NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

পৃথিবীতে থাকতেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন যে দশজন সাহাবী তাঁদেরকে একত্রে 'আশারায়ে মুবাশশারা' (সুসংবাদপ্রাপ্ত­ দশজন) বলা হয়।

পৃথিবীতে থাকতেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন যে দশজন সাহাবী তাঁদেরকে একত্রে 'আশারায়ে মুবাশশারা' (সুসংবাদপ্রাপ্ত­
দশজন) বলা হয়।

(১) হযরত আবু বকর সিদ্দীক(রাঃ)

(২) হযরত উমর ফারুক (রাঃ)

(৩) হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ)

(৪) হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ)

(৫) হযরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রাঃ)

(৬) হযরত যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাঃ)

(৭) হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ)

(৮) হযরত সা'দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ)

(৯) হযরত সাঈদ ইবনে যায়িদ (রাঃ)

(১০) হযরত আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ (রাঃ)

[] শেয়ার করে বন্ধুদের দেখান []

৫ ওয়াক্ত সুন্নাত নামাযের পুরস্কার



১. ফজরের সুন্নাত আয়েশা রা. হতে বর্ণিতঃ নবী করীম সা. বলেছেন, ফজরের দু’রাকাআ’ত সুন্নাত সমস্ত দুনিয়া ও উহার মধ্যবর্তী সকল নিয়ামত হতে উত্তম। [মুসলিম]

২. জোহরের সুন্নাত উম্মে হাবীবা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জোহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকআ’ত এবং পরে দু’রাকআ’ত সুন্নাত যথারীতি আদায় করে আল্লাহ তায়া’লা তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন। [তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ]

৩. আসরের সুন্নাত ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি আসরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকাআ’ত সুন্নাত পড়ে আল্লাহ্ তার প্রতি রহম করেন। [আবু দাউদ, তিরমিযী, আহমদ]
* হুজুর সা. আসরের সুন্নাত কখনো কখনো দু’রাকাআ’ত পড়েতন।

৪. মাগরিবের সুন্নাত যে ব্যক্তি মাগরিবের (ফরযের) পর দু’রাকাআ’ত স্ন্নুাত পড়ে তার সে নামায উপরস্থ ইল্লিয়ীনে পৌঁছানো হয়। [আবু দাউদ]

৫. ই’শার সুন্নাত যে ব্যক্তি দিনরাত ১২ রাকাআ’ত নামায পড়বে। তার জন্য বেহেশতে ঘর নির্মান করা হবে। চার রাকআ’ত জোহরের পূর্বে, দু’রাকআ’ত জোহরের পরে, দু’রাকাআ’ত মাগরিবের পরে, দু’রাকাআ’ত ই’শার পরে এবং দু’রাকাআ’ত ফজরের পূর্বে। [বায়হাকী

বান্দার চারটি আমল নিয়ে ফেরেশতারা পরস্পরে বলাবলি করে। আমল সমূহ নিম্নরূপ


* নামাযের পর মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করা।
* এক নামায শেষ করে পরবর্তী নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকা।
* জামায়া’তে নামায পড়ার আশায় পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
* এবং অসুস্থ অবস্থায় শীতের কষ্ট উপেক্ষা করেও পরিপূর্ণ অযু করা। এ চারটি কাজের মাধ্যমে নামাযী ব্যক্তি সুখে-শান্তিতে বাস করবে এবং নেককার বান্দা হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হবে। আর সে সদ্যজাত শিশুর মত নিষ্পাপ হবে। [ মিশকাত]

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি "নূরে মুজাসসাম"।



আমরা আজকের পোস্টে হাদীস শরীফ থেকে প্রমান করে দেখাবো আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার "নূর" মুবারক সৃষ্টি করেছেন।

আমাদের প্রিয় নবীজী হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূর এ মুজাস্সাম। সর্ব প্রথম আল্লাহ পাক উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন।

এ প্রসঙ্গে সহীহ হাদীস শরীফে বর্নিত আছে। হাদীস শরীফখানা বর্ননা করেন ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের উস্তাদের উস্তাদ। ইমাম আহমদ বিন হাম্মল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উস্তাদ,ইমামে আযম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ছাত্র, বিখ্যাত মুহাদ্দিস , তাবে তাবেয়ী, হাফিজে হাদীস, আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত হাদীস শরীফ গ্রন্থ "মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক" ১ম খন্ড ৯৯ পৃষ্ঠায় ১৮ নং হাদীস শরীফে।

ইমাম হযরত আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফ বর্ননা করেন হযরত মা'মার বিন রশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি বর্ননা করেন মুহম্মদ বিন মুনকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি বর্ণনা করেন বিখ্যাত ছাহাবী জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে।

হাদীস শরীফ-

عن جابر رصي الله عنه قال قلت يا رسول صلي الله عليه و سلم بابي انت و امي اخبرني عن اول شييء خلق الله تعالي قبل الاشياء قال يا جابر ان الله تعالي قد خلق قبل الاشياء نور نبيك من نوره فجعل ذالك النور يدور بالقدرة حيث شاء الله تعالي ولم يكن في ذالك الوقت لوح ولا قلم ولا جتة ولا نار ولا ملك ولا سماء ولا ارض ولا شمس ولا قمر ولا جني ولا انسي ....الي اخر

অর্থ: হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবানি হোক, আপনি আমাকে জানিয়ে দিন যে, আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি করেছেন? তিনি বলেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম সব কিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই নূর মুবারক আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা অনুযায়ী কুদরতের মাঝে ঘুরছিলো।আর সে সময় লওহো, ক্বলম, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য, মানুষ ও জ্বিন কিছুই ছিলো না। "

দলীল সমুহ ---

(১) মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক ১/৯৯, হাদীস ১৮

(২) দালায়েলুন নবুওয়াত ১৩/৬৩

(৩) মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া ১/৯

(৪) মাদারেজুন নবুওয়াত ২/২

(৫) যুরকানী ১/৪৬

(৬) রুহুল মায়ানী ১৭/১০৫

(৭) সিরাতে হলবীয়া ১/৩০

(৮) মাতালেউল মাসাররাত ২৬৫ পৃ

(৯) ফতোয়ায়ে হাদীসিয়া ১৮৯ পৃ

(১০) নি' মাতুল কুবরা ২ পৃ

(১১) হাদ্বীকায়ে নদীয়া ২/৩৭৫

(১২) দাইলামী শরীফ ২/১৯১

(১৩) মকতুবাত শরীফ ৩ খন্ড ১০০ নং মকতুব

(১৪) মওজুয়াতুল কবীর ৮৩ পৃ

(১৫) ইনছানুল উয়ুন ১/২৯

(১৬) নূরে মুহম্মদী ৪৭ পৃ

(১৭) আল আনোয়ার ফি মাওলিদিন নবী ৫ পৃ

(১৮) আফদ্বালুল ক্বোরা

(১৯) তারীখুল খমীস

(২০) নুজহাতুল মাজালিস ১ খন্ড

(২১) দুররুল মুনাজ্জাম ৩২ পৃ

(২২) কাশফুল খফা ১/৩১১

(২৩) তারিখ আননূর ১/৮

(২৪) আনোয়ারে মুহম্মদীয়া ১/৭৮

(২৫) আল মাওয়ারিদে রাবী ফী মাওলীদিন নবী

(২৬) তাওয়ারীখে মুহম্মদ

(২৭) আনফাসে রহীমিয়া

(২৮) মা' য়ারিফে মুহম্মদী

(২৯) মজমুয়ায়ে ফতোয়া ২/২৬০

(৩০) নশরুতত্বীব ৫ পৃ

(৩১) আপকা মাসায়েল আওর উনকা হাল ৩/৮৩

(৩২) শিহাবুছ ছাকিব ৫০

(৩৩) মুনছিবে ইছমত ১৬ পৃ

(৩৪) রেসালায়ে নূর ২ পৃ

(৩৫) হাদীয়াতুল মাহদী ৫৬পৃ

(৩৬) দেওবন্দী আজিজুল হক অনুবাদ কৃত বুখারী শরীফ ৫/৩

আমাদের সমাজের অনেক দেওবন্দী/ খারেজী/ওহাবী/লা মাযহাবী/ তাবলীগি ইত্যাদি বাতিল ফির্কা এই হাদীস শরীফকে নিজেদের সার্থ চরিতার্থ করার জন্য জাল/দুর্বল বলে থাক। আসুন আমরা সত্যতার মাপকাঠিতে হাদীস শরীফটির সনদ যাচাই করে দেখি।

যিনি এ হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন তিনি হচ্ছেন হাফিজে হাদীস,ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হলেন মুসলিম উম্মাহের সর্বশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীস ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর দাদা উস্তাদ। যদি বিতর্কের খাতিরে ধরেই নেই আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর কিতাবে দুর্বল হাদীস উল্লেখ করেছেন তাহলে বলতে হয় বুখারী শারীফেও দুর্বল হাদীস আছে যেহেতু ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হাদীস শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেছেন আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর কাছ থেকে। কিন্তু বুখারী শারীফে দুর্বল হাদীস আছে সেটা কেউই বলেন না। তাই "হাদীসটি দুর্বল/জাল" কথাটি ভুল প্রমাণীত হল।

হাদীসের সনদটি নিম্নরূপ :

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
↓জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়্যাল্লাহু আনহু
↓মুহাম্মাদ বিন মুঙ্কদার রাহমাতুল্লাহি আলাইহি
↓মা'মার বিন রাশীদ
↓আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

এবার দেখা যাক বর্নিত হাদীস শরীফ উনার রাবীদের সম্পর্কে মুহাদ্দীগণের মন্তব্য :

হাফিজে হাদীস,তাবে তাবেয়ীন ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি :

আহমাদ ইবন সালীহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, "আমি একবার আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি হাদীস শাস্ত্রে আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে নির্ভরযোগ্য আর কাউকে পেয়েছেন? আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, না"।

দলীল-
√তাহজিবুত তাহজিব লি হাফিয ইবনে হাজর আসক্বলানী ২/৩৩১

হাদীস শরীফ উনার অপর রাবী মা'মার বিন রাশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি :

উনার সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি বাসরার সকল হাদীস শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞের থেকে মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকে মা'মার বিন রাশীদ এর সূত্রে পাওয়া হাদীসগুলো পছন্দ করি। ইবন হাজর আসকলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে প্রখর স্বরনশক্তি সম্পন্ন এবং নির্ভরযোগ্য বলেন।

দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব ১/৫০৫
√ আসমাউর রেজাল।

উক্ত মা'মার বিন রাশীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণিত বুখারী শারীফের হাদীস সংখ্যা প্রায় ২২৫ এবং মুসলিম শারীফে বর্ণিত হাদীস সংখ্যা প্রায় ৩০০ টি।
সুবহানাল্লাহ্ !

হাদীসটির আরেক রাবী হলেন মুহাম্মাদ বিন মুকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি :

ইমাম হুমায়দি রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মুকদার রহমতুল্লাহি আলাইহি একজন হাফিজ,ইমাম জারাহ তাদীলের ইমাম ইবন মা'ঈন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, উনি নির্ভরযোগ্য।

দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব ০৯/১১০৪৮

√ আসমাউর রেজাল ।

হযরত মুনকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা বুখারী শারীফে ৩০টি এবং মুসলিম শারীফে ২২টি।
সুবহানাল্লাহ্ !!

আর মূল বর্ননাকারী হলেন হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু একজন সুপ্রসিদ্ধ সাহাবী। বুখারী ও মুসলিম শারীফের উনার থেকে বর্ণিত অনেক হাদীস আছে।

সুতরাং বুঝা গেল। হাদীসটির সকল রাবীই নির্ভরযোগ্য এবং উনাদের সূত্রে বুখারী ও মুসলিম শারীফেও হাদীস বর্ণিত আছে। সুতরাং বলা যায়, ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উভয়ের হাদীস শর্তানুসারে হাদীসটি সহীহ।
সুবহানাল্লাহ্ !!

এখন অনেকে মূল কিতাব দেখতে চাইতে পারেন। তাদের সুবিধার জন্য মূল কিতাবের স্ক্যান কপি নিম্মে দেয়া হলো--

নিচের লিঙ্কে গিয়ে মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকের মূল আরবী কিতাব দেখুন---->>>

http://wajahat-hussain.blogspot.com/2011/12/hadeeth-e-nur-of-jabir-bin-abdullah.html

আলহামদুলিল্লাহ ! আমরা পরিস্কার এবং বিশুদ্ধ সনদের মাধ্যমে হাদীস শরীফটির গ্রহনযোগ্যতা জানতে পারলাম।

এবার আসুন আমরা দেখি উক্ত হাদীস শরীফ সম্পর্কে মুহাদ্দিস এবং হাদীস শরীফ বিশারদগন কি বলেছেন।

উক্ত বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ খানা নিজ কিতাবে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
ইমাম বায়হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে বলা হয়-

" ইমাম বায়হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন স্বীয় যুগের হাদীস শরীফ এবং ফিক্বাহ শাস্ত্রের অপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তিত্ব। উম্মত যাদের মাধ্যমে খুব উপকৃত হয়েছে এবং হাফিজে হাদীস এমন সাত ব্যক্তি ছিলেন তাদের যাদের গ্রন্থ সবচাইতে উৎকৃষ্ট বলে স্বীকৃত। সেই সাত জনের একজন হলেন, ইমাম বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ।"

দলীল-
√ আসমাউর রেজাল-বাবু আইম্মাতুল হাদীস।

এই জগৎবিখ্যত মুহাদ্দিস ইমাম, আল্লামা বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে বর্ননা করেন--
ان الله تعالي خلق قبل الاشياء نور نبيك
"..... নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম উনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার "নূর" মুবারক সৃষ্টি করেন।"

দলীল-
√ দালায়েলুন নবুওয়াত লিল বায়হাক্বী ১৩ তম খন্ড ৬৩ পৃষ্ঠা।

বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস, যিনি এই উপমহাদেশে হাদীস শরীফের ব্যাপক প্রচার প্রসার করেছেন, সু দীর্ঘ সময় মদীনা শরীফে যিনি ইলিম চর্চা করেছেন। যিনি প্রতিদিন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাত লাভ করতেন, ইমামুল মুহাদ্দিসীন শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত হাদীসে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বা নূর সংক্রান্ত হাদীস শরীফকে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি উনার কিতাবে লিখেন-

درحديث صحيح وارد شد كه اول ما خلق الله نوري

অর্থ: "সহীহ হাদীস শরীফে" বর্নিত হয়েছে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন!"

দলীল-
√ মাদারেজুন নবুওয়াত ২য় খন্ড ২ পৃষ্ঠা।

বিখ্যাত মুহাদ্দিস, আরেফ বিল্লাহ, সাইয়্যিদিনা আব্দুল গনী নাবেলসী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে সরাসরি সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন-

قد خلق كل شيي من نوره صلي الله عليه و سلم كما ورد به الحديث الصحيح

অর্থ: নিশ্চয়ই প্রত্যেক জনিস হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি হয়েছে, যেমন এ ব্যাপারে 'সহীহ' হাদীস শরীফ বর্নিত রয়েছে।"

দলীল-
√ হাদীক্বায়ে নদীয়া- দ্বিতীয় অধ্যায়-৬০ তম অনুচ্ছেদ-২য় খন্ড ৩৭৫ পৃষ্ঠা।

ইমামুল মুফাসরিরীন, মুফতীয়ে বাগদাদ, হযরত আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে নির্ভরযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি উনার কিতাবে লিখেন-

ولذا كان نوره صلي الله عليه و سلم اول المخلوقات ففي الخبر اول ما خلق الله تعالي نور نبيك ياجابر

অর্থ : সকল মাখলুকাতের মধ্যে সর্বপ্রথম সৃষ্টি হলো, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যেমন- হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম আপনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন।"

দলীল-
√ রুহুল মায়ানী ১৭ তম খন্ড ১০৫ পৃষ্ঠা।

বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন,আল্লামা ইমাম মুহম্মদ মাহদ ইবনে আহমদ ফার্সী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে সহীহ বলে নিজের কিতাব মুবারকে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বর্ননা করেন-
اول ما خلق الله نوره ومن نوري خلق كل شءي

অর্থ : মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন এবং আমার নূর মুবারক থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেন।"

দলীল-
√ মাতালেউল মাসাররাত ২৬৫ পৃষ্ঠা ।

উক্ত হাদীস শরীফের সমর্থনে বিখ্যাত মুহাদ্দিস, ছহীবে মেরকাত, ইমামুল মুহাদ্দিসীন মুল্লা আলী কারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

وامانوره صلي الله عليه و سلم فهو في غاياة من الظهور شرقا و غربا واول ما خلق الله نوره وسماه في كتابه نورا

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক পূর্ব ও পশ্চিমে পূর্নরুপে প্রকাশ পেয়েছে। আর মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন। তাই নিজ কিতাব কালামুল্লাহ শরীফে উনার নাম মুবারক রাখেন 'নূর'।"

দলীল-
√ আল মওযুআতুল কবীর ৮৩ পৃষ্ঠা।

বিখ্যাত মুহাদ্দিস,আল্লামা আবুল হাসান বিন আব্দিল্লাহ আল বিকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন--

قال علي رضي الله عنه كان الله ولا شيء معه فاول ما خلق نور حبيبه قبل ان يخلق الماء والعرش والكرسي واللوح والقلم والجنة وانار والحجاب

অর্থ: হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বলেন, শুধুমাত্র আল্লাহ পাক ছিলেন, তখন অন্য কোন অস্তিত্ব ছিলো না। অতঃপর তিনি পানি,আরশ,কুরসী, লওহো,ক্বলম,জান্নাত, জাহান্নাম ও পর্দা সমূহ ইত্যাদি সৃষ্টি করার পূর্বে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন।"

দলীল-
√ আল আনওয়ার ফী মাওলিদিন নাবিয়্যিল মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫ পৃষ্ঠা।

বিখ্যাত তাফসির কারক,ইমামুল মুফাসসিরীন, আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ان الله تعالي خلق جميع الاشياء من نور محمد صلي الله عليه و سلم ولم ينقص من نوره سيء

অর্থ: এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক সকল মাখলুকাত "নূরে মুহম্মদী" ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সৃষ্টি করেছেন। অথচ "নূরে মুহম্মদী" ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে কিঞ্চিত পরিমানও কমে নাই।"

দলীল-
√ তাফসীরে রুহুল বয়ান ৭ম খন্ড ১৯৭-১৯৮ পৃষ্ঠা।

হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত হাদীস শরীফ খানা অত্যন্ত সহীহ।
আর সহীহ বলেই সকল জগৎ বিখ্যাত মুহাদ্দিসগন উনাদের কিতাবে উক্ত হাদীস শরীফ খানা বলিষ্ঠ ভাবে বর্ননা করেছেন। আমরা উপরে কিছু ইমামদের মতামত উল্লেখ করেছি। এছাড়াও আরো যারা উক্ত হাদীস শরীফকে বিশুদ্ধ বলে নিজেদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন তাদের কথা উল্লেখ করা হলো--

→ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকারক, হাফিজে হাদীস আল্লামা কুস্তালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া" কিতাবের ১ম খন্ড ৯ পৃষ্ঠা।

→ হাফিজে হাদীস,আল্লামা যুরকানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "যুরকানী আলা শরহে মাওয়াহেব" কিতাবের ১ম খন্ড ৪৬ পৃষ্ঠা।

→ বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজর হায়তামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "ফতোয়ায়ে হাদীসিয়া" কিতাবে ১৮৯ পৃষ্ঠা ।

→ মুহাদ্দিস আলী ইবনে ইব্রাহীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "সিরাতুল হলবীয়" কিতাবে ১ম খন্ড ৩০ পৃষ্ঠা।

→ হাফিজে হাদীস, হযরত ইবনে হাজার মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "আফদ্বালুল কোরা" কিতাবে।

→ বিশিষ্ট আলেম, শায়খুল আল্লামা, হযরত দিয়ার বাকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "তারীখুল খামীস" কিতাব সহ শতশত কিতাবে উক্ত হাদীস শরীফ খানা বর্ননা করা হয়েছে ।
প্রত্যকেই উক্ত হাদীস শরীফ এর উপর আস্থা স্থাপন করেছেন বিনা দ্বিধায়।
সুবহানাল্লাহ্ !!

যেটা উছুলের কিতাবে বলা হয়েছে-

فان الحديث يتقوي بتلقي الاءمة بالقبول كما اشر اليه الامام التر مذي في جامعه وصرح به علماءنا في الاصول

অর্থ: কোন হাদীস শরীফকে ইমামগন নিঃসংকোচে কবুল করে নেয়াই উক্ত হাদীস শরীফ খানা শক্তিশালী বা সহীহ হওয়ার প্রমান। ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "জামে" তে এদিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন আর আলেমগন তা উছুলের কিতাবে সুস্পষ্ট ভাবে বর্ননা করেছেন।"

সূতরাং এরপরও যারা বলবে, উক্ত হাদীস শরীফ খানা সহীহ নয়, তারা হাদীস শরীফের উছুল সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ।
উক্ত হাদীস শরীফ খানা হাফিজে হাদীস ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব "মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক" কিতাবে সহীহ সনদে বর্ননা করেছেন এবং পৃথিবীর সকল ইমাম,মুহাদ্দিস গন উক্ত হাদীস শরীফের প্রতি আস্থা স্থাপন করে স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
সূতরাং প্রমান হলো উক্ত হাদীস শরীফ খানা সর্বোচ্চ মানের সহীহ একটি হাদীস শরীফ।

এখন মজার ব্যাপার দেখুন, যেসকল ওহাবী দেওবন্দীরা উক্ত হাদীস শরীফ নিয়ে আপত্তি করে তাদের অন্যতম গুরু আশরাফ আলী থানবী নিজেই উক্ত হাদীস শরীফকে তার কিতাব "নশরুত তীব" উল্লেখ করেছে।
এবার দেখুন থানবী তার এই কিতাবে কি লিখেছে--

থানবী এই কিতাবে প্রথম যে অধ্যায় রচনা করেছে তার নাম দিয়েছে " নূরে মুহম্মদীর বিবরন"।
যাইহোক, এখানে প্রথমেই যা লিখেছে তা হলো- " আব্দুর রাজ্জাক তাঁর সনদসহ হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ননা করেছেন যে, আমি আরজ করলাম : ইয়া রসূল্লাল্লাহ আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কোরবান হউক, আমাকে এই খবর দিন যে, আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম কোন বস্তুটি সৃষ্টি করেছেন?....................... """"

অর্থাৎ হাদীসে জাবির বর্ণনা করেছে থানবী। মজার কথা হলো থানবী মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাকে হাদীসের সনদ খুজে পেল আর বর্তমানে তারই অনুসারী ওহাবী দেওবন্দীরা সনদ খুজে পায় না।
কত হাস্যকর লজ্জাজনক বিষয় নিজেরাই চিন্তা করুন।

যাইহোক, আজকের পোস্ট থেকে দিবালোকের মত প্রমান হলো, আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন।
সুবহানাল্লাহ্ !!

[পরবর্তীতে পোস্টের অপেক্ষায় থাকুন]

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন
এবং লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন -->>> Noor E Julfikar > the open sword

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন ! আল্লাহ পাক উনার পরেরই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্থান|



স্বয়ং আল্লাহ পাক নিজেই উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা সবকিছুর উপর বুলন্দ করে দিয়েছেন |
আল্লাহ পাক এরশাদ মুবারক করেন --

" হে আমার হাবীব ! আমি আপনার যিকিরকে বুলন্দ করে দিয়েছি !"
( সূরা আলাম নাশরাহ ৪)

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিকির/আলোচনা/মর্যাদাকে কতটুকু বুলন্দ বা উঁচু করেছেন ??
উত্তর হচ্ছে, আল্লাহ পাক হচ্ছেন অসীম | তাই তিনি উনার হবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে মর্যাদা দিয়েছেন সেটাও অসীম !
সুবহানাল্লাহ্ !!

কিন্তু দেওবন্দী/কওমী/তাবলীগী/ জামাতি/ লা মাযহাবী/ সালাফী সহ অন্যান্য বাতিল ফির্কার লোকেরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা বুঝতে চরম ভাবে ব্যার্থ হওয়ার করনে উনাকে নিজেদের মত মানুষ বলে থাকে !
নাউযুবিল্লাহ !!

তারা তাদের এই বক্তব্যের সপক্ষে দলীল দিয়ে থাকে --

قل انما انا بشر مشلكم يوحي الي

অর্থ : হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি বলুন আমি তোমাদের মেছাল একজন বাশার বা মানুষ , তবে আমার প্রতি ওহী নাযিল হয় !"
( সূরা কাহাফ ১১০)

উক্ত এই আয়াত শরীফের মর্ম বুঝতে চরম ভাবে ব্যার্থ হওয়ার কারনে বাতিল পন্থিরা নিজেদের মত মানুষ বলে থাকে |

মূলত উক্ত আয়াত শরীফ থেকেই কিন্তু প্রমান হয় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কারো মত নন !

আসুন আমরা উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যা করি |

উক্ত আয়াত শরীফে بشر مثلكم একটা শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে |

উক্ত " মেছাল" শব্দটা দৃষ্টান্তের জন্য ব্যাবহার হয় |
যেটা কবি বলেছেন--
محمد بشر ليس كالبشر ياقوت حجر ليس كالحجر
অর্থ - হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাশার তবে তিনি অন্য বাশারের মত নন | যেমন ইয়াকুত পাথর, অন্য পাথরের মত নয় |"

সর্বপ্রথম আমাদের বুঝতে হবে, " বাশার" মানে কি !

بشر
" বাশার" মানে হচ্ছে একটা প্রজাতির নাম | যেমন উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় "পাখি" | এই পাখি বলতে আমরা কি বুঝি ?
পাখি হচ্ছে এক প্রজাতির প্রানী যা দুই ডানায় ভর করে আকাশে উড়ে থাকে | তার এই আকাশে উড়া এবং আনুষঙ্গিক বৈশিষ্ঠের কারনে পাখ বলা হয়ে থাকে |

তদ্রুপ " বাশার" বা "মানুষ" হচ্ছে একটা প্রজাতির নাম | যারা দুই হাত, দুই চোখ, ব্যতিক্রম বুদ্ধিমত্তা, এবং শরীয়তের আদেশ পালনের জন্য বাধ্য এবং আদিষ্ট প্রজাতিই হচ্ছে " বাশার" বা " মানুষ" |
এখন আল্লাহ পাক হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই মানব জাতিতে বা প্রেরন করেছেন | আর সেকারনেই মানুষ হয়েছে আশরাফুল মাখলুকাত !
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু "বাশার" বা " মানুষ" প্রজাতির মাঝের তাশরিফ এনেছেন সেকারনে উনার বাহ্যিক আকৃতিও মানুষ প্রজাতির হবে এটাই স্বাভাবিক |
আর সেটাই আয়াত শরীফে বলা হয়েছে | بشر مثلكم বা মানব প্রজাতির যে আকৃতি, মানুষের মাঝে আশার কারনে উনারও সে আকৃতি |
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বক্তব্যও হচ্ছে, আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত যত নবী-রসূল তাশরীফ এনেছেন সবাই বাশার !
এ প্রসঙ্গে আক্বায়িদের কিতাবে উল্লেখ আছে -
الرسول انسان بعثه الله تعالي الي الخلق لتبليغ الاحكام

অর্থ- শরীয়তের পরিভাষায় রসূল এমন একজন বাশার কে বলা হয়, যাকে আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির জন্য পাঠিয়েছেন !"

দলীল-
√ শরহে আক্বাইদে নসফী

কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তিনি আমাদের মত মানুষ | প্রথমেই একটা আরবী কবিতা উল্লেখ করেছিলাম , যেখানে বলা ছিলে - " ইয়াকুত" পাথর , কিন্তু অন্য পাথরের মত নয় | প্রজাতিগত ভাবে ইয়াকুত পাথর হলেও কেউ কিন্তু রেল লাইনের পাথরের সাথে ইয়াকুত পাথরের তুলনা করার সাহসও পাবে না | কারন ইয়াকুত হচ্ছে অত্যন্ত মূল্যবান !
তদ্রুপ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও বাশার তবে অন্য বাশারের মত নন!
একথাটা কিন্তু আমার নয়, এটা হাদীস শরীফেই বর্নিত হয়েছে !

আসুন হাদীস শরীফের দলীল গ্রহণ করি !

عن عبدالله بن عمرو رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم لست كاحد منكم

অর্থ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন , আমি তোমাদের কারো মত নই !"

দলীল-
√ বুখারী শরীফ- কিতাবুস সিয়াম- ১ম খন্ড ২৬৩ পৃষ্ঠা - হাদীস ১৮৪০
√ মুসলিম শরীফ ১৫৮৭
√ আবু দাউদ শরীফ/১৩৭

عن عبد الله بن عمر رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم اني لست مثلكم

অর্থ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনুরুপ নই |"

দলীল-
√ বুখারী শরীফ - কিতাবুস সিয়াম - ১ খন্ড ২৬৩ পৃষ্ঠ
√ ফতহুল বারী ৪/১৬৪


عن ابي سعيد رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم اني لست كهيتكم

অর্থ : হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি ছুরতান বা আকৃতিগত ভাবেও তোমাদের মত নই |"

দলীল--
√ বুখারী ১/২৬৩
√ ফতহুল বারী ৪/১৬৫

عن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم ليكم مثلي

অর্থ- হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে রয়েছো ?

দলীল-
√ বুখারী শরীফ ১/২৬৩
√ ফতহুল বারী ৪/১৬৭

উক্ত সহীহ হাদীস শরীফ থেকেই প্রমান হয়ে গেল, নবীজী নিজেই ফয়সালা করে দিলেন- তোমাদের কেউ আমার মত নয়, আমিও তোমাদের মত নই |
সুবহানাল্লাহ্ !!

এখন কেউ যদি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজের মত বলে সে উক্ত হাদীস শরীফ অস্বীকার করার অপরাধে কাফের হয়ে যাবে |

এখন আসুন, আমরা দেখি এ ব্যাপারে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম, তাবেয়িন, ইমাম-মুস্তাহিদ গন কি বলেছেন !

খলীফাতুল মুসলিমিন, বাবুল ইলম ওয়াল হিকাম হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন--

لم ارقبله و لا بعده مثله

অর্থ : আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্বে এবং পরে উনার মত আর কাউকে দেখিনি !"

দলীল--
√ তিরমীযি শরীফ - ২য় খন্ড ২০৫ পৃষ্ঠা- হাদীস নম্বার ৩৬৩৭

বিখ্যাত ইমাম, ইমামে আযম,ইমামুল আইয়িম্মা, তাবেয়ী, হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন--

والله ياسين مثلك لم يكن
في العالمين وحق من انباك

অর্থ - আল্লাহ পাক উনার কসম ! হে ইয়াসিন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সারা জাহানে আপনার কোন মেছাল নাই !"

দলীল-
√ কাসীদায়ে নু'মান লি ইমাম আবু হানীফা -৩৭ নং পংক্তি

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তুলনাতো দূরের কথা পূর্ববর্তী ইমামগন উনাদের বয়োজৈষ্ঠ ইমামদের প্রসংশা করে কি বলেন দেখেন ! ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে লক্ষ্য করে বলেন--

اشهد انه ليس في الدني مثلك

অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, পৃথিবীতে আপনার মেছাল বা আপনার মত আরেকজন নাই !

দলীল-
√ মীযানুল আখবার ৪৮ পৃষ্ঠা

দেখুন, ছাহাবায়ে কিরাম,তাবেয়িন , ইমাম মুস্তাহিদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ওয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা সবাই বললেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন মেছাল নাই, উনার অনূরুপ কেউ নাই !
আর ওহাবী সম্প্রদায় এগুলা অস্বীকার করে নিজেদের মত বলে প্রচার করছে | এথেকে কি বুঝা যায় ?
বুঝা যায়, ওহাবী/দেওবন্দীরা মুসলমান নয় !

মূলত নবী রসূল আলাহিমুস সালাম উনাদেরকে নিজেদের মত মানুষ বলাটা কাফের-মুশরিকদের রীতি | কারন কাফেররাই নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নিজেদের মত মানুষ মনে করতে | এর বহু প্রমাণ কুরআন শরীফে রয়েছে | কতিপয় উদাহরণ দেয়া হলো !--

হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার জাতির সর্দারেরা উনার রেসালতকে অস্বীকার করে নিজেদের অনুসারীদের বলতো,

فقال الملؤا الذين كفروا من قومه ماهذا الابشر مثلكم

অর্থ : তাঁর জাতির সর্দারেরা তাদের অনুসারীদের বলল, " এ লোকটি তোমাদের মতই একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু নয় !"

দলীল-
√ সূরা মু'মিনুন ২৪ আয়াত শরীফ

সামুদ জাতির লোকেরা হযরত সালেহ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেছিলো --
قالوا انما انت من المسحرين ما انت الا بشر مثلنا

অর্থ : তোমাকে যাদু করা হয়েছে | তুমি আমাদের মত মানুষ ছাড়া আর কি ?

দলীল-
√ সূরা শুয়ারা ১৫৩-১৫৪

ইনতাকিয়া শহরের অধিবাসীরাও ঈসা আলাইহিস সালাম উনার প্রতিনিধিদের বলেছিলো -

قالوا ما انتم الا بشر مثلنا

অর্থ - তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ !"

দলীল-
√ সূরা ইয়াসিন ১৫

ফেরাউন ও তার অনুসারীরা মুসা আলাইহিস সালাম ও হারুন আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেছিলো --

فقالوا انؤمن لبشرين مثلنا

অর্থ : আমরা কি আমাদের মত দু'জন মানুষের উপর ঈমান আনব ?

দলীল-
√ সূরা মু'মিনুন ৪৭

শুধু তাই নয় হাবীবুল্লাহ, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে কাফেররা বলতো--

واسروا النجوي الذين ظلموا هل هذا الابشر متلكم

অর্থ : এ জালেমরা পরস্পর এবলে কানাঘুষা করে যে, এ লোকটি
( নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মত মানুষ ছাড়া আর কি ?"

দলীল-
√ সূরা আম্বিয়া ৩

উপরোক্ত দলীল দ্বারা প্রমানিত হলো, এক মাত্র কাফের- মুশরিক রাই তাদের প্রতি প্রেরিত নবী- রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নিজেদের মত মানুষ মনে করতো | তারই ধারাবাহিকতায় মুসলমান নামধারী কাফেররা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মত মানুষ মনে করে থাকে |


বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন এবং লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন -->>> Noor E Julfikar > the open sword
n like MAZDA - TAC - OMAN.

হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি "নূরে মুজাসসাম


সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি "নূরে মুজাসসাম" বা আপাদমস্তক নূর তার একটি উজ্জ্বল, সুস্পষ্ট, অকাট্য দলীল হচ্ছে উনার "ছায়াহীন কায়া মুবারক"। কারন অসংখ্য অনুসরনীয় ও বিখ্যাত ইমান মুস্তাহীদ, মুহাদ্দিস- ফক্বীহ, এবং আওলিয়ায়ে কিরাম উনাদের অভিমত এই যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দেহ মুবারকের কোন ছায়া ছিলো না, কারন তিনি হচ্ছেন আপাদমস্তক নূর।

এ প্রসঙ্গে অনেক হাদীস শরীফ বর্নিত আছে, এবং অসংখ্য অগনিত ইমাম মুস্তাহিদ, মুহাদ্দিসগন উক্ত হাদীস শরীফের উপর আস্থা স্থাপন করেছেন।
সুবহানাল্লাহ্ !!

উক্ত দলীল সমূহ নিম্নে পেশ করা হলো :

(১) এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাকীম তিরমীযি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেন--

ان رسول الله صلي الله عليه و سلم لم يكن يري له ظل في شمس ولاقمر

অর্থ: নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না।"

দলীল-
√ নাওয়াদেরুল উছুল।

(২) ইমামুল মুহাদ্দিসিন, ফক্বীউল মিল্লাত, আল্লামা হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আরেকটি সনদে হাদীস শরীফ বর্ননা করেন-

وفي حديث ابن عباس قال لم يكن لرسول الله صلي الله عليه و سلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না, এবং সূর্যের আলোতেও কখনো উনার ছায়া পড়তো না। আরো বর্নিত আছে, উনার নূর সূর্যের আলোকে অতিক্রম করে যেত। আর বাতির আলোতেও কখনো উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা, উনার আলো বাতির আলোকেও ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ জামউল ওয়াসিল ফি শরহে শামায়িল ২১৭ পৃষ্ঠা।

(৩) প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, হাফিজে হাদীস, রঈসুল মুহাদ্দিসিন, হযরত জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

اخرج الحكيم الترمذي عن ذكوان في نوادر الا صول ان رسول صلي الله عليه و سلم لم يكن يراي له ظل في شمس ولا قمر

অর্থ: হযরত হাকীম তিরমীযি রহমাতুল্লাহি আলাইহি " নাওয়াদিরুল উছুল" নামক কিতাবে জাকওয়ান থেকে বর্ননা করেন, নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতেও রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না।"

দলীল-
√ খাছায়েছুল কুবরা ১ম খন্ড ১২২ পৃষ্ঠা ।

(৪) বিখ্যাত আলেমে দ্বীন, শায়খুল উলামা, মুহাদ্দিস , আল্লামা ইব্রাহিম বেজরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন--

وفي حديث ابن عباس قال لم يكن لرسول الله صلي الله عليه و سلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না, এবং সূর্যের আলোতেও কখনো উনার ছায়া পড়তো না। আরো বর্নিত আছে, উনার নূর সূর্যের আলোকে অতিক্রম করে যেত। আর বাতির আলোতেও কখনো উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা, উনার আলো বাতির আলোকেও ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ আল মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া আলা শামায়েলে মুহম্মদীয়া ১০৫ পৃষ্ঠা।

(৫) বিখ্যাত মুহাদ্দিস, ফক্বীহ, আল্লামা হযরত ইউছুফ নবেহানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে লিখেন-

وكان اذا مشي في قمر او شمس لا يظهر له ظل

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সূর্য ও চন্দ্রের আলোতে হাঠতেন তখন উনার ছায়া মুবারক পড়তো না।"

দলীল-
√ জাওয়াহিরুল বিহার ১ম খন্ড ৪৫৩ পৃষ্ঠা।

(৬) বাহরুল উলুম, শায়খুল মাশায়েখ, আল্লামা ইবনে সাবা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ان ظله كان لا يقع علي الارض كان نورا فكان اذامشي في الشمس اوالقمر لا ينظر له ظل

অর্থ: নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক যমীনে পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন, নূর। অতঃপর তিনি যখন সূর্য ও চাঁদের আলোতে হাঁটতেন তখন তখন উনার ছায়া মুবারক দৃষ্টিগোচর হতোনা।

দলীল-
√ শেফাউছ ছুদুর।

(৭) আল্লামা সুলায়মান জামাল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

لم يكن له صلي الله عليه و سلم ظل يظهر في شمس ولا قمر

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলনা। এমনকি চাঁদ এবং সূর্যের আলোতেও উনার ছায়া মুবারক প্রকাশ হতো না।"

দলীল-
√ ফতুহাতে আহমদিয়া শরহে হামজিয়া।

(৮) ইমামুল মুফাসসিরিন ওয়াল মুহাদ্দিসিন, হাফিজে হাদীস, আল্লামা ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেন-

وفي حديث ابن عباس قال لم يكن لرسول الله صلي الله عليه و سلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না, এবং সূর্যের আলোতেও কখনো উনার ছায়া পড়তো না। আরো বর্নিত আছে, উনার নূর সূর্যের আলোকে অতিক্রম করে যেত। আর বাতির আলোতেও কখনো উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা, উনার আলো বাতির আলোকেও ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ কিতাবুল ওয়াফা

(৯) হাফিজে হাদীস, মুহাদ্দিস , আল্লামা সাইয়্যিদ যুরকানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

لم يكن له صلي عليه و سلم ظل في شمس و لاقمر لانه كان نورا

অর্থ: চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না। কেননা তিনি ছিলেন নূর।

দলীল-
√ শরহে মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া।

(১০) বিখ্যাত আলেম, হযরত আল্লামা হুসাইন দিয়ার বাকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

لم يقع ظله صلي الله عليه و سلم علي الارض ولايري له ظل في شمس ولا قمر

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক জমিনে পড়তো না। এবং চাঁদ এবং সূর্যের আলোতেও উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না।"

দলীল-
√ খামীছ ফি আহওলে আনফুসে নাফীস

(১১) ইমামুল আল্লাম, জালালু মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

لم يقع ظله علي الارض ولايري له ظل في شمس ولا قمر قال ابن سبع لانه كان نورا قال رزين لغلبة انواره

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক মাটিতে পড়ে নাই। চাঁদ এবং সূর্যের আলোতে উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না। আল্লামা ইবনে সাবা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু সম্পূর্ণ নূর ছিলেন, সেহেতু উনার ছায়া মুবারক ছিলো না। হযরত ইমান রজীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অবশ্যই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সমস্ত কিছুকে ছাড়িয়ে যেত।"

দলীল-
√ আনমুযাজুল লবীব ফী খাছায়েছিল হাবীব- দ্বিতীয় বাব- চতুর্থ অধ্যায় ।

(১২) ইমামুল মুহাদ্দিসিন, শায়খুল উলামা, শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ونبود مر أنحضرت را صلي الله عليه و سلم سايه نه در افتاب ونه قمر

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক চাঁদ ও সূর্যের আলোতে দেখা যেত না।"

দলীল-
√ মাদারেজুন নবুওয়াত- ১ম খন্ড- ১ম অধ্যায় ।

(১৩) ইমামুল জলীল, মুহাদ্দিসুশ শহীর, আল্লামা ইমাম কাজী আয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

وما ذكر من انه لا ظل تشخصه في شمس ولاقمر لانه كان نورا

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরের দেহ মুবারকের ছায়া মুবারক সূর্য ও চাঁদের আলোতেও পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন সম্পূর্ন নূর।"

দলীল-
√ শিফা শরীফ।

(১৪) ইমামুল আইম্মা, হাফিজে হাদীস, আহমদ বিন মুহম্মদ খতীব কুস্তালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

رسول الله صلي الله عليه و سلم كي ليءے سايه نه تها دهوپ مين نه چاندني مين

অর্থ: চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না।"

দলীল-
√ মাওয়াহেবু লাদুন্নিয়া ১ম খন্ড

(১৫) তাজুল মুফাসসীরিন, ফক্বীহুল আছর, আল্লামা শাহ আব্দুল আযীজ মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

سايه ايشان بر زمين نمي افتاد

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক মাটিতে পড়তো না।"

দলীল-
√ তাফসীরে আযীযি-৩০ পারা- সূরা আদ দ্বুহা উনার তাফসীর।

(১৬) ইমামুল জলীল, সাইয়্যিদুল মুফাসসীরিন, আল্লামা মাহমূদ নাসাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قال عشمان رضي الله غنه ان الله ما اوقع ظلك علي الارض لءلا يضع انسن ان قدمه علي ذالك الظل

অর্থ: আমীরুল মু'মিনিন, হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেছিলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক আপনার ছায়া মুবারক মাটিতে পড়তে দেন নাই। যাতে মানুষ আপনার ঐ ছায়া মুবারকে পা রাখতে না পারে।"

দলীল-
√ তাফসীরে মাদারিকুত তানযীল-সূরা নূরের তাফসীর

(১৭) ইমামুল আইম্মা, কাইয়ুমে আউয়াল, মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

اورا صلي الله عليه و سلم سايه نبود در عالم شهادت سايه هر شخص ازشخص لطيف تراست چون لطيف تري ازوي صلي الله عليه و سلم در عالم نباشد او را سايه چه صورت وارد

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলো না। প্রত্যেক লোকের ছায়া তার দেহ থেকে সুক্ষ্ম। যখন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাইতে আর কোন কিছু সুক্ষ্ম নয়, তখন উনার ছায়া মুবারক কি আকার ধারন করতে পারে ?"

দলীল-
√ মকতুবাত শরীফ-৩য় খন্ড- ১০০ নং মকতুব।

(১৮) বাহরুল উলুম, হযরত শায়েখ মুহম্মদ তাহের রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

من اسماءه صلي الله علي و سلم النو ر قبل من خصاءصه صلي الله عليه و سلم انه اذا مشي في ااشمس والقمر لا يظهر له ظل

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক সমূহ থেকে একটি নাম মুবারক হলো, নূর। বলা হয়, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বৈশিষ্ট্য সমূহ থেকে একটি বৈশিষ্ট্য হলো যে, নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সূর্য ও চাঁদের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার কোন ছায়া মুবারক প্রকাশ পেত না।"

দলীল-
√ মাজমাউল বিহার

(১৯) শায়খুল উলামা, হযরতুল আল্লামা, মুহম্মদ ইউসুফ শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন-

الامام الحيم قال معناه لءلا يطأ عليه كافر فيكون مذلة له

অর্থ: ইমাম হযরত হাকিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক না থাকার হিকমত এই যে, যাতে কোন বিধর্মী কাফেরেরা উনার ছায়া মুবারকের উপর পা রাখতে না পারে।"

দলীল-
√ সুবহুল হুদা ওয়ার রশীদ আল মারুফ বিহী " সীরাতে শামী" ২য় খন্ড ১২৩ পৃষ্ঠা।

(২০) হাফিজে হাদীস,ওলীয়ে কামিল, হযরত ইবনে হাজর মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন,

انه صلي الله عليه و سلم صار نورا انه كان اذا مشي في الشمس و لا يظهر له ظل

অর্থ: নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর ছিলেন। নিশ্চয়ই তিনি যখন চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার ছায়া মুবারক প্রকাশ পেতো না।"

দলীল-
√ আফদ্বালুল ক্বোরা।

(২১) ফক্বীহে মিল্লাত, হযরত আল্লামা মুফতী জালালুদ্দীন আহমদ আমজাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন-

بيشك حضور پرنور سر كار اقدس صلي الله عليه و سلم كي جسم اقدس كا سايه نهين پرتا تها جيسا كه حديث شريف ميت هي لم يكن له ظل لا في الشمس ولا في القمر يعني سورج اور چاندكي روشني مين حضور كا سايه نهين پرتا تها

অর্থ: নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শরীর মুবারক উনার ছায়া মুবারক (জমিনে) পড়তো না । যেমন, হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক পড়তো না।"

দলীল-
√ ফতোয়ায়ে ফয়জুর রসূল ২৭ পৃষ্ঠা।

(২২) বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা শিহাবুদ্দীন খাফফাজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

من دلاءل نبوته صلي الله عليه و سلم ماذكر من انه لا ظل لشخصه لشخصه اي جسده الشريف اللطيف اذاكان في شممس او قمر لانه صلي الله عليه و سلم نور

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুওয়াত মুবারকের প্রমানের মধ্যে একটি প্রমান যে, উনার শরীর মুবারকের ছায়া মুবারক ছিলো না। যখন তিনি চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা তিনি (আপাদমস্তক) নূর।"

দলীল-
√ নাসীমুর রিয়াজ।

(২৩) ওলীউল কামিল, আল্লামা মুহম্মদ বিন ছিবান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

وانه لا فييء له

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ বৈশিষ্ট্য এই যে, উনার ছায়া মুবারক ছিলো না।"

দলীল-
√ ইসআফুর রাগেবীন।

(২৪) বিখ্যাত সুফী সাধক, আল্লামা জালালুদ্দীন রুমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

چو فناشي از فقر. پيرا يه او محمد. وار بے سايه بود

অর্থ: যে ব্যক্তি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জাত মুবারকে ফানা হবে, সে ব্যক্তিও উনার মত ছায়াহীন হয়ে যাবে।

দলীল-
√ মসনবী শরীফ

(২৫) আল্লামা ইমাম রাগিব ইস্পাহানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ومن اسماءه صلي الله عليه و سلم النور قبل من خصاءصه صلي الله عليه و سلم انه اذا مشي في الشمس لاينظر له ظل

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক উনাদের মধ্যে একটি নাম মুবারক হলো নূর। বলা হয়েছে, উনার বৈশিষ্ট্য সমূহের মধ্যে একটি বৈশিষ্ট্য এই, উনি রোদে গেলে উনার ছায়া মুবারক দৃষ্টিগোচর হতো না।"

দলীল-
√ মুফরাদাত ৩১৭ পৃষ্ঠা ।

এছাড়া আরো হাজার হাজার কিতাব মুবারকে বর্নিত আছে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকের ছায়া মুবারক ছিলো না।

দলীল-
(২৬) নূরুল আবছার ফী মানাক্বেবে নাবিয়্যিল আতহার।

(২৭) শরহে মছনবী শরীফ।

(২৮) ফতহুল আজীজ।

(২৯) আনওয়ারে মুহম্মদীয়া

(৩০) মিনহাজে মুহম্মদীয়া

(৩১) মুতাউলিউল মুসাররাত

(৩২) সীরাতে হলবীয়া

(৩৩) আল ইকতেবাছ

(৩৪) কিতাবুল হামছীন ফি আহওয়ালিল নাফসিন নাফিস।
ইত্যাদি..

শুধুতাই নয় , এত বিপুল পরিমান বর্ননার কারনে ওহাবী দেওবন্দী দের প্রধান মুরুব্বী রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী এই বর্ননাকে মুতাওয়াতির বর্ননা মেনে নিয়েছে।

মৌলবী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী লিখেছে --

بتواتر ثابت ثد كه انحضرت صلي الله عليه و سسلم سايه ند اثتند- وظاهر است كه بجز نور همه اجسام ظل مي دارند

অর্থ-- একথা মুতাওয়াতির বর্ননা দ্বারা প্রমানিত যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মোবারকের ছায়া ছিলো না। প্রকাশ থাকে যে নূরের দেহ ছাড়া সকল দেহের ছায়া থাকে।"

দলীল--
√ ইমদাদুস সুলুক ৮৬ পৃষ্ঠা |

এমনকি দেওবন্দী গুরু মৌলবী আশরাফ আলী থানবী বর্ননা করে--

يه بات مثهور ھے كه ھمارے حضرت صلي عليه و سلم كے سایه نهيی تها ( اسلءے كه) همارے حضرت صلي الله عليه و سلم صرتاپا نور هي نور تہے

অর্থ -- একথা প্রসিদ্ধ যে , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মোবারকের ছায়া ছিলো না।কেননা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপাদমস্তক নূর তথা নূরে মুজাসসাম !"

দলীল--
√ শুকরুন নি'মাহ ৩৯ পৃষ্ঠা ।

সূতরাং বিপুল পরিমান দলীল দ্বারা প্রমান হলো, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকের ছায়া মুবারক ছিলো না। এখান যারা এই মতের বিরোধিতা করবে তারা হাদীস শরীফ অস্বীকার করে মুরতাদ হয়ে যাবে।
 

পহেলা বৈশাখে রয়েছে

পহেলা বৈশাখে রয়েছে---------


১) হিন্দুদের ঘটপূজা
২) হিন্দুদের গণেশ পূজা
৩) হিন্দুদের সিদ্ধেশ্বরী পূজা
৪) হিন্দুদের ঘোড়ামেলা
৫) হিন্দুদের চৈত্রসংক্রান্তি পূজা-অর্চনা
৬) হিন্দুদের চড়ক বা নীল পূজা বা শিবের উপাসনা ও সংশ্লিষ্ট মেলা
৭) হিন্দুদের গম্ভীরা পূজা
৮) হিন্দুদের কুমীরের পূজা
৯) হিন্দুদের অগ্নিনৃত্য
১০) ত্রিপুরাদের বৈশুখ
১১) মারমাদের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব
১২) চাকমাদের বিজু উৎসব
(ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের পূজাউৎসবগুলোর সম্মিলিত নাম বৈসাবি)
১৩) হিন্দু ও বৌদ্ধদের উল্কিপূজা
১৪) মজুসি তথা অগ্নি পূজকদের নওরোজ
১৫) হিন্দুদের বউমেলা
১৬) হিন্দুদের মঙ্গলযাত্রা
১৭) হিন্দুদের সূর্যপূজা

দেখা যাচ্ছে, পহেলা বৈশাখে কাফিরদের বিভিন্ন পূজা ও অনুষ্ঠান বিদ্যমান, কিন্তু মুসলমানদের এই দিনে কোন অনুষ্ঠান নাই।
তাহলে মুসলমান কেন শিরকী অনুষ্ঠান বর্জন করবে না???

== রাসূলের ইলমের তুলনা হয় না ==

== রাসূলের ইলমের তুলনা হয় না ==

وعن ابي موسي رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم اعطيت فواتح اكلم وجوامعه و خواتمه

অর্থ : হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ননা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয়ের সমস্ত ইলিম দান করা হয়েছে ।

‪#‎দলীল‬ --

> কানযুল উম্মাল- হাদীস নম্বর ৩১৯২৬;

>ত্ববরানী শরীফ,

> মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়ব?

> আবু ইয়ালা।

>> A•H•N <<

তাদের নিদর্শন হবে মাথা মুন্ডানো


হযরত আবূ সাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, “হুজুর নবীয়ে আকরাম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন এক সম্প্রদায়ের বর্ণনা দিলেন, যা তাঁর উম্মতের মধ্যে সৃষ্টি হবে । তাদের আত্নপ্রকাশ তখনই হবে, যখন মানুষের মধ্যে মতানৈক্য ও ফিরকার উদ্ভব হবে । তাদের নিদর্শন হবে মাথা মুন্ডানো । আর তারা সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হবে ।”

[মুসলিম শরীফঃ আস সহীহ, কিতাবুয যাকাত, ২/৭৪৫, হাদিস নং- ১০৬৫]

ইয়া নবী , ইয়া রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলার দলীল-->



হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্ব নন্দিত কিতাব “আল আযকার” উনার ‘বাবু মায়াক্কুলুহু ইযা খাদিরাত রিজলাহু’ অর্থাৎ কারো পা যদি ঝিন ঝিন করে অবশ হয়ে যায় তখন সে কি বলতে পারে, এ ব্যাপারে একটি অধ্যায় করে একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ হযরত ইমাম ইবনু সিন্নী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব উনার বরাত দিয়ে বর্ণনা করেন,--

روينا فى كتاب ابن السنى عن حضرت الهيثم بن حنش قال كنا عند عبد الله بن عمر رضى الله تعالى عنهما فخدرة رجله فقال له رجل اذكر احب الناس اليك فقال يا محمد صلى الله عليه وسلم فكانما نشط من عقال.

অর্থ: “হযরত হায়ছাম ইবনে হানাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমরা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিদমতে ছিলাম। এমনি সময় উনার পা ঝিন ঝিন করে অবশ হয়ে গেলো। তখন উপস্থিত জনৈক ব্যক্তি উনাকে বললেন, আপনার প্রিয়তম ব্যক্তির নাম স্মরণ করুন! তখন তিনি বললেন, ‘ইয়া মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। তখনই যেন পাখানা পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেলো।” সুবহানাল্লাহ!

দলীল-
√ আল আযকার/২৬০

হাফিযুল হাদীছ হযরত ইমাম আবূ বকর আহমদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইসহাক দিনওয়ারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইবনুস সিন্নী নামে পরিচিত, যাঁর কিতাব থেকে হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। তিনি উনার কিতাবে উপরে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ ছাড়া আরো দুটি পবিত্র হাদীছ শরীফ একইভাবে রেওয়ায়েত করেছেন।
সুবহানাল্লাহ্ !!!

ইয়া নবী, ইয়া রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে সম্বোধন করার শরয়ী ফায়ছালা:



হযরত হায়ছাম ইবনে হানাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে “আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ” নামক কিতাব উনার ৬৫ পৃষ্ঠায় ১৭২ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার অপর একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন।
পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হলো-

عن حضرت عبد الرحمن بن سعد رضى الله تعالى عنه قال كنت عند حضرت عمر عليه السلام فصدرة رجله فقلت يا ابا عبد الرحمن مالربجلك قال اجتمع عصبها من ههنا قلت ادع احب الناس اليك فقال يا محمد صلى الله عليه وسلم فانبسطت.

অর্থ: “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম উনার নিকট ছিলাম। এমনি সময়ে উনার পা মুবারক ঝিনঝিন শুরু করে দিলো। আমি উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার পা মুবারকে কি হয়েছে? তিনি বললেন, আমার এখানের হাড় একত্রিত হয়ে গেছে। আমি উনাকে বললাম, আপনার সর্বাধিক প্রিয় মানুষকে আহ্বান করুন। তাতে তিনি ‘ইয়া মুহাম্মাদ! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে আহবান করলেন। তৎক্ষণাত উনার পা মুবারক ভালো হয়ে গেল।”

তাছাড়াও যুদ্ধের মাঠে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পরিচিতির জন্যে সাংকেতিক শব্দ ‘ইয়া মুহাম্মাদাহ’ নির্ধারিত ছিল। যেমন, ইয়ামামার যুদ্ধে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পক্ষে সাংকেতিক শব্দ ছিল ‘ইয়া মুহাম্মাদাহ’।"
সুবহানাল্লাহ্ !!

শাইখুল মিল্লাত, হযরত শায়খ সা'দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছোহবত বা সংসর্গের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন--


پسر نوح بابدای بنشست
خاندان نبوتش گم شد

سگ اصحاب كہف روزے چند
پاے نيكای گرفت مردم شد

অর্থ: হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ছেলে 'কেনান' খারাপ লোকদের ছোহবতে থাকার কারনে নবুওয়াতের খান্দান হারিয়ে নিয়ামত হতে বঞ্চিত হয়েছে।

আর আছহাবে কাহাফের কুকুর, নেক লোকদের ছোহবত বা সংসর্গ লাভ করার কারনে মানুষ হয়েছে। (অর্থাৎ বনি ইসরাঈলের গোমরাহ দরবেশ বালআম বিন বাউরার ছুরতে জান্নাতে যাবে)।"

দলীল-
√ গুলেস্তায়ে সা'দী /২৪

সূতরাং বোঝা গেল নেককার ব্যক্তিদের সংসর্গে গেলে নেককার হওয়া যাবে এবং বদকার লোকদের সংসর্গে গেলে সবকিছু ধ্বংস হবে। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে যামানার লক্ষস্থল ওলী আল্লাহ উনাদের সোহবত মুবারকে যাওয়ার তৌফিক দান করুন।
আমীন !!!

"তিন প্রকার ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তাবারকা ওয়া তায়ালা জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন।


ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن عبد الله بن عمر رضي الله عنه ان رسول الله صلي الله عليه و سلم قال ثلاثة قد حرم الله تبارك وتعالي عليهم الجنة مدمن الخمر والعاق والديوث الذي يقر في اهله الخبث

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্নিত, নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেছেন, "তিন প্রকার ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তাবারকা ওয়া তায়ালা জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন।
(১) মদ পানকারী।
(২) পিতামাতার অবাধ্য সন্তান।
(৩) দাইয়্যুছ (যে নিজে বেপর্দা হয় এবং অধিনস্ত দের বেপর্দা রাখে) যে তার পরিবারে অশ্লীলতা ছড়িয়ে রাখে।"

দলীল-
√ মুসনাদে আহমদ ২য় খন্ড ১২৮ পৃষ্ঠা।

√ নাসায়ী শরীফ কিতাবুয যাকাত বাব নং ৬৯।

অপর একটি বর্ননায় এসেছে-

হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, "তিন প্রকারের ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং আল্লাহ পাক তাদের দিকে কিয়ামতের দিন রহমতের দৃষ্টি দিবেন না।
(১) পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান।
(২) পুরুষের ছূরত ধারনকারী মহিলা।
(৩) দাইয়ূছ অর্থাৎ যে নিজে পর্দা করে না অধিনস্তদের পর্দা করায় না।"

দলীল-
√ মুসনাদে আহমদ ২য় খন্ড ১৩৪ পৃষ্ঠা।

√ নাসায়ী শরীফ কিতাবুয যাকাত ৬৯ নং বাব।

সূতরাং উক্ত হাদীস শরীফদ্বয় থেকে বোঝা গেল, মদ পানকারী, পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান, পুরুষের বেশ ভূষা আকৃতি ধারনকারী মহিলা ছাড়াও আরো এক শ্রেণীর লোক জান্নাতে ঢুকতে পারবে না, তাদের জন্য জান্নাত হারাম করা হয়েছে তারা হচ্ছে "দাইয়ূছ"। দাইয়ূছ হচ্ছে ব্যক্তি নিজে পর্দা করে না এবং তার পরিবার এবং অধিনস্ত দের পর্দা করায় না।
তাই এখনি সময় তওবা করা, এবং সকল বেপর্দা থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ পাক আমাদের তৌফিক দান করুন।
আমীন !!!

হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, সর্বপ্রকার খেলাধূলা হারাম।"

রত্যেক জিনিস তার মূলের দিকে প্রত্যাবর্তন করে। হারাম জিনিস থেকে হারামই জন্ম নেয়। অপর দিক থেকে হালাল থেকে হালালই হয়ে থাকে।
হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, সর্বপ্রকার খেলাধূলা হারাম।"
সবাই একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করুন এই হারাম খেলাধূলা থেকে কি ভয়াবহ হারাম এবং গুনাহ সৃষ্টি হচ্ছে।
উদাহরণ স্বরূপ এখন বাংলাদেশে টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে । ধরুন এই খেলা শুরু হয়, দুপুর তিনটায়। তিনটায় যদি শুরু হয়, সে ক্ষেত্রে প্রথম ইনিংস চলা কালীন সময় আছরের নামাজ এবং দ্বিতীয় ইনিংস চলা কালীন সময় মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত হয়। দেখা যায় খেলোয়াড় এবং দর্শক উভয়েই নামাজ বাদ দিয়ে খেলাধূলা চালিয়ে যায় এবং দেখে যায়।
অর্থাৎ তাদের কমপক্ষে দুই ওয়াক্ত নামাজ ফউত হয় (যদিও এই শ্রেণীর লোকেরা নামাজই পরে না)।

এবার আমরা একটা হাদীস শরীফ দেখি, যেখানে নামাজ ক্বাজা করার শাস্তি বর্ননা করা হয়েছে। হাদীস শরীফে বর্নিত আছে-

من ترك الصلوة حتي مضي وقتها ثم قضي عذاب في النار حقبا و الحقبة ثمانون سنة واسنة ثلث ماءة و ستون يوما كان مقداره الف سفة

অর্থ: যে ব্যক্তি নামাজ তরক করলো, এমনকি নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেল, অতঃপর সে ব্যক্তি তার ক্বযা আদায় করলো, সে জাহান্নামে এক হোকবা শাস্তি ভোগ করবে। আর এক হোকবা হচ্ছে ৮০ বছর এবং এক বছর হচ্ছে ৩৬০ দিন। প্রতিটি দিন হচ্ছে হাজার বছরের সমান।"

দলীল-
√ মাজালিসুল আবরার

√ আল মানাসিক।

উক্ত হাদীস শরীফ উনার বর্ননা মোতাবেক হোকবার পরিমাণ পৃথিবীর বছর অনুযায়ী নিম্নরূপ-

৮০ বছর × ৩৬০ দিন = ২৮৮০০ দিন।

আবার, প্রতি দিন হাজার বছরের সমান হলে,

২৮৮০০ × ১০০০ = ২৮৮০০০০০ বছর।

অতএব, এক হোকবা = ২৮৮০০০০০ বছর।

একটু গভীরভাবে চিন্তা করুন, এক ওয়াক্ত নামাজ ক্বাজা হলে, অর্থাৎ ওয়াক্ত মোতাবেক না পড়লে তার ২৮৮০০০০০ বছর জাহান্নামের আজাব সহ্য করতে হবে। তাহলে যারা নামাজ আদায় করবে না, ঐ সময় খেল তামাশায় মশগুল থাকবে তাদের শাস্তিটা কত ভয়াবহ হবে ? চিন্তা করুন !!!

এই হলো সেই খেলা যা আপনাকে, আপনাদেরকে প্রতি মুহূর্তে এরকম ভয়বহ শাস্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যেহেতু হারাম থেকে হারামই পয়দা হয়, তাই এই হারাম খেলা থেকেও এরূপ ভয়বহ আজাবের ব্যবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। মনে রাখবেন, নিশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলেই তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কবরে গূর্জু পেটা শুরু হবে। তাই খেল তামাশা বাদ দিয়ে সত্যের পথে আসুন। পবিত্র ইসলাম উনার পথে আসুন।

যে ঘরে প্রনীর ছবি থাকতো, সে ঘরে নামাজ পড়া মাকরুহ মনে করতেন।"

হাদীস শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺍﻧﻪ ﻛﺮﻩ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻓﻴﺤﻬﺎ ﺗﺼﺎﻭﻳﺮ

অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু যে ঘরে প্রনীর ছবি থাকতো, সে ঘরে নামাজ পড়া মাকরুহ মনে করতেন।"

দলীল --

√ মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা- আল বাব আছছলাহ ফিল কানায়িস ওয়াল বাই - ১ম খন্ড - ৪২৩ পৃষ্ঠা।

হাদীস শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

ﻋﻦ ﻣﻘﺴﻢ ﺭﺣﻤﺖ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﻋﺒﺎﺱ ﻻ ﻳﺼﻠﻲ ﻓﻲ ﺑﻴﺖ ﻓﻴﻪ ﺗﻤﺎﺛﻴﻞ

অর্থ : হযরত মুকসিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, যে ঘরে প্রানীর ছবি থাকে সে ঘরে নামাজ পড়বে না।"

দলীল-

√ মুছান্নাফে আবী শায়বা-আল বাব আছ ছলাতু ফিল বাইতি ফীহি তামাছিল - ১ম খন্ড- ৩৯৮ পৃষ্ঠা।

এই দুইটা হাদীস শরীফ একটু গভির ভাবে চিন্তা করুন ! আমরা মুসলমান, ঈমান আনার পর সর্বপ্রথম যে কাজ করতে হয় সেটা হচ্ছে নামাজ। আমাদের সকলের জন্য নামাজ ফরয। এখন মূল বিষয় হচ্ছে,আমরা অনেকে প্রয়োজন বশত ঘরে নামাজ পড়ি। কিন্ত আমরা কি ভেবে দেখেছি, আমরা যে ঘরে নামাজ পড়ি ওই ঘর প্রনীর ছবি মুক্ত কিনা ? এখন প্রতিটা দ্রব্যের গায়ে প্রানীর ছবি থাকে। আমরা যে ঘরে নামাজ পড়ি ওই ঘরে যদি ছবি থাকে আমাদের নামাজ কিন্তু হবে না। মাকরুহ হবে ! ওই নামাজ পুনোরায় দোহরাইয়ে পড়া ওয়াজিব হবে। শুধু তাই নয়, অনেক মসজিদেও কিন্তু এমন ছবি অনেক দেখা যায় । যেমন- মসজিদে অনেক সময় আগরবাতি, মোমবাতি, মেস এগুলো থাকে। ওইগুলাতেও কিন্তু প্রানীর ছবি থাকে। আর বিশেষ করে কিছু গ্রাম এলাকা আছে সেখানে মসজিদ গুলা হয় টিনের তৈরী । এই টিনে থাকে গরু,ঘোড়া,উট,মুরগী ইত্যাদির ছবি। এসব মসজিদে নামাজ পরলেও কিন্তু নামাজ হবে না। সবার নামাজ পুনরায় পড়াটা ওয়াজিব হবে। এবং ইমাম সাহেবও কঠিন গুনাহগার হবে। আমাদের এই সুক্ষ বিষয় গুলোতে সচেতন হতে হবে। আমাদের নামাজের স্থানগুলো যেন ছবি মুক্ত হয় সে ব্যপারে সতর্ক হতে হবে | নামাজী ব্যক্তি যেখানে নামাজ পরবে তার সামনে, পেছনে , উপরে , নিচে, ডানে, বামে কোথাএ কোন প্রানীর ছবি থাকলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। আল্লাহ পাক আমাদের এসব সুক্ষ ব্যাপার সমূহ বোঝার যোগ্যতা দান করুন। আমীন

পবিত্র মাযহাব উনার অনুসরনের জন্য কুরআন শরীফ হতে দলীল-



‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার আলোচনা ও বিধান

التقليد الشرعى

আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ:

পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস উনাদের দলীল-আদিল্লাহ মোতাবেক ইসলামী শরীয়াত উনার যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে চলার জন্য কারো অনুসরণ করাকে ‘আত-তাকলীদুশ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ বলে। উনাকে ‘তাকলীদুল ইসলাম’, ‘তাকলীদুদ্ দীন’ ও ‘তাকলীদুদ্ দালায়িলিল আরবায়াহ’ অর্থাৎ দীন ইসলাম উনার চারখানা দলীল উনাদের অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে এবং উলিল্ আমর তথা হযরত ইমাম মুজতাহিদ-আউলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে অনুসরণ করাই ‘আত-তাকলীদুশ্ শারয়ী তথা শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’।

সম্মানিত শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ করা ফরযে আইন। আর শারীয়াত বহির্ভুত অনুসরণ করা হারাম ও নাজায়িয। কারণ, শারীয়াত সম্মত অনুসরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে। শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ করা যে ফরয-ওয়াজিব এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে যথেষ্ট আলোচনা উল্লেখ আছে। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনার কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

اهدنا الصراط الـمستقيم صراط الذين انعمت عليهم. (سورة الفاتحة رقم الاية ۶-۵ )

অর্থ: “আয় মহান আল্লাহ তায়ালা! আপনি আমাদেরকে সঠিক পথ দান করুন। এমন পথ যে পথের পথিক উনাদেরকে আপনি নিয়ামত দিয়েছেন।” (পবিত্র সূরাতুল ফাতিহাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫-৬)

انعم الله عليهم من النبيين والصديقين والشهداء والصالـحين. (سورة النساء رقم الاية ۶۹)

অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি নিয়ামত হাদিয়া করেছেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাদেরকে, হযরত ছিদ্দীক্বীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে, হযরত শুহাদা রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে ও হযরত ছালিহীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে। (পবিত্র সূরাতুন নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৯)

পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে চার শ্রেণী উনাদের মত-পথ তালাশ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মূলত: উক্ত চার শ্রেণী দুই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। যথা: ১. হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাদের পথ, ২. ছিদ্দীক্বীন, শুহাদা ও ছালিহীন উনারা উম্মত উনাদের তবক্বা।

আর দ্বিতীয় তবক্বার উনারা হলেন- ইমাম, মুজতাহিদ, ফক্বীহ, উলামায়ে কিরাম, আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম প্রমুখ।

অতএব উনাদেরকে অনুসরণ করাই ‘আত-তাক্বলীদুশ শারয়ী তথা সম্মানিত শারীয়াত উনার অনুসরণ’।

মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

واذ قيل لـهم امنوا كما امن الناس.

অর্থ: যখন তাদেরকে বলা হয় তোমরা ঈমান আনো, যেরকম অন্যান্য ব্যক্তিগণ ঈমান এনেছেন। (পবিত্র সূরাতুল বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)

এখানে আন-নাস বা ব্যক্তি বলতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। অর্থাৎ উনাদের অনুসরণে উনাদের মতো ঈমান গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। ইহাই ‘আত-তাক্বলীদুশ শারয়ী তথা সম্মানিত শারীয়াত উনার অনুসরণ’।

মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

يايها الذين امنوا اطيعوا الله و اطيعوا الرسول و اولى الامر منكم فان تنازعتم فى شىء فردوه الى الله و الرسول ان كنتم تؤمنون بالله و اليوم الاخر ذلك خير و احسن تاويلا. (سورة النساء شريف ۵۹ الاية شريف)

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো, সাইয়্যিদুনা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন-অনুকরণ করো এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল আমর অর্থাৎ যিনি বা যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পরিপূর্ণ অনুগত এবং অনুসরণ ও অনুকরণকারী উনাদের অনুসরণ করো। তোমাদের মধ্যে যদি কোন বিষয়ে মতবিরোধ হয়, তাহলে উক্ত বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করো। অর্থাৎ যে উলিল আমর উনার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দলীল বেশী সে উলিল আমর উনাকে ইত্বায়াত করতে হবে। যদি তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাকো। এটাই কল্যাণকর ও পরিনতির দিক দিয়ে উত্তম। (পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে و اولى الامر منكم অর্থাৎ আদেশদাতা উনাদেরকে অনুসরণ করার দ্বারা ইমাম, মুজতাহিদ, ওলীআল্লাহ, ফক্বীহ, মুফতী ও উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহহিম উনাদেরকে ইত্তিবা তথা অনুসরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে। আর ইহাই ‘আত-তাক্বলীদুশ শারয়ী তথা শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’। সুবহানাল্লাহ।

মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনার কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

والسابقون الاولون من الـمهاجرين و الانصار و الذين اتبعوهم باحسان رضى الله عنهم و رضوا عنه و اعدلـهم جنت تجرى تحتها الانـهر خالدين فيها ابدا ذلك الفوز العظيم. (سورة التوبة شريف ۱۰۰ الاية شريف)

অর্থাৎ: যাঁরা সর্বপ্রথম মুহাজিরীন (হিজরতকারী) ও আনছার (হিজরতকারী উনাদেরকে সাহায্যকারী) হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের মধ্যে অগ্রগামী এবং পরবর্তীতে উত্তমভাবে উনাদেরকে যাঁরা (ইমাম, মুজতাহিদ, উলামা-আউলিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহিম) অনুসরণ করেছেন; মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, আর উনারাও উনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা উনাদের জন্য এমন জান্নাত প্রস্তুত করে রেখেছেন যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত আছে, উনারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবেন। এটাই হলো মহান সফলতা। (সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ- ১০০)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন তিনি তিন শ্রেণীর মহান ব্যক্তিত্ব উনাদের প্রতি যে সন্তুষ্ট রয়েছেন সে বিষয়টি ঘোষনা করেছেন। উনারা হলেন: অগ্রগামী হযরত মুহাজিরীন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম, অগ্রগামী হযরত আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ও উলিল্ আমর তথা হযরত ইমাম, মুজতাহিদ, উলামা-আউলিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। সুবহানাল্লাহ।

মূলত: এ সুমহান মর্যাদা উনারা পেয়েছেন ছুহবাত ও ইত্তিবাহ তথা অনুসরণ-অনুকরণ উনাদের মাধ্যমে। আর ইহাই তো ‘আত-তাক্বলীদুশ শারয়ী তথা শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’। সুবহানাল্লাহ।

يايها الذين امنوا اتقوا الله و كونوا مع الصادقين. (سورة التوبة شريف ۱۱۹ الاية شريف)

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে ভয় করো এবং ছাদিক্বীন উনাদের সঙ্গী হয়ে যাও। (পবিত্র সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৯)

এখানে সঙ্গী হওয়ার অর্থ হলো- তোমরা উলিল আমর অর্থাৎ সত্যবাদী, ইমাম, মুজতাহিদ, উলামা কিরাম ও আওলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ছোহবত অর্জন করো এবং উনাদেরকে অনুসরণ করো। আর ইহাই ‘আত-তাক্বলীদুশ শারয়ী তথা শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’। সুবহানাল্লাহ।

মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনার কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

الرحمن فاسئل به خبيرا. (سورة الفرقان شريف ۵۹ الاية شريف)

অর্থ: তিনিই রহমান। উনার সম্পর্কে যিনি অবগত, উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন। (পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)

এখানে যাঁকে বা যাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করতে বলা হয়েছে তিনি বা তাঁরা হলেন উম্মাতের মধ্যে: হক্কানী-রব্বানী উলামা কিরাম, আউলিয়া কিরাম, ইমাম, মুজতাহিদ, ফক্বীহ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। আর ইহাই ‘আত-তাক্বলীদুশ শারয়ী তথা শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’। সুবহানাল্লাহ।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-

عن انَس بْنَ مَالِكٍ رضى الله عنه يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ يَقُولُ : انَّ أُمَّتِى لاَ تَجْتَمِعُ عَلى ضَلاَلَةٍ، فَاذَا رَايْتُمُ اخْتِلاَفًا فَعَلَيْكُمْ بِالسَّوَادِ الاعْظَمِ. (سنن ابن ماجة كتاب الفتن باب السواد الاعظم الـمولف: حضرت الامام ابن ماجة ابو عبد الله محمد بن يزيد القزوينى رحمة الله عليه المتوفى : ۲۷۳ هجرى. مسند احمد بن حنبل رحمة الله عليه. مشكوة الـمصابيح)

অর্থ: ছাহাবী হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: নিশ্চয়ই আমার প্রকৃত উম্মত উনারা গুমরাহীর উপর একমত হবেন না। যখন তোমরা উনাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখতে পাবে, তখন তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হলো বড় দল অর্থাৎ আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ উনাদের অনুসরণ করা।

দলীল-
√ সুনানে ইবনু মাজাহ কিতাবুল ফিতান বাবুস্ সাওয়াদিল আ’যম লেখক: হযরত ইমাম ইবনু মাজাহ আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ ক্বাযবীনী হাম্বালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওফাত মুবারক: ২৭৩ হিজরী,

√ মুসনাদ আহমাদ বিন হাম্বাল রহমাতুল্লাহি আলাইহি,

√ মিশকাতুল মাছাবীহ)

এখানে ‘আস-সাওয়াদুল আ’যম তথা বড় দল’ বলতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ উনার অনুসারীদেরকে বুঝানো হয়েছে। এই দলটিই মূলত: হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বালী মাযহাব উনার হক্কানী-রব্বানী ইমাম, মুজতাহিদ ও উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উনাদেরকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। আর ইহাই ‘আত-তাক্বলীদুশ শারয়ী তথা শারীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’। সুবহানাল্লাহ।

আমরা ওলী আল্লাহ উনাদের শান মান আলোচনা করলে, উনাদের মাধ্যমে সাহায্য কামনা করলে কিছু মানুষ কুফর শিরকের গরম ফতোয়া উদগীরন করে।


  ওলী আল্লাহ উনাদের ক্ষমতা অস্বীকার করে। তারা বলে, ওলী আল্লাহদের কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই ইত্যাদি। আসুন আমরা দেখি , পীর হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে ওলী আল্লাহ উনার ক্ষমতা সম্পর্কে কি বর্ননা করেছেন।

তাসাউফের একটা স্তর বর্ননা করতে গিয়ে লিখেন,

"এ স্তরে উপনিত হয়ে বান্দা খোদার প্রতিনিধি রুপে খোদার পথের যাত্রীদের ঐস্তরে পৌঁছান। এবং বাহ্যিক ভাবে বান্দা থাকলেও বাতেনী জগতে খোদা হয়ে যান। একেই বলা হয় বরযাখুল -বারাযিখ। এখানে সম্ভাব্য এবং অপরিহার্যতা সকল কিছুই এখানে সমান।
এই স্তরে পৌঁছে আরিফ ব্যক্তি সমস্ত জগৎ নিয়ন্ত্রন করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভুমিকা পালন কারী হয়ে যান। ""

দলীল--
√ জিয়াউল কুলুব - ২৯ পৃষ্ঠা ![ প্রকাশনা- আশরাফিয়া কুতুব খানা-রাশেদ কোম্পানী , দেওবন্দ ]

√ জিয়াউল কুলুব - বাংলা অনবাদ ১৩৯ পৃষ্ঠা।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ একটি শান হচ্ছে তিনি হাজির এবং নাজির।"


অসংখ্য দলীল থাকার পরও তাবলিগীরা এ বিষয়টা অস্বীকার করে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এসকল তাবলিগীরা তাদের কিতাবেই হাজির এবং নাজিরের অনেক দলীল উল্লেখ করছে, যেগুলা আজ তাদের জন্য বুমেরাং হয়ে দাড়িয়েছে।
বর্তমানে দেওবন্দীদের অন্যতম গুরু হচ্ছে "মাসিক মদীনা" পত্রিকার সম্পাদক মাহীউদ্দীন খান। সে আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে একটা বই লিখেছিলো। বইটার নাম হচ্ছে "স্বপ্নযোগে রাসূল্লাল্লহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম"। এই বইতে দেওবন্দী মাহীউদ্দীন খান স্বপ্নে এবং জাগ্রত অবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিয়ারত মুবারক সম্পর্কে অনেক গুলা ঘটনা বর্ননা করেছে। এখন ওই বই থেকে একটা ঘটনা আপনাদের সামনে উল্লেখ করবো, এ ঘটনা পড়ে আপনারা হাজির নাজিরের বিষয়ে নিজেরাই বিবেকের আদালতে বিচার করুন।
উক্ত কিতাবে বর্নিত একটি ঘটনা হুবুহু বর্ননা করা হলো-

মুফতীয়ে আজম আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার একখানা ঘটনা-
"১৯৭১ সালে হজ্ব ও রওজাপাক জিয়ারত শেষে দেশে ফিরে আসার পর একদিন কতিপয় বিশিষ্ট সাক্ষাৎপ্রর্থীর মধ্য থেকে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, রীতিমত নামাজ-দোয়ার দ্বারা আখেরী নবী হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জিয়ারত সম্ভব কিনা ?
জবাবে মুফতী সাহেব বললেন, আল্লাহ তা'য়ালার ইচ্ছা হলে তা অবশ্যই সম্ভব হতে পারে। তবে কোন উম্মতী যদি আল্লাহ ও রসূলের কোন হুকুমের প্রতি নাফরমানী না করে, এখলাছের সাথে এবাদত করে, শরীয়তের সঠিক অনুসরণ করে এবং সর্বোপরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি আন্তরিক মুহব্বত পোষন করে, তবে তাকে দর্শন প্রদান করার জন্য আল্লাহর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই আগ্রহী হয় পরেন। এরপর আবেগ আপ্লুত কন্ঠে তিনি বলেন, শুধু স্বপ্নেই নয় জাগ্রত অবস্থাতেও চর্মচক্ষেই তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখা যায়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, একদিন তিনি সকালবেলায় খানকায় বসে হাদীসের কিতাব লিখেছিলেন, হঠাৎ লক্ষ্য করলেন, হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় জ্যোতির্ময় পুরুষের বেশে খানকায় প্রবেশ করলেন এবং তাঁর প্রতি দৃষ্টিপাত করতঃ মুচকি হেসে চলে গেলেন। (একটি পূন্যময় জীবনি)

দলীল-
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৫৭ পৃষ্ঠা।
লেখক - মাহীউদ্দীন খান দেওবন্দী (সম্পাদক মাসিক মদীনা)।
প্রকাশনা- মদীনা পবলিকেশান্স, ৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০।

কোন ওলী আল্লাহ যদি কাশফের মাধ্যমে বা স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে কোন হাদীস শরীফের সত্যতা জেনে নেয় এই ধরনের বিষয়গুলাকে চোখ কান বুজে অস্বীকার এবং অবজ্ঞা করে।

 
" বিশিষ্ট মুহাদ্দিসগনের অনেকেই হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট থেকে এলমের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পথ নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছেন বলে বিশুদ্ধ বর্ননা রয়েছে। বিশেষ কোন একখানা হাদীস সম্পর্কে হয়তো তারা সন্দেহে পতিত হয়েছেন। সাক্ষাৎ লাভের সময় তাঁরা জিজ্ঞেস করেছেন, হাদীসখানা শুদ্ধ কিনা? জিজ্ঞাসার জবাবে হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীসখানার শুদ্ধাশুদ্ধ সম্পর্কিত মীমাংসা বলে দিয়েছেন। একই পক্রিয়ায় জাগ্রত অবস্থাতেও অনেকেই হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট থেকে অনেক অমূল্য জ্ঞান লাভ করেছেন বলে প্রচুর বর্ননা রয়েছে।"

দলীল-
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪-১৫ পৃষ্ঠা।

এই হলো দেওবন্দী গুরু মাহীউদ্দীনের বক্তব্য। এবার আসুন আমরা দেখি উক্ত কিতাবে এ প্রসঙ্গে কয়েকটা ঘটনা বর্ননা করা হয়েছে। ঘটনা গুলা উল্লেখ নিম্নে হুবুহু উল্লেখ করা হলো-

(১) প্রখ্যাত মুহাদ্দিস শায়েখ রাজিউদ্দীন হাসান সাগানী কুতুবুদ্দীন আইবেকের শাষনামলে আফগানিস্তান থেকে এদেশে আগমন করেন এবং বাদায়ূন বসতি স্থাপন করেন। "মাশারেকুল আনওয়ার" নামক বহুল প্রচলিত হাদীসগ্রন্থখানা তারই সংকলিত। ২২৪৬ খানা হাদীস এই কিতাবে সংকলিত হয়েছে। হযরত নিজামুদ্দীন আওলিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,কিতাব সংকলনের সময় কোন হাদীস সম্পর্কে সন্দেহ দেখা দিলে হযরত শায়েখ স্বপ্নযোগে রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাৎ লাভ করতেন এবং হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং সংশ্লিষ্ট হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধ বলে দিতেন।"

দলীল-
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫৫ পৃষ্ঠা।

(২) শায়েখ আবুল মাওয়াহেব শাযালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি একবার স্বপ্নযোগে হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাক্ষাৎ লাভ করলাম এবং দু'টি হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। হাদীস দু'টি হচ্ছে-
(ক) এমনভাবে আল্লাহর যিকির করতে থাক যেন লোকে তোমাকে পাগল বলে।"

(খ) ইবনে হেব্বানের বর্ননায় রয়েছে- আল্লাহর যিকির এত অধিক পরিমাণে কর যেন লোকে তোমাকে পাগল সাব্যস্ত করে।"

হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করলেন- দুটি বর্ননাই ঠিক। আমি দু'বার এই একই বিষয়বস্তু দু'ভাবে বলেছি। দু'টি বক্তব্যই আমার।"

দলীল-
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৬৮ পৃষ্ঠা।

(৩) ইমাম তিবরানী এ মর্মে একখানা হাদীস বর্ননা করেছেন যে, মুসলমানদের কর্তব্য পরস্পরে সদাচার,ভালোবাসা এবং ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ থাকা। নিজেদের যেন তারা এক দেহের এক একটা অঙ্গরূপে বিবেচনা করে। শরীরের কোন অঙ্গে ব্যাথা হলে পর যেমন সমগ্র শরীরেই তার পতিক্রিয়া অনুভুত হয় তেমনি যেকোন একজন মুসলমানদের দুঃখ বেদনা দেখলে যেন সকল মুসলমানের মধ্যেই সে বেদনার কষ্ট অনুভূত হয়।"
উক্ত হাদীস বর্ননা করার পর ইমাম তিবরানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি স্বপ্নযোগে হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ লাভ করি এবং জিজ্ঞেস করি যে, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ হাদীস খানা কি সহীহ নয় ! তখন হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র হাতে ইশারা করে পর পর তিনবার বললেন, নিশ্চয়ই সহীহ !

দলীল-
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৮৮-৮৯ পৃষ্ঠা।


তথ্যসূত্র -
√ স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
লেখক- মাহীউদ্দীন খান দেওবন্দী (সম্পাদক মাসিক মদীনা)
প্রকাশনা- মদীনা পাবলিকেশন্স, ৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০