NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযুর্গী সম্মান মুবারক-

‎সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযুর্গী সম্মান মুবারক-

-যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক করেন,

قُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى .
“(হে আমার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন! আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না, প্রতিদান চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। বরং এটা চিন্তা করাটাও কুফরী হবে। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও, যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি রেযামন্দি লাভ করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে আমার নিকট আত্মীয়-স্বজন তথা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-২৩)

আর যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,

وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِيْ لِحُبِّيْ. فَأَحِبُّوْنِيْ لِحُبِّ اللهِ
“তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমাকে মুহব্বত করো। আর তোমরা আমার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ, আল মু’জামুল কাবীর শরীফ, শু’য়াবুল ঈমান শরীফ)

এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা গেলো যে, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক পেতে হলে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!

মূলত উনাদের মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে পবিত্র ঈমান। যারা উনাদেরকে মুহব্বত করে তারাই ঈমানদার আর যারা উনাদেরকে মুহব্বত করেনা তারা ঈমানদার নয়; বরং মুনাফিক্ব ও কাফির।

সেটাই বলা হয়েছে,
حُبُّ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِيْمَانٌ.
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা হচ্ছে ঈমান। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি এই আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক্ব। তাই উনার মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে ঈমান।

যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে, তা’যীম-তাকরীম করবে সে ঈমানদার। আর যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে না, তা’যীম-তাকরীম করবে না সে মুনাফিক্ব-কাফির। কেননা তিনি হচ্ছেন হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। এই সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] دَعَا رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حَسَنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حُسَيْنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ: اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أهل بَيْتِي

“হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।

তিনি বলেন, যখন [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] - এই পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হলো, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদেরকে ডেকে এনে ইরশাদ মুবারক করলেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! উনার হচ্ছেন, আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম।” (পবিত্র মুসলিম শরীফ)

১। জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম:

মুসলমান মহিলাদের সবার জানা উচিত তথা জানাটা ফরয- কে জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদা বা প্রধান। যিনি কুল-কায়িনাতের নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, কলিজার টুকরা, নয়নের মণি হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হলেন জান্নাতবাসিনী মহিলাদের প্রধান তথা সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!

উনার বুযুর্গী, সম্মান, মর্যাদা, মর্তবা, শান-শুয়ূনাত, খুছূছিয়াত, বৈশিষ্ট্য, পবিত্রতা, আজমত, হুরমত বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।

কাজেই, মুসলমান মা-বোনদের উচিত উনার জীবনী মুবারক জানা এবং উনার আমল-আখলাক গ্রহণ করে জান্নাতী হওয়ার জন্য কোশেশ করা।

২। বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের মর্যাদা স্বয়ং আরশে আযীম থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিনি সম্মানিতা আওলাদ, নয়নের মণি সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মর্যাদা মুবারক কতটুকু বেমেছাল। সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কোনো বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসানের পক্ষে সম্ভব নয়।

পবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ উনার ২০ তারিখ যমীনে তাশরীফ এনে সমস্ত পুরুষ ও নারীজাতিকে তিনি ধন্য করেছেন। গোটা উম্মাহর জন্য তিনি হচ্ছেন সুমহান হিদায়েতের নূরানী আলোকবর্তিকা। উনার যে বেমেছাল পর্দা, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি খিদমত, সহানুভূতিশীলতা সেটা আজীবন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে।

কাজেই আমাদের সমস্ত মুসলমানদের উচিত- উনার সম্পর্কে বেশি বেশি আলোচনা করে মানুষকে জানানো এবং উনার সম্পর্কে বেশি বেশি মাহফিল করা যাতে উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করে যেন হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারি।

৩। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল কন্যাই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ:

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৪ জন কন্যা সন্তান ছিলেন। ১. হযরত জয়নব আলাইহাস সালাম ২. হযরত রুকাইয়া আলাইহাস সালাম ৩. হযরত উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম ৪. হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম।
মূলত, উনারা সকলেই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, ত্বহিরা, ত্বইয়্যিবাহ।

অথচ উম্মাহ শুধুমাত্র হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কেই কিছুটা অবগত। অন্যদের সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। অর্থাৎ অন্যদের সম্পর্কে কোথাও কোনো আলোচনা হয় না।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এর পিছনে ইহুদী মুশরিক, নাছারা ও বাতিল ফিরকা শিয়াদের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র কাজ করছে। তাই আমাদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে, এদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে উনাদের সকলের মুবারক শান, মান, ফাযায়িল-ফযীলত ও পরিচিতি সারাবিশ্বের সকলের সম্মুখে তুলে ধরা।

মানুষের ভিতর এই অনুভূতি প্রবেশ করিয়ে দেয়া যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সারাম তিনি যেমন নবীজী উনার আওলাদ, অন্যরাও উনারই আওলাদ। উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে যেমন নবীজী উনার নূরানী রক্ত মুবারক রয়েছে অন্যদের মধ্যেও তা রয়েছে।

তাহলে কেন এতো তারতম্য ও বৈষম্য? তবে হ্যাঁ, একজনের তুলনায় আরেকজনের মর্যাদা বেশি হতে পারে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি কোনো রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না।”

অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার উপর আরেকজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা দিয়েছি।” তবে সকলেই রসূল উনাদের অন্তর্ভুক্ত।

৪। সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে বিশ্বের সকল মু’মিনা মহিলাদের জন্য হাক্বীক্বী পর্দা পালন করা শিক্ষা করতে হবে:

সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি পর্দার পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার পূর্ব থেকেই পর্দা করতেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো জরুরত ব্যতীত তিনি কোথাও বের হতেন না এবং কারো সামনে তিনি যেতেন না।

এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

একদিন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বসে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আলোচনা করতেছিলেন, এমতাবস্থায় হঠাৎ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উঠে ভিতরের কামরায় গিয়ে কিছুক্ষণ পর আবার আসলেন।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো সব জানেনই, কিন্তু উম্মতদেরকে শিক্ষা দিতে হবে, বান্দা-বান্দীদেরকে শিক্ষা দিতে হবে বিধায় তিনি যখন ফিরে আসলেন তখন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনি উঠে চলে গেলেন কেন?

তিনি তখন বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এখানে তো হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এসেছিলেন আর সেজন্যই উনাকে দেখে আমি চলে গেছি। এ বিষয়টাকে স্পষ্ট করার জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন কেন? তিনি তো আপনাকে দেখতেন না, যেভাবে অন্য মানুষ দেখে থাকে। কারণ অন্যান্য মানুষের যে দৃষ্টিশক্তি রয়েছে সেই দৃষ্টিশক্তি তো উনার মধ্যে নেই। যার ফলে তিনি তো আপনাকে দেখতে পেতেন না। তখন উনি বললেন, তিনি আমাকে না দেখলেও আমি তো উনাকে দেখতাম! আর সেজন্যই আমি উঠে চলে গেছি। সুবহানাল্লাহ!

৫। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার গুণাবলী মুবারকঃ

সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ তথা জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা হচ্ছেন উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহিস সালাম! উনার লক্বব মুবারক বা গুণাবলী মুবারক অগণিত; তন্মধ্যে কয়েকটি হলো:

উম্মু আবীহা: অর্থাৎ তিনি উনার পিতা সাইয়্যিদুনা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা মাতা উনার ভূমিকায় ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

বতূল: অর্থাৎ ভোগ লিপ্সা দুনিয়া বর্জনকারিনী। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলি জান্নাহ: অর্থাৎ তিনি জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!

রদ্বিয়াহ-মারদ্বিয়াহ: অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা উনার প্রতি সন্তুষ্ট এবং তিনি উনাদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদা: শ্রেষ্ঠা। তবে সব চেয়ে বড় ও শ্রেষ্ঠা পরিচয় হচ্ছে, তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ তথা সাইয়্যিদুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার আদরের কন্যা। সুবহানাল্লাহ!

৬। মুসলমানদেরকে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে যে, কিভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করতে হয়ঃ

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজোড়া জামা মুবারক তৈরি করে হাদিয়াস্বরূপ পাঠালেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছে।

উনার কাছে যখন সেই হাদিয়া মুবারক পৌঁছানো হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে একজন গরিব মহিলা এসে সাহায্য চাইলো যে, আমাকে দয়া করে একটা জামা যদি দিতেন তাহলে আমার জন্য ভালো হতো।

এখন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, উনার কাছে আগে এক সেট জামা ছিল। তিনি কোনটা দান করবেন এই মহিলাকে; নতুনটা না পুরাতনটা?

তিনি বললেন, যিনি খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি তো নাযিল করেছেন, “তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নেকী ও মুবারক সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তোমাদের পছন্দনীয় বিষয়গুলো দান না করবে।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯২)

তিনি এটা ফিকির করে সেই নতুন জামা গরিব মহিলাকে দান করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!

এই ঘটনা দ্বারা বুঝা যায় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি কতোটুকু পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করেছেন। যা বলার অপেক্ষাই রাখে না।

৭। যিনি রহমতের মূল হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা ফরযে আইনঃ

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হলেন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে এতে আরোহণ করবে সে নাজাত পাবে। যে তাতে আরোহণ করবে না সে ধ্বংস হবে।”

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত ঈমান আর বিদ্বেষ পোষণ কুফরী।”

অতএব, প্রমাণিত হয় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মুহব্বতও পবিত্র ঈমান। উনার অনুসরণ মুক্তি বা নাজাতের কারণ।

অতএব, বর্তমান সরকার যদি নাজাত পেতে চায়, মুসলমান থাকতে চায়, পবিত্র জান্নাত চায়, তাহলে তার জন্য ফরযে আইন হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা।

সরকার যদি বাংলার মহিলা জাতিকে মুক্তি দিতে চায় তাহলে ফরয হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাসভুক্ত করা।

৮। মহিলাদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালন নয়; বরং হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আদর্শই গ্রহণ করতে হবেঃ

সময়ের স্রোতে ভেসে চলছে কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালনকারী কথিত মহিলাবাদীদের দল।

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের পরিভাষায় এদেরকে আখ্যা দেয়া হয় ‘ইবনুল ওয়াক্ত’ অর্থাৎ সময়ের সন্তানরূপে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যে লিপ্ত। তবে তারা ব্যতীত, যারা পবিত্র ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে।” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ)

এখানে শপথ করা হয়েছে সময়ের। আর এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- যে বা যারা যে যুগে, যে কালে, যে সময়ে, যে অবস্থায় আছে সে বা তারা সার্বক্ষণিকভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদেরকে অনুসরণ না করে বরং সার্বক্ষণিকভাবে সময়ের স্রোতে নির্বিচারে গা ভাসিয়ে দিবে অর্থাৎ যারা ইবনুল ওয়াক্ত তারা মূলত ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

এতদ্বপ্রেক্ষিতে বলাবাহুল্য যে, বেগম রোকেয়াকে অনুসরণ করে কোনো মহিলার পক্ষেই আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বরং বর্তমান স্রোতে প্রবাহমান পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী শিক্ষা গ্রহণ করার দ্বারা নিজ আত্মমর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে ‘বেপর্দা মহিলা’ অর্থাৎ দাইয়ূছ হিসেবে পরিগণিত হবে। নাঊযুবিল্লাহ!

গোটা মুসলিম জাহানের মহিলাকুল শ্রেষ্ঠা, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাযিহিল উম্মাহ, আল বতূলু, খাতুনে জান্নাহ হযরত মা ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র থেকে পবিত্রতম দেহ মুবারক উনার অংশ মুবারক, লখতে জিগার, স্নেহের দুলালী, সাইয়্যিদ বংশ উনার উৎস ধারা।

উনার শান মান ফযীলত অপরিসীম। আজ মুসলিম বিশ্বে মুসলিম মহিলাদের যে করুণ পরিণতি, করুণ জিন্দেগী, করুণ অবমূল্যায়ন, করুণ অবহেলার পাত্রী হিসাবে কালাতিপাত করতে হচ্ছে; এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রত্যেক মুসলিমার জন্য ফরযে আইন খাতুনে জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক পাঠ করা, আলোচনা করা এবং উনাকে অনুসরণ করা।

৯ । নূরান্বিত অপরূপ সৌন্দর্য দেখে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে দীক্ষিত
হলো ইহুদী মহিলারা সুবহানাল্লাহ!

একবার কিছু ইহুদী মহিলা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাযির হয়ে আরজি পেশ করলো যে, তাদের এক বিবাহের অনুষ্ঠানে তিনি যেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাওয়ার অনুমতি দান করেন।
যে অনুষ্ঠানটি শুধু মহিলাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদী মহিলাদের আরজি কবুল করলেন।

ইহুদীদের কাজই হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া। তাই দাওয়াত দানকারিণী ইহুদী মহিলাদের উদ্দেশ্যও ভালো ছিল না।

তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ইহুদী মহিলারা দামি দামি পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে এবং হীরা-মণি, মুক্তা ও স্বর্ণালঙ্কারে সুসজ্জিত হয়ে অনুষ্ঠানে যাবে। আর তাদের ধারণা হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো তাদের মতো অতো সাজসজ্জা ও দুনিয়াবী রছম-রেওয়াজ পছন্দ করেন না। অতএব, তিনি স্বাভাবিক লেবাছ মুবারক-এ-ই অনুষ্ঠানে আসবেন। যার ফলে উনার কাছে তারা তাদের বড়ত্ব, মহত্ব প্রকাশ করে উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে। নাঊযুবিল্লাহ!

ইহুদী মহিলাদের এই কূট চক্রান্ত কেউ না জানলেও যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার যিনি হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তো ঠিকই জানেন।

ফলে বিবাহ অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কারাদি পাঠিয়ে দিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে।

অর্থাৎ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি এই পোশাক ও অলঙ্কার আপনার মেয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন এবং আরো বলেছেন, তিনি যেন এগুলো পরিধান করে ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে যান। সুবহানাল্লাহ!

সত্যিই বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার পরিধান করে যথাসময়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে গেলেন। আল্লাহু আকবার! বেহেশতী মানুষ উনার শরীর মুবারকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার কী অপরূপ সৌন্দর্য প্রকাশ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না! তাও আবার সাধারণ বেহেশতী নন, বেহেশতবাসিনী মহিলাকুল উনাদের সাইয়্যিদাহ এবং পোশাক এবং অলঙ্কারও তদ্রƒপ মর্যাদাম-িত।

শুধু কী তাই, তিনি হলেন সমস্ত সৌন্দর্যের মূল- আজমালুল কায়িনাত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই পবিত্র ও নূরানী দেহ মুবারকেরই অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই তিনি যখন উনার এই বেমেছাল শান ও সৌন্দর্য নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে তাশরীফ নিলেন ইহুদী মহিলারা দেখতে পেলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার চেহারা মুবারক হতে নূর বিচ্ছুরিত হচ্ছে এবং উনার অসাধারণ পোশাক ও অলঙ্কার দেখে তারা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, হে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম! এ পোশাক ও অলঙ্কারগুলো আপনি কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, কেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে হাদিয়া করেছেন। তারা পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, আপনার আব্বা এগুলো কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বয়ং মহান খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে হাদিয়া পাঠিয়েছেন। এটা শুনে দাওয়াত দানকারিণী মূল যে ইহুদী মহিলা সে তার স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। উনাদের দেখাদেখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত ইহুদী মহিলা তাদের স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!

সেই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ হলো পবিত্র জুমাদাল উখরা মাস উনার ২০ তারিখে জুমুয়ার দিন ছুবহে সাদিকের সময় আর উনার সুমহান পবিত্র বিছাল শরীফ হলো পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ৩ তারিখে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম অর্থাৎ সোমবার শরীফ বাদ আছর।

কাজেই উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা জেনে-বুঝে উনাকে উত্তমভাবে অনুসরণ করে হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার জন্য প্রত্যেককেই উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ, ওয়াজ শরীফ ইত্যাদির ব্যবস্থা করে এই দিবসসমূহের যে বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাক্বীনা, মাগফিরাত মুবারক রয়েছে তা লাভ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

১০। সরকারকে বলছি- হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করুনঃ

হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত হচ্ছে ‘ঈমান’।

উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকল মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব। তাই সকল মুসলমানের জন্য উনাদের জীবনী মুবারক জানাও ফরয-ওয়াজিব।

সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- উনার পবিত্র জীবনী মুবারক জেনে উনার যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ-অনুকরণ করা।

আর এজন্য উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করার বিকল্প নেই।

এজন্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস থেকে বিধর্মীদের জীবনী বাদ দিয়ে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করুন।‎
-যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক করেন,
قُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى .
“(হে আমার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন! আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না, প্রতিদান চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। বরং এটা চিন্তা করাটাও কুফরী হবে। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও, যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি রেযামন্দি লাভ করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে আমার নিকট আত্মীয়-স্বজন তথা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-২৩)
আর যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِيْ لِحُبِّيْ. فَأَحِبُّوْنِيْ لِحُبِّ اللهِ
“তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমাকে মুহব্বত করো। আর তোমরা আমার মুহব্বত-মারিফাত মুবারক পেতে হলে, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি পেতে হলে আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ, আল মু’জামুল কাবীর শরীফ, শু’য়াবুল ঈমান শরীফ)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা গেলো যে, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক পেতে হলে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!
মূলত উনাদের মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে পবিত্র ঈমান। যারা উনাদেরকে মুহব্বত করে তারাই ঈমানদার আর যারা উনাদেরকে মুহব্বত করেনা তারা ঈমানদার নয়; বরং মুনাফিক্ব ও কাফির।
সেটাই বলা হয়েছে,
حُبُّ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِيْمَانٌ.
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা হচ্ছে ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি এই আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক্ব। তাই উনার মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে ঈমান।
যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে, তা’যীম-তাকরীম করবে সে ঈমানদার। আর যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করবে না, তা’যীম-তাকরীম করবে না সে মুনাফিক্ব-কাফির। কেননা তিনি হচ্ছেন হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। এই সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] دَعَا رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حَسَنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ حُسَيْنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ: اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أهل بَيْتِي
“হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, যখন [نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ] - এই পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হলো, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদেরকে ডেকে এনে ইরশাদ মুবারক করলেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! উনার হচ্ছেন, আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম।” (পবিত্র মুসলিম শরীফ)
১। জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম:
মুসলমান মহিলাদের সবার জানা উচিত তথা জানাটা ফরয- কে জান্নাতবাসী মহিলাদের সাইয়্যিদা বা প্রধান। যিনি কুল-কায়িনাতের নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, কলিজার টুকরা, নয়নের মণি হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হলেন জান্নাতবাসিনী মহিলাদের প্রধান তথা সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!
উনার বুযুর্গী, সম্মান, মর্যাদা, মর্তবা, শান-শুয়ূনাত, খুছূছিয়াত, বৈশিষ্ট্য, পবিত্রতা, আজমত, হুরমত বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।
কাজেই, মুসলমান মা-বোনদের উচিত উনার জীবনী মুবারক জানা এবং উনার আমল-আখলাক গ্রহণ করে জান্নাতী হওয়ার জন্য কোশেশ করা।
২। বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের মর্যাদা স্বয়ং আরশে আযীম থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিনি সম্মানিতা আওলাদ, নয়নের মণি সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মর্যাদা মুবারক কতটুকু বেমেছাল। সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কোনো বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসানের পক্ষে সম্ভব নয়।
পবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ উনার ২০ তারিখ যমীনে তাশরীফ এনে সমস্ত পুরুষ ও নারীজাতিকে তিনি ধন্য করেছেন। গোটা উম্মাহর জন্য তিনি হচ্ছেন সুমহান হিদায়েতের নূরানী আলোকবর্তিকা। উনার যে বেমেছাল পর্দা, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি খিদমত, সহানুভূতিশীলতা সেটা আজীবন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে।
কাজেই আমাদের সমস্ত মুসলমানদের উচিত- উনার সম্পর্কে বেশি বেশি আলোচনা করে মানুষকে জানানো এবং উনার সম্পর্কে বেশি বেশি মাহফিল করা যাতে উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করে যেন হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারি।
৩। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল কন্যাই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৪ জন কন্যা সন্তান ছিলেন। ১. হযরত জয়নব আলাইহাস সালাম ২. হযরত রুকাইয়া আলাইহাস সালাম ৩. হযরত উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম ৪. হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম।
মূলত, উনারা সকলেই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, ত্বহিরা, ত্বইয়্যিবাহ।
অথচ উম্মাহ শুধুমাত্র হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কেই কিছুটা অবগত। অন্যদের সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। অর্থাৎ অন্যদের সম্পর্কে কোথাও কোনো আলোচনা হয় না।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এর পিছনে ইহুদী মুশরিক, নাছারা ও বাতিল ফিরকা শিয়াদের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র কাজ করছে। তাই আমাদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে, এদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে উনাদের সকলের মুবারক শান, মান, ফাযায়িল-ফযীলত ও পরিচিতি সারাবিশ্বের সকলের সম্মুখে তুলে ধরা।
মানুষের ভিতর এই অনুভূতি প্রবেশ করিয়ে দেয়া যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সারাম তিনি যেমন নবীজী উনার আওলাদ, অন্যরাও উনারই আওলাদ। উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে যেমন নবীজী উনার নূরানী রক্ত মুবারক রয়েছে অন্যদের মধ্যেও তা রয়েছে।
তাহলে কেন এতো তারতম্য ও বৈষম্য? তবে হ্যাঁ, একজনের তুলনায় আরেকজনের মর্যাদা বেশি হতে পারে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি কোনো রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না।”
অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার উপর আরেকজন রসূল আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা দিয়েছি।” তবে সকলেই রসূল উনাদের অন্তর্ভুক্ত।
৪। সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে বিশ্বের সকল মু’মিনা মহিলাদের জন্য হাক্বীক্বী পর্দা পালন করা শিক্ষা করতে হবে:
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি পর্দার পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার পূর্ব থেকেই পর্দা করতেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো জরুরত ব্যতীত তিনি কোথাও বের হতেন না এবং কারো সামনে তিনি যেতেন না।
এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
একদিন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বসে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আলোচনা করতেছিলেন, এমতাবস্থায় হঠাৎ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উঠে ভিতরের কামরায় গিয়ে কিছুক্ষণ পর আবার আসলেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো সব জানেনই, কিন্তু উম্মতদেরকে শিক্ষা দিতে হবে, বান্দা-বান্দীদেরকে শিক্ষা দিতে হবে বিধায় তিনি যখন ফিরে আসলেন তখন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনি উঠে চলে গেলেন কেন?
তিনি তখন বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এখানে তো হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এসেছিলেন আর সেজন্যই উনাকে দেখে আমি চলে গেছি। এ বিষয়টাকে স্পষ্ট করার জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন কেন? তিনি তো আপনাকে দেখতেন না, যেভাবে অন্য মানুষ দেখে থাকে। কারণ অন্যান্য মানুষের যে দৃষ্টিশক্তি রয়েছে সেই দৃষ্টিশক্তি তো উনার মধ্যে নেই। যার ফলে তিনি তো আপনাকে দেখতে পেতেন না। তখন উনি বললেন, তিনি আমাকে না দেখলেও আমি তো উনাকে দেখতাম! আর সেজন্যই আমি উঠে চলে গেছি। সুবহানাল্লাহ!
৫। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার গুণাবলী মুবারকঃ
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ তথা জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা হচ্ছেন উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহিস সালাম! উনার লক্বব মুবারক বা গুণাবলী মুবারক অগণিত; তন্মধ্যে কয়েকটি হলো:
উম্মু আবীহা: অর্থাৎ তিনি উনার পিতা সাইয়্যিদুনা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা মাতা উনার ভূমিকায় ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
বতূল: অর্থাৎ ভোগ লিপ্সা দুনিয়া বর্জনকারিনী। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলি জান্নাহ: অর্থাৎ তিনি জান্নাতী মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদা। সুবহানাল্লাহ!
রদ্বিয়াহ-মারদ্বিয়াহ: অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা উনার প্রতি সন্তুষ্ট এবং তিনি উনাদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদা: শ্রেষ্ঠা। তবে সব চেয়ে বড় ও শ্রেষ্ঠা পরিচয় হচ্ছে, তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ তথা সাইয়্যিদুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার আদরের কন্যা। সুবহানাল্লাহ!
৬। মুসলমানদেরকে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে যে, কিভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করতে হয়ঃ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজোড়া জামা মুবারক তৈরি করে হাদিয়াস্বরূপ পাঠালেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কাছে।
উনার কাছে যখন সেই হাদিয়া মুবারক পৌঁছানো হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে একজন গরিব মহিলা এসে সাহায্য চাইলো যে, আমাকে দয়া করে একটা জামা যদি দিতেন তাহলে আমার জন্য ভালো হতো।
এখন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, উনার কাছে আগে এক সেট জামা ছিল। তিনি কোনটা দান করবেন এই মহিলাকে; নতুনটা না পুরাতনটা?
তিনি বললেন, যিনি খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি তো নাযিল করেছেন, “তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নেকী ও মুবারক সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তোমাদের পছন্দনীয় বিষয়গুলো দান না করবে।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯২)
তিনি এটা ফিকির করে সেই নতুন জামা গরিব মহিলাকে দান করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এই ঘটনা দ্বারা বুঝা যায় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি কতোটুকু পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করেছেন। যা বলার অপেক্ষাই রাখে না।
৭। যিনি রহমতের মূল হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা ফরযে আইনঃ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হলেন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে এতে আরোহণ করবে সে নাজাত পাবে। যে তাতে আরোহণ করবে না সে ধ্বংস হবে।”
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত ঈমান আর বিদ্বেষ পোষণ কুফরী।”
অতএব, প্রমাণিত হয় যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মুহব্বতও পবিত্র ঈমান। উনার অনুসরণ মুক্তি বা নাজাতের কারণ।
অতএব, বর্তমান সরকার যদি নাজাত পেতে চায়, মুসলমান থাকতে চায়, পবিত্র জান্নাত চায়, তাহলে তার জন্য ফরযে আইন হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্ত শ্রেণীর সিলেবাসে পাঠ্য করা।
সরকার যদি বাংলার মহিলা জাতিকে মুক্তি দিতে চায় তাহলে ফরয হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাসভুক্ত করা।
৮। মহিলাদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালন নয়; বরং হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আদর্শই গ্রহণ করতে হবেঃ
সময়ের স্রোতে ভেসে চলছে কথিত বেগম রোকেয়া দিবস পালনকারী কথিত মহিলাবাদীদের দল।
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের পরিভাষায় এদেরকে আখ্যা দেয়া হয় ‘ইবনুল ওয়াক্ত’ অর্থাৎ সময়ের সন্তানরূপে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যে লিপ্ত। তবে তারা ব্যতীত, যারা পবিত্র ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে।” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ)
এখানে শপথ করা হয়েছে সময়ের। আর এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- যে বা যারা যে যুগে, যে কালে, যে সময়ে, যে অবস্থায় আছে সে বা তারা সার্বক্ষণিকভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদেরকে অনুসরণ না করে বরং সার্বক্ষণিকভাবে সময়ের স্রোতে নির্বিচারে গা ভাসিয়ে দিবে অর্থাৎ যারা ইবনুল ওয়াক্ত তারা মূলত ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
এতদ্বপ্রেক্ষিতে বলাবাহুল্য যে, বেগম রোকেয়াকে অনুসরণ করে কোনো মহিলার পক্ষেই আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বরং বর্তমান স্রোতে প্রবাহমান পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী শিক্ষা গ্রহণ করার দ্বারা নিজ আত্মমর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে ‘বেপর্দা মহিলা’ অর্থাৎ দাইয়ূছ হিসেবে পরিগণিত হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
গোটা মুসলিম জাহানের মহিলাকুল শ্রেষ্ঠা, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাযিহিল উম্মাহ, আল বতূলু, খাতুনে জান্নাহ হযরত মা ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র থেকে পবিত্রতম দেহ মুবারক উনার অংশ মুবারক, লখতে জিগার, স্নেহের দুলালী, সাইয়্যিদ বংশ উনার উৎস ধারা।
উনার শান মান ফযীলত অপরিসীম। আজ মুসলিম বিশ্বে মুসলিম মহিলাদের যে করুণ পরিণতি, করুণ জিন্দেগী, করুণ অবমূল্যায়ন, করুণ অবহেলার পাত্রী হিসাবে কালাতিপাত করতে হচ্ছে; এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রত্যেক মুসলিমার জন্য ফরযে আইন খাতুনে জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক পাঠ করা, আলোচনা করা এবং উনাকে অনুসরণ করা।
৯ । নূরান্বিত অপরূপ সৌন্দর্য দেখে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে দীক্ষিত
হলো ইহুদী মহিলারা সুবহানাল্লাহ!
একবার কিছু ইহুদী মহিলা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাযির হয়ে আরজি পেশ করলো যে, তাদের এক বিবাহের অনুষ্ঠানে তিনি যেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাওয়ার অনুমতি দান করেন।
যে অনুষ্ঠানটি শুধু মহিলাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদী মহিলাদের আরজি কবুল করলেন।
ইহুদীদের কাজই হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া। তাই দাওয়াত দানকারিণী ইহুদী মহিলাদের উদ্দেশ্যও ভালো ছিল না।
তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ইহুদী মহিলারা দামি দামি পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে এবং হীরা-মণি, মুক্তা ও স্বর্ণালঙ্কারে সুসজ্জিত হয়ে অনুষ্ঠানে যাবে। আর তাদের ধারণা হলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো তাদের মতো অতো সাজসজ্জা ও দুনিয়াবী রছম-রেওয়াজ পছন্দ করেন না। অতএব, তিনি স্বাভাবিক লেবাছ মুবারক-এ-ই অনুষ্ঠানে আসবেন। যার ফলে উনার কাছে তারা তাদের বড়ত্ব, মহত্ব প্রকাশ করে উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে। নাঊযুবিল্লাহ!
ইহুদী মহিলাদের এই কূট চক্রান্ত কেউ না জানলেও যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার যিনি হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তো ঠিকই জানেন।
ফলে বিবাহ অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কারাদি পাঠিয়ে দিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে।
অর্থাৎ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি এই পোশাক ও অলঙ্কার আপনার মেয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন এবং আরো বলেছেন, তিনি যেন এগুলো পরিধান করে ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে যান। সুবহানাল্লাহ!
সত্যিই বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার পরিধান করে যথাসময়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে গেলেন। আল্লাহু আকবার! বেহেশতী মানুষ উনার শরীর মুবারকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার কী অপরূপ সৌন্দর্য প্রকাশ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না! তাও আবার সাধারণ বেহেশতী নন, বেহেশতবাসিনী মহিলাকুল উনাদের সাইয়্যিদাহ এবং পোশাক এবং অলঙ্কারও তদ্রƒপ মর্যাদাম-িত।
শুধু কী তাই, তিনি হলেন সমস্ত সৌন্দর্যের মূল- আজমালুল কায়িনাত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই পবিত্র ও নূরানী দেহ মুবারকেরই অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই তিনি যখন উনার এই বেমেছাল শান ও সৌন্দর্য নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে তাশরীফ নিলেন ইহুদী মহিলারা দেখতে পেলো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার চেহারা মুবারক হতে নূর বিচ্ছুরিত হচ্ছে এবং উনার অসাধারণ পোশাক ও অলঙ্কার দেখে তারা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, হে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম! এ পোশাক ও অলঙ্কারগুলো আপনি কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, কেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে হাদিয়া করেছেন। তারা পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, আপনার আব্বা এগুলো কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বয়ং মহান খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে হাদিয়া পাঠিয়েছেন। এটা শুনে দাওয়াত দানকারিণী মূল যে ইহুদী মহিলা সে তার স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। উনাদের দেখাদেখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত ইহুদী মহিলা তাদের স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
সেই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ হলো পবিত্র জুমাদাল উখরা মাস উনার ২০ তারিখে জুমুয়ার দিন ছুবহে সাদিকের সময় আর উনার সুমহান পবিত্র বিছাল শরীফ হলো পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ৩ তারিখে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম অর্থাৎ সোমবার শরীফ বাদ আছর।
কাজেই উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা জেনে-বুঝে উনাকে উত্তমভাবে অনুসরণ করে হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার জন্য প্রত্যেককেই উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ, ওয়াজ শরীফ ইত্যাদির ব্যবস্থা করে এই দিবসসমূহের যে বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাক্বীনা, মাগফিরাত মুবারক রয়েছে তা লাভ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১০। সরকারকে বলছি- হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করুনঃ
হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত হচ্ছে ‘ঈমান’।
উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকল মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব। তাই সকল মুসলমানের জন্য উনাদের জীবনী মুবারক জানাও ফরয-ওয়াজিব।
সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- উনার পবিত্র জীবনী মুবারক জেনে উনার যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ-অনুকরণ করা।
আর এজন্য উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করার বিকল্প নেই।
এজন্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস থেকে বিধর্মীদের জীবনী বাদ দিয়ে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করুন।