অতএব ১২ রবিউল আউয়াল শরীফকে 'ওফাতুন্নবী' (নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত দিবস) ব্যক্তকারী রেওয়াত (বর্ণনা) মোটেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না । তাছাড়া, সেটা এ কথার উপযোগী নয় যে, দলীল হিসেবে গ্রহন বা পেশ করা যাবে ।
রেওয়াত নম্বর-২ এর সনদের মধ্যে একজন 'রাভী' (বর্ণনাকারী) সায়ফ ইবনে ওমর হলেন দুর্বল । অপর রাভী মুহাম্মদ ইবনে ওবায়দুল্লাহ আল আরযমী হলেন 'মাতরুক' (পরিত্যক্ত) ।
[সূত্রঃ তাক্বরীব আত-তাহযীবঃ ১৪২ ও ২০৩ পৃঃ, খোলাসাতুত তাযহীবঃ ১৬১ ও ৩৫০ পৃঃ, তাহযীব আল-কামাল কৃত আল-খাযরাজী ।]
আর রেওয়াত নং ৩ ও ৪ এর 'সনদ'ই পাওয়া যায় না । অবশ্য, শীর্ষস্থানীয় তাবেঈ ইবনে যুহরী, সুলায়মান ইবনে তারখান, সা'আদ ইবনে ইব্রহীম যুহরী প্রমুখ থেকে নির্ভরযোগ্য সনদসমূহ
সহকারে ১লা কিংবা ২রা রবিউল আউয়ালই ওফাতের তারিখ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে । মোটকথা, ১২ রবিউল আউয়ালকে ওফাত দিবস সাব্যস্ত করা না সাহাবা থেকে প্রমাণিত, না তাবঈন থেকে । কাজেই, পরবর্তীতে কিছু সংখ্যক
ইতিহাসবেত্তা কর্তৃক ১২ই রবিউল আউয়ালকে ওফাত-দিবস সাব্যস্ত করা কোন মতেই দুরস্ত (গ্রহণযোগ্য) হতে পারে না । এখানে গভীরভাবে চিন্তা করার বিষয় হচ্ছে যখন সাহাবা কেরাম
(যাঁরা হুযূরের ওফাত শরীফের চাক্ষুস সাক্ষী ছিলেন) এবং তাঁদের শাগরিদ তাবেঈগণ থেকে একথা প্রমাণিত নয়, তখন পরবর্তী ঐতিহাসিকগণ কিভাবে জানতে পারলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত শরীফ ১২ই রবিউল আউয়ালই হয়েছে?
এ কারণেই প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য দেওবন্দী ইতিহাসবেত্তা শিবলী নো'মানীও ১লা রবিউল আউয়ালকেই হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত দিবস সাব্যস্ত করেছেন ।
[সীরাতুন্নবী ২য় খণ্ডঃ ১৭০ পৃঃ]
আর মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর পুত্র শায়খ আবদুল্লাহ ৮ই রবিউল আউয়ালকে 'ওফাত দিবস' লিখেছেন ।
[সূত্রঃ মুখতাসার সীরাতুর রসূল ৯ পৃঃ]
'জ্যোতির্বিদ' ও বর্ষপঞ্জিকা নির্ণয় শাস্ত্র মতেও ১২ই রবিউল আউয়ালকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামের ওফাত দিবস সাব্যস্ত করা যায় না ।
(চলবে)