NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

64. মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার জন্য আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন ,

Photo: ‎* মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার জন্য আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন ,
وَطَهِّرْ بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْقَائِمِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
অর্থাৎ “আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তওয়াফকারীদের জন্যে, নামাযে দণ্ডায়মানদের জন্যে এবং রুকু সেজদাকারীদের জন্যে (সূরা হজ্জ-২৬) |

* আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন "
وَعَهِدْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَنْ طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
অর্থাৎ “আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু সেজদাকারীদের জন্যে পবিত্র রাখ।” (সূরা বাকারা-১২৫) |

* উপরোক্ত আয়াত শরীফদ্বয়ের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ইবাদতের ঘরকে নামাজ, ইতিকাফ তথা ইবাদতের জন্য পবিত্র রাখতে হবে | কেননা প্রত্যেকটি মসজিদ হলো খানায়ে কাবার প্রতিচ্ছবি | আবাসিক হোটেল বানিয়ে তার পবিত্রতা নষ্ট করা উচিত নয় |

* ফতোয়া আলমগীরীতে উল্লেখ আছে, “মসজিদে না ঘুমানই উত্তম |” নবীজি (সা.) তিন মসজিদ ব্যতিরেকে অন্য কোন মসজিদে সফর করতে নিষেধ করেছেন | হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলে কারীম (সা.) এরশাদ করেন,
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تشد الرحال إلا إلى ثلاثة مساجد المسجد الحرام ومسجد الرسول صلى الله عليه و سلم ومسجد الأقصى
অর্থাৎ ‘তিন মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে সফর করা যাবে না | মসজিদে হারাম (মক্কা), আমার মসজিদ (মসজিদে নববী) এবং মসজিদে আল আকসা (বায়তুল মুকাদ্দাস)”| ( বুখারী শরীফ - ১১২৩ , মুসলিম শরীফ -৩৪৫০ )

* হাদিস শরীফে আরো এসেছে ,
" قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا ينبغي للمطي أن تشد رحاله إلى مسجد يبتغى فيه الصلاة غير المسجد الحرام والمسجد الأقصى ومسجدي هذا
অর্থাৎ হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, “মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববী ব্যতিত অন্য কোন মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সফর করা কোন মুসাফিরের জন্য সঙ্গত নয় | (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১১৬০৯) |

* হাদিস শরীফে আরো এসেছে ," হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আকরাম (রা.) হতে বর্ণিত হুযুর আকরাম (সা.) এরশাদ করেন, “তোমরা মসজিদকে ঘুমাবার স্থান বানাইও না | ” (উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ৫ম খন্ড, ৪৪৬ পৃষ্ঠা) |

একমাত্র ইতেকাফকারির জন্যই কেবল মসজিদে খাওয়া দাওয়া নিদ্রা ও বসবাস ইত্যাদির অনুমতি শরিয়তে রয়েছে তাই বলে পাইকারি হারে রাতদিন চব্বিশ ঘন্টা মসজিদকে বাসস্থান হিসেবে ব্যাবহার করা নিজের ঘরের ন্যায় এটা কোন ক্রমেই শরিয়ত সমর্থিত হতে পারেনা মসজিদের আদব সম্পর্কে গ্য়াত অগাত বালেগ নাবালেগ যুব বৃদ্ধ নির্বেশেষে সর্বস্তরের লোক দু এক কথা আলোচনা করত নির্দ্বিধায় মসজিদে অবস্তান করত পার্থিব কথা বার্তা পানাহার উঠা বসা ও নিদ্রা ইত্যাদি কাজগুলো করায় মসজিদের ইজ্জত হুরমত বিনষ্ট হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই এ খানে উল্লেখ যে শরিয়ী ইতেকাফের জন্য রোজা রাখা শর্ত,চাই ওয়াজীব ইতেকাফ হোক বা নফল হোক*
ইতেকাফের অর্থ হলো,ইতেকাফের নিয়তে রোজা রাখা অবস্তায় মসজিদে অবস্তান করা*ইতেকাফ সহীহ হওয়ার জন্য হানাফি মাজহাব মতে রোজা রাখা শর্ত তবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে শর্ত নয় আমাদের ইমামগনের মতে ওয়াজীব ইতেকাফ রোজা ব্যতীত সহীহ হবে না,এমনকি নফল ইতেকাফ রোযা ব্যতীত ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মতে সহীহ হবেব এ মতটি ইমাম হাসান আবু হানিফা রহঃ হতে বর্ননা করেছেন জাহের রেওয়াতে রোজা রাখা ব্যতিত ইতেকাফ শুদ্ধ নয় এমতের ভিত্ততে একদিনের কম কোন ইতেকাফ শরিয়তের গ্রহনযোগ্য নয়*ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ এর মতে কম পখে এক ঘন্টায় ইতেকাফ হবে কিন্তু তার এ মত গ্রহনযোগ্য না হওয়ার কারন হলো এ কওলের সমার্থনে কোন নির্ভরযোগ্য হাদীস নেই*

Zobair‎
* মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার জন্য আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন ,
وَطَهِّرْ بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْقَائِمِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
অর্থাৎ “আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তওয়াফকারীদের জন্যে, নামাযে দণ্ডায়মানদের জন্যে এবং রুকু সেজদাকারীদের জন্যে (সূরা হজ্জ-২৬) |

* আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন "
وَعَهِدْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَنْ طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
অর্থাৎ “আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু সেজদাকারীদের জন্যে পবিত্র রাখ।” (সূরা বাকারা-১২৫) |

* উপরোক্ত আয়াত শরীফদ্বয়ের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ইবাদতের ঘরকে নামাজ, ইতিকাফ তথা ইবাদতের জন্য পবিত্র রাখতে হবে | কেননা প্রত্যেকটি মসজিদ হলো খানায়ে কাবার প্রতিচ্ছবি | আবাসিক হোটেল বানিয়ে তার পবিত্রতা নষ্ট করা উচিত নয় |

* ফতোয়া আলমগীরীতে উল্লেখ আছে, “মসজিদে না ঘুমানই উত্তম |” নবীজি (সা.) তিন মসজিদ ব্যতিরেকে অন্য কোন মসজিদে সফর করতে নিষেধ করেছেন | হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলে কারীম (সা.) এরশাদ করেন,
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تشد الرحال إلا إلى ثلاثة مساجد المسجد الحرام ومسجد الرسول صلى الله عليه و سلم ومسجد الأقصى
অর্থাৎ ‘তিন মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে সফর করা যাবে না | মসজিদে হারাম (মক্কা), আমার মসজিদ (মসজিদে নববী) এবং মসজিদে আল আকসা (বায়তুল মুকাদ্দাস)”| ( বুখারী শরীফ - ১১২৩ , মুসলিম শরীফ -৩৪৫০ )

* হাদিস শরীফে আরো এসেছে ,
" قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا ينبغي للمطي أن تشد رحاله إلى مسجد يبتغى فيه الصلاة غير المسجد الحرام والمسجد الأقصى ومسجدي هذا
অর্থাৎ হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, “মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববী ব্যতিত অন্য কোন মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সফর করা কোন মুসাফিরের জন্য সঙ্গত নয় | (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১১৬০৯) |

* হাদিস শরীফে আরো এসেছে ," হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আকরাম (রা.) হতে বর্ণিত হুযুর আকরাম (সা.) এরশাদ করেন, “তোমরা মসজিদকে ঘুমাবার স্থান বানাইও না | ” (উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ৫ম খন্ড, ৪৪৬ পৃষ্ঠা) |

একমাত্র ইতেকাফকারির জন্যই কেবল মসজিদে খাওয়া দাওয়া নিদ্রা ও বসবাস ইত্যাদির অনুমতি শরিয়তে রয়েছে তাই বলে পাইকারি হারে রাতদিন চব্বিশ ঘন্টা মসজিদকে বাসস্থান হিসেবে ব্যাবহার করা নিজের ঘরের ন্যায় এটা কোন ক্রমেই শরিয়ত সমর্থিত হতে পারেনা মসজিদের আদব সম্পর্কে গ্য়াত অগাত বালেগ নাবালেগ যুব বৃদ্ধ নির্বেশেষে সর্বস্তরের লোক দু এক কথা আলোচনা করত নির্দ্বিধায় মসজিদে অবস্তান করত পার্থিব কথা বার্তা পানাহার উঠা বসা ও নিদ্রা ইত্যাদি কাজগুলো করায় মসজিদের ইজ্জত হুরমত বিনষ্ট হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই এ খানে উল্লেখ যে শরিয়ী ইতেকাফের জন্য রোজা রাখা শর্ত,চাই ওয়াজীব ইতেকাফ হোক বা নফল হোক*
ইতেকাফের অর্থ হলো,ইতেকাফের নিয়তে রোজা রাখা অবস্তায় মসজিদে অবস্তান করা*ইতেকাফ সহীহ হওয়ার জন্য হানাফি মাজহাব মতে রোজা রাখা শর্ত তবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে শর্ত নয় আমাদের ইমামগনের মতে ওয়াজীব ইতেকাফ রোজা ব্যতীত সহীহ হবে না,এমনকি নফল ইতেকাফ রোযা ব্যতীত ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মতে সহীহ হবেব এ মতটি ইমাম হাসান আবু হানিফা রহঃ হতে বর্ননা করেছেন জাহের রেওয়াতে রোজা রাখা ব্যতিত ইতেকাফ শুদ্ধ নয় এমতের ভিত্ততে একদিনের কম কোন ইতেকাফ শরিয়তের গ্রহনযোগ্য নয়*ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ এর মতে কম পখে এক ঘন্টায় ইতেকাফ হবে কিন্তু তার এ মত গ্রহনযোগ্য না হওয়ার কারন হলো এ কওলের সমার্থনে কোন নির্ভরযোগ্য হাদীস নেই*

Zobair

63. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানতেন হোসাইন কারবালা ময়দানে শহীদ হবেন



উম্মুল মুমেনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বর্ণনা করেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, “আমাকে জিব্রাঈল আমীন (আলাইহিস সালাম) সংবাদ দিলেন যে, আমার পরে আমার বেটা হোসাইনকে ‘তফ’ (কারবালা) জমীনে কতল করা হবে । জিব্রাঈল আমার নিকট (ঐ জমিনের) এ মাটি নিয়ে এসেছেন। আর তিনি এও সংবাদ দিলেন যে, ওখানেই তার অন্তিম শয্যা (অর্থাৎ সমাধি) হবে।

[সওয়ায়েকে মুহরেকা- ১৯০ পৃষ্ঠা, সিররুশ শাহাদাইন- ২৪ পৃষ্ঠা, খাছায়েছে কুবরা- ২য় খন্ড, ১২৫ পৃষ্ঠা]

# রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরকম আরও অনেক কিছু বলে গেছেন। সেই সম্পর্কে জানতে নিচের লিঙ্ক থেকে কিতাবটি ডাউনলোড করে পড়ুন
http://www.mediafire.com/?545mi6dd8l5je83

# ঐতিহাসিক কারবালার স্মৃতি বিজরিত মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে খতিবে করাচি আল্লামা শফি উকারভি (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) কর্তৃক রচিত অদ্বিতীয় কিতাব "শামে কারবালা" যার প্রথম অংশ আজ শেয়ার করা হলো।
ডাউনলোড লিংক http://www.mediafire.com/?t0pv9jjtxz932ba

62. আমরা মাজারে কেন যাই ? এতে কোন ফজিলত আছে ? সাহাবাগণ , সালফে সালেহীনগণ কি মাজারে যেতেন ?


Photo: ‎প্রশ্নঃ আমরা মাজারে কেন যাই ? 
এতে কোন ফজিলত আছে ?
সাহাবাগণ , সালফে সালেহীনগণ কি মাজারে যেতেন ?

উত্তরঃ মাজারে যাওয়ার কয়েকটা কারণ রয়েছে । নিম্নে মাজারে যাওয়ার কারণসহ সমস্হ প্রশ্নের উত্তর দলীল সহকারে উপস্থাপন করা হলো:-

১ নং কারণঃ মাজারে যাওয়া সাহাবাগণের সুন্নাত । যেমন হাদিস শরীফে এসেছে..

اصاب الناس قحط في زمان عمر_ فجاء رجل الي قبر النبي صلعم فقال يارسول الله استسف لامتك فانهم قد هلكوا فاتي الرجل في المنام فقيل له ائت عمر فاقرئه السلام _ واخبره انكم مستقيمون 

হযরত ওমর রঃ এর সময় একদা অনাবৃষ্টির কারণে মানুষের উপর দুর্ভিক্ষ পতিত হল । তখন এক সাহাবী হযরত বেলাল বিন হারেস রঃ রাসূল দঃ এর রওযা মোবারকে এসে আবেদন করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ দঃ আপনার উম্মত ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে আপনি আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করুন । সে সাহাবিকে স্বপ্নযোগে বলা হল , হযরত ওমর রঃ কে গিয়ে সালাম বল এবং তাকে বল যে তোমাদেরকে বৃষ্টি দান করা হবে । সুবহানাল্লাহ !
_______________________________

* আল মুসান্নাফ ,ইবনে আবি শায়বাহ । (খন্ড ১২ ,পৃঃ৩২ হাদিস নং ১২০৫১.)

*হযরত ইবনে হাজর আসকালানী রহঃ, ফতহুল বারী শরহে বুখারী ,
(খন্ড ২ পৃঃ ৪৯৫ ও ৪১২)
_______________________________

হযরত ইবনে আবি শায়বাহ, ইবনে হাজর আসকালানী ,ও ইমাম কোস্তলানী রহঃ তারা বলেছেন
هذا حديث صحيح
অত্র হাদিস খানা সহীহ সনদে বর্ণিত ! 



২নং কারণঃ- আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণের রওযা হল দোআ কবুলের বিশেষ স্হান । 
যেমন ইমাম শাফেয়ী রহঃ বলেন ...

اني لاتبرك بابي حنيفة واجيء الي قبره فاذا عرضت لي حاجة صليت ركعتين وجئت الي قبره وسالت الله الحاجة عنده فما تبعد عني حتي تقضي_

নিশ্চয়ই আমি ইমাম আবু হানিফা রঃ হতে বরকত হাসিল করি এবং আমি তার রওজায় জিয়ারত করতে আসি । আমার যখন কোন প্রয়োজন পড়ে তখন আমি দুই রাকাত নামাজ পড়ে তার কবরে আসি এবং তার পাশে দাড়িয়ে আল্লাহর নিকট মুনাজাত করি । অতঃপর আমি সেখান থেকে আসতে না আসতেই আমার প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায় । সুবহানাল্লাহ !
_______________________________

ফতোয়ায়ে শামী , খন্ড ১ পৃঃ ১ .
তারিখে বাগদাদ , খন্ড ১ পৃঃ ১২৩
রুদ্দুল মুখতার খন্ড ১ পৃঃ ৪১ 
আলখায়রাতুল হেসান , পৃঃ ৯৪
_______________________________

ওহাবী ভাইদের বলছি । আপনারা কি নিজেদের ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর চেয়ে বড় মুফতী মনে করেন ? নাউযুবিল্লাহ ।



(খ ) শাহ আব্দুল হক মোহাদ্দেস দেহলবী রহঃ যিনি সকলের কাছে মান্য ও গ্রহণযোগ্য , এবং যিনি প্রচ্যের বুখারী হিসেবে পরিচিত । তিনি তার কিতাবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর একটি উক্তি উল্লেখ করে বলেন হযরত মুছা কাজেম এর কবর শরীফ দোআ কবুল হবার জন্য পরশ পাথরের মত পরীক্ষিত ! সুবহানাল্লাহ ।
_
______________________________

# আশিয়াতুল লুমআত
( খন্ড ২ পৃঃ ৯২৩ ).


৩ নং কারণঃ- সম্মানিত জায়গা বলে.. যেমন আল্লাহ তাআলার বাণী 

ومن يعظم شعائر الله فانها من تقواي القلوب 

যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শন সমূহকে তাজিম বা সম্মান করল তার নিশ্চয়ই উহা অন্তরের তাকওয়া বা খোদাভীতির অন্তর্ভুক্ত । (আল কোরআন)

_______________________________

আর যেহেতু আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ তার নিদর্শনের অন্তর্ভূক্ত সেহেতু তাদের প্রতি সম্মান করা মূলত খোদাভীতির অন্তর্ভূক্ত ।


এখন এ ব্যপারে ওহাবীগুরু আশরাফ আলী থানবী কি বলে দেখি...

جو استعانت و انتمداد باعتقاد علم و قدرت مستقل ھو وہ شرک ہے اور جو باعتقاد علم وقدرت غیر مستقل ہو اور وہ کسی دلیل سے ثابت ہو جاۓ تو جائز ہے خواہ مستمد منہ زندہ ہو یاموت..

অর্থঃ "অলীগণের জ্ঞান ও ক্ষমতাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে তাদের নিকট যে সাহায্য প্রার্থনা করা হয় তা শিরক । কিন্তু অলীগণের জ্ঞান ও ক্ষমতাকে স্বয়ংসম্বূর্ণ মনে না করে বরং আল্লাহ প্রদত্ত মনে করে যদি তাদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা হয় এবং যেকোন প্রমাণ ও উদাহরণ দ্বারা তাদের উক্ত খোদাপদত্ত জ্ঞান ও ক্ষমতা প্রমাণিত হয় তাহরে তাদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা জায়েয । চাই তিনি জীবিত হোন অথবা মৃত"
_______________________________

[ইমদাদুল ফতোয়া , খণ্ড ৩ , আকায়েদ ও কালাম অধ্যায় ।] 

Zobair Ahmed‎প্রশ্নঃ আমরা মাজারে কেন যাই ?
এতে কোন ফজিলত আছে ?
সাহাবাগণ , সালফে সালেহীনগণ কি মাজারে যেতেন ?

উত্তরঃ মাজারে যাওয়ার কয়েকটা কারণ রয়েছে । নিম্নে মাজারে যাওয়ার কারণসহ সমস্হ প্রশ্নের উত্তর দলীল সহকারে উপস্থাপন করা হলো:-

১ নং কারণঃ মাজারে যাওয়া সাহাবাগণের সুন্নাত । যেমন হাদিস শরীফে এসেছে..

اصاب الناس قحط في زمان عمر_ فجاء رجل الي قبر النبي صلعم فقال يارسول الله استسف لامتك فانهم قد هلكوا فاتي الرجل في المنام فقيل له ائت عمر فاقرئه السلام _ واخبره انكم مستقيمون

হযরত ওমর রঃ এর সময় একদা অনাবৃষ্টির কারণে মানুষের উপর দুর্ভিক্ষ পতিত হল । তখন এক সাহাবী হযরত বেলাল বিন হারেস রঃ রাসূল দঃ এর রওযা মোবারকে এসে আবেদন করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ দঃ আপনার উম্মত ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে আপনি আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করুন । সে সাহাবিকে স্বপ্নযোগে বলা হল , হযরত ওমর রঃ কে গিয়ে সালাম বল এবং তাকে বল যে তোমাদেরকে বৃষ্টি দান করা হবে । সুবহানাল্লাহ !
_______________________________

* আল মুসান্নাফ ,ইবনে আবি শায়বাহ । (খন্ড ১২ ,পৃঃ৩২ হাদিস নং ১২০৫১.)

*হযরত ইবনে হাজর আসকালানী রহঃ, ফতহুল বারী শরহে বুখারী ,
(খন্ড ২ পৃঃ ৪৯৫ ও ৪১২)
_______________________________

হযরত ইবনে আবি শায়বাহ, ইবনে হাজর আসকালানী ,ও ইমাম কোস্তলানী রহঃ তারা বলেছেন
هذا حديث صحيح
অত্র হাদিস খানা সহীহ সনদে বর্ণিত !



২নং কারণঃ- আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণের রওযা হল দোআ কবুলের বিশেষ স্হান ।
যেমন ইমাম শাফেয়ী রহঃ বলেন ...

اني لاتبرك بابي حنيفة واجيء الي قبره فاذا عرضت لي حاجة صليت ركعتين وجئت الي قبره وسالت الله الحاجة عنده فما تبعد عني حتي تقضي_

নিশ্চয়ই আমি ইমাম আবু হানিফা রঃ হতে বরকত হাসিল করি এবং আমি তার রওজায় জিয়ারত করতে আসি । আমার যখন কোন প্রয়োজন পড়ে তখন আমি দুই রাকাত নামাজ পড়ে তার কবরে আসি এবং তার পাশে দাড়িয়ে আল্লাহর নিকট মুনাজাত করি । অতঃপর আমি সেখান থেকে আসতে না আসতেই আমার প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায় । সুবহানাল্লাহ !
_______________________________

ফতোয়ায়ে শামী , খন্ড ১ পৃঃ ১ .
তারিখে বাগদাদ , খন্ড ১ পৃঃ ১২৩
রুদ্দুল মুখতার খন্ড ১ পৃঃ ৪১
আলখায়রাতুল হেসান , পৃঃ ৯৪
_______________________________

ওহাবী ভাইদের বলছি । আপনারা কি নিজেদের ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর চেয়ে বড় মুফতী মনে করেন ? নাউযুবিল্লাহ ।



(খ ) শাহ আব্দুল হক মোহাদ্দেস দেহলবী রহঃ যিনি সকলের কাছে মান্য ও গ্রহণযোগ্য , এবং যিনি প্রচ্যের বুখারী হিসেবে পরিচিত । তিনি তার কিতাবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর একটি উক্তি উল্লেখ করে বলেন হযরত মুছা কাজেম এর কবর শরীফ দোআ কবুল হবার জন্য পরশ পাথরের মত পরীক্ষিত ! সুবহানাল্লাহ ।
_
______________________________

# আশিয়াতুল লুমআত
( খন্ড ২ পৃঃ ৯২৩ ).


৩ নং কারণঃ- সম্মানিত জায়গা বলে.. যেমন আল্লাহ তাআলার বাণী

ومن يعظم شعائر الله فانها من تقواي القلوب

যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শন সমূহকে তাজিম বা সম্মান করল তার নিশ্চয়ই উহা অন্তরের তাকওয়া বা খোদাভীতির অন্তর্ভুক্ত । (আল কোরআন)

_______________________________

আর যেহেতু আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ তার নিদর্শনের অন্তর্ভূক্ত সেহেতু তাদের প্রতি সম্মান করা মূলত খোদাভীতির অন্তর্ভূক্ত ।


এখন এ ব্যপারে ওহাবীগুরু আশরাফ আলী থানবী কি বলে দেখি...

جو استعانت و انتمداد باعتقاد علم و قدرت مستقل ھو وہ شرک ہے اور جو باعتقاد علم وقدرت غیر مستقل ہو اور وہ کسی دلیل سے ثابت ہو جاۓ تو جائز ہے خواہ مستمد منہ زندہ ہو یاموت..

অর্থঃ "অলীগণের জ্ঞান ও ক্ষমতাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে তাদের নিকট যে সাহায্য প্রার্থনা করা হয় তা শিরক । কিন্তু অলীগণের জ্ঞান ও ক্ষমতাকে স্বয়ংসম্বূর্ণ মনে না করে বরং আল্লাহ প্রদত্ত মনে করে যদি তাদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা হয় এবং যেকোন প্রমাণ ও উদাহরণ দ্বারা তাদের উক্ত খোদাপদত্ত জ্ঞান ও ক্ষমতা প্রমাণিত হয় তাহরে তাদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা জায়েয । চাই তিনি জীবিত হোন অথবা মৃত"
_________________ [ইমদাদুল ফতোয়া , খণ্ড ৩ , আকায়েদ ও কালাম অধ্যায় ।]

61. জানাযার আগে দোআর প্রমাণ



আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এ কথার উপর একমত যে মুসলমান মৃত ব্যক্তিদের জন্য জানাযার আগে ও পরে দোআ করা অবশ্যই পছন্দনীয় এবং কোরআন হাদিসের অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত।

লিল ১,:-জানাযার আগে দোআর প্রমাণ । সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত যে সাহাবাগণও ফারুখে আযম এর লাশ মুবারকের চতুর্দিকে দাড়িয়ে তার জন্য দোআ করেছেন । ﻭﺿﻊ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﻋﻠﻲ ﺳﺮﻳﺮﻩ ﻓﺘﻜﻔﻨﻪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻳﺪﻋﻮﻥ ﻭ ﻳﺜﻨﻮﻥ ﻭ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻋﻠﻴﻪ ﻗﺒﻞ ﺍﻥ ﻳﺮﻓﻊ ﻭ ﺍﻧﺎ ﻓﻴﻬﻢ ﻗﺎﻝ ﻓﻠﻢ ﻳﺮﻋﻨﻲ ﺍﻻ ﺑﺮﺟﻞ ﻗﺪ ﺍﺧﺬ ﺑﻤﻨﻜﺒﻲ ﻣﻦ ﻭﺭﺍﺇﻱ ﻓﺎﻟﺘﻔﺖ ﺍﻟﻴﻪ ﻓﺎﺫﺍ ﻫﻮ ﻋﻠﻲ ﻓﺘﺮﺣﻢ ﻋﻠﻲ ﻋﻤﺮ ___ হযরত ইবনে আব্বাস রঃ হতে বর্ণিত , হযরত উমর বিন খাত্তাব রঃ কে খাটের উপর কাফন পরায়ে মানুষেরা তার জন্য দোআ, ছানা পাঠ করেছেন । খাট থেকে তুলে নেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর রহমত কামনা করেছেন। আমিও তাদের মধ্যে ছিলাম। এক ব্যাক্তি পেছন থেকে এসে আমার কাঁধ ধরলে দেখলাম তিনি তো হযরত আলী রঃ । তিনি হযরত উমার রঃ এর জন্য রহমত কামনা করেন। [সহিহ বুখারি ও মুসলিম শরীফ]

জানাযার পর লোকটি কেমন ছিল তা স্বাক্ষী দেওরা জায়েয ও উত্তম ।

দলীল ২:-... ﻋﻦ ﺍﻡ ﺳﻠﻤﺔ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﺍﺫﺍ ﺣﻀﺮﺗﻢ ﺍﻟﻤﺮﻳﺾ ﺍﻭ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻓﻘﻮﻟﻮﺍ ﺧﻴﺮﺍ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﻤﻼﺇﻛﺔ ﻳﻮﻣﻨﻮﻥ ﻣﺎ ﺗﻘﻮﻟﻮﻥ হযরত উম্মে সালামা রঃ হতে বর্ণিত রাসুল দঃ বলেছেন যখন তোমরা কোন রুগ্ন বা মৃত ব্যক্তির পাশে হাজির হও তখন তার সম্পর্কে ভাল বলবে। কেননা তোমরা যা বল ফেরেশতারা তাই বিশ্বাস করে। [সহিহ মুসলিম।]

জানাযার পর দোআ করা ।

দলীল ৩:- ... ﺍﺫﺍ ﺻﻠﻴﺘﻢ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻓﺎﺧﻠﺼﻮﺍ ﻟﻪ যখন তোমরা মৃত ব্যক্তির জানাযা পড়ে ফেল তখন তার জন্য একনিষ্ঠভাবে দুআ কর। [মিশকাত শরীফ, বাবু সালাতিল জানাযা।] ঊক্ত হাদিস দ্বারা পরিস্কারভাবে জানাজার পর দোআর কথা প্রকাশ পায়।

দলীল ৪... ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻋﻤﺎﻣﺔ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﻗﻠﺖ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﺍﻱ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﺍﺳﻤﻊ ﻗﺎﻝ ﺟﻮﻑ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﺍﻻﺧﺮ ﻭ ﺩﺑﺮ ﺍﻟﺼﻠﻮﺍﺕ ﺍﻟﻤﻔﺘﻮﺑﺎﺕ হযরত আবু উমামা রঃ হতে বর্নিত তিনি বলেন আমি রাসুল দঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম কোন দোআ অধিক গ্রহণযোগ্য? তিনি দঃ বলেন শেষ রাত্রির নির্জন মুহুর্ত ও ফরয নামাজের পর দোআ করা। [সুনানে তিরমীযি ও নাসায়ী ] সুতরাং যেহেতু জানাযার নামাজ ফরযে কেফায়া তাই এর পর দোয়া করা উত্তম।


দলীল ৫.... ﻋﻦ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻌﻢ ﺍﺫﺍ ﻓﺮﻍ ﻣﻦ ﺩﻓﻦ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻭﻗﻒ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺳﺘﻐﻔﺮﻭﺍ ﻻﺧﻴﻜﻢ ﻭﺳﻠﻮﺍ ﻟﻪ ﺍﻟﺘﺜﺒﻴﺖ ﺍﻧﻪ ﺍﻻﻥ ﻳﺴﺎﻝ হযরত উসমান রঃ হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল দঃ লাশ দাফনের পর দাড়িয়ে বলতেন তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং সাবেত কদম থাকার জন্য দোয়া কর । কেননা তাকে এখনি প্রশ্ন করা হবে। [সুনানে আবু দাউদ ও বায়হাকি সহিহ সনদে বর্ননা করেছেন]

দলীল ৬.... রাসূল দঃ হযরত তালহা বিন বরা আনসারী রঃ এর জানাযা পড়ালেন এবং এরপর হাত তুলে দোয়া করলেন হে আল্লাহ! তাকে তালহাকে এ অবস্হায় সাক্ষাত দান কর যে তুমি তাকে দেখবে আর সে তোমাকে দেখে খুশী হবে । [ জুরকানী শরহে মুয়াত্তা ২য় খণ্ড পৃঃ ৬১, আওনুল উবুদ শরহে আবি দাউদ ৩য় খণ্ড পৃঃ ১৯৪ ]

দলীল ৭... হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম হযরত ওমর ফারুখ রঃ এর জানাযার শরীক হতে আসলেন কিন্তু তার পূর্বেই জানাযা নাযাজ হয়ে কেলে তিনি দূর থেকে বললেন যদিও তোমরা আমার আগেই জানাযা পড়ে ফেলেছ কিন্তু এখন দোয়ার ক্ষেত্রে আমার পূর্বে করে ফেলনা , আমাকে দোয়ার অন্তর্ভূক্ত কর । [মাবসুত ২য় খণ্ড, পৃঃ ৬৭]

এখন বাতিল ফেরকার প্রতি চ্যলেণ্জ আপনারা একটা সহীহ হাদীস দেখান যাতে জানাযার পর নবী দঃ কর্তৃক দোয়া নিষেধ করা হয়েছে। জানি পারবেন না । কারণ আপনাদের হাদিসটা যে কিতাবে আছে তা এখনো ছাপা হয়নি। তাহলে কোন দলীল না থাকা স্বত্তেও আপনারা জানাযার আকে পরে দোয়া কেন অস্বীকার করেন? এগুলো আপনাদের নিচক ধর্মীয় গোড়ামী ছাড়া আর কিছু নয় । আপনাদের হেদায়েত নসীব হোক, আমীন !

www.facebook.com/Zobair.1992

60. ফরজ অবশ্য পালনীয় ফরজ বাদ দেবার কোন উপায় নেই কিন্তু নফল আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে সহায়ক

ফরজ অবশ্য পালনীয় ফরজ বাদ দেবার কোন উপায় নেই কিন্তু নফল আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে সহায়ক

আবূ হোরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ্ বলেন: “যে ব্যক্তি আমার কোন বন্ধুর সঙ্গে শত্রুতা করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমি যা কিছু আমার বান্দার উপর ফরয করেছি কেবল তা দ্বারাই কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দাহ্ সর্বদা নফল এবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাঁকে আমার এমন প্রিয়পাত্র বানিয়ে নেই যে, আমি তাঁর কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শোনে, তাঁর চোখ হয়ে যাই যার দ্বারা সে দেখে, তাঁর হাত হয়ে যাই যার দ্বারা সে ধরে এবং তাঁর পা হয়ে যাই যার দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায় আমি অবশ্যই তাঁকে তা দেই। সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, আমি তাঁকে অবশ্যই আশ্রয় দেই। আমি কোন কাজ করতে চাইলে তা করতে দ্বিধা করিনা, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তাঁর বেচে থাকাকে অপছন্দ করি। [বুখারী: ৬৫০২, ই ফা ৬০৫৮]

সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ আমাদেরকে বেশি বেশি নফল ইবাদাত পালনের তৌফিক দিন। আমীন!

সৌজন্যেঃ সহীহ আক্বীদা ও ঈমান (ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী) পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে শেয়ার করুণ।

59. রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসল্লাম অতুলনীয়-

রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসল্লাম অতুলনীয়-

হযরত আনাস রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসল্লাম ছিল মনি মুক্তার মতো, যখন পথ চলতেন পূর্ণ তারুন্যের সাথে চলতেন । আমি নবীজীর হাতের তালু মোবারকের মতো কোমল না কোনো মোটা রেশমী কাপড় দেখেছি না কোনো পাতলা । আর আমি এমন কোনো মেশক আম্বরের খুশবো দেখিনি যা নবীজির শরীর মোবারকের ঘাম মোবারকের চাইতে অধিক খুশবো । - সুবহানাল্লাহ -
{ বুখারী শরীফ- ১ম খন্ড, ২৬৪ পৃঃ, মুসলিম শরীফ- ২য় খন্ড, ২৫৭ পৃঃ, মাসাবীহুস সুন্নাহ- ৪র্থ খন্ড, ৪৮ পৃঃ }

58. পবিত্র কোর-আন শরিফ এর আলোকে রাসুল (দ) নূর,,,


পবিত্র কোর-আন শরিফ এর আলোকে রাসুল (দ) নূর,,,

কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, তাফসীর, শরাহ, ইমাম মুস্তাহিদ উনাদের বক্তব্যে স্পষ্ট ভাবে জানা যায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন নূর, তিনি নূরে মুজাসসাম বা আপাদমস্তক নূর।
আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম উনার নূর মোবারক সৃষ্টি করেছেন।
সুবহানাল্লাহ্ !!

আমারা আমাদের এই ধারাবাহিক পোস্টে প্রথমে কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ এবং তাফসীর পরবর্তীতে হাদীস শরীফ এবং ইমাম মুস্তাহিদ উনাদের বক্তব্য পেশ করবো। ইনশাআল্লাহ!

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম "নূর" হওয়ার কুরআনী দালায়েল :

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফ উনার ৫ নং সূরা মুবারকে ইরশাদ করেন-

قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين

অর্থ: নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে এক মহান "নূর" এবং একখানা সুস্পষ্ট কিতাব এসেছে।"

দলীল-
√ সূরা মায়েদা ১৫নং আয়াত শরীফ।

উল্লেখিত আয়াত শরীফে "নূর" শব্দ দ্বারা হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে, যেহেতু তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম।

এবার আসুন আমরা জগতবিখ্যাত ,অনুসরনীয় সকল মুফাসসিরিন ই কিরাম উনাদের বিশ্ববিখ্যাত এবং নির্ভরযোগ্য তাফসীর সমূহ হতে বর্ননিত আয়াত শরীফ এর "নূর" শব্দের তাফসির সমূহ উল্লেখ করি---

(১) এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত সাহাবী রঈসুল মুফাসসিরীন,ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-

قد جاءكم من الله نور-يعني محمد صلي الله عليه و سلم

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট " নূর" অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন।"

দলীল-
√ তাফসীরে ইবনে আব্বাস সূরা মায়েদা ১৫নং আয়াত শরীফের তাফসীর।

(২) ইমামুল আল্লাম,নাছিরুশ শরীয়ত, মুহিউস সুন্নাহ , আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহীম বাগদাদী মারুফ বিল খাযেন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نور-يعني محمد صلي الله عليه و سلم

অর্থ : মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট "নূর" অর্থাৎ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন।"

দলীল-
√ তাফসিরে মায়ানিউত তানযীল ১ম খন্ড ৪৪৭ পৃষ্ঠা ।

(৩) ইমামুল জলীল,আল্লামা আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ ইবনে অহমদ মাহমূদ নাসাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন--

من الله نور - النور محمد صلي الله عليه و سلم لانه يهتدي به كام سمي سراجا

অর্থ: আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এক মহান নূর হচ্ছেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম । কেননা উনার মাধ্যমেই মানুষ হিদায়েত পেয়ে থাকে। যেরূপ উনার নানকরন করা হয়েছে " সিরাজ" অর্থাৎ প্রদীপ।"

দলীল-
√ তাফসিরে মাদারিকুত তানযীল ১ম খন্ড ৪৫৭ পৃষ্ঠা।

(৪) ইমামুল মুফাসসিরিন, তাজুল মানত্বেকীন, আল্লামা ফখরুদ্দীন রাজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ان المراد بالنور محمد صلي الله عليه و سلم و بالكتاب القران

অর্থ: নূর দ্বারা অর্থ হচ্ছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কিতাব দ্বারা উদ্দেশ্যে কুরআন শরীফ।"

দলীল-
√ তাফসীরে কবীর ১১ খন্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা।

(৫) বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আবূ মুহম্মদ হুসাইন ইবনে মাসুউদ ফাররাউল বাগবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نرو - يعني محمد صلي الله عليه و سلم

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট "নূর" অর্থাৎ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন।"

দলীল-
√ তাফসীরে মায়ালিমুত তানযীল ২য় খন্ড ২৮ পৃষ্ঠা ।

(৬) ইমামুল কবীর, মুহাদ্দিসুশ শাহীর আল্লামা আবু জাফর মুহম্মদ ইবনে জারীর তাবারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نور -يعني بانور محمد صلي الله عليه و سلم
অর্থ: উক্ত আয়াত শরীফে নূর দ্বারা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে।"

দলীল-
√ তাফসীরে জামিউল বয়ান (তাবারী) ৬ষ্ঠ খন্ড ১০৪ পৃষ্ঠা

(৭) আল্লামাতুল হিবর,হামিলুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীকত,আলামুল হুদা,আল্লামা কাজী ছানাউল্লাহ পানীপথী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন--

قد جاءكم من الله نور -يعني محمد صلي الله عليه و سلم

অর্থ: তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে "নূর'" অর্থাৎ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন।"

দলীল-
√ তাফসীরে মাযহারী ৩য় খন্ড ৬৮ পৃষ্ঠা ।

(৮) ক্বাজিউল কুজাত,ইমাম আবূ সাউদ মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইমাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نور....... المراد بالاول هو الرسل صلي الله عليه و سلم وبالثاني القران

অর্থ: বর্নিত আয়াত শরীফের প্রথম শব্দ "নূর" দ্বারা উদ্দেশ্যে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আর দ্বিতীয় শব্দ কিতাবে মুবীন দ্বারা উদ্দেশ্যে হলো কুরআন শরীফ।"

দলীল-
√ তাফসীরে আবী সাউদ ৩য় খন্ড ১৮ পৃষ্ঠা ।

(৯) ইমামুল মুফাসসিরীন,মুজাদ্দিদে জামান,হাফিজে হাদীস আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

من الله نور- هو النبي صلي الله عليه و سلم وكتاب قران مبين

অর্থ: এ আয়াত শরীফে "নূর" অর্থ হলো- হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,আর কিতাব অর্থ কুরআন শরীফ।"

দলীল-
√ তাফসীরে জালালাইন ৯৭ পৃষ্ঠা
(১০) ইমাম আবুল ফারজ জামালুদ্দীন আব্দুর রহমান ইবনে আলী ইবনে মুহম্মদ জাওযী ক্বোরাঈশী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قوله تعالي- من الله نور - قال قتادة يعني بانور النبي محمدا صلي الله علي و سلم

অর্থ : (মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নূর এসেছে) হযরত কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নূর দ্বারা উদ্দেশ্যে হলো হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।"

দলীল-
√ তাফসীরে যাদুল মাসীর ২য় খন্ড ২৫৪ পৃষ্ঠা।

(১১) বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আবু আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আহমদ আনছারী কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نور- قيل محمد صلي الله عليه و سلم عن الزجاج

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট "নূর" এসেছে, হযরত জুযাজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন।"

দলীল-
√ তাফসীরে জামে আহকামুল কুরআন ৬ষ্ঠ খন্ড ১১৮ পৃষ্ঠা।

(১২) খতেমুল মুহাক্কেকীন,মারজায়ে আহলিল ইরাক, মুফতীয়ে বাগদাদ, আল্লামা আবুল ফযল শিহাবউদ্দিন সাইয়্যিদ মাহমূদ আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نور- عظيم وهو نور الانوار والنبي المختار صلي الله عليه و سلم

অর্থ: নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে এক মহান "নূর" এসেছেন, আর তিনি হলেন নরুল আনওয়ার, নাবিয়্যিউল মুখতার, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।"

দলীল-
√ তাফসীরে রহুল মায়ানী ৬ষ্ঠ খন্ড ৯৭ পৃষ্ঠা ।

(১৩) ইমাম বুরহানুদ্দীন আবুল হাসান ইব্রাহীম ইবনে ওমর ফাক্বায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

من الله نور - اي واضح النورية وهو محمد صلي الله عليه و سلم الذي كشف ظلمات الشرك

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট নূরের প্রকাশক এসেছেন,তিনি হলেন , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যিনি সন্দেহ আর শিরকের আঁধার দূর করবেন।"

দলীল-
√ তফসীরে নাযমুদ দুরার ২য় খন্ড ৪১৯ পৃষ্ঠা।

(১৪) আবুল হাসান আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে হাবীব মাওয়ারাদী বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نور -محمد صلي الله عليه و سلم

অর্থ: উক্ত আয়াত শরীফে বর্নিত নূর হচ্ছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।"

দলীল-
√ তাফসীরে মাওয়ারেদী ২য় খন্ড ২২ পৃষ্ঠা।

(১৫)ইমামুল মুফাসসীরিন, হযরত ইসমাঈল হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قد جاءكم من الله نور- هو الرسول صلي الله عليه و سلم

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে নূর এসেছেন, উক্ত নূর হচ্ছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।"

দলীল-
√ তাফসীরে রূহুল বয়ান ২য় খন্ড ৩৬৯ পৃষ্ঠা।

এছাড়া পৃথিবীর সকল তাফসীরের গ্রন্থ সূরা মায়েদা শরীফের ১৫ নং আয়াতের তাফসীরে " নূর" দ্বারা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে ।

দলীল-
√ তাফসীরে গরায়েবুল কুরআন ৬ষ্ঠ খন্ড ৯৭ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে ক্বাদেরী ১ম খন্ড ২০২ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে বায়জবী ২য় খন্ড ৯২ পৃষ্ঠা ।

√ হাশিয়ায়ে মুহিউদ্দীন শায়েখ যাদাহ ২য় খন্ড ১০৩ পৃষ্ঠা।

√ হাশিয়াতুশ শিহাব ৩য় খন্ড ২২৬ পৃষ্ঠা।

√ শরহুস শিফা লি মুল্লা আলী ক্বারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ১ম খন্ড ৪২ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে ফতহুল ক্বাদীর ২য় খন্ড ২৩ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে মাওয়াহেবুর রহমান ৩য় খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে দ্বিয়াউল কুরআন ১ম খন্ড ৪৫৩ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসেরী কাসেমী ৩য় খন্ড ৮৪ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে মুদ্বিহুল কুরআন ১০২ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে মাজেদী ২৪৪ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে আলী হাসান ৩৪৯ পৃষ্ঠা ।

√ তাফসীরে তাহেরী ১ম খন্ড ৪৩৫ পৃষ্ঠা ।
ইত্যাদি তাফসীর ছাড়াও শতশত তাফসীরের কিতাবে এই অভিমত বর্ননা করা হয়েছে।

শুধুতাই নয়, দেওবন্দী দের মুরুব্বীরাও উক্ত আয়াতুল কারীমার "নূর" দ্বারা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝিয়েছে।

দেখুন, দেওবন্দী শিব্বীর আহমদ ওছমানী লিখেছে-

قد جاءكم من الله نور - شايد نور سے خود نبي كريم قلي الله علي و سلم اور كتاب مبين سے قران كريم مراد هے

অর্থ: আয়াত শরীফে নূর দ্বারা স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কিতাবে মুবীন দ্বারা কুরআন শরীফ উদ্দেশ্য।"

দলীল-
√ তাফসীরে ওছমানী ১৪২ পৃষ্ঠা ।

দেওবন্দী আহমদ সাঈদ দেহলবী তার তাফসীরে লিখেছে-

قد جاءكم من الله نور - نور سے مراد نبي كريم صلي الله عليه و سلم هيی اور کتاب سے مراد قران هے

অর্থ: বর্নিত আয়াত শরীফে "নূর" দ্বারা উদ্দেশ্য হলো হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আর কিতাব দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কুরআন শরীফ।"

দলীল-
√ কাশফুর রহমান ১৭৫ পৃষ্ঠা ।

মাওলানা নঈম উদ্দীন দেওবন্দী লিখেছে-

" নূর অর্থাৎ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন, আর কিতাব দ্বারা কুরআন শরীফ এসেছে।"

দলীল,-
√ তাফসীরে কামালাইন ১ম খন্ড ৪৪ পৃষ্ঠা ।

বাংলাদেশের দেওবন্দী মৌলবী মুহম্মদ আমীনুল ইসলাম লিখেছে-

" নূর অর্থ নূরে মুহম্মদী তথা হযরত রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরা কিতাব তথা পবিত্র কুরআন শরীফ।"

দলীল-
√ তাফসীরে নুরুল কোরআন ৬ষ্ঠ খন্ড ১৬৭ পৃষ্ঠা ।

সূতরাং সূরা মায়েদা ১৫ নং আয়াত শরীফে বর্নিত "নূর" দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে । যা বিখ্যাত এবং নির্ভরযোগ্য তাফসীরের কিতাব থেকে প্রমানিত হলো।
সুবহানাল্লাহ্ "!!!

57. হযরত বারাঃ (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

হযরত বারাঃ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি সূরা কাহফ তিলাওয়াত করছিল। আর দু-গাছি পাকানো দড়ি দিয়ে একটি ঘোড়া তার কাছে বাধাঁ ছিল। সে সময় এক খন্ড মেঘ এসে তাকে আচ্ছাদিত করে ফেলল এবং তা চক্কর দিতে লাগল ও নিকটবর্তী হতে লাগল। তার ঘোড়াটি সে কারণে ভয় পাচ্ছিল। ভোর হলে লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকটে এসে বিষয়টি আলোচনা করল। তখন তিনি বললেন, ও হল সাকীনা-প্রশান্তি (এবং ফিরিশতা) যা কুরআন তিলাওয়াতের কারণে অবর্তীর্ণ হয়েছিল।

{সহীহ মুসলিম- ১৭২৯}

56. হিন্দি গান শুনায় সাবধান হোন মুসলিম ভাই ও বোনেরা ।


Photo: হিন্দি গান শুনায় সাবধান হোন মুসলিম ভাই ও বোনেরা ।
*************************************
কয়েকটা হিন্দী গানের অংশবিশেষ অর্থসহ দিলাম। আগে পড়ুন।
যদি হৃদয়ে ঈমানের ছিটেফোটাও
থেকে থাকে তাহলে আপনি নিজে বুঝতে পারবেন আমার আজকের এই পোস্টের
উদ্দেশ্যটা কি…
১. তুহি মেরি সাব হ্যায়, সুবাহ হ্যায়, তুহি দিন হ্যায় মেরা, তুহি ম্যারা রব
হ্যায়, জাহান হ্যায়, মেরি দুনিয়া .......
অর্থ:::: তুমি আমার সবকিছু, আমার সুর্যোদয়, তুমি, দিন তুমি… তুমি আমার রব,
আমার পৃথিবী, আমার দুনিয়া তুমি…
২. তুহি আব মেরা দ্বীন হ্যায়, ঈমান হ্যায়, রাব কা শুকরানা…
মেরা কালমা হ্যায় তু, আযান হ্যায়, রাব কা শুকরানা…
অর্থ:::: তুমিই এখন আমার দ্বীন, আমার ঈমান, খোদাকে তাই ধন্যবাদ…
আমার কালেমা তুমি আযান তুমি, রবকে তাই ধন্যবাদ…
৩. তুঝমে রব দিখতা হ্যায়, ইয়ারা ম্যায় ক্যায়া কারু?
সাজদে সার ঝুকতা হু, ইয়ারা ম্যায় ক্যায়া কারু?
অর্থ:::: তোমার মাঝেই রবকে খুজে পাই আমি, প্রিয়া আমি কি করবো?
সেজদার জন্য মাথা ঝুকে যায়, প্রিয়া আমি কি করবো?
৪. খোদা জানে ম্যায় ফিদা হু, খোদা জানে ক্যা বান গায়া হ্যায় তুম
মেরে খোদা…
অর্থ::: খোদা জানে আমি তোমার ফিদা, খোদা জানে, তুমি হয়ে গেছো আজ
আমারি খোদা…
এই গানগুলি একবার হলেও আওড়াননি এমন মানুষ মনে হয় খুব কমই আছে। অথচ
এটা স্পষ্ট শিরক। আর শিরক এমন একটি অন্যায় যেটা করলে ঈমান সম্পূর্ণ
বিনষ্ট হয়ে যায়, পূর্বের কৃত সকল আমল নষ্ট হয়ে যায়।
অনেকে জেনে অনেকে না জেনে এ হিন্দী গান গেয়ে প্রতিনিয়তই শিরক
করে চলেছে।
নিজে সাবধান হোন এবং আপনার সকল বন্ধুদের কে সাবধান করুন ।
দয়া করে পোস্টটা সবাই নিজ উয়ালে শেয়ার করুন যাতে করে সবাই দেখতে পায়
।
Collected by #Zobairহিন্দি গান শুনায় সাবধান হোন মুসলিম ভাই ও বোনেরা ।
*************************************
কয়েকটা হিন্দী গানের অংশবিশেষ অর্থসহ দিলাম। আগে পড়ুন।
যদি হৃদয়ে ঈমানের ছিটেফোটাও
থেকে থাকে তাহলে আপনি নিজে বুঝতে পারবেন আমার আজকের এই পোস্টের
উদ্দেশ্যটা কি…
১. তুহি মেরি সাব হ্যায়, সুবাহ হ্যায়, তুহি দিন হ্যায় মেরা, তুহি ম্যারা রব
হ্যায়, জাহান হ্যায়, মেরি দুনিয়া .......
অর্থ:::: তুমি আমার সবকিছু, আমার সুর্যোদয়, তুমি, দিন তুমি… তুমি আমার রব,
আমার পৃথিবী, আমার দুনিয়া তুমি…
২. তুহি আব মেরা দ্বীন হ্যায়, ঈমান হ্যায়, রাব কা শুকরানা…
মেরা কালমা হ্যায় তু, আযান হ্যায়, রাব কা শুকরানা…
অর্থ:::: তুমিই এখন আমার দ্বীন, আমার ঈমান, খোদাকে তাই ধন্যবাদ…
আমার কালেমা তুমি আযান তুমি, রবকে তাই ধন্যবাদ…
৩. তুঝমে রব দিখতা হ্যায়, ইয়ারা ম্যায় ক্যায়া কারু?
সাজদে সার ঝুকতা হু, ইয়ারা ম্যায় ক্যায়া কারু?
অর্থ:::: তোমার মাঝেই রবকে খুজে পাই আমি, প্রিয়া আমি কি করবো?
সেজদার জন্য মাথা ঝুকে যায়, প্রিয়া আমি কি করবো?
৪. খোদা জানে ম্যায় ফিদা হু, খোদা জানে ক্যা বান গায়া হ্যায় তুম
মেরে খোদা…
অর্থ::: খোদা জানে আমি তোমার ফিদা, খোদা জানে, তুমি হয়ে গেছো আজ
আমারি খোদা…
এই গানগুলি একবার হলেও আওড়াননি এমন মানুষ মনে হয় খুব কমই আছে। অথচ
এটা স্পষ্ট শিরক। আর শিরক এমন একটি অন্যায় যেটা করলে ঈমান সম্পূর্ণ
বিনষ্ট হয়ে যায়, পূর্বের কৃত সকল আমল নষ্ট হয়ে যায়।
অনেকে জেনে অনেকে না জেনে এ হিন্দী গান গেয়ে প্রতিনিয়তই শিরক
করে চলেছে।
নিজে সাবধান হোন এবং আপনার সকল বন্ধুদের কে সাবধান করুন ।
দয়া করে পোস্টটা সবাই নিজ উয়ালে শেয়ার করুন যাতে করে সবাই দেখতে পায়

55. আদম (আ:) এর সৃষ্টির পূর্বে, আমাদের নবী আল্লাহর দরবারে নূরের আকৃতিতে মজুদ ছিলেন -

আদম (আ:) এর সৃষ্টির পূর্বে, আমাদের নবী আল্লাহর দরবারে নূরের আকৃতিতে মজুদ ছিলেন -

হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- "হযরত আদম আলাইহিস
সালামকে সৃষ্টির চৌদ্দহাজার বত্সর পূর্বে আমি আমার রবের দরবারে নূরের আকৃতিতে মওজূদ ছিলাম ।"{কুস্তলানী : আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়া ; আজলুনী : কাশফুল খেফা , ২য় খণ্ড, ১৭০ পৃষ্টা ) - সুবহানাল্লাহ -

54. নবীজীর থুথু মোবারক -

নবীজীর থুথু মোবারক -

হযরত উরওয়া বিন মাসউদ (রাঃ) হতে বর্নিত,তিনি বলেন-"যখনই প্রিয় নবী (সঃ) থুথু মোবারক ফেলতেন,সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে কেউ না কেউ তা হাতের মধ্যে নিয়ে নিতেন এবং থুথু মোবারক মুখে ও শরীরে মালিশ করে নিতেন।" ( বোখারী, ১ম খন্ড, অযু অধ্যায়, ১৬৮ ) --- সুবহানাল্লাহ ---

53. কবর জিয়ারত

Photo: �কবর জিয়ারত�
-------------------------------------------
করব জিয়ারত এমন একটি শরীয়ত সমর্থিত বিধান যার মাধ্যমে কবর দেশের মানুষের সাথে জীবিতদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। মৃতদের আত্মা খুশি হয় এবং জীবিতদের জন্য মৃত ব্যক্তিগণের নেক দোয়া নছীব হয়। মউতের কথা স্মরণ হয়, যার ফলে মানুষ অন্যায় আচরণ থেকে ফিরে আসে। ইহা মানুষকে সংযমী, খোদাভীরু ও চিন্তাশীল করে তোলে এবং পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যাদের অন্তরে পরকালের কথা স্মরণ হয় তারা নেক কাজ করতে উদ্যোগী হয় এবং পাপ কাজ হতে বিরত থাকে। 

খোদ হযরত রাসূল আকরাম কবর জিয়ারত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ সম্পর্কে তিরমিজী শরীফ ১/১২৫ পৃষ্ঠায় হযরত বুরাইদা (রাঃ) হতে একটি হাদীস বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, আমি তোমাদেরকে করব জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। তোমরা শুন, মুহাম্মদ (সাঃ)কে তাঁর মাতার কবর জিয়ারত করার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা কবর জিয়ারত করো। করব জিয়ারতে পরকালের কথা স্মরণ হয়।

হযরত আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূল মকবুল মায়ের কবর জিয়ারত করে কাঁদলেন এবং তাঁর সাথীগণকেও কাঁদালেন। অতঃপর বললেন, আমি আল্লাহপাকের দরবারে আমার মায়ের মাগফেরাতের দরখাস্ত করেছিলাম। আল্লাহপাক আমাকে উহার অনুমতি দিলেন না। জিয়ারত করার দরখাস্ত করলাম উহার অনুমতি পেলাম। ওহে ছাহাবাগণ! তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা কবর জিয়ারতে মওতের কথা স্মরণ হয়। 

-আবু দাউদ শরীফ-২/৪৬১ পৃষ্ঠা মুসলিম শরীফ ১/৩১৪ পৃষ্ঠা।

কায়সের পুত্র মুহাম্মদ হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা (রাঃ) বললেন, আমি তোমাদের নিকট আমার থেকে ও হযরত রাসূল করীম (সাঃ) হতে হাদীস বর্ণনা করবো? কায়েস বললেন, আমরা সকলে প্রতি উত্তরে বললাম, হ্যাঁ বলুন। অতঃপর হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, আমার জন্য নির্ধারিত রাতে যখন হযরত রাসূল পাক (সাঃ) আমার কাছে ছিলেন। তিনি আমার থেকে মোড় দিলেন শরীর থেকে চাদর এবং পায়ের জুতা খুলে উহা পায়ের নিকট রেখে দিলেন। লুঙ্গির এক পাশ বিছানায় বিছায়ে তার উপর কাঁত হয়ে শুয়ে পড়লেন। তিনি ঐ অবস্থায় আমার নিদ্রা যাওয়ার সময় পর্যন্ত ছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে চাদর হাতে নিলেন, জুতা পরলেন, আস্তে আস্তে দরজা খুললেন এবং ঘর হতে বের হয়ে আস্তে দরজা চেপে দিলেন। 

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি তখন কামীছ মাথায় পরলাম, উড়না পরলাম, তাহবন্দ পরলাম। অতঃপর তাঁর পেছনে পেছনে চলতে লাগলাম। তিনি জান্নাতুল বাকী এসে দাঁড়ালেন। তিনি সেখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন। অতঃপর তিনি তিনবার হাত উঠায়ে দোয়া করে সেখান থেকে পশ্চাদপদ হন। আমিও পশ্চাদমুখী হলাম। তিনি দ্রুত চলতে থাকলে আমিও দ্রুত চলতে থাকি। তিনি দৌড়ালে আমিও দৌড়াতে থাকি। এমনিভাবে আমি তাঁর আগে ঘরে ঢুকে পড়ি এবং বিছানায় কাঁত হয়ে শুয়ে পড়া ব্যতীত আর কিছুই করিনি। 

অতঃপর রাসূল মকবুল ঘরে ঢুকে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আয়েশা, নম্র ভাষিণী সদাচারিণী বলো তোমার কি হয়েছে? হযরত আয়েশা (রাঃ) প্রতি উত্তরে বললেন কিছুই হয়নি। তদুত্তরে হুজুর আকরাম বললেন, যা-ই হয়েছে সে সম্পর্কে তুমি আমাকে অবগত করে নচেৎ মহান আল্লাহ আমাকে সে সম্পর্কে অবগত করাবেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার বাপ-মা আপনার উপর কুরবান হোক এ বলে আমি তাঁকে অবহিত করলাম। হুজুর (রাঃ) বললেন, আমার সম্মুখ ভাগে যে শরীরটি দেখেছি উহা কি তুমিই? হযরত আয়েশা উত্তরে বললেন, হ্যাঁ। তা শুনে হযরত রাসূল (সাঃ)কে তাঁর বক্ষের সাথে মিলিয়ে এমনিভাবে চাপ দিলেন যদ্বরুন আমি ব্যথা অনুভব করলাম। অতঃপর রাসূল তোমার উপর জুলুম করেন? এতদশ্রবণে হযরত আয়েশা বললেন, মানুষ যখনই যা কিছু গোপন করে তা আল্লাহপাক জানেন। হুজুর আকরাম বললেন হ্যাঁ! ব্যাপার হলো হযরত জিব্রাঈল (আঃ) আগমন করেন ঐ সময়ে যখন তুমি আমাকে ঘরে দেখেছ। তিনি তখন আমাকে তোমার থেকে গোপন করে ডাকলেন। আমি তার আহ্বানে সাড়া দিয়েছি এবং এটা তোমার হতে গোপন করেছি। তোমার শরীরের কাপড় রেখে দিয়েছিলে বিধায় তিনি তোমার নিকট প্রবেশ করেননি। আমি ধারণা করছি তুমি ঘুমিয়ে পড়েছ তাই তোমাকে জাগ্রত করা অপছন্দ করেছি এবং আমার আশঙ্কা ছিলো যে, তুমি বিব্রত ও ভীত হয়ে পড়বে। 

অতঃপর জিব্রাঈল (আঃ) বললেন, হে নবী! আপনার প্রভুর নির্দেশ, জান্নাতুল বাকীর মৃতদের নিকট গিয়ে তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালার নিকট মাগফিরাত কামনা করবেন। তা� শুনে হযরত রাসূল আকরাম (রাঃ)কে হযরত আয়েশা জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি তাদের জন্য কি বলবো। তদুত্তরে বললেন, ওহে আয়েশা! তুমি বলো�

সালাম হে কবরবাসী মুমিন মুসলমানদের প্রতি, মহান আল্লাহ আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন। আর আল্লাহপাক চাহেনতো আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হতে যাচ্ছি।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে আবু দাউদ শরীফে ২/৪৬১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল আকরাম (রাঃ) কবরস্থানের দিকে বের হয়ে তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, ওহে কবরবাসী মুমীনগণ! তোমাদের উপর আল্লাহপাকের সালাম ও শান্তি বর্ষিত হোক। নিশ্চয়ই আমরাও আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় তোমাদের সাথে মিলিত হবো। 

উল্লেখিত হাদীসদ্বয় দ্বারা প্রমাণিত হলো, হযরত রাসূল মকবুল আল্লাহ তায়ালার তরফ হতে উম্মতগণের কবর জিয়ারত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছিলেন। তাই তিনি জান্নাতুল বাকী ও অন্যান্য কবরস্থানে গিয়ে কবর জিয়ারত করেছেন এবং উম্মতগণকেও কবর জিয়ারত করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। 

মুছান্নাফে এবনে আবী শায়বায় বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল মকবুল প্রতি বছর ওহুদ প্রান্তরে শহীদানদের কবরস্থানে এসে বলতেন, হে শহীদগণ! তোমাদের প্রতি মহান আল্লাহর শান্তি নাযিল হোক, যেহেতু তোমরা আল্লাহ পাকের রাহে ধৈর্য ধারণ করেছ। তোমাদের এ বাড়ির অবস্থা কতই না উত্তম। 

সুনানে বায়হাকী ৫/২৪৯ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে�

হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসূল মকবুল যখন তাঁর নিকট রাত্রি যাপন করতেন, শেষ রাত্রিতে তিনি তাঁর কাছ থেকে বের হয়ে জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে বলতেন, হে কবরবাসী মুমীনগণ! আপনাদের প্রতি সালাম। আমরা আপনাদের জন্য ভবিষ্যতের অঙ্গীকারগুলোর আশা করি। আর আমরা আল্লাহপাক চাহেত আপনাদের সাথে মিলিত হতে যাচ্ছি। হে আল্লাহ! বাকীয়ে গায়কাদের বাসিন্দাদের ক্ষমা করুন। 

এ সম্পর্কে বায়হাকী শরীফে মুহাম্মদ বিন নো�মান হতে বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, যে ব্যক্তি পিতা-মাতার অথবা যে কোনো একজনের প্রত্যেক জুময়ার দিনে জিয়ারত করবে তার সমস্ত পাপ মাফ করা হবে এবং তার নাম নেককারের দফতরে লিপিবদ্ধ করা হবে। ইবনে আবিদ্দুনিয়া ও ইমাম বায়হাকী শো�য়াবুলঈমান কিতাবে মুহাম্মদ বিন ওয়াছে হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন আমার নিকট এ মর্মে হাদীস পৌঁছেছে যে, মৃত ব্যক্তিগণ সপ্তাহে তিন দিন অর্থাৎ বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার জিয়ারতকারীদের চিনেন। আল্লামা ইবনে কাইউম বলেন, হাদীস সমূহ হতে প্রতীয়মান হয় যে, জিয়ারতকারী যখনই গোরস্থানে আসে ও সালাম দেয় কবরবাসী তার সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে যায়, তার সালাম শুনে ও তাকে মহব্বত করে তার সালামের উত্তর দেয়। ইহা সকল মৃতদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চাই মৃত ব্যক্তি শহীদ হোক বা সাধারণ মানুষ হোক এবং এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দিন বা সময়ের প্রশ্ন নেই। ইহা সর্বদা হতে পারে। (মারাকিল ফালাহ ৩৪২ পৃষ্ঠা) 

হাশিয়ায়ে তাহতাবী কিতাবের ৩৬৩ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে�

জিয়ারতের জন্য মুস্তাহাব হলো সূরায়ে ইয়াসীন পাঠ করা। কেননা, হযরত আনাস (রাঃ) হতে হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূল মকবু বলেছেন, যে ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করে সূরায়ে ইয়াসীন পাঠ করতঃ উহার ছওয়াব মৃতদেরকে হাদিয়া দেন। মহান আল্লাহ ঐদিন ঐ করবস্থানের মৃতদের আযাব হাল্কা করতঃ বন্ধ করে দেন। এরূপ জুময়ার দিনের জিয়ারতে কবরবাসীদের আযাব বন্ধ করে দেন এবং পুনঃ তাদের প্রতি আযাব প্রত্যাবর্তন করে না। মৃত ব্যক্তিদের সংখ্যানুযায়ী জিয়ারতকারীকে ইওয়াব ও নেকী দেয়া হয়। ইমাম যায়লায়ীর বর্ণনা ও অনুরূপ। 

হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি হযরত রাসূল মকবুল-এর খেদমতে আরজ করেন যে, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের মৃত ব্যক্তিগণের পক্ষ থেকে দান-খয়রাত করবো কি? তাদের পক্ষ থেকে হজ্ব করবো কি? তাদের জন্য দোয়া করবো কি? আমাদের দান খয়রাত, হজ্ব ও দোয়া কি মৃতদের নিকট পৌঁছে। তদুত্তরে হজুর আকরাম বললেন হ্যাঁ, উহার ছওয়াব মৃতদেহের নিকট পৌঁছে এবং মৃত ব্যক্তিগণ উহাতে খুশি হন। যেমন তোমাদের কেহ হাদিয়া ভর্তি পাত্র পেয়ে খুশি হয়। 

ইমাম যায়লায়ী অধ্যায়ে হযরত আলী (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনা করেন, হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করে ১১ বার সূরা এখলাছ পাঠ করে অতঃপর উহার ছওয়াব মৃতদেরকে হাদিয়া দেন তাহলে ঐ ব্যক্তির আমল নামাজ মৃতদের সংখ্যানুপাতে নেকী দেয়া হয়। দারুকুতনী, ইবনে আবী শায়বা হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করে আর বলে, হে আল্লাহ! যিনি ধ্বংসশীল শরীর ও ছিন্ন বিছিন্ন হাড্ডি সমূহের মালিক যা দুনিয়া হতে বের হয়ে এসেছে এসব বান্দা আপনার প্রতি বিশ্বাসী আপনি তাদের প্রতি আপনার শান্তি এবং আমার পক্ষ হতে সালাম পৌঁছে দিন। এভাবে দোয়া করলে তার জন্য প্রত্যেক মুমিন বান্দা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যারা হযরত আদম (আঃ)-এর সৃষ্টির পর হতে মৃত্যুবরণ করেছেন। 

মৃত ব্যক্তিগণ জিয়ারতকারীকে চিনেন ও দোয়া করেন 

মুখতারাতুন নাওয়াযিল কিতাবে লিখিত আছে, প্রতি সপ্তাহে জিয়ারত করা যায়। শরহে লোবাবে লিখিত আছে, জুমায়াবার, শনিবার, সোমবার ও বৃহস্পতিবার জিয়ারত করা উত্তম। মুহাম্মদ বিন ওয়াসেহ বলেছেন, বৃহস্পতিবার, জুমায়াবার ও শনিবার এ তিনদিন মৃত ব্যক্তিগণ জিয়ারতকারীগণকে চিনেন। এতে প্রমাণিত হলো, জিয়ারতের উত্তম দিন হচ্ছে শুক্রবার। ঐ কিতাবে আরো লিখিত আছে যে, ওহুদ পাহাড়ে সমাহিত শহীদানদের কবর জিয়ারত করা মুস্তাহাব। মুছান্নিফে ইবনে আবী শায়বায় বর্ণিত আছে, নবী করমি ওহুদের শহীদানের কবর জিয়ারত করার জন্য প্রতি বছরের প্রারম্ভে এসে বলতেন, তোমাদের প্রতি আল্লাহপাকের শান্তি বর্ষিত হোক, যেহেতু তোমরা আল্লাহপাকের রাহে ধৈর্য ধারণ করেছ। তোমাদের বাসস্থানের অবস্থা কতই না সুন্দর! তবে উত্তম হচ্ছে, ওহুদের শহীদদের জিয়রত করার জন্য বৃহস্পতিবার ভোরে পাক-পবিত্র হয়ে আসা, যাতে জিয়ারত করে মসজিদে নববীতে জোহরের নামাজ জামায়াত সহকারে পড়া যায়।

আল্লামা শামী বলেছেন, বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো, কবর জিয়ারত করা মুস্তাহাব, যদিও উহা বাড়ি হতে বহু দূরে অবস্থিত হয়। উল্লেখ্য যে, যদি কবরস্থান দূরে হয়, সেখানে জিয়ারতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে বা যানবাহনের মাধ্যমে সফর করা যাবে কি না? যেমন মানুষ সচরাচর হযরত ইব্রাহীম খলিল, তার পরিবারস্থ লোকদের ও বদর যুদ্ধের শহীদদের সরদার হযরত হামযা ও অন্যান্য শহীদানের কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করে থাকে এ সম্পর্কে শামী বলেন, আমাদের ইমামগণের কাউকে এমন দেখিনি যিনি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট মত ব্যক্ত করেছেন। তাই শাফেয়ী মাযহাবের কোনো কেনো ইমাম এ উদ্দেশ্যে সফর করা মুস্তাহাব নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তবে হযরত রাসূল মকবুল এর জিয়ারতে যানবাহনযোগে যাওয়া মুস্তাহাব লিখেছেন। সুতরাং অন্যান্য নবী-ওলী ও সাধারণ মুমিনদের জিয়ারতে সফর নিষিদ্ধ হবে। যেহেতু প্রসিদ্ধ তিন মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ। উহার খণ্ডন নিম্নরূপ ঃ

হযরত রাসূল মকবুল-এর বাণী, তোমরা তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদে নামাজ পড়ে ফজিলত হাসিল করার জন্য যানবাহনযোগে যেও না। কারণ, মসজিদে হারাম, মসজিদে নববী ও মসজিদে আকছা এ তিনটি মসজিদে নামাজের ফজিলত হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে। তাছাড়া অন্য সকল মসজিদ যত সুন্দর বা আকারে বড় হোক না কেনো ফজিলত ও ছওয়াবের দিক দিয়ে সমান বিধায়, অন্য মসজিদে ফজিলত পাওয়ার জন্য সফর করা বা যানবাহনযোগে যাওয়া মুস্তাহাব নয়। ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) এ পার্থক্য বর্ণনা করেছেন। এরূপ রদ্দুস মুহতাব ১/১৪৩ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য। 

প্রকাশ থাকে যে, বর্ণিত হাদীসের কবর জিয়ারতের সাথে কোনো সম্পর্কই নেই। যেমন ফয়জুল বারী শরহে বুখারী ২য় খণ্ড ৪৩৩ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে�

যেহেতু মুসনাদে আহমদে লিখিত আছে, হযরত নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, তোমরা নামাজ পড়ার জন্য কোনো মসজিদের দিকে সফর করবে না তিনটি মসজিদ ছাড়া। 

উক্ত হাদীস হতে প্রমাণিত হলো সফর নিষেধ মসজিদের উপরা কবর জিয়ারতের উপর নয়। অর্থাৎ তোমরা নামাজের উদ্দেশ্যে কোনো মসজিদের দিকে যানবাহনযোগে যেও না, যদি যেতে হয় তাহলে এ তিনটি মসজিদ যথা মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববীতে নামাজ পড়ার জন্য যানবাহনযোগে যাও। কারণ, মসজিদে হারামে প্রতি রাকয়াতে এক লক্ষ রাকয়াতের ছওয়াব আর মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববীতে প্রতি রাকয়াতে পঞ্চাশ হাজার রাকয়াতের ছওয়াব পাওয়া যাবে। এছাড়া অন্যান্য সকল মসজিদে নামাজ পড়ার ছওয়াব সমান। কাজেই নামাজের উদ্দেশ্যে কোনো মসজিদে যানবাহনযোগে সফরের প্রয়োজন নেই। জানা আবশ্যক, অত্র হাদীসটি কবর জিয়ারতের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখে না বিধায়, যারা জিয়ারতের ক্ষেত্রে এ হাদীসটি দলিল হিসেবে পেশ করেন উহা বাতিল বলে গণ্য হলো। যেমন�হযরত শাহ্ আনোয়ার কাশমীরী তদীয় গ্রন্থে এ মন্তব্য করেছেন। 

আওলিয়ায়ে কেরামের কবর জিয়ারত প্রসঙ্গ

তবে আওলিয়ায়ে কেরাম মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিক দিয়ে তাদের পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য ও তফাৎ বিদ্যমান। জিয়ারতকারীগণও উপকৃত হওয়ার দিক দিয়ে তাদের মা'রেফাত ও আসরার হিসেবে শ্রেণী বিভাগে বিভক্ত। আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী তদীয় ফাতাওয়ার কিতাবে বলেছেন যে, যদি আওলিয়ায়ে কেরামের মাজারের নিকট শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ, ফিতনা-ফাসাদ পরিলক্ষিত হয় যথা-মেয়ে পুরুষের সমাবেশ, সিজদা, গান-বাজনা ইত্যাদি তজ্জন্য জিয়ারত হতে বিরত থাকা যাবে না। কেননা, এসব অজুহাতে নৈকট্য লাভের বস্তুকে পরিত্যাগ করা যায় না বরং মাুনষের উচিত জিয়ারতে বিদয়াতের বিরোধিতা করা এবং সম্ভব হলে তা মুলোচ্ছেদ করা। আল্লামা ইবনে হাজর বলেন, উক্ত মতের সমর্থনে বলা যায় যে, জানাজার পেছনে কবর পর্যন্ত যাওয়া পরিত্যাগ করা যাবে না যদিও উহার সাথে ক্রন্দনকারিনী মহিলাগণ থাকে। (এ কথায় কোনো দ্বিমত নেই)। দুররে মুখতার ও রদ্দুল মুহতার ১/৮৪৩ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।

কবর জিয়ারতের আদব

ফতহুল কাদীর গ্রন্থে লিখিত আছে যে, দাঁড়িয়ে জিয়ারত করা সুন্নাত জিয়ারত করার পর দাঁড়িয়ে দোয়া ও মোনাজাত করা সুন্নাত। কেননা, হযরত রাসূল আকরাম জান্নাতুল বাকীতে জিয়ারতকালে এরূপ করেছেন। আরো বলেছেন, আস্সালামু আলাইকুম দারা কাওমিম্ মুমিনীন। ওয়া ইন্না ইনশা আল্লাহু বিকুম লাহেকুন। মুল্লা আলী কারী শরহে লোবাবে লিখেছেন, ফোকহায়ে কেরাম আদবে জিয়ারত সম্পর্কে বলেছেন, মৃত ব্যক্তির পায়ের নিকটে জিয়ারতকারী দাঁড়াবে। মাথার নিকটে নয়, কেননা তাতে মৃত ব্যক্তির জিয়ারতকারীকে দেখতে কষ্ট হয়, পায়ের নিকট দাঁড়ালে মৃত ব্যক্তির চোখ বরাবর হয়। তবে এ পদ্ধতি তখনই আমল করা যাবে যখন পায়ের নিকট দাঁড়ানো সম্ভব হবে। যেহেতু হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূল করীম মৃত ব্যক্তির নিকট দাঁড়িয়ে সূরা বাকারা এবং পায়ের নিকট সূরায়ে বাকারার শেষ অংশ পড়েছেন। কবর জিয়ারতের আদবের মধ্যে ইহাও আছে, ছহীহ কাওল মতে, ...বলবে। যেহেতু হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে, হুজুর পাক জিয়ারতে বলেছেন�

অতঃপর দাঁড়ানো অবস্থায় লম্বা দোয়া করবে। আর যদি বসে জিয়ারত করতে চায় তাহলে ঐ লোকের জীবদ্দশায় তার সম্মানে যতদূর নিকটে বা দূরে বসেছে ততটুকু দূরে বা নিকটে বসবে। সূরায়ে ইয়াসীন পড়তে তাতে আল্লাহপাক যত মৃত ব্যক্তি ঐ কবরস্থানে আছে তাদের সংখ্যানুপাতে নেকী দেবেন এবং তাদের আযাব হাল্কা করবেন। শরহে লুবাবে আছে জিয়ারতকারীর পক্ষে যা পাঠ করা সম্ভব যেমন, সূরায়ে ফাতিহা, বাকারা...মুফলেহুন পর্যন্ত, আয়াতুল কুরছি, আমানার রাসূলু, সূরা ইয়াসীন, সূরা মুলক, তাকাছুর, এখলাছ ১২ বার, ১১ বার, ৭ বার, ৩ বার পড়ে বলবে, হে খোদা আমি যা কিছু সূরা কিরাত পড়লাম উহার ছওয়াব এই মৃত ব্যক্তিদের নিকট পৌঁছে দিন। (শামী ১/৮৪৪ পৃষ্ঠা)।

মারাকিল ফালাহ গ্রন্থের ২৪২ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে, শরহুল মিশকাত গ্রন্থে আছে, জিয়ারতকারী কবরবাসীর জীবদ্দশায় তার সম্মানে যতটুকু নিকটে বা দূরে দাঁড়াত বা বসত তেমনিভাবে জিয়ারত করার সময়ও দাঁড়াবে বা বসবে। এরূপ অন্যান্য ফকীহগণও উল্লেখ করেছেন। 

কুহেস্তানী গ্রন্থে লিখিত আছে যে, জিয়ারতকারী কবরবাসীর সম্মুখে এভাবে দাঁড়াবে যেরূপ জীবিত কালে সামনে দূরে বা নিকটে দাঁড়াত। এহইয়াউল উলুম কিতাবে লিখিত আছে, কবর জিয়ারত কালে মুস্তাহাব তরীকা হলো কিবলোকে পেছনে রেখে মাইয়্যেতের চেহারামুখী হয়ে দাঁড়াবে, সালাম দেবে। কবর স্পর্শ করবে না বা চুম্বন করবে না ও কবরকে মাসেহ করবে না এসব করা নাছারাদের অভ্যাস। অনুরূপ বর্ণনা শরহুশ শেরআত কিতাবে আছে। শরহুল মিশকাতে আছে যে, মুস্তাহাব তরীকা হলো, মৃতদের উপর সালাম দেয়ার সময় তাদের সম্মুখীন হয়ে সালাম প্রদান করা এবং ঐ অবস্থায় মাইয়্যেতের দিকে মুখ করে দোয়া করা। মুসলিম সমাজে এ তরীকাই প্রচলিত। 

এবনে হাজর আসকলানী শাফেয়ী বলেছেন, এরূপ করা মুস্তাহাব নয়। ইজতেযকার ও তামহীদ কিতাবে ছহীহ সনদের সাথে এবনে আব্দুল বর হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে থাকে সে দুনিয়ায় তাকে চিনতো, এমতাবস্থায় সালাম করলে উক্ত মৃত ব্যক্তি সালামদাতাকে চিনে তার সালামের জবাব দিয়ে দেয়। (মারাকিল ফালাহ ৩৪২ পৃষ্ঠা)

কবর জিয়ারতের পবিত্র কুরআন পাঠ 

করলে উহার ছওয়াব মৃত ব্যক্তি পায়

হেদায়া গ্রন্থের অধ্যায়ে ওলামায়ে হানাফিয়া অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, মানুষ নামাজ, রোজা ছদকা আরো অন্যান্য এবাদত করে উহার ছাওয়াব যদি অপরকে প্রদান করেন করতে পারেন। এতে কোনো আপত্তি নেই। মুহীত কিতাব হতে তাতার খানিয়া গ্রন্থে যাকাত অধ্যায়ে লিখিত আছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি নফল ছদ্কায় সারা পৃথিবীর মুসলিম নর-নারীর নিয়্যাত করে উহা উত্তম হয়, উক্ত ছওয়াব তাদের আমলনামায় লিপিবদ্ধ হবে। তাতে ছদ্কাদাতার ছওয়াব কম হবে না। ইহা আহলে সুন্নাতুল জামায়াতের অভিমত। তবে ইমাম মালেক ও ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন যে, শুধু শারীরিক ইবাদত যথা নামাজ ও তিলাওয়াতে কুরআন= এর ছওয়াব মৃত ব্যক্তিকে প্রদান করলে উহা মৃতগণ পাবেন না। হ্যাঁ, নফল ছদকা ও হজ্বের ছওয়াব দান করলে উহা মৃত ব্যক্তিগণ পাবেন। মো�তাযিলা বাতিল ফেরকার অভিমত হলো যে, কোনো প্রকারের দান খয়রাতের ছওয়াব মৃতদের নিকট পৌঁছে না। এরূপ ফতহুল কাদীর গ্রন্থে বর্ণিত আছে।

আল্লামা শামী বলেন, ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)-এর যে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে, উহা সর্বজন বিদিত মত। তবে ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)-এর পরবর্তী অনুসারীগণ যা ব্যক্ত করেছেন তা হলো মৃত ব্যক্তির নিকট দাঁড়িয়ে বা বসে সূরা কিরাত পাঠ করলে অথবা কিরাতের পর তার জন্য দোয়া করা হলে উহার ছওয়াব তার রূহে পৌঁছে। যদি সে দূরে তথা অদৃশ্য হয়। কেননা, তিলাওয়াতের স্থানে বরকত ও রহমত নাযিল হয় এবং কুরআন শরীফ তিলাওয়াত অন্তে দোয়া করলে উক্ত দোয়া কবুলের আশা বেশি। এতে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, কুরআন পাক তিলাওয়াত অন্তে তারা দোয়া করেন এভাবে যে, ওহে আল্লাহ! আমি যা কুরআন পাক হতে পড়লাম, উহার ন্যায় উপকার অমুক ব্যক্তিকে পৌঁছান। কিন্তু আমাদের আয়েম্মায়ে হানাফিয়াদের মতে, মৃত ব্যক্তির নিকট কুরআন পাঠের ছওয়াব পৌঁছে। 

বাহরুর রায়েক কিতাবে আছে, কোনো ব্যক্তি যদি রোজা রাখে, নামাজ পড়ে অথবা ছদকা করে, আর উক্ত রোজা, নামাজ ও ছদকা খয়রাতের ছওয়াব মৃত ও জীবিত ব্যক্তিদেরকে দান করে উহা জায়েয এবং ঐ রোজা, নামাজ, ছদকার ছওয়াব মৃতদের আমলনামায় পৌঁছে যায়। এটাই আহলে সুন্নাতুল জামাতের মত। এরূপ বাদায়ে কিতাবে লিখিত আছে। শামী ১/৮৪৪ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।

#Ahmedকবর জিয়ারত -------------------------------------------
করব জিয়ারত এমন একটি শরীয়ত সমর্থিত বিধান যার মাধ্যমে কবর দেশের মানুষের সাথে জীবিতদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। মৃতদের আত্মা খুশি হয় এবং জীবিতদের জন্য মৃত ব্যক্তিগণের নেক দোয়া নছীব হয়। মউতের কথা স্মরণ হয়, যার ফলে মানুষ অন্যায় আচরণ থেকে ফিরে আসে। ইহা মানুষকে সংযমী, খোদাভীরু ও চিন্তাশীল করে তোলে এবং পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যাদের অন্তরে পরকালের কথা স্মরণ হয় তারা নেক কাজ করতে উদ্যোগী হয় এবং পাপ কাজ হতে বিরত থাকে।

খোদ হযরত রাসূল আকরাম কবর জিয়ারত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ সম্পর্কে তিরমিজী শরীফ ১/১২৫ পৃষ্ঠায় হযরত বুরাইদা (রাঃ) হতে একটি হাদীস বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, আমি তোমাদেরকে করব জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। তোমরা শুন, মুহাম্মদ (সাঃ)কে তাঁর মাতার কবর জিয়ারত করার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা কবর জিয়ারত করো। করব জিয়ারতে পরকালের কথা স্মরণ হয়।

হযরত আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূল মকবুল মায়ের কবর জিয়ারত করে কাঁদলেন এবং তাঁর সাথীগণকেও কাঁদালেন। অতঃপর বললেন, আমি আল্লাহপাকের দরবারে আমার মায়ের মাগফেরাতের দরখাস্ত করেছিলাম। আল্লাহপাক আমাকে উহার অনুমতি দিলেন না। জিয়ারত করার দরখাস্ত করলাম উহার অনুমতি পেলাম। ওহে ছাহাবাগণ! তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা কবর জিয়ারতে মওতের কথা স্মরণ হয়।

-আবু দাউদ শরীফ-২/৪৬১ পৃষ্ঠা মুসলিম শরীফ ১/৩১৪ পৃষ্ঠা।

কায়সের পুত্র মুহাম্মদ হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা (রাঃ) বললেন, আমি তোমাদের নিকট আমার থেকে ও হযরত রাসূল করীম (সাঃ) হতে হাদীস বর্ণনা করবো? কায়েস বললেন, আমরা সকলে প্রতি উত্তরে বললাম, হ্যাঁ বলুন। অতঃপর হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, আমার জন্য নির্ধারিত রাতে যখন হযরত রাসূল পাক (সাঃ) আমার কাছে ছিলেন। তিনি আমার থেকে মোড় দিলেন শরীর থেকে চাদর এবং পায়ের জুতা খুলে উহা পায়ের নিকট রেখে দিলেন। লুঙ্গির এক পাশ বিছানায় বিছায়ে তার উপর কাঁত হয়ে শুয়ে পড়লেন। তিনি ঐ অবস্থায় আমার নিদ্রা যাওয়ার সময় পর্যন্ত ছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে চাদর হাতে নিলেন, জুতা পরলেন, আস্তে আস্তে দরজা খুললেন এবং ঘর হতে বের হয়ে আস্তে দরজা চেপে দিলেন।

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি তখন কামীছ মাথায় পরলাম, উড়না পরলাম, তাহবন্দ পরলাম। অতঃপর তাঁর পেছনে পেছনে চলতে লাগলাম। তিনি জান্নাতুল বাকী এসে দাঁড়ালেন। তিনি সেখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন। অতঃপর তিনি তিনবার হাত উঠায়ে দোয়া করে সেখান থেকে পশ্চাদপদ হন। আমিও পশ্চাদমুখী হলাম। তিনি দ্রুত চলতে থাকলে আমিও দ্রুত চলতে থাকি। তিনি দৌড়ালে আমিও দৌড়াতে থাকি। এমনিভাবে আমি তাঁর আগে ঘরে ঢুকে পড়ি এবং বিছানায় কাঁত হয়ে শুয়ে পড়া ব্যতীত আর কিছুই করিনি।

অতঃপর রাসূল মকবুল ঘরে ঢুকে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আয়েশা, নম্র ভাষিণী সদাচারিণী বলো তোমার কি হয়েছে? হযরত আয়েশা (রাঃ) প্রতি উত্তরে বললেন কিছুই হয়নি। তদুত্তরে হুজুর আকরাম বললেন, যা-ই হয়েছে সে সম্পর্কে তুমি আমাকে অবগত করে নচেৎ মহান আল্লাহ আমাকে সে সম্পর্কে অবগত করাবেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার বাপ-মা আপনার উপর কুরবান হোক এ বলে আমি তাঁকে অবহিত করলাম। হুজুর (রাঃ) বললেন, আমার সম্মুখ ভাগে যে শরীরটি দেখেছি উহা কি তুমিই? হযরত আয়েশা উত্তরে বললেন, হ্যাঁ। তা শুনে হযরত রাসূল (সাঃ)কে তাঁর বক্ষের সাথে মিলিয়ে এমনিভাবে চাপ দিলেন যদ্বরুন আমি ব্যথা অনুভব করলাম। অতঃপর রাসূল তোমার উপর জুলুম করেন? এতদশ্রবণে হযরত আয়েশা বললেন, মানুষ যখনই যা কিছু গোপন করে তা আল্লাহপাক জানেন। হুজুর আকরাম বললেন হ্যাঁ! ব্যাপার হলো হযরত জিব্রাঈল (আঃ) আগমন করেন ঐ সময়ে যখন তুমি আমাকে ঘরে দেখেছ। তিনি তখন আমাকে তোমার থেকে গোপন করে ডাকলেন। আমি তার আহ্বানে সাড়া দিয়েছি এবং এটা তোমার হতে গোপন করেছি। তোমার শরীরের কাপড় রেখে দিয়েছিলে বিধায় তিনি তোমার নিকট প্রবেশ করেননি। আমি ধারণা করছি তুমি ঘুমিয়ে পড়েছ তাই তোমাকে জাগ্রত করা অপছন্দ করেছি এবং আমার আশঙ্কা ছিলো যে, তুমি বিব্রত ও ভীত হয়ে পড়বে।

অতঃপর জিব্রাঈল (আঃ) বললেন, হে নবী! আপনার প্রভুর নির্দেশ, জান্নাতুল বাকীর মৃতদের নিকট গিয়ে তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালার নিকট মাগফিরাত কামনা করবেন। তা� শুনে হযরত রাসূল আকরাম (রাঃ)কে হযরত আয়েশা জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি তাদের জন্য কি বলবো। তদুত্তরে বললেন, ওহে আয়েশা! তুমি বলো�

সালাম হে কবরবাসী মুমিন মুসলমানদের প্রতি, মহান আল্লাহ আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন। আর আল্লাহপাক চাহেনতো আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হতে যাচ্ছি।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে আবু দাউদ শরীফে ২/৪৬১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল আকরাম (রাঃ) কবরস্থানের দিকে বের হয়ে তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, ওহে কবরবাসী মুমীনগণ! তোমাদের উপর আল্লাহপাকের সালাম ও শান্তি বর্ষিত হোক। নিশ্চয়ই আমরাও আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় তোমাদের সাথে মিলিত হবো।

উল্লেখিত হাদীসদ্বয় দ্বারা প্রমাণিত হলো, হযরত রাসূল মকবুল আল্লাহ তায়ালার তরফ হতে উম্মতগণের কবর জিয়ারত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছিলেন। তাই তিনি জান্নাতুল বাকী ও অন্যান্য কবরস্থানে গিয়ে কবর জিয়ারত করেছেন এবং উম্মতগণকেও কবর জিয়ারত করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন।

মুছান্নাফে এবনে আবী শায়বায় বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল মকবুল প্রতি বছর ওহুদ প্রান্তরে শহীদানদের কবরস্থানে এসে বলতেন, হে শহীদগণ! তোমাদের প্রতি মহান আল্লাহর শান্তি নাযিল হোক, যেহেতু তোমরা আল্লাহ পাকের রাহে ধৈর্য ধারণ করেছ। তোমাদের এ বাড়ির অবস্থা কতই না উত্তম।

সুনানে বায়হাকী ৫/২৪৯ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে�

হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসূল মকবুল যখন তাঁর নিকট রাত্রি যাপন করতেন, শেষ রাত্রিতে তিনি তাঁর কাছ থেকে বের হয়ে জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে বলতেন, হে কবরবাসী মুমীনগণ! আপনাদের প্রতি সালাম। আমরা আপনাদের জন্য ভবিষ্যতের অঙ্গীকারগুলোর আশা করি। আর আমরা আল্লাহপাক চাহেত আপনাদের সাথে মিলিত হতে যাচ্ছি। হে আল্লাহ! বাকীয়ে গায়কাদের বাসিন্দাদের ক্ষমা করুন।

এ সম্পর্কে বায়হাকী শরীফে মুহাম্মদ বিন নো�মান হতে বর্ণিত আছে�

হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, যে ব্যক্তি পিতা-মাতার অথবা যে কোনো একজনের প্রত্যেক জুময়ার দিনে জিয়ারত করবে তার সমস্ত পাপ মাফ করা হবে এবং তার নাম নেককারের দফতরে লিপিবদ্ধ করা হবে। ইবনে আবিদ্দুনিয়া ও ইমাম বায়হাকী শো�য়াবুলঈমান কিতাবে মুহাম্মদ বিন ওয়াছে হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন আমার নিকট এ মর্মে হাদীস পৌঁছেছে যে, মৃত ব্যক্তিগণ সপ্তাহে তিন দিন অর্থাৎ বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার জিয়ারতকারীদের চিনেন। আল্লামা ইবনে কাইউম বলেন, হাদীস সমূহ হতে প্রতীয়মান হয় যে, জিয়ারতকারী যখনই গোরস্থানে আসে ও সালাম দেয় কবরবাসী তার সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে যায়, তার সালাম শুনে ও তাকে মহব্বত করে তার সালামের উত্তর দেয়। ইহা সকল মৃতদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চাই মৃত ব্যক্তি শহীদ হোক বা সাধারণ মানুষ হোক এবং এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দিন বা সময়ের প্রশ্ন নেই। ইহা সর্বদা হতে পারে। (মারাকিল ফালাহ ৩৪২ পৃষ্ঠা)

হাশিয়ায়ে তাহতাবী কিতাবের ৩৬৩ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে�

জিয়ারতের জন্য মুস্তাহাব হলো সূরায়ে ইয়াসীন পাঠ করা। কেননা, হযরত আনাস (রাঃ) হতে হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূল মকবু বলেছেন, যে ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করে সূরায়ে ইয়াসীন পাঠ করতঃ উহার ছওয়াব মৃতদেরকে হাদিয়া দেন। মহান আল্লাহ ঐদিন ঐ করবস্থানের মৃতদের আযাব হাল্কা করতঃ বন্ধ করে দেন। এরূপ জুময়ার দিনের জিয়ারতে কবরবাসীদের আযাব বন্ধ করে দেন এবং পুনঃ তাদের প্রতি আযাব প্রত্যাবর্তন করে না। মৃত ব্যক্তিদের সংখ্যানুযায়ী জিয়ারতকারীকে ইওয়াব ও নেকী দেয়া হয়। ইমাম যায়লায়ীর বর্ণনা ও অনুরূপ।

হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি হযরত রাসূল মকবুল-এর খেদমতে আরজ করেন যে, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের মৃত ব্যক্তিগণের পক্ষ থেকে দান-খয়রাত করবো কি? তাদের পক্ষ থেকে হজ্ব করবো কি? তাদের জন্য দোয়া করবো কি? আমাদের দান খয়রাত, হজ্ব ও দোয়া কি মৃতদের নিকট পৌঁছে। তদুত্তরে হজুর আকরাম বললেন হ্যাঁ, উহার ছওয়াব মৃতদেহের নিকট পৌঁছে এবং মৃত ব্যক্তিগণ উহাতে খুশি হন। যেমন তোমাদের কেহ হাদিয়া ভর্তি পাত্র পেয়ে খুশি হয়।

ইমাম যায়লায়ী অধ্যায়ে হযরত আলী (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনা করেন, হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করে ১১ বার সূরা এখলাছ পাঠ করে অতঃপর উহার ছওয়াব মৃতদেরকে হাদিয়া দেন তাহলে ঐ ব্যক্তির আমল নামাজ মৃতদের সংখ্যানুপাতে নেকী দেয়া হয়। দারুকুতনী, ইবনে আবী শায়বা হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করে আর বলে, হে আল্লাহ! যিনি ধ্বংসশীল শরীর ও ছিন্ন বিছিন্ন হাড্ডি সমূহের মালিক যা দুনিয়া হতে বের হয়ে এসেছে এসব বান্দা আপনার প্রতি বিশ্বাসী আপনি তাদের প্রতি আপনার শান্তি এবং আমার পক্ষ হতে সালাম পৌঁছে দিন। এভাবে দোয়া করলে তার জন্য প্রত্যেক মুমিন বান্দা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যারা হযরত আদম (আঃ)-এর সৃষ্টির পর হতে মৃত্যুবরণ করেছেন।

মৃত ব্যক্তিগণ জিয়ারতকারীকে চিনেন ও দোয়া করেন

মুখতারাতুন নাওয়াযিল কিতাবে লিখিত আছে, প্রতি সপ্তাহে জিয়ারত করা যায়। শরহে লোবাবে লিখিত আছে, জুমায়াবার, শনিবার, সোমবার ও বৃহস্পতিবার জিয়ারত করা উত্তম। মুহাম্মদ বিন ওয়াসেহ বলেছেন, বৃহস্পতিবার, জুমায়াবার ও শনিবার এ তিনদিন মৃত ব্যক্তিগণ জিয়ারতকারীগণকে চিনেন। এতে প্রমাণিত হলো, জিয়ারতের উত্তম দিন হচ্ছে শুক্রবার। ঐ কিতাবে আরো লিখিত আছে যে, ওহুদ পাহাড়ে সমাহিত শহীদানদের কবর জিয়ারত করা মুস্তাহাব। মুছান্নিফে ইবনে আবী শায়বায় বর্ণিত আছে, নবী করমি ওহুদের শহীদানের কবর জিয়ারত করার জন্য প্রতি বছরের প্রারম্ভে এসে বলতেন, তোমাদের প্রতি আল্লাহপাকের শান্তি বর্ষিত হোক, যেহেতু তোমরা আল্লাহপাকের রাহে ধৈর্য ধারণ করেছ। তোমাদের বাসস্থানের অবস্থা কতই না সুন্দর! তবে উত্তম হচ্ছে, ওহুদের শহীদদের জিয়রত করার জন্য বৃহস্পতিবার ভোরে পাক-পবিত্র হয়ে আসা, যাতে জিয়ারত করে মসজিদে নববীতে জোহরের নামাজ জামায়াত সহকারে পড়া যায়।

আল্লামা শামী বলেছেন, বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো, কবর জিয়ারত করা মুস্তাহাব, যদিও উহা বাড়ি হতে বহু দূরে অবস্থিত হয়। উল্লেখ্য যে, যদি কবরস্থান দূরে হয়, সেখানে জিয়ারতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে বা যানবাহনের মাধ্যমে সফর করা যাবে কি না? যেমন মানুষ সচরাচর হযরত ইব্রাহীম খলিল, তার পরিবারস্থ লোকদের ও বদর যুদ্ধের শহীদদের সরদার হযরত হামযা ও অন্যান্য শহীদানের কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করে থাকে এ সম্পর্কে শামী বলেন, আমাদের ইমামগণের কাউকে এমন দেখিনি যিনি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট মত ব্যক্ত করেছেন। তাই শাফেয়ী মাযহাবের কোনো কেনো ইমাম এ উদ্দেশ্যে সফর করা মুস্তাহাব নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তবে হযরত রাসূল মকবুল এর জিয়ারতে যানবাহনযোগে যাওয়া মুস্তাহাব লিখেছেন। সুতরাং অন্যান্য নবী-ওলী ও সাধারণ মুমিনদের জিয়ারতে সফর নিষিদ্ধ হবে। যেহেতু প্রসিদ্ধ তিন মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ। উহার খণ্ডন নিম্নরূপ ঃ

হযরত রাসূল মকবুল-এর বাণী, তোমরা তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদে নামাজ পড়ে ফজিলত হাসিল করার জন্য যানবাহনযোগে যেও না। কারণ, মসজিদে হারাম, মসজিদে নববী ও মসজিদে আকছা এ তিনটি মসজিদে নামাজের ফজিলত হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে। তাছাড়া অন্য সকল মসজিদ যত সুন্দর বা আকারে বড় হোক না কেনো ফজিলত ও ছওয়াবের দিক দিয়ে সমান বিধায়, অন্য মসজিদে ফজিলত পাওয়ার জন্য সফর করা বা যানবাহনযোগে যাওয়া মুস্তাহাব নয়। ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) এ পার্থক্য বর্ণনা করেছেন। এরূপ রদ্দুস মুহতাব ১/১৪৩ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।

প্রকাশ থাকে যে, বর্ণিত হাদীসের কবর জিয়ারতের সাথে কোনো সম্পর্কই নেই। যেমন ফয়জুল বারী শরহে বুখারী ২য় খণ্ড ৪৩৩ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে�

যেহেতু মুসনাদে আহমদে লিখিত আছে, হযরত নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, তোমরা নামাজ পড়ার জন্য কোনো মসজিদের দিকে সফর করবে না তিনটি মসজিদ ছাড়া।

উক্ত হাদীস হতে প্রমাণিত হলো সফর নিষেধ মসজিদের উপরা কবর জিয়ারতের উপর নয়। অর্থাৎ তোমরা নামাজের উদ্দেশ্যে কোনো মসজিদের দিকে যানবাহনযোগে যেও না, যদি যেতে হয় তাহলে এ তিনটি মসজিদ যথা মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববীতে নামাজ পড়ার জন্য যানবাহনযোগে যাও। কারণ, মসজিদে হারামে প্রতি রাকয়াতে এক লক্ষ রাকয়াতের ছওয়াব আর মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববীতে প্রতি রাকয়াতে পঞ্চাশ হাজার রাকয়াতের ছওয়াব পাওয়া যাবে। এছাড়া অন্যান্য সকল মসজিদে নামাজ পড়ার ছওয়াব সমান। কাজেই নামাজের উদ্দেশ্যে কোনো মসজিদে যানবাহনযোগে সফরের প্রয়োজন নেই। জানা আবশ্যক, অত্র হাদীসটি কবর জিয়ারতের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখে না বিধায়, যারা জিয়ারতের ক্ষেত্রে এ হাদীসটি দলিল হিসেবে পেশ করেন উহা বাতিল বলে গণ্য হলো। যেমন�হযরত শাহ্ আনোয়ার কাশমীরী তদীয় গ্রন্থে এ মন্তব্য করেছেন।

আওলিয়ায়ে কেরামের কবর জিয়ারত প্রসঙ্গ

তবে আওলিয়ায়ে কেরাম মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিক দিয়ে তাদের পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য ও তফাৎ বিদ্যমান। জিয়ারতকারীগণও উপকৃত হওয়ার দিক দিয়ে তাদের মা'রেফাত ও আসরার হিসেবে শ্রেণী বিভাগে বিভক্ত। আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী তদীয় ফাতাওয়ার কিতাবে বলেছেন যে, যদি আওলিয়ায়ে কেরামের মাজারের নিকট শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ, ফিতনা-ফাসাদ পরিলক্ষিত হয় যথা-মেয়ে পুরুষের সমাবেশ, সিজদা, গান-বাজনা ইত্যাদি তজ্জন্য জিয়ারত হতে বিরত থাকা যাবে না। কেননা, এসব অজুহাতে নৈকট্য লাভের বস্তুকে পরিত্যাগ করা যায় না বরং মাুনষের উচিত জিয়ারতে বিদয়াতের বিরোধিতা করা এবং সম্ভব হলে তা মুলোচ্ছেদ করা। আল্লামা ইবনে হাজর বলেন, উক্ত মতের সমর্থনে বলা যায় যে, জানাজার পেছনে কবর পর্যন্ত যাওয়া পরিত্যাগ করা যাবে না যদিও উহার সাথে ক্রন্দনকারিনী মহিলাগণ থাকে। (এ কথায় কোনো দ্বিমত নেই)। দুররে মুখতার ও রদ্দুল মুহতার ১/৮৪৩ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।

কবর জিয়ারতের আদব

ফতহুল কাদীর গ্রন্থে লিখিত আছে যে, দাঁড়িয়ে জিয়ারত করা সুন্নাত জিয়ারত করার পর দাঁড়িয়ে দোয়া ও মোনাজাত করা সুন্নাত। কেননা, হযরত রাসূল আকরাম জান্নাতুল বাকীতে জিয়ারতকালে এরূপ করেছেন। আরো বলেছেন, আস্সালামু আলাইকুম দারা কাওমিম্ মুমিনীন। ওয়া ইন্না ইনশা আল্লাহু বিকুম লাহেকুন। মুল্লা আলী কারী শরহে লোবাবে লিখেছেন, ফোকহায়ে কেরাম আদবে জিয়ারত সম্পর্কে বলেছেন, মৃত ব্যক্তির পায়ের নিকটে জিয়ারতকারী দাঁড়াবে। মাথার নিকটে নয়, কেননা তাতে মৃত ব্যক্তির জিয়ারতকারীকে দেখতে কষ্ট হয়, পায়ের নিকট দাঁড়ালে মৃত ব্যক্তির চোখ বরাবর হয়। তবে এ পদ্ধতি তখনই আমল করা যাবে যখন পায়ের নিকট দাঁড়ানো সম্ভব হবে। যেহেতু হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূল করীম মৃত ব্যক্তির নিকট দাঁড়িয়ে সূরা বাকারা এবং পায়ের নিকট সূরায়ে বাকারার শেষ অংশ পড়েছেন। কবর জিয়ারতের আদবের মধ্যে ইহাও আছে, ছহীহ কাওল মতে, ...বলবে। যেহেতু হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে, হুজুর পাক জিয়ারতে বলেছেন�

অতঃপর দাঁড়ানো অবস্থায় লম্বা দোয়া করবে। আর যদি বসে জিয়ারত করতে চায় তাহলে ঐ লোকের জীবদ্দশায় তার সম্মানে যতদূর নিকটে বা দূরে বসেছে ততটুকু দূরে বা নিকটে বসবে। সূরায়ে ইয়াসীন পড়তে তাতে আল্লাহপাক যত মৃত ব্যক্তি ঐ কবরস্থানে আছে তাদের সংখ্যানুপাতে নেকী দেবেন এবং তাদের আযাব হাল্কা করবেন। শরহে লুবাবে আছে জিয়ারতকারীর পক্ষে যা পাঠ করা সম্ভব যেমন, সূরায়ে ফাতিহা, বাকারা...মুফলেহুন পর্যন্ত, আয়াতুল কুরছি, আমানার রাসূলু, সূরা ইয়াসীন, সূরা মুলক, তাকাছুর, এখলাছ ১২ বার, ১১ বার, ৭ বার, ৩ বার পড়ে বলবে, হে খোদা আমি যা কিছু সূরা কিরাত পড়লাম উহার ছওয়াব এই মৃত ব্যক্তিদের নিকট পৌঁছে দিন। (শামী ১/৮৪৪ পৃষ্ঠা)।

মারাকিল ফালাহ গ্রন্থের ২৪২ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে, শরহুল মিশকাত গ্রন্থে আছে, জিয়ারতকারী কবরবাসীর জীবদ্দশায় তার সম্মানে যতটুকু নিকটে বা দূরে দাঁড়াত বা বসত তেমনিভাবে জিয়ারত করার সময়ও দাঁড়াবে বা বসবে। এরূপ অন্যান্য ফকীহগণও উল্লেখ করেছেন।

কুহেস্তানী গ্রন্থে লিখিত আছে যে, জিয়ারতকারী কবরবাসীর সম্মুখে এভাবে দাঁড়াবে যেরূপ জীবিত কালে সামনে দূরে বা নিকটে দাঁড়াত। এহইয়াউল উলুম কিতাবে লিখিত আছে, কবর জিয়ারত কালে মুস্তাহাব তরীকা হলো কিবলোকে পেছনে রেখে মাইয়্যেতের চেহারামুখী হয়ে দাঁড়াবে, সালাম দেবে। কবর স্পর্শ করবে না বা চুম্বন করবে না ও কবরকে মাসেহ করবে না এসব করা নাছারাদের অভ্যাস। অনুরূপ বর্ণনা শরহুশ শেরআত কিতাবে আছে। শরহুল মিশকাতে আছে যে, মুস্তাহাব তরীকা হলো, মৃতদের উপর সালাম দেয়ার সময় তাদের সম্মুখীন হয়ে সালাম প্রদান করা এবং ঐ অবস্থায় মাইয়্যেতের দিকে মুখ করে দোয়া করা। মুসলিম সমাজে এ তরীকাই প্রচলিত।

এবনে হাজর আসকলানী শাফেয়ী বলেছেন, এরূপ করা মুস্তাহাব নয়। ইজতেযকার ও তামহীদ কিতাবে ছহীহ সনদের সাথে এবনে আব্দুল বর হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, হযরত রাসূল মকবুল বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে থাকে সে দুনিয়ায় তাকে চিনতো, এমতাবস্থায় সালাম করলে উক্ত মৃত ব্যক্তি সালামদাতাকে চিনে তার সালামের জবাব দিয়ে দেয়। (মারাকিল ফালাহ ৩৪২ পৃষ্ঠা)

কবর জিয়ারতের পবিত্র কুরআন পাঠ

করলে উহার ছওয়াব মৃত ব্যক্তি পায়

হেদায়া গ্রন্থের অধ্যায়ে ওলামায়ে হানাফিয়া অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, মানুষ নামাজ, রোজা ছদকা আরো অন্যান্য এবাদত করে উহার ছাওয়াব যদি অপরকে প্রদান করেন করতে পারেন। এতে কোনো আপত্তি নেই। মুহীত কিতাব হতে তাতার খানিয়া গ্রন্থে যাকাত অধ্যায়ে লিখিত আছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি নফল ছদ্কায় সারা পৃথিবীর মুসলিম নর-নারীর নিয়্যাত করে উহা উত্তম হয়, উক্ত ছওয়াব তাদের আমলনামায় লিপিবদ্ধ হবে। তাতে ছদ্কাদাতার ছওয়াব কম হবে না। ইহা আহলে সুন্নাতুল জামায়াতের অভিমত। তবে ইমাম মালেক ও ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন যে, শুধু শারীরিক ইবাদত যথা নামাজ ও তিলাওয়াতে কুরআন= এর ছওয়াব মৃত ব্যক্তিকে প্রদান করলে উহা মৃতগণ পাবেন না। হ্যাঁ, নফল ছদকা ও হজ্বের ছওয়াব দান করলে উহা মৃত ব্যক্তিগণ পাবেন। মো�তাযিলা বাতিল ফেরকার অভিমত হলো যে, কোনো প্রকারের দান খয়রাতের ছওয়াব মৃতদের নিকট পৌঁছে না। এরূপ ফতহুল কাদীর গ্রন্থে বর্ণিত আছে।

আল্লামা শামী বলেন, ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)-এর যে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে, উহা সর্বজন বিদিত মত। তবে ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)-এর পরবর্তী অনুসারীগণ যা ব্যক্ত করেছেন তা হলো মৃত ব্যক্তির নিকট দাঁড়িয়ে বা বসে সূরা কিরাত পাঠ করলে অথবা কিরাতের পর তার জন্য দোয়া করা হলে উহার ছওয়াব তার রূহে পৌঁছে। যদি সে দূরে তথা অদৃশ্য হয়। কেননা, তিলাওয়াতের স্থানে বরকত ও রহমত নাযিল হয় এবং কুরআন শরীফ তিলাওয়াত অন্তে দোয়া করলে উক্ত দোয়া কবুলের আশা বেশি। এতে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, কুরআন পাক তিলাওয়াত অন্তে তারা দোয়া করেন এভাবে যে, ওহে আল্লাহ! আমি যা কুরআন পাক হতে পড়লাম, উহার ন্যায় উপকার অমুক ব্যক্তিকে পৌঁছান। কিন্তু আমাদের আয়েম্মায়ে হানাফিয়াদের মতে, মৃত ব্যক্তির নিকট কুরআন পাঠের ছওয়াব পৌঁছে।

বাহরুর রায়েক কিতাবে আছে, কোনো ব্যক্তি যদি রোজা রাখে, নামাজ পড়ে অথবা ছদকা করে, আর উক্ত রোজা, নামাজ ও ছদকা খয়রাতের ছওয়াব মৃত ও জীবিত ব্যক্তিদেরকে দান করে উহা জায়েয এবং ঐ রোজা, নামাজ, ছদকার ছওয়াব মৃতদের আমলনামায় পৌঁছে যায়। এটাই আহলে সুন্নাতুল জামাতের মত। এরূপ বাদায়ে কিতাবে লিখিত আছে। শামী ১/৮৪৪ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য

52. মহানবীর ওফাতের সময় জিবরাইল (আ:)

Photo: মহানবীর ওফাতের সময় জিবরাইল (আ:)
এসে নবীজিকে সালাম দিলেন এবং বললেন,
" হে আল্লাহ‘র রাসুল, আল্লাহ আপনাকে সালাম
দিয়েছে,আর
জানতে চেয়েছে, আপনি কেমন আছেন। আল্লাহ সব
জানেন তার পরও আপনার
মুখ থেকে জানতে চেয়েছেন আপনি কেমন
আছেন। "
নবীজি বললেন,
" আমি বড়ই কষ্টের ভিতর আছি, অসুস্থ আছি। "
জিবরাইল (আঃ) বললেন,
"ইয়া রাসুলল্লাহ, একজন নতুন ফেরেস্তা এসেছে আজ
আমার
সাথে,যে ফেরেস্তা কোন মানুষের কাছে আসার জন্য
কোন দিন অনুমতি চায়
নাই, আর কোনদিন অনুমতি চাইবেও না,শুধু আপনার
অনুমতি চায় আপনার
কাছে আসার জন্য,আর সে ফেরেস্তার নাম মালাকুল
মউত। "
মালাকুল মউত রাসুলের অনুমতি নিয়ে রাসুলের
জাসান মোবারকের
কাছে এসে সালাস দিলেন এবং বললেন,
" ইয়া রাসুলল্লাহ আদম (আঃ) থেকে শুরু করে এই
পর্যন্ত আমি যত মানুষের
জান কবোচ করেছি,আর কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষের
জান
কবোচ করবো কারো কাছে অনুমতি চাইনি আর চাওয়াও
আমার লাগবে না, কিন্তু
আজকে আসার সময় আল্লাহ বলেছেন আমি যেন আপনার
অনুমতি চাই। "
নবীজি বললেন,
" মালাকুল মউত আমি যদি অনুমতি না দেই?"
মালাকুল মউত বললেন,
" ইয়া রাসুলল্লাহ আল্লাহ বলেছেন
যদি অনুমতি না পাও ফিরে এসো।"
◆“আল্লাহু আকবার“◆ ◆“আল্লাহ আকবার“

#Ahmedমহানবীর ওফাতের সময় জিবরাইল (আ:)
এসে নবীজিকে সালাম দিলেন এবং বললেন,
" হে আল্লাহ‘র রাসুল, আল্লাহ আপনাকে সালাম
দিয়েছে,আর
জানতে চেয়েছে, আপনি কেমন আছেন। আল্লাহ সব
জানেন তার পরও আপনার
মুখ থেকে জানতে চেয়েছেন আপনি কেমন
আছেন। "
নবীজি বললেন,
" আমি বড়ই কষ্টের ভিতর আছি, অসুস্থ আছি। "
জিবরাইল (আঃ) বললেন,
"ইয়া রাসুলল্লাহ, একজন নতুন ফেরেস্তা এসেছে আজ
আমার
সাথে,যে ফেরেস্তা কোন মানুষের কাছে আসার জন্য
কোন দিন অনুমতি চায়
নাই, আর কোনদিন অনুমতি চাইবেও না,শুধু আপনার
অনুমতি চায় আপনার
কাছে আসার জন্য,আর সে ফেরেস্তার নাম মালাকুল
মউত। "
মালাকুল মউত রাসুলের অনুমতি নিয়ে রাসুলের
জাসান মোবারকের
কাছে এসে সালাস দিলেন এবং বললেন,
" ইয়া রাসুলল্লাহ আদম (আঃ) থেকে শুরু করে এই
পর্যন্ত আমি যত মানুষের
জান কবোচ করেছি,আর কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষের
জান
কবোচ করবো কারো কাছে অনুমতি চাইনি আর চাওয়াও
আমার লাগবে না, কিন্তু
আজকে আসার সময় আল্লাহ বলেছেন আমি যেন আপনার
অনুমতি চাই। "
নবীজি বললেন,
" মালাকুল মউত আমি যদি অনুমতি না দেই?"
মালাকুল মউত বললেন,
" ইয়া রাসুলল্লাহ আল্লাহ বলেছেন
যদি অনুমতি না পাও ফিরে এসো।"
◆“আল্লাহু আকবার“◆ ◆“আল্লাহ আকবার“

51. কালামে আ'লা হযরত আপনে দামানে শাফায়াত

কালামে আ'লা হযরত
আপনে দামানে শাফায়াত

আপনে দামানে শাফায়াত মে ছুপায়ে রাখনা
মেরে সরকার মেরে বাত বানায়ে রাখনা
আওর ইছিমন সবকা তলবগার হু মেরি আকাঁ
হাত হো মে মুজে কদমো ছে লাগায়ে রাখনা।।

ইক ইয়াদ আয়ে তু পির ইয়াদ না আয়ে কুঈ
বান্দা পরওয়ার মেরে কি ইয়াদ মেরি দিলছে বুলায়ে রাখনা
শায়েদ ছে রঙ্গ হে হালেক মেরে আকাঁ গুজরে
আপনে পলকো কো ছারেরাহা বিছায়ে রাখনা।।
আওর উনকেহে যাও হার ইক ছিজ উনিছে মাঙ্গো
আপনে দামান মে না এহসান পারায়ে রাখনা।।।

¤¤শেখ সা'দী কাদেরী রযভী¤¤

50. " হযরত খিজির (আঃ)"



হযরত ইবনু আব্বাস (রা:) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত উবাই ইবনু কা‘ব (রা:) রাসূলুল্লাহ (সা:) হ’তে আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, হযরত মূসা (আঃ) একদা বনী ইসরাঈলের এক সমাবেশে ভাষণ দিতে দাঁড়ালে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হ’ল, কোন ব্যক্তি সর্বাধিক জ্ঞানী? তিনি বললেন, আমিই সর্বাধিক জ্ঞানী। জ্ঞানকে আল্লাহর দিকে সোপর্দ না করার কারণে আল্লাহ্‌ তাকে তিরস্কার করে বললেন, বরং দু’সাগরের সঙ্গমস্থলে আমার এক বান্দা আছে, যিনি তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী।

হযরত মূসা (আঃ) বললেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! তার নিকট পৌছাতে কে আমাকে সাহায্য্ করবে? কখনো সুফইয়ান এভাবে বর্ণনা করেছেন, আমি কিভাবে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারি? তখন বলা হ’ল, তুমি একটি থলিতে করে একটি মাছ নাও। যেখানে তুমি মাছটি হারাবে, সেখানেই আমার সে বান্দা আছে। অতঃপর হযরত মূসা (আঃ) একটি মাছ ধরলেন এবং থলিতে রাখলেন।অতঃপর মাছ নিয়ে তাঁর সঙ্গী ইউশা বিন নূনকে সাথে নিয়ে চললেন।শেষ পর্যন্ত তারা একটি পাথরের কাছে পৌছলেন এবং তার উপর মাথা রেখে বিশ্রাম নিলেন।মূসা (আঃ) ঘুমিয়ে পড়লেন। এ সময় মাছটি থলি থেকে বের হয়ে লাফিয়ে সমুদ্রে চলে গেল।অতঃপর সে সমুদ্রে সুড়ঙ্গের মত পথ করে নিল।আর আল্লাহ্‌ মাছটির চলার পথে পানির প্রবাহ থামিয়ে দিলেন।ফলে তার গমনপথটি সুড়ঙ্গের মত হয়ে গেল।অতঃপর তারা উভয়ে অবশিষ্ট রাত এবং পুরো দিন পথ চললেন।

পরদিন সকালে হযরত মূসা (আঃ) তার সাথীকে বললেন, আমরা তো সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, আমাদের খাবার নিয়ে এস।হযরত মূসা (আঃ)-কে আল্লাহ্‌ যে স্থানে যাবার কথা বলেছিলেন, সেই স্থান অতিক্রম করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি কোনরূপ ক্লান্তিবোধ করেননি। সাথী ইউশা বিন নুন তখন বলল, আপনি কি ভেবে দেখেছেন, যে পাথরটির নিকট আমরা বিশ্রাম নিয়েছিলাম সেখানেই মাছটি অদ্ভুতভাবে সমুদ্রের মধ্যে চলে গেছে।কিন্তু আমি মাছটির কথা আপনাকে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। মূলত: শয়তানই আমাকে এ কথা ভুলিয়ে দিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, পথটি মাছের জন্য ছিল একটি সুড়ঙ্গের মত আর তাঁদের জন্য ছিল আশ্চর্যজনক ব্যাপার।

হযরত মূসা (আঃ) বললেন, আমরা তো সেই স্থানটিরই অনুসন্ধান করছি।অতঃপর তারা তাদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চললেন এবং ঐ পাথরের নিকটে পৌঁছে দেখলেন, এক ব্যক্তি কাপড় মুড়ি দিয়ে বসে আছেন। মূসা (আঃ) তাঁকে সালাম দিলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, এখানে সালাম কি করে এলো? তিনি বললেন, আমি মূসা। খিযির জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি বনী ইসরাঈল বংশীয় মূসা? মূসা (আঃ) বললেন, হ্যাঁ। আমি এসেছি এজন্য যে, সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে, তা হ’তে আপনি আমাকে শিক্ষা দিবেন। খিযির বললেন, হে মূসা! আমার আল্লাহ্‌ প্রদত্ত কিছু জ্ঞান আছে, যা আপনি জানেন না। আর আপনিও আল্লাহ্‌ প্রদত্ত এমন কিছু জ্ঞানের অধিকারী, যা আমি জানি না। মূসা (আঃ) বললেন, আমি কি আপনার সাথী হ’তে পারি? খিযির বললেন, ‘আপনি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্যধারণ করতে পারবেন না। যে বিষয় আপনার জ্ঞানের আওতাধীন নয় সে বিষয়ে আপনি ধৈর্যধারণ করবেন কেমন করে?’ মূসা (আঃ) বললেন, ‘ইনশাআল্লাহ্‌ আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করব না’ (কাহফ ৬৭-৬৯) ।

অতঃপর তাঁরা দু’জনে সাগরের কিনারা ধরে হেঁটে চললেন। তখন একটি নৌকা তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তারা তাদেরকে নৌকায় তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। তারা খিযির-কে চিনতে পেরে বিনা ভাড়ায় তাঁদেরকে নৌকায় তুলে নিলো। যখন তাঁরা দু’জনে নৌকায় চড়লেন, তখন একটি চড়ুই পাখি এসে নৌকাটির কিনারায় বসল এবং সমুদ্র থেকে এক ফোঁটা বা দুই ফোঁটা পানি পান করল। খিযির বললেন, ‘হে মুসা! আমার ও আপনার জ্ঞানের দ্বারা আল্লাহ্‌ জ্ঞান হ’তে ততটুকুও কমেনি যত টুকু এ পাখিটি তাঁর ঠোটের দ্বারা সাগরের পানি হ্রাস করেছে’।

তখন খিযির একটি কুড়াল নিয়ে নৌকাটির একটা তক্তা খুলে ফেললেন। মূসা (আঃ) অকস্মাৎ দৃষ্টি দিতেই দেখতে পেলেন যে, তিনি কুড়াল দিয়ে একটি তক্তা খুলে ফেলেছেন। তখন তিনি তাঁকে বললেন, আপনি একি করলেন? এ লোকেরা বিনা ভাড়ায় আমাদেরকে নৌকায় তুলে নিলো, আর আপনি তাদেরকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য নৌকা ছিদ্র করে দিলেন? আপনি তো একটি গুরুতর কাজ করলেন। খিযির বললেন, আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে ধৈর্যধারণ করতে পারবেন না। মূসা (আঃ) বললেন, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না এবং আমার এ ব্যবহারে আমার প্রতি কঠোর হবেন না।মূসা (আঃ)-এর পক্ষ থেকে প্রথম এ কথাটি ছিল ভুলক্রমে।

অতঃপর তাঁরা যখন উভয়ে সমুদ্র পার হলেন, তখন তারা একটি বালকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন, যে অন্যান্য বালকদের সাথে খেলা করছিল।খিযির ছেলেটির মাথা দেহ হ’তে ছিন্ন করে ফেললেন। হযরত মুসা (আঃ) বললেন, আপনি একটি নিষ্পাপ শিশুকে বিনা অপরাধে হত্যা করলেন? আপনি খুবই খারাপ একটা কাজ করলেন। খিযির বললেন, আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে ধৈর্যধারণ করতে পারবেন না। মূসা (আঃ) বললেন, এরপর যদি আমি আপনাকে আর কোন প্রশ্ন করি, তাহ’লে আমাকে আর সঙ্গে রাখবেন না।অতঃপর উভয়ে চলতে লাগলেন। চলতে চলতে তাঁরা একটি জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে তাদের নিকট কিছু খাবার চাইলেন। কিন্তু জনপদ বাসী তাদের দু’জনের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল।সেখানে তারা একটি প্রাচীর দেখতে পেলেন, যা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছিল।হযরত খিযির প্রাচীরটি মেরামত করে সুদৃঢ় করে দিলেন।হযরত মুসা (আঃ) বললেন, এই বসতির লোকদের নিকট এসে আমরা খাবার চাইলাম।তারা মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল।অথচ আপনি এদের দেয়াল সোজা করে দিলেন।আপনি তো ইচ্ছা করলে এর জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারতেন।হযরত খিযির বললেন, এবার আমার এবং আপনার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গেল।এক্ষণে যে বিষয়ে আপনি ধৈর্যধারণ করতে পারেননি, আমি এর তাৎপর্য বলে দিচ্ছি।

নৌকাটির ব্যাপার ছিল এই যে, সেটি ছিল কয়েকজন দরিদ্র ব্যক্তির।তারা সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করত।আমি নৌকাটিকে ত্রুটিযুক্ত করে দিতে চাইলাম। কারণ, তাদের সামনে ছিল এক রাজা, যে ভাল নৌকা পেলেই জোরপূর্বক কেড়ে নিত। তারপর যখন এটাকে দখল করতে লোক আসল, তখন ছিদ্রযুক্ত দেখে ছেড়ে দিল। অতঃপর নৌকাওয়ালারা একটা কাঠ দ্বারা নৌকাটি মেরামত করে নিলো।আর বালকটি সূচনা লগ্নেই ছিল কাফের। আর সে ছিল তার ঈমানদার বাবা- মার বড়ই আদরের সন্তান । আমি আশঙ্কা করলাম যে, সে বড় হয়ে অবাধ্যতা ও কুফরি দ্বারা তাদেরকে কষ্ট দিবে। অতঃপর আমি ইচ্ছা করলাম যে, তাদের পালনকর্তা তাদেরকে তার চেয়ে পবিত্রতায় ও ভালবাসায় ঘনিষ্ঠতর একটি শ্রেষ্ঠ সন্তান দান করুন।আর প্রাচীরের ব্যাপার এই যে, সেটি ছিল নগরের দু’জন ইয়াতীম বালকের। এর নীচে ছিল তাদের গুপ্তধন। তাদের পিতা ছিলেন সৎকর্ম পরায়ণ। সুতরাং আপনার পালনকর্তা দয়াপরবেশ হয়ে ইচ্ছা পোষণ করলেন যে, তারা যৌবনে পদার্পণ করে নিজেদের গুপ্তধন উদ্ধার করুক। আমি নিজ ইচ্ছায় এসব করিনি। আপনি যে বিষয়গুলোতে ধৈর্যধারণ করতে পারেননি, এই হ’ল তার ব্যাখ্যা ।

(কাহফ ৭৯-৮২; ছহীহ বুখারী হা/৩৪০১ ‘নবীদের কাহিনী’অধ্যায়, ‘খিযিরের সাথে মূসা (আঃ)-এর কাহিনী’অনুচ্ছেদ, মুসলিম হা/২৩৮০, ‘ফাযায়েল’অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৬)।

49. নিয়মিত নামায আদায় কেন করবেন ?

নিয়মিত নামায আদায় কেন করবেন ?

উত্তরটি জানতে চাইলে নিচের হাদিসটি পড়ুন-
নবী (সা) বলেন, "বান্দা যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন তার সমস্ত গুনাহ নিয়ে এসে তার মাথায় ও দুই কাঁধে রাখা হয়। যতবারই সে রুকু অথবা সিজদা করে, ততবারই তার থেকে গুনাহ ঝরে পড়তে থাকে।"
সুবহানাল্লাহ
[বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা ৩/১৬]

এরপরেও কি আপনি সালাতে আসবেন না ?

তাই আসুন আমরা প্রতিঙ্গাবদ্ধ হই যে, এখন থেকে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবো ।

48. জুম’আর দিনের আদব যারা রক্ষা করে তাদের দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়,,,,,,

জুম’আর দিনের আদব যারা রক্ষা করে তাদের দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়,,,,,,

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,,,
"যে ব্যাক্তি ভালভাবে পবিত্র হল অতঃপর মসজিদে এলো, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শুনতে চুপচাপ বসে রইল, তার জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী এ সাত দিনের সাথে আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়, পক্ষান্তরে খুৎবার সময় যে ব্যক্তি পাথর, নুড়িকণা বা অন্য কিছু নাড়াচাড়া করল সে যেন অনর্থক কাজ করল " ||

( মুসলিম শরীফ ৮৫৭ )

47. “জুম’আর দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতা এসে হাজির হয়।

রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন,

“জুম’আর দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতা এসে হাজির হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা সর্বাগ্রে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকে। প্রথম ভাগে যারা মসজিদে ঢুকেন তাদের জন্য উট, দ্বিতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য গরু, তৃতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য ছাগল, চতুর্থবারে যারা আসেন তাদের জন্য মুরগী, ও সর্বশেষ পঞ্চমবারে যারা আগমন করেন তাদের জন্য ডিম কুরবানী বা দান করার সমান সওাব্ব লিখে থাকেন। আর যখন ইমাম খুৎবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে উঠে পড়েন ফেরেশতারা তাদের

এ খাতা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যান।” (বুখারী ৯২৯, ইফা ৮৮২, আধুনিক ৮৭৬)

45. যরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত।

যরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, তুমি বল, অর্থ “হে আল্লাহ্। আমাকে হিদায়াত দান কর এবং আমাকে সরল পথে রেখ।”
অপর এক বর্ণনায় রয়েছে অর্থ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে হিদায়াত ও সোজা পথের সন্ধান চাই।”

[দুআ করার ফযীলত অধ্যায় :: রিয়াযুস স্বা-লিহীন :: বই ১৭ :: হাদিস ১৪৭৩]

44. নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লম এরশাদ করেছেন, সকল কর্ম নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল।

হযরত ওমর ইবনে খত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন; নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লম
এরশাদ করেছেন, সকল কর্ম নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল।

প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তা-ই রয়েছে, যা সে নিয়্যত করে।
সুতরাং যার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে হবে,
তার হিজরত আল্লাহ ও রাসূলের দিকে হবে।
আর যার হিজরত দুনিয়া অর্জন কিংবা কোন নারীকে বিয়ে
করার জন্য হবে,তার হিজরত তার দিকে হবে,যার জন্য সে হিজরত করেছে।

(কিতাবুল ঈমান-হাদীস নং-১,মিশকাত শরীফ)

43. বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনে হাজর মক্কি হায়তমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রনীত কিতাব ‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‍‍আন ইন মাতুল কুবরা আলাল আলম ফী মাওলিদি উলদে আদম”এর মধ্যে কতিপয় হদিস শরীফ রিলক্ষিত হয়।

বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনে হাজর মক্কি হায়তমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রনীত কিতাব ‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‍‍আন ইন মাতুল কুবরা আলাল আলম ফী মাওলিদি উলদে আদম”এর মধ্যে কতিপয় হদিস শরীফ রিলক্ষিত হয়।

- সর্বশ্রেষ্ট সাহবী ও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা:)বলেন-


مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قِرا ةَ مَوْ لِدِ النَّبىُ مَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَنَرَفِيْقِى فىِ الجَنّةِঅর্থাৎ ইমলাদুন্নবী উপলেক্ষে যে কমপক্ষে এক দিরহাম খরচ করবে সে বেহেশতের শধ্যে আমার বান্ধু হবে।

দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন -

مَنْ عَظَّمَ مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ اَخْيَا الاسْالاَمُযে মিলাদুন্নবীকে সম্মান করল সে যেন ইসলামকেই জিন্দা করল

তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান বিন আফফান (রাঃ) বলেন -

مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قرأة مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ فَكَا نَّمَا ثَهِيد غَزُوَةِ بَدَر رَوحُنَيْنُযে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে কমপক্ষে এক দিরহাম খরচ করবে সে যেন বদর এবং হুনাইনের যুদ্ধে অংশ গ্রহন করল

চুতর্থ খলিফা হযরত আলি মুরতাদ্বার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-

مَنْ عَظَّمَ مَوْ لِدِ النَّبِى صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ وَكَانَ سَبَبَا لِقرا ته لا يَحْرُمُ مِنَ الدُّنْيَا اِلا َّبِالاِ يْمَانِ وَيَدْخُلُ الجَنَّهَ بِغَيْرِ حِسَاب

অর্থাৎ যে ব্যিক্ত মিলাদুন্নাবী সম্মান করবে তার বদৌলেত সে ঈমান ব্যতিরেকে দুনিয়া হতে বিদায় নেবেনা এবং কোন হিসাব নিকাশ ছাড়া বেহেশতে প্রবেশ করবে।

বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-

وَدَوتْ لَوْكَانَ لِى مِثل جَبَلٍ اُحٍد زَهْبًا فَا نْفَقُتُهُ عَلَ قِراَ ة مَوْلِدِالنّبِى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ

অর্থাৎ আমার মন চায়, যদি আমার কাছে উহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ন থাকত, তাহলে সব গুলো মিলাদুন্নবী পালনে খরচ করতাম।

হযরত জুনাঈদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাহি বলেন-

مَنْ حَضَرَ مَوْلِدِالنَّبِى صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمُ وَعَظّمَ قدره فَقَد فَازَ با لاِ يْما نঅর্থাৎ যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী মাহফিলে উপস্থিত হয় এবং তার যথাযথ সম্মান করে তাহলে তার ঈমআন সফল হয়েছে।

42. প্রসঙ্গ মীলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী (ﷺ)

>>প্রসঙ্গ মীলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী (ﷺ)<< 

১২ই রবিউল আউয়াল, ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করাকে নাজায়েজ বলে ফতোয়া আরোপ করছে, এবং ওই দিনে "সীরাতুন্নবী" (ﷺ) পালন করতে হবে বলে ফতোয়া দিচ্ছে, ওই  মৌলভীদের জানা থাকা উচিত ছিলো যে "মীলাদুন্নবী" (ﷺ) মানার মধ্য দিয়েই "সীরাতুন্নবী" (ﷺ) প্রতিষ্ঠিত হয়।
যেমন "মীলাদুন্নবী" (ﷺ) আগে এর পরে ধারাবাহিকভাবে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ৬৩ বছরের জিন্দেগী সীরাতুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।

তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই পবিত্র
ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বা মীলাদুন্নবী বলতে কি বুঝায়?

"মীলাদুন্নবী" (ﷺ) মূলত ‘ঈদ’ অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ
প্রকাশ করা।আর
‘মীলাদ’ ও ‘নবী’ দুটি শব্দ
একত্রে মিলে ‘মীলাদুন্নবী’
বলা হয়।‘মীলাদ’-এর
তিনটি শব্দ রয়েছে (মীলাদ) (মাওলিদ) ও (মাওলুদ) এ তিনটি শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- জন্মদিন,জন্মকাল ও জন্মস্থান প্রভুতি।

অনুরূপ মিসবাহুল লুগাতের ৯৬৬ পৃষ্টায় রয়েছেঃ-

"মীলাদ"অর্থঃ জন্মের সময়,

"মাওলিদ"অর্থঃ জন্মস্থান,

"মাওলুদ" অর্থঃ ছোট শিশু।

মোট কথা মীলাদ শব্দটি জন্মকাল বা জন্মদিন ব্যতীত অন্য কোন অর্থে ব্যবহৃত হয় না।সুতরাং মীলাদুন্নবী, মাওলেদুন্নবী ও মাওলুদুন্নবী শব্দগুলীর অর্থ হলো- হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জন্মদিন বা জন্মকাল।

অর্থাৎ আভিধানিক
বা শাব্দিক অর্থে
"মীলাদুন্নবী"বলতে হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উনার বিলাদত
শরীফকে বুঝানো হয়ে থাকে।
আর পারিভাষিক
বা ব্যবহারিক অর্থে
ﻣﻴﻼﺩ ﺍﻟﻨﺒﻰ
"মীলাদুন্নবী" বলতে (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার বিলাদত শরীফ
উপলক্ষে উনার ছানা-সিফাত বর্ণনা করা,
উনার প্রতি সালাত ও সালাম পাঠ করা,উনার
পুতঃপবিত্র
জীবনী মোবারকের
সামগ্রিক বিষয়
সম্পর্কে আলোচনা করাকে বুঝানো হয়।
আর সাইয়্যেদীল
আ’ইয়াদ, পবিত্র
ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলতে প্রাণপ্রিয়
নবীজি,হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার বিলাদত শরীফ
উনার জন্য খুশি প্রকাশ করা,শুকরিয়া আদায়
করাকে বোঝায়।এখন এ খুশি প্রকাশ করা বিভিন্ন রকম
হতে পারে।যে কোন
নেক আমলের মাধ্যমেই এ
খুশি প্রকাশ করা যেতে পারে।তবে সবচেয়ে উত্তম
হল হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উনার পবিত্র শান মোবারকে সালাত শরীফ,সালাম শরীফ পেশ
করা,জশনে জুলুস বের করা,মীলাদ শরীফ
পাঠ করা ইত্যাদি ইত্যাদি।

১২ই রবিউল আউয়াল শরীফে ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পরিবর্তে কেন সীরাতুন্নবী পালন
করা যাবে না?

পবিত্র ১২ রবিউল
আউয়াল শরীফ
যেহেতু হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার বিলাদত শরীফ
উনার সাথে সংশ্লিষ্ট
বিশেষ সম্মানিত
একটি দিন।তাই এই
পবিত্র দিনে ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
পালন করাই যুক্তিসংগত,
"সীরাতুন্নবী" (ﷺ) কখনো নয়।
কেননা, "সীরাতুন্নবী" যদি বলা হয়
‘সীরাত’ হচ্ছে চরিত্র
মোবারক,আচার-আচরণ, জীবন পদ্ধতি,জীবন যাপনের পন্থা,মাযহাব, তরীকা,অবস্থা,জীবনাচার, জীবনচরিত সুতরাং সীরাতুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শব্দের পারিভাষিক অর্থ হলো নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জীবনী বা জীবনচরিতকে বুঝায়,যেটা আল্লাহ
পাক-এর হাবীব হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার একটা সিফাত
বুঝানো হয়েছে সীরাতুন্নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
যখন কেউ চরিত্র
মোবারক সম্পর্কে আলোচনা করবে
তখন সেটা "সীরাতুন্নবী" হবে।যদি "সীরাতুন্নবী" বলা হয় তাহলে আল্লাহপাক-এর হাবীব হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার ছূরতন্নবী অর্থাৎ ছূরত মোবারক কেমন ছিলো?
আল্লাহপাকের
হাবীব হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার যে নূর মোবারক
ছিলো ‘নূরে হাবীবী’
তাহলে সেটার মাহফিল
করতে হবে আলাদাভাবে।
এভাবে কেউ সীরাতুন্নবী,
কেউ ছূরাতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ মিরাজুন্নবী, (ﷺ)
কেউ হিজরতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ জিহাদুন্নবী, (ﷺ)
কেউ রিসালাতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ রিহালাতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ বিছালুন্নবী, (ﷺ)
কেউ নূরুন্নবী (ﷺ) -এর মাহফিল
করবে অর্থাৎ
প্রতিটি বিষয়
আলাদা আলাদা হয়ে যাবে
এবং আলাদা আলাদা নাম
দিয়ে আলোচনা করতে হবে।যেমন উনার যেহেতু জন্ম হয়েছে আগে,পরে ৬৩ বছরের জীবনচরিত। তাই ১২ই রবিউল আউয়ালে হুজুরপাকের বিলাদত বা জন্ম হয়েছে তাই "মীলাদুন্নবী" উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করা আল্লাহর হুকুম সুরা-ইউনূসের ৫৮ নং আয়াত তাঁর প্রমাণ, এ আয়াত থেকে "মীলাদুন্নবী" তথা খুশি উদযাপন করা কথা বলা হয়েছে,"সীরাতুন্নবী" নয়।
আর যেহেতু পবিত্র
দিবসটি বিলাদত শরীফ উনার সাথে সংশ্লিষ্ট, তাই
ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ব্যতীত অপর কোন নামে সম্বোধন করা ঠিক হবে না।
এখানে উল্লেখ করতে চাই যে "মীলাদুন্নবী" একদিনের ঘটনা নয়,আল্লাহর সৃষ্টিতে যতদিন আছে সকল দিনেরই মূল হলেন নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
সুতরাং সকল দিনেই নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সৃষ্টির কারণে ধন্য।মোট কথা নবীজি (আলাইহিস সালাম) আগমন দিন, মাস, কিংবা বছরের সাথে সম্পর্কিত করা যাবে না।সব কিছুই উনার উসিলায় পয়দা হয়েছে।
#Ahmed>>প্রসঙ্গ মীলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী (ﷺ)<<

১২ই রবিউল আউয়াল, ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করাকে নাজায়েজ বলে ফতোয়া আরোপ করছে, এবং ওই দিনে "সীরাতুন্নবী" (ﷺ) পালন করতে হবে বলে ফতোয়া দিচ্ছে, ওই মৌলভীদের জানা থাকা উচিত ছিলো যে "মীলাদুন্নবী" (ﷺ) মানার মধ্য দিয়েই "সীরাতুন্নবী" (ﷺ) প্রতিষ্ঠিত হয়।
যেমন "মীলাদুন্নবী" (ﷺ) আগে এর পরে ধারাবাহিকভাবে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ৬৩ বছরের জিন্দেগী সীরাতুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।

তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই পবিত্র
ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বা মীলাদুন্নবী বলতে কি বুঝায়?

"মীলাদুন্নবী" (ﷺ) মূলত ‘ঈদ’ অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ
প্রকাশ করা।আর
‘মীলাদ’ ও ‘নবী’ দুটি শব্দ
একত্রে মিলে ‘মীলাদুন্নবী’
বলা হয়।‘মীলাদ’-এর
তিনটি শব্দ রয়েছে (মীলাদ) (মাওলিদ) ও (মাওলুদ) এ তিনটি শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- জন্মদিন,জন্মকাল ও জন্মস্থান প্রভুতি।

অনুরূপ মিসবাহুল লুগাতের ৯৬৬ পৃষ্টায় রয়েছেঃ-

"মীলাদ"অর্থঃ জন্মের সময়,

"মাওলিদ"অর্থঃ জন্মস্থান,

"মাওলুদ" অর্থঃ ছোট শিশু।

মোট কথা মীলাদ শব্দটি জন্মকাল বা জন্মদিন ব্যতীত অন্য কোন অর্থে ব্যবহৃত হয় না।সুতরাং মীলাদুন্নবী, মাওলেদুন্নবী ও মাওলুদুন্নবী শব্দগুলীর অর্থ হলো- হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জন্মদিন বা জন্মকাল।

অর্থাৎ আভিধানিক
বা শাব্দিক অর্থে
"মীলাদুন্নবী"বলতে হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উনার বিলাদত
শরীফকে বুঝানো হয়ে থাকে।
আর পারিভাষিক
বা ব্যবহারিক অর্থে
ﻣﻴﻼﺩ ﺍﻟﻨﺒﻰ
"মীলাদুন্নবী" বলতে (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার বিলাদত শরীফ
উপলক্ষে উনার ছানা-সিফাত বর্ণনা করা,
উনার প্রতি সালাত ও সালাম পাঠ করা,উনার
পুতঃপবিত্র
জীবনী মোবারকের
সামগ্রিক বিষয়
সম্পর্কে আলোচনা করাকে বুঝানো হয়।
আর সাইয়্যেদীল
আ’ইয়াদ, পবিত্র
ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলতে প্রাণপ্রিয়
নবীজি,হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার বিলাদত শরীফ
উনার জন্য খুশি প্রকাশ করা,শুকরিয়া আদায়
করাকে বোঝায়।এখন এ খুশি প্রকাশ করা বিভিন্ন রকম
হতে পারে।যে কোন
নেক আমলের মাধ্যমেই এ
খুশি প্রকাশ করা যেতে পারে।তবে সবচেয়ে উত্তম
হল হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উনার পবিত্র শান মোবারকে সালাত শরীফ,সালাম শরীফ পেশ
করা,জশনে জুলুস বের করা,মীলাদ শরীফ
পাঠ করা ইত্যাদি ইত্যাদি।

১২ই রবিউল আউয়াল শরীফে ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পরিবর্তে কেন সীরাতুন্নবী পালন
করা যাবে না?

পবিত্র ১২ রবিউল
আউয়াল শরীফ
যেহেতু হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার বিলাদত শরীফ
উনার সাথে সংশ্লিষ্ট
বিশেষ সম্মানিত
একটি দিন।তাই এই
পবিত্র দিনে ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
পালন করাই যুক্তিসংগত,
"সীরাতুন্নবী" (ﷺ) কখনো নয়।
কেননা, "সীরাতুন্নবী" যদি বলা হয়
‘সীরাত’ হচ্ছে চরিত্র
মোবারক,আচার-আচরণ, জীবন পদ্ধতি,জীবন যাপনের পন্থা,মাযহাব, তরীকা,অবস্থা,জীবনাচার, জীবনচরিত সুতরাং সীরাতুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শব্দের পারিভাষিক অর্থ হলো নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জীবনী বা জীবনচরিতকে বুঝায়,যেটা আল্লাহ
পাক-এর হাবীব হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার একটা সিফাত
বুঝানো হয়েছে সীরাতুন্নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
যখন কেউ চরিত্র
মোবারক সম্পর্কে আলোচনা করবে
তখন সেটা "সীরাতুন্নবী" হবে।যদি "সীরাতুন্নবী" বলা হয় তাহলে আল্লাহপাক-এর হাবীব হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার ছূরতন্নবী অর্থাৎ ছূরত মোবারক কেমন ছিলো?
আল্লাহপাকের
হাবীব হুজুরপাক
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উনার যে নূর মোবারক
ছিলো ‘নূরে হাবীবী’
তাহলে সেটার মাহফিল
করতে হবে আলাদাভাবে।
এভাবে কেউ সীরাতুন্নবী,
কেউ ছূরাতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ মিরাজুন্নবী, (ﷺ)
কেউ হিজরতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ জিহাদুন্নবী, (ﷺ)
কেউ রিসালাতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ রিহালাতুন্নবী, (ﷺ)
কেউ বিছালুন্নবী, (ﷺ)
কেউ নূরুন্নবী (ﷺ) -এর মাহফিল
করবে অর্থাৎ
প্রতিটি বিষয়
আলাদা আলাদা হয়ে যাবে
এবং আলাদা আলাদা নাম
দিয়ে আলোচনা করতে হবে।যেমন উনার যেহেতু জন্ম হয়েছে আগে,পরে ৬৩ বছরের জীবনচরিত। তাই ১২ই রবিউল আউয়ালে হুজুরপাকের বিলাদত বা জন্ম হয়েছে তাই "মীলাদুন্নবী" উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করা আল্লাহর হুকুম সুরা-ইউনূসের ৫৮ নং আয়াত তাঁর প্রমাণ, এ আয়াত থেকে "মীলাদুন্নবী" তথা খুশি উদযাপন করা কথা বলা হয়েছে,"সীরাতুন্নবী" নয়।
আর যেহেতু পবিত্র
দিবসটি বিলাদত শরীফ উনার সাথে সংশ্লিষ্ট, তাই
ঈদ-এ-মীলাদুন্নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ব্যতীত অপর কোন নামে সম্বোধন করা ঠিক হবে না।
এখানে উল্লেখ করতে চাই যে "মীলাদুন্নবী" একদিনের ঘটনা নয়,আল্লাহর সৃষ্টিতে যতদিন আছে সকল দিনেরই মূল হলেন নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
সুতরাং সকল দিনেই নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সৃষ্টির কারণে ধন্য।মোট কথা নবীজি (আলাইহিস সালাম) আগমন দিন, মাস, কিংবা বছরের সাথে সম্পর্কিত করা যাবে না।সব কিছুই উনার উসিলায় পয়দা হয়েছে।