খানা সহীহ নয়, তারা হাদীস শরীফের উছুল সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ।

এবার আসুন ছায়া মুবারক না থাকার কারন :

দেখুন ছায়া মুবারক না থাকার কারন হিসাবে উলামে কিরামগন যেটা বলেছেন সেটা হচ্ছে,
لا انه كان نورا

অর্থাৎ তিনি ছিলেন নূর। আর নূরের দেহের ছায়া থাকে না। সুবহানাল্লাহ্ !!!
এই মতটাও কিন্তু দেওবন্দী আশরাফ আলী থানবী এবং রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী মেনে নিয়েছে। তাদের মতেও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকের ছায়া না থাকার কারন হচ্ছে, তিনি হচ্ছেন আপাদমস্তক নূর বা নূরে মুজাসসাম। সূতরাং নূর বিরোধীদের একটি দাঁতভাঙ্গা জবাবও এরই মাধ্যমে দেয়া হলো।

এখন যে সকল বাতিল ফির্কা এই নোটে বর্নিত উক্ত হাদীস শরীফকে অস্বীকার করতে চাও, তাদের কমপক্ষে তিনটা জিনিস প্রমান করে দেখাতে হবে। প্রমান করতে না পারলে তাদের কোন বক্তব্য গ্রহনযোগ্য নয়। তিনটা বিষয় হচ্ছে--

(১) আপনাদের এমন হাদীস পেশ করতে হবে, যেখানে সরাসরি বলা আছে, "চন্দ্র এবং সূর্যের আলোতে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া দেখা যেত।

(২) অথবা, আমি যে ৩৪ জন ইমাম এবং মুহাদ্দিস, হাফিজে হাদিস উনাদের বক্তব্য দিয়েছি তাদের বিপরীতে উনাদের চাইতে বেশি গ্রহনযোগ্য কমপক্ষে ৩৫ জন মুহাদ্দিসের বক্তব্য দেখাতে হবে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া ছিল।

(৩) অথবা, উক্ত ৩৪ জন ইমামকে উনাদের চাইতে বেশি দক্ষ ইমামের উক্তি দ্বারা অগ্রহনযোগ্য প্রমান করে দেখাতে হবে।
নাউযুবিল্লাহ !!

যদি তা পারো তবে এই বিষয়ে আপত্তি করো। অন্যথায় এই আক্বীদার বিরোধিতা করা নিঃসন্দেহে কাট্টা কুফরী হবে।


হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রথম নূর হিসেবে সৃষ্টি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে অকাট্য দলীল সমৃদ্ধ এই নোটটা পড়ুন-

http://www.facebook.com/notes/noor-e-julfikar/হাবীবুল্লাহ-হুজুর-পাক-ছল্লাল্লাহু-আলাইহি-ওয়া-সাল্লাম-উনাকে-সর্বপ্রথম-নূর-হিসাবে/1494211627464548/?refid=21&ref=bookmark


আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের বিভিন্ন আক্বীদা বিষয়ক তথ্য পেতে নিম্নোক্ত পেজের সাথে থাকুন-

http://www.facebook.com/profile.php?id=545307258871489&ref=bookma

আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত।

আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন: যে ব্যক্তি দিনে এক শতবার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি (আমি প্রশংসার সাথে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি)’ পড়ে, তার গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির সমান হলেও মাফ করে দেয়া হয়। 

-সহীহ আল-বুখারী, ৮ম খন্ড, ৭৫ অধ্যায়, হাদীস নং-৪১৪আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন: যে ব্যক্তি দিনে এক শতবার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি (আমি প্রশংসার সাথে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি)’ পড়ে, তার গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির সমান হলেও মাফ করে দেয়া হয়।
-সহীহ আল-বুখারী, ৮ম খন্ড, ৭৫ অধ্যায়, হাদীস নং-৪১৪

হযরত মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ)

হযরত মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) হযরত সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ রাতে আমি স্বপ্ন দেখেছি যে, দু’ব্যাক্তি আমার নিকট এসে আমাকে এক পবিত্র ভূমিতে নিয়ে গেল। আমরা চলতে চলতে এক রক্তের নদীর কাছে পৌঁছলাম। নদীর মধ্যস্থলে এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং আরেক ব্যাক্তি নদীর তীরে, তার সামনে পাথর পড়ে রয়েছে। নদীর মাঝখানের লোকটি যখন বের হয়ে আসতে চায়, তখন তীরের লোকটি তার মুখে পাথর খন্ড নিক্ষেপ করে তাকে স্বস্থানে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এভাবে যতবার সে বেরিয়ে আসতে চায় ততবারই তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করছে আর সে স্বস্থানে ফিরে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ কে? সে বলল, যাকে আপনি নদীতে (রক্তের) দেখেছেন, সে হল সুদখোর।
সহীহ বুখারি (ইফা) হাদিস নাম্বার: ১৯৫৫
___(RB)

ওযুর ১২টি সুন্নাত:


১.নিয়্যত করা
২.বিসমিল্লাহ বলা
৩.দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া
৪.তিনবার মিসওয়াক করা
৫.তিন অন্জলি পানি দিয়ে তিনবার কুলি করা
৬.রোযাদার না হলে গড়-গড়া করা
৭.তিন অন্জলি পানি দিয়ে তিনবার নাকে পানি দেয়া
৮.দাড়ি থাকলে খিলাল করা
৯.হাত ও পায়ের আঙ্গুলি খিলাল করা
১০.সম্পুর্ণ মাথা একবার মসেহ করা
১১.কান মসেহ করা
১২.ওযুর ফরযগুলোতে তারতীব মেনে চলা(অর্থাত্‍,প্রথমে মুখ,তারপর কনুইসহ হাত ধোয়া,তারপর মাথা মসেহ করা,তারপর পা ধোয়।)আর একটি অঙ্গ শুকানোর আগে অন্য অঙ্গ ধৌত করা।(রুদ্দুল মুহতার সম্বলিত দুররে মুখতার,১ম খন্ড,২৩৫পৃষ্ঠা)

ইমামে ইশকও মুহাব্বত আ'লা হযরত রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু রচিত সর্বাধিক পঠিত না'ত সমূহের মধ্যে অন্যতম-


""" সবসে আউলা ওয়া আ'লা হামারা নবী,
সবসে বালা ওয়া ওয়ালা হামারা নবী।'''''
...........এর পূর্ণ বাংলা কাব্যানুবাদ {কোন শব্দার্থ জানার থাকলে নিচে Comment Box-লিখুন। ইনশাল্লাহ আপনার উত্তর জানান হবে}।
১. সর্ব সমীপম ও শীর্ষোত্তম আমাদের নবী
সর্ব উত্তম ও শ্রেষ্ঠোত্তম আমাদের নবী
২. স্বয়ং স্রষ্টারও প্রিয়োত্তম আমাদের নবী
দুই জগতেরও কেন্দ্রোত্তম আমাদের নবী
৩. শেষ সভারও দিন, হবে তাঁর দুত্যিতে রঙিন
আদি জ্যোতিরও প্রকাশোত্তম আমাদের নবী।
৪. খোদারও আরশে, যে সভার মধ্য আবাসে
এমন রাজন মহত্তম আমাদের নবী।
৫. সভায় যাঁর আগমন, করে সব মশাল প্রজ্বলন
সেই বিভারও আরম্ভোত্তম আমাদের নবী।
৬. যাঁর স্নাত চরণ বারি স্বর্গ অমৃত সমান
সেই পুরুষও প্রাণোত্তম আমাদের নবী।
৭. আরশ ও কুরসিরও আনন, ছিল শূন্য দর্পণ
দানিল তাঁরে রূপ যথেষ্ঠোত্তম আমাদের নবী।
৮. সৃষ্টিরও মাঝার শ্রেষ্ঠ আকার রাসূলগণ
আর সব রাসূলেরও সর্বোত্তম আমাদের নবী।
৯. সৌন্দর্য শুচিও ন্যায় যাঁর সুষমার শপথ
সেই প্রেমাস্পদ লাবণ্যোত্তম আমাদের নবী।
১০. প্রার্থণাও সব হয় বর্জন, যৎবধি না হয় তাঁহার স্মরণ
এমনি যিনি সর্বোবিদিত তিনি রূপোত্তম আমাদের নবী।
১১. কাওসার ও সালসাবিল ঝর্ণা, যাঁর দু’টি বিন্দু করুণা
সে করুণার মোহনার মহাসিন্ধু রকম আমাদের নবী।
১২. সৃষ্টিতে সবার তরে খোদা যেমন একক
তেমনি স্বর্গে ও মর্ত্যে একোত্তম তোমাদের আমাদের নবী।
১৩. যুগ মহাকালে ঘূর্ণি তলে হয়েছে রাসূলেরা বিগত-আগত
বর্ষার কালনীতে স্থায়ী চাঁদনীতে শোভিতম আমাদের নবী।
১৪. কে আছে দাতা ? দেওয়ার মতো যোগ্যতা তো চাই
প্রকৃত দাতা দানোত্তম আমাদের নবী।
১৫.কে জানে কত নক্ষত্র এলো, আর ডুবে গেল
চির ভাস্মর রবি উজ্জ্বলোত্তম আমাদের নবী।
১৬. সব আম্বিয়া রাজ, হলেন জগৎ শিরতাজ
আর সব আম্বিয়ারও রাজোত্তম আমাদের নবী।
১৭. লা-মাকান অবধি, তাঁর দ্যুতিরও চমক রুধি
প্রত্যেক পরতে দাতা চমকোত্তম আমাদের নবী।
১৮. তাবৎ মঙ্গল এর মঙ্গল, যাকে বলে সকল
সেই মঙ্গলেও মঙ্গলোত্তম আমাদের নবী।
১৯. সর্ব সমুচ্চ হতে উচ্চ যা উর্ধেরও উর্ধে
ঐ উর্ধেরও উর্ধোত্তম আমাদের নবী।
২০. আম্বিয়া তরে করি নিবেদন, ওহে স্বামীগণ
সেই নবী কি তোমাদেরও নবীপরম যে আমাদের নবী।
২১. করেছে খণ্ডন চন্দ্র আঙন যে জন
একাত্ববাদের সে নিদর্শনোত্তম আমাদের নবী।
২২. সব দিশারিরা এসেছে আলোর মাঝার
আর অন্ধ হৃদেও প্রতিফলিত্তোম আমাদের নবী।
২৩. মৃত হৃদয়ধ্বনি, যে করিলো দানিলো সঞ্জীবণী
সেই প্রাণও ত্রাতা পরম আমাদের নবী।
২৪. দুঃস্থের নিঃস্বের তরে সংবাদ দানিছে রেযা
সহায়হীনের সহায়োত্তম আমাদের নবী।
*** গদ্যানুবাদ- মুহাম্মাদ রুবায়েদ অভি।
*** কাব্যানুবাদ- মাহদী আল গালিব।

বিশেষ বিবাহ কি?


বিশেষ বিবাহ হল এমন বিবাহ যেখানে ধর্মীয় পরিচয় ব্যতিরেকে যাবতীয় কার্যাবলী যথাযথ ভাবে পালন করা হয় এবং সেক্ষেত্রে বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২ অনুসরণ করা হয় ।
কারা বিয়ে করতে পারবে এই আইনের অধীনেঃ
১. যারা কোনো ধর্মের অনুসারী নয়।
২. ভিন্ন ধর্মের দু’জন ব্যক্তি যারা ধর্ম ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে।
৩. আইনে উল্লেখিত আট ধর্ম ছাড়া অন্য যে কোনো ধর্মের ব্যক্তিরা ধর্ম ত্যগ না করেই এই বিয়ের সুবিধা নিতে পারে। যেমনঃ ব্রাহ্মরা।
৪. হিন্দু ধর্মের ভিন্ন বর্ণের দু’জন ব্যক্তি ধর্ম ত্যাগ না করেই বিশেষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।
৫. ভিন্ন ধর্মের দু’জন ব্যক্তি জদি তারা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন এই চার ধর্মের যেকোনো দুটির অনুসারী হয় তবে ধর্ম ত্যাগের ঘোষণা ছাড়াই তা করতে পারে।
এই আইনের অধীণে বিয়ের নিয়ম:
১. রেজিস্ট্রার:
বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ের জন্য সরকার কর্তৃক নিযুক্ত রেজিস্ট্রার রয়েছে।
২. নোটিশ:
বিয়ের দুই পক্ষের মধ্যে যে কোনো একটি পক্ষ রেজিস্ট্রারের কাছে ১৪ দিন আগে বিয়ের নোটিশ পাঠাবে। যদি না এই সময়ের মধ্যে কেউ আপত্তি করে থাকে তবেই বিয়ে সম্পন্ন করা যাবে।
এই আইনের অধীণে বিয়ে একটি দেওয়ানী চুক্তি সুতরাং সম্মতি অত্যন্ত জরুরী। বিয়ের দুই পক্ষ রেজিস্ট্রার ও তিনজন সাক্ষীর সামনে “আমি ‘ক’ কে আইনত স্ত্রী/ স্বামী হিসেবে গ্রহণ করছি”- এই রকম ঘোষণা দেবে। এই ক্ষেত্রে ইসলাম ধর্মে যেমন মহিলা সাক্ষী হলে হবেনা, কিংবা দুইজন মহিলা মিলে একজন পুরুষের সমান এই ধরণের বিধান নেই।
বিয়ে বিচ্ছেদ: এই আইনের অধীনে বিয়ে করলে বিয়ে বিচ্ছেদের সময় ১৮৬৯ সালের “ডিভোর্স আইন” দ্বারা বিয়ে বিচ্ছেদ সম্পাদন করতে হয়।

যরত হুজাইফা রা. থেকে বর্ণিত

হযরত হুজাইফা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ঐ সত্তার কসম যার কুদরতী হাতে আমার প্রাণ, তোমরা সৎকর্মের আদেশ করতে থাকো এবং অন্যায় কর্মের বাধা দিতে থাকো। অন্যথায় খুব শীঘ্রই হয়তো আল্লাহ্‌ তা'আলা তোমাদের উপর আযাব নাযিল করবেন। তখন তোমরা আল্লাহ্‌ তা'আলার দরবারে আযাব হটিয়ে দেওয়ার জন্য দু'আ করবে। কিন্তু তিনি কবুল করবেন না।
[তিরমিযী] 

হে আল্লাহ আমাদের সবাইকে সৎ কাজের আদেশ এবং অন্যায় কাজে বাধা দেয়ার তৌফিক দান করুন, আমীন। 

# শেয়ার করে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন #
 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ঐ সত্তার কসম যার কুদরতী হাতে আমার প্রাণ, তোমরা সৎকর্মের আদেশ করতে থাকো এবং অন্যায় কর্মের বাধা দিতে থাকো। অন্যথায় খুব শীঘ্রই হয়তো আল্লাহ্‌ তা'আলা তোমাদের উপর আযাব নাযিল করবেন। তখন তোমরা আল্লাহ্‌ তা'আলার দরবারে আযাব হটিয়ে দেওয়ার জন্য দু'আ করবে। কিন্তু তিনি কবুল করবেন না।
[তিরমিযী]
হে আল্লাহ আমাদের সবাইকে সৎ কাজের আদেশ এবং অন্যায় কাজে বাধা দেয়ার তৌফিক দান করুন, আমীন।

শপথ গ্রহ-নক্ষত্র শোভিত আকাশের,


শপথ গ্রহ-নক্ষত্র শোভিত আকাশের,

প্রতিশ্রুত দিবসের

এবং সেই দিবসের, যে উপস্থিত হয় ও যাতে উপস্থিত হয়।

অভিশপ্ত হয়েছে গর্ত ওয়ালারা অর্থাৎ,

অনেক ইন্ধনের অগ্নিসংযোগকারীরা।

যখন তারা তার কিনারায় বসেছিল।

তারা বিশ্বাসীদের সাথে যা করেছিল, তা নিরীক্ষণ করছিল।

তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল,

যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের ক্ষমতার মালিক, আল্লাহর সামনে রয়েছে সবকিছু।

যারা মুমিন পুরুষ ও নারীকে নিপীড়ন করেছে, অতঃপর তওবা করেনি, তাদের জন্যে আছে জাহান্নামের শাস্তি, আর আছে দহন যন্ত্রণা।

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।

নিশ্চয় তোমার পালনকর্তার পাকড়াও অত্যন্ত কঠিন।

তিনিই প্রথমবার অস্তিত্ব দান করেন এবং পুনরায় জীবিত করেন।

তিনি ক্ষমাশীল, প্রেমময়;

মহান আরশের অধিকারী।

তিনি যা চান, তাই করেন।

আপনার কাছে সৈন্যবাহিনীর ইতিবৃত্ত পৌছেছে কি?

ফেরাউনের এবং সামুদের?

বরং যারা কাফের, তারা মিথ্যারোপে রত আছে।

আল্লাহ তাদেরকে চতুর্দিক থেকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।

বরং এটা মহান কুরআন,

লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ।

[আল কুরআন: সূরা আল বুরূজ, আয়াত ১-২২] প্রতিশ্রুত দিবসের
এবং সেই দিবসের, যে উপস্থিত হয় ও যাতে উপস্থিত হয়।
অভিশপ্ত হয়েছে গর্ত ওয়ালারা অর্থাৎ,
অনেক ইন্ধনের অগ্নিসংযোগকারীরা।
যখন তারা তার কিনারায় বসেছিল।
তারা বিশ্বাসীদের সাথে যা করেছিল, তা নিরীক্ষণ করছিল।
তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল,
যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের ক্ষমতার মালিক, আল্লাহর সামনে রয়েছে সবকিছু।
যারা মুমিন পুরুষ ও নারীকে নিপীড়ন করেছে, অতঃপর তওবা করেনি, তাদের জন্যে আছে জাহান্নামের শাস্তি, আর আছে দহন যন্ত্রণা।
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।
নিশ্চয় তোমার পালনকর্তার পাকড়াও অত্যন্ত কঠিন।
তিনিই প্রথমবার অস্তিত্ব দান করেন এবং পুনরায় জীবিত করেন।
তিনি ক্ষমাশীল, প্রেমময়;
মহান আরশের অধিকারী।
তিনি যা চান, তাই করেন।
আপনার কাছে সৈন্যবাহিনীর ইতিবৃত্ত পৌছেছে কি?
ফেরাউনের এবং সামুদের?
বরং যারা কাফের, তারা মিথ্যারোপে রত আছে।
আল্লাহ তাদেরকে চতুর্দিক থেকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।
বরং এটা মহান কুরআন,
লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ।
[আল কুরআন: সূরা আল বুরূজ, আয়াত ১-২২]

মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

‎< একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়াত শরীফ , শানে নযুল এবং কিঞ্চিৎ বিশ্লেষণ >

মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

يايها الذين امنوا ادخلوا في السلم كافة ولا تتبعوت خطوات الشطان انه لكم عدو مبين 

অর্থ: হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ কর। শয়তানকে অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।" 

[ সূরা বাক্বারা ২০৮] 

শানে নযুল : একবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খেদমতে কিছু উটের গোস্ত হাদিয়া আসলো। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বৈশিষ্ট্য ছিলো কিছু হাদীয়া আসলে কিছুটা নিজে রেখে বাকি সবগুলো ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের মধ্যে বন্টন করে দিতেন। ওই দিনও উটের গোস্ত সমূহ বন্টন করে দিলেন। উক্ত মজলিসে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ছাহাবী আব্দুল্লাহ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু। তিনি পূর্বে ইহুদী ধর্মের অনুসারী ছিলেন। ইহুদীদের জন্য উটের গোস্ত খাওয়া হারাম ছিলো। সে কারনে আব্দুল্লাহ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু কখনো উটের গোস্ত খান নাই। যেহেতু তিনি কখনো উটের গোস্ত কখনো খান নাই সেহেতু উটের গোস্ত উনার কাছে খাওয়াটা বিব্রতকর ছিলো। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমিতো কখনো উটের গোস্ত খাই নাই , আমাকে উটের গোস্ত না খাওয়া অনুমতি দিন। 
এসময় আল্লাহ পাক ওহী নাজিল করলেন-

يايها الذين امنوا ادخلوا في السلم كافة ولا تتبعوت خطوات الشطان انه لكم عدو مبين 

অর্থ: হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ কর। শয়তানকে অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।" 
[ সূরা বাক্বারা ২০৮] 

অর্থাৎ মুসলমান হতে হলে ইসলামে বিধানে পরিপূর্ণ দাখিল হতে হবে। এর বাইরে অন্যকোন বিষয় চলবে না। মুসলমানদের জন্য যেটা হালাল সেটা গ্রহণ করতে হবে।
ফিকিরের বিষয়, সাধারনভাবে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী উটের গোস্ত খাওয়া কিন্তু ফরজ,ওয়াজিব কোনটাই না। এটা একটা মুস্তাহাব সুন্নত ।
কিন্তু যেহেতু হযরত আব্দুল্লাহ বিন সালাম ইসলাম গ্রহন করেছেন সেহেতু ইসলামের বিধান উনার জন্য ফরজ হয়ে গেছে। সেটাই বলা হয়েছে ইসালামে পরিপূর্ণ দাখিল হও, শয়তানের পথ অনুসরন করো না। 
অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উটের গোস্ত গ্রহণ করলেন। সুবহানাল্লাহ্ !!!""

বিশ্লেষণ : দেখুন ইসলাম কত সুক্ষ্ম বিষয়। ইসলামের যে পবিত্র বিধান রয়েছে একজন মুসলমানের জন্য সেটা পরিপূর্ণ মেনে চলতে হবে। যদি কেউ পবিত্র ইসলামের বাইরে কোন চিন্তা চেতনা, আচার ব্যবহার, নিয়মনীতি, গ্রহণ করে সেটা কখনোই গ্রহনযোগ্য হবে না। 
কোনভাবেই হারাম গনতন্ত্র, নারী নেতৃত্ব, ভোট নির্বাচন, বেপর্দা, বেহায়াপনা, টিভি, ভিডিও, গান বাজনা, খেলাধূলা, সুদ, ঘুষ, দূর্নীতি, পহেলা বৈশাখ, পহেলা মে, বিধর্মীদের নীতি ইত্যাদি বিষয় সহ সকল হারাম নাজায়িয কাজ কোনভাবেই করা যাবে না।
যদি কেউ করে সে কুরআন শরীফের ভাষা অনুযায়ী শয়তানের পথের অনুসারী হবে। 

একারনে আমাদের উক্ত আয়াত শরীফ এবং শানে নযুলটা ভালো ভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে। তাহলেই শরীয়তের অবস্থা অনুযায়ী আমাদের অবস্থান বুঝতে পারবো।
আরো বুঝতে পারবো আমরা কতটুক ইসলামে প্রবেশ করেছি,
এবং কতটুকু শয়তানের পথে পরিচালিত হচ্ছি। 

আল্লাহ পাক আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন !!!‎ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়াত শরীফ , শানে নযুল এবং কিঞ্চিৎ বিশ্লেষণ >
মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
يايها الذين امنوا ادخلوا في السلم كافة ولا تتبعوت خطوات الشطان انه لكم عدو مبين
অর্থ: হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ কর। শয়তানকে অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।"
[ সূরা বাক্বারা ২০৮]
শানে নযুল : একবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খেদমতে কিছু উটের গোস্ত হাদিয়া আসলো। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বৈশিষ্ট্য ছিলো কিছু হাদীয়া আসলে কিছুটা নিজে রেখে বাকি সবগুলো ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের মধ্যে বন্টন করে দিতেন। ওই দিনও উটের গোস্ত সমূহ বন্টন করে দিলেন। উক্ত মজলিসে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ছাহাবী আব্দুল্লাহ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু। তিনি পূর্বে ইহুদী ধর্মের অনুসারী ছিলেন। ইহুদীদের জন্য উটের গোস্ত খাওয়া হারাম ছিলো। সে কারনে আব্দুল্লাহ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু কখনো উটের গোস্ত খান নাই। যেহেতু তিনি কখনো উটের গোস্ত কখনো খান নাই সেহেতু উটের গোস্ত উনার কাছে খাওয়াটা বিব্রতকর ছিলো। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমিতো কখনো উটের গোস্ত খাই নাই , আমাকে উটের গোস্ত না খাওয়া অনুমতি দিন।
এসময় আল্লাহ পাক ওহী নাজিল করলেন-
يايها الذين امنوا ادخلوا في السلم كافة ولا تتبعوت خطوات الشطان انه لكم عدو مبين
অর্থ: হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ কর। শয়তানকে অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।"
[ সূরা বাক্বারা ২০৮]
অর্থাৎ মুসলমান হতে হলে ইসলামে বিধানে পরিপূর্ণ দাখিল হতে হবে। এর বাইরে অন্যকোন বিষয় চলবে না। মুসলমানদের জন্য যেটা হালাল সেটা গ্রহণ করতে হবে।
ফিকিরের বিষয়, সাধারনভাবে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী উটের গোস্ত খাওয়া কিন্তু ফরজ,ওয়াজিব কোনটাই না। এটা একটা মুস্তাহাব সুন্নত ।
কিন্তু যেহেতু হযরত আব্দুল্লাহ বিন সালাম ইসলাম গ্রহন করেছেন সেহেতু ইসলামের বিধান উনার জন্য ফরজ হয়ে গেছে। সেটাই বলা হয়েছে ইসালামে পরিপূর্ণ দাখিল হও, শয়তানের পথ অনুসরন করো না।
অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উটের গোস্ত গ্রহণ করলেন। সুবহানাল্লাহ্ !!!""
বিশ্লেষণ : দেখুন ইসলাম কত সুক্ষ্ম বিষয়। ইসলামের যে পবিত্র বিধান রয়েছে একজন মুসলমানের জন্য সেটা পরিপূর্ণ মেনে চলতে হবে। যদি কেউ পবিত্র ইসলামের বাইরে কোন চিন্তা চেতনা, আচার ব্যবহার, নিয়মনীতি, গ্রহণ করে সেটা কখনোই গ্রহনযোগ্য হবে না।
কোনভাবেই হারাম গনতন্ত্র, নারী নেতৃত্ব, ভোট নির্বাচন, বেপর্দা, বেহায়াপনা, টিভি, ভিডিও, গান বাজনা, খেলাধূলা, সুদ, ঘুষ, দূর্নীতি, পহেলা বৈশাখ, পহেলা মে, বিধর্মীদের নীতি ইত্যাদি বিষয় সহ সকল হারাম নাজায়িয কাজ কোনভাবেই করা যাবে না।
যদি কেউ করে সে কুরআন শরীফের ভাষা অনুযায়ী শয়তানের পথের অনুসারী হবে।
একারনে আমাদের উক্ত আয়াত শরীফ এবং শানে নযুলটা ভালো ভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে। তাহলেই শরীয়তের অবস্থা অনুযায়ী আমাদের অবস্থান বুঝতে পারবো।
আরো বুঝতে পারবো আমরা কতটুক ইসলামে প্রবেশ করেছি,
এবং কতটুকু শয়তানের পথে পরিচালিত হচ্ছি।
আল্লাহ পাক আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন !!!

সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ একটি শান হচ্ছে তিনি হাজির এবং নাজির।"

সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ একটি শান হচ্ছে তিনি হাজির এবং নাজির।"

অসংখ্য দলীল থাকার পরও ওহাবী/দেওবন্দী/তাবলিগীরা এ বিষয়টা অস্বীকার করে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এসকল দেওবন্দীরা তাদের কিতাবেই হাজির এবং নাজিরের অনেক দলীল উল্লেখ করছে, যেগুলা আজ তাদের জন্য বুমেরাং হয়ে দাড়িয়েছে।

বর্তমানে দেওবন্দীদের অন্যতম গুরু হচ্ছে "মাসিক মদীনা" পত্রিকার সম্পাদক মাহীউদ্দীন খান। সে আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে একটা বই লিখেছিলো। বইটার নাম হচ্ছে "স্বপ্নযোগে রাসূল্লাল্লহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম"। এই বইতে দেওবন্দী মাহীউদ্দীন খান স্বপ্নে এবং জাগ্রত অবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিয়ারত মুবারক সম্পর্কে অনেক গুলা ঘটনা বর্ননা করেছে। এখন ওই বই থেকে একটা ঘটনা আপনাদের সামনে উল্লেখ করবো, এ ঘটনা পড়ে আপনারা হাজির নাজিরের বিষয়ে নিজেরাই বিবেকের আদালতে বিচার করুন। 
উক্ত কিতাবে বর্নিত একটি ঘটনা হুবুহু বর্ননা করা হলো-

মুফতীয়ে আজম আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার একখানা ঘটনা-
"১৯৭১ সালে হজ্ব ও রওজাপাক জিয়ারত শেষে দেশে ফিরে আসার পর একদিন কতিপয় বিশিষ্ট সাক্ষাৎপ্রর্থীর মধ্য থেকে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, রীতিমত নামাজ-দোয়ার দ্বারা আখেরী নবী হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জিয়ারত সম্ভব কিনা ?
জবাবে মুফতী সাহেব বললেন, আল্লাহ তা'য়ালার ইচ্ছা হলে তা অবশ্যই সম্ভব হতে পারে। তবে কোন উম্মতী যদি আল্লাহ ও রসূলের কোন হুকুমের প্রতি নাফরমানী না করে, এখলাছের সাথে এবাদত করে, শরীয়তের সঠিক অনুসরণ করে এবং সর্বোপরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি আন্তরিক মুহব্বত পোষন করে, তবে তাকে দর্শন প্রদান করার জন্য আল্লাহর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই আগ্রহী হয় পরেন। এরপর আবেগ আপ্লুত কন্ঠে তিনি বলেন, শুধু স্বপ্নেই নয় জাগ্রত অবস্থাতেও চর্মচক্ষেই তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখা যায়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, একদিন তিনি সকালবেলায় খানকায় বসে হাদীসের কিতাব লিখেছিলেন, হঠাৎ লক্ষ্য করলেন, হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় জ্যোতির্ময় পুরুষের বেশে খানকায় প্রবেশ করলেন এবং তাঁর প্রতি দৃষ্টিপাত করতঃ মুচকি হেসে চলে গেলেন। (একটি পূন্যময় জীবনি)

দলীল-
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৫৭ পৃষ্ঠা। 
লেখক - মাহীউদ্দীন খান দেওবন্দী (সম্পাদক মাসিক মদীনা)।
প্রকাশনা- মদীনা পবলিকেশান্স, ৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০।

দেওবন্দীদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি হাজির নাজির নাই হতে পারেন তাহলে কি করে তিনি আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার খানকায় হাজির হলেন ?

সৌজন্যেঃ-আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত - চান্দিনা, কুমিল্লা
অসংখ্য দলীল থাকার পরও এ বিষয়টা অস্বীকার করে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এসকল  তাদের কিতাবেই হাজির এবং নাজিরের অনেক দলীল উল্লেখ করছে, যেগুলা আজ তাদের জন্য বুমেরাং হয়ে দাড়িয়েছে।
বর্তমানে দেওবন্দীদের অন্যতম গুরু হচ্ছে "মাসিক মদীনা" পত্রিকার সম্পাদক মাহীউদ্দীন খান। সে আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে একটা বই লিখেছিলো। বইটার নাম হচ্ছে "স্বপ্নযোগে রাসূল্লাল্লহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম"। এই বইতে দেওবন্দী মাহীউদ্দীন খান স্বপ্নে এবং জাগ্রত অবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিয়ারত মুবারক সম্পর্কে অনেক গুলা ঘটনা বর্ননা করেছে। এখন ওই বই থেকে একটা ঘটনা আপনাদের সামনে উল্লেখ করবো, এ ঘটনা পড়ে আপনারা হাজির নাজিরের বিষয়ে নিজেরাই বিবেকের আদালতে বিচার করুন।
উক্ত কিতাবে বর্নিত একটি ঘটনা হুবুহু বর্ননা করা হলো-

মুফতীয়ে আজম আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার একখানা ঘটনা-
"১৯৭১ সালে হজ্ব ও রওজাপাক জিয়ারত শেষে দেশে ফিরে আসার পর একদিন কতিপয় বিশিষ্ট সাক্ষাৎপ্রর্থীর মধ্য থেকে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, রীতিমত নামাজ-দোয়ার দ্বারা আখেরী নবী হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জিয়ারত সম্ভব কিনা ?
জবাবে মুফতী সাহেব বললেন, আল্লাহ তা'য়ালার ইচ্ছা হলে তা অবশ্যই সম্ভব হতে পারে। তবে কোন উম্মতী যদি আল্লাহ ও রসূলের কোন হুকুমের প্রতি নাফরমানী না করে, এখলাছের সাথে এবাদত করে, শরীয়তের সঠিক অনুসরণ করে এবং সর্বোপরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি আন্তরিক মুহব্বত পোষন করে, তবে তাকে দর্শন প্রদান করার জন্য আল্লাহর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই আগ্রহী হয় পরেন। এরপর আবেগ আপ্লুত কন্ঠে তিনি বলেন, শুধু স্বপ্নেই নয় জাগ্রত অবস্থাতেও চর্মচক্ষেই তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখা যায়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, একদিন তিনি সকালবেলায় খানকায় বসে হাদীসের কিতাব লিখেছিলেন, হঠাৎ লক্ষ্য করলেন, হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় জ্যোতির্ময় পুরুষের বেশে খানকায় প্রবেশ করলেন এবং তাঁর প্রতি দৃষ্টিপাত করতঃ মুচকি হেসে চলে গেলেন। (একটি পূন্যময় জীবনি)
দলীল-
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৫৭ পৃষ্ঠা।
লেখক - মাহীউদ্দীন খান দেওবন্দী (সম্পাদক মাসিক মদীনা)।
প্রকাশনা- মদীনা পবলিকেশান্স, ৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০।
দেওবন্দীদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি হাজির নাজির নাই হতে পারেন তাহলে কি করে তিনি আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার খানকায় হাজির হলেন ?
সৌজন্যেঃ-আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত - চান্দিনা, কুমিল্লা

হযরত আনাস (রাদি আল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন,

হযরত আনাস (রাদি আল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন, 
আমি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিয়ামতের দিন আমার
জন্য সুপারিশের আবেদন জানালাম।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (হ্যাঁ)
আমি তোমার জন্য সুপারিশ করব।

আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল , আমি (সেদিন)
আপনাকে কোথায় খুঁজব।

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
প্রথমে (পুল) সিরাতের কাছে খুঁজবে।
বললাম, সেখানে যদি আপনার সাথে আমার সাক্ষাৎ
না হয় তাহলে কোথায় খুঁজব ? 
তিনি বললেন,
তাহলে আমাকে মীযানের কাছে খুঁজবে।
আমি বললাম, সেখানেও যদি আপনাকে না পাই ?
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
তাহলে হাউজের (হাউজে কাউসার) কাছে খুঁজবে। 
কারণ
আমি সেদিন এই তিন স্থানের
কোনো না কোনো স্থানে থাকবই।

(জামে তিরমিযী, হাদীস ঃ ২৪৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ঃ ১২৮২৫)

হে আল্লাহ আমাদের সবাই কে তোমার প্রান প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর সুপারিশ নসিব করাইয়,ওগো উম্মতের ধরদি নবিজি আমার আমাদের সকল কে সুপারিশ করিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করিবেন।
আমি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিয়ামতের দিন আমার
জন্য সুপারিশের আবেদন জানালাম।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (হ্যাঁ)
আমি তোমার জন্য সুপারিশ করব।
আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল , আমি (সেদিন)
আপনাকে কোথায় খুঁজব।
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
প্রথমে (পুল) সিরাতের কাছে খুঁজবে।
বললাম, সেখানে যদি আপনার সাথে আমার সাক্ষাৎ
না হয় তাহলে কোথায় খুঁজব ?
তিনি বললেন,
তাহলে আমাকে মীযানের কাছে খুঁজবে।
আমি বললাম, সেখানেও যদি আপনাকে না পাই ?
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
তাহলে হাউজের (হাউজে কাউসার) কাছে খুঁজবে।
কারণ
আমি সেদিন এই তিন স্থানের
কোনো না কোনো স্থানে থাকবই।
(জামে তিরমিযী, হাদীস ঃ ২৪৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ঃ ১২৮২৫)
হে আল্লাহ আমাদের সবাই কে তোমার প্রান প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর সুপারিশ নসিব করাইয়,ওগো উম্মতের ধরদি নবিজি আমার আমাদের সকল কে সুপারিশ করিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করিবেন।

হযরত মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) হযরত সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্নিত

হযরত মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) হযরত সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ রাতে আমি স্বপ্ন দেখেছি যে, দু’ব্যাক্তি আমার নিকট এসে আমাকে এক পবিত্র ভূমিতে নিয়ে গেল। আমরা চলতে চলতে এক রক্তের নদীর কাছে পৌঁছলাম। নদীর মধ্যস্থলে এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং আরেক ব্যাক্তি নদীর তীরে, তার সামনে পাথর পড়ে রয়েছে। নদীর মাঝখানের লোকটি যখন বের হয়ে আসতে চায়, তখন তীরের লোকটি তার মুখে পাথর খন্ড নিক্ষেপ করে তাকে স্বস্থানে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এভাবে যতবার সে বেরিয়ে আসতে চায় ততবারই তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করছে আর সে স্বস্থানে ফিরে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ কে? সে বলল, যাকে আপনি নদীতে (রক্তের) দেখেছেন, সে হল সুদখোর।
সহীহ বুখারি (ইফা) হাদিস নাম্বার: ১৯৫৫

সূরা নং- ১৭ >>সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ( ৩১ - ৪০)


=====================================
31. দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মারাত্নক অপরাধ।
32. আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।
33. সে প্রাণকে হত্যা করো না, যাকে আল্লাহ হারাম করেছেন; কিন্তু ন্যায়ভাবে। যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয়, আমি তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষমতা দান করি। অতএব, সে যেন হত্যার ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন না করে। নিশ্চয় সে সাহায্যপ্রাপ্ত।
34. আর, এতিমের মালের কাছেও যেয়ো না, একমাত্র তার কল্যাণ আকাংখা ছাড়া; সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যৌবনে পদার্পন করা পর্যন্ত এবং অঙ্গীকার পূর্ন কর। নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
35. মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দেবে এবং সঠিক দাঁড়িপালায় ওজন করবে। এটা উত্তম; এর পরিণাম শুভ।
36. যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।
37. পৃথিবীতে দম্ভভরে পদচারণা করো না। নিশ্চয় তুমি তো ভূ পৃষ্ঠকে কখনই বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না।
38. এ সবের মধ্যে যেগুলো মন্দকাজ, সেগুলো তোমার পালনকর্তার কাছে অপছন্দনীয়।
39. এটা ঐ হিকমতের অন্তর্ভূক্ত, যা আপনার পালনকর্তা আপনাকে ওহী মারফত দান করেছেন। আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য স্থির করবেন না। তাহলে অভিযুক্ত ও আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বিতাড়িত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবেন।
40. তোমাদের পালনকর্তা কি তোমাদের জন্যে পুত্র সন্তান নির্ধারিত করেছেন এবং নিজের জন্যে ফেরেশতাদেরকে কন্যারূপে গ্রহণ করেছেন? নিশ্চয় তোমরা গুরুতর গর্হিত কথাবার্তা বলছ।

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মত মানুষ দাবি করে। নাউযুবিল্লাহ !!


তাদের একমাত্র দলীল হচ্ছে একটি আয়াত শরীফ -
قل انما انا بشر مثلكم
অর্থ: হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি বলুন ! আমি তোমাদের মেছাল বাশার/মানুষ ।
এই উক্তি দিয়ে ওহাবীরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মত মানুষ সাব্যস্ত করতে চায়।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে কুরআন শরীফে অন্যান্য কিছু আয়াত শরীফ আছে তার শাব্দিক অর্থ গুলা হচ্ছে--
(১) আদম আলাইহিস সালাম বলেছেন--
ربنا ظلمنا انفسنل
অর্থ: হে আমার রব! আমি নিজের প্রতি জুলুম করেছি।
(২) হযরত ইউনূছ আলাইহিস সালাম বলেন--
اني كنت من الظالمين
অর্থ: নিশ্চয়ই আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছি।
এখন ওহাবীদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
তোমরা কি এটা বলতে পারবে যে, আদম আলাইহিস সালাম জালিম ছিলেন ??
তোমরা কি একথা বলতে পারবে যে, হযরত ইউনুছ আলাইহিস সালাম তিনি জালিম দের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ??
যদি শাব্দিক অর্থের জন্য এমন কথা বলতে না পারো, তবে কোন সহাসে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মত মানুষ বলো ????

আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে

মানুষের উপর এমন কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না।

আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করবো অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।

আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।

আমি অবিশ্বাসীদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছি শিকল, বেড়ি ও প্রজ্বলিত অগ্নি।

নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে কাফুর মিশ্রিত পানপাত্র।

এটা একটা ঝরণা, যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ পান করবে, তারা একে প্রবাহিত করবে।

তারা মান্নত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে, যেদিনের অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী।

তারা আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে।

তারা বলে, কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।

আমরা আমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের ভয় রাখি।

অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে সেদিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে দিবেন সজীবতা ও আনন্দ।

এবং তাদের সবরের প্রতিদানে তাদেরকে দিবেন জান্নাত ও রেশমী পোশাক।

তারা সেখানে সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে রৌদ্র ও শৈত্য অনুভব করবে না।

তার বৃক্ষছায়া তাদের উপর ঝুঁকে থাকবে এবং তার ফলসমূহ তাদের আয়ত্তাধীন রাখা হবে।

তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রূপার পাত্রে এবং স্ফটিকের মতো পানপাত্রে।

রূপালী স্ফটিক পাত্রে, পরিবেশনকারীরা তা পরিমাপ করে পূর্ণ করবে।

তাদেরকে সেখানে পান করানো হবে “যানজাবীল” মিশ্রিত পানপাত্র।

এটা জান্নাতস্থিত ‘সালসাবীল” নামক একটি ঝরণা।

তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরগণ। আপনি তাদেরকে দেখে মনে করবেন যেন বিক্ষিপ্ত মনি-মুক্তা।

আপনি যখন সেখানে দেখবেন, তখন নেয়ামতরাজি ও বিশাল রাজ্য দেখতে পাবেন।

তাদের আবরণ হবে চিকন সবুজ রেশম ও মোটা সবুজ রেশম এবং তাদেরকে পরিধান করোনো হবে রৌপ্য নির্মিত কংকণ এবং তাদের পালনকর্তা তাদেরকে পান করাবেন “শরাবান-তহুরা”।

এটা তোমাদের প্রতিদান। তোমাদের প্রচেষ্টা স্বীকৃতি লাভ করেছে।

[আল কুরআন: সূরা আদ-দাহর , আয়াত ১-২২]মানুষের উপর এমন কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না।
আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করবো অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।
আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।
আমি অবিশ্বাসীদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছি শিকল, বেড়ি ও প্রজ্বলিত অগ্নি।
নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে কাফুর মিশ্রিত পানপাত্র।
এটা একটা ঝরণা, যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ পান করবে, তারা একে প্রবাহিত করবে।
তারা মান্নত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে, যেদিনের অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী।
তারা আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে।
তারা বলে, কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।
আমরা আমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের ভয় রাখি।
অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে সেদিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে দিবেন সজীবতা ও আনন্দ।
এবং তাদের সবরের প্রতিদানে তাদেরকে দিবেন জান্নাত ও রেশমী পোশাক।
তারা সেখানে সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে রৌদ্র ও শৈত্য অনুভব করবে না।
তার বৃক্ষছায়া তাদের উপর ঝুঁকে থাকবে এবং তার ফলসমূহ তাদের আয়ত্তাধীন রাখা হবে।
তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রূপার পাত্রে এবং স্ফটিকের মতো পানপাত্রে।
রূপালী স্ফটিক পাত্রে, পরিবেশনকারীরা তা পরিমাপ করে পূর্ণ করবে।
তাদেরকে সেখানে পান করানো হবে “যানজাবীল” মিশ্রিত পানপাত্র।
এটা জান্নাতস্থিত ‘সালসাবীল” নামক একটি ঝরণা।
তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরগণ। আপনি তাদেরকে দেখে মনে করবেন যেন বিক্ষিপ্ত মনি-মুক্তা।
আপনি যখন সেখানে দেখবেন, তখন নেয়ামতরাজি ও বিশাল রাজ্য দেখতে পাবেন।
তাদের আবরণ হবে চিকন সবুজ রেশম ও মোটা সবুজ রেশম এবং তাদেরকে পরিধান করোনো হবে রৌপ্য নির্মিত কংকণ এবং তাদের পালনকর্তা তাদেরকে পান করাবেন “শরাবান-তহুরা”।
এটা তোমাদের প্রতিদান। তোমাদের প্রচেষ্টা স্বীকৃতি লাভ করেছে।
[আল কুরআন: সূরা আদ-দাহর , আয়াত ১-২২]