গায়েবানা জানাযা ও একটি মুখতাসার বিশ্লেষণঃ-
জামাত-শিবির, লামাযহাবী আর বি.এন.পি গং এখন নতুন একটা নিয়ম বের করছে। কিছু হলেই "গায়েবানা জানাযা" নামক একটি প্রথা তৈরি করেছে। ২০০৫-৬ এর দিকে যা করেছিল আওয়ামিলীগ। মানে মৃতের অনুপস্থিতিতে তার দেহের জানাযা পড়া। আসুন "গায়েবানা জানাযার" হাক্বীকত তালাশ করি।
প্রথমত আল্লাহর রাসুল সঃ জীবনে ১বার হাবশার বাদশা নাজাশীর মৃত্যুতে সাহাবীদের নিয়ে তার গায়েবানা জানাযা আদায় করেছেন।
[সহীহ বুখারী ১/১৯৭,৪৪৩,৪৪৬, হাঃ১১৮৮,১২৫৪,১২৬৩ সহীহ মুসলিম ১/৬৫৬ হাঃ৯৫২]
ঘটনার সারসংক্ষেপঃ-
বাদশা নাজাশীরর দেশে সে ই মাত্র একজন মুসলিম ছিল। এবং সে আবিসিনিয়ায় আগত মুসলিমদের সর্বাত্তক সহযোগিতা করতো। এবং সে আল্লাহর রাসুল কে মহব্বত করতো। তিনি মুসলমানদের অনেক সাহায্য করতেন যদিও তার রাজ্যে এক জন মুসলিমও ছিল না। উনি যেখানে মারা গিয়েছিলেন সেখানে উনার জানাজার নামায পড়ানোর এক জনও ছিল না। আর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট এটা কষ্টকর ছিল যে, এক জন মুসলিম যিনি অন্যান্য মুসলমানদের সাহায্য করতেন কিন্তু তার জানাজা হল না! তাই তিনি গায়েবানা জানাযার নামায পড়িয়েছিলেন। কিন্তু উনি (সাঃ) যখন পড়াচ্ছিলেন তখন তাঁর (সাঃ) চোখের পর্দা সড়ে গিয়েছিল এবং নাজাশী বাদশাহের লাশ সামনে দেখতে পাচ্ছিলেন। আর তাই গায়েবে জানাযা শুধুমাত্র উনার (সাঃ) জন্যই খাস ছিল। আর কারও জন্য কখনই নয়।
ঐ একমাত্র ঘটনার পর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বা কোন সাহাবী (রাঃ) বা তাবেয়ী বা তাবে তাবেয়ীন (রঃ) কোনদিন কোন মুসলিমের গায়েবানা জানাযা পড়েছেন বলে জানা যায় না।
[লামেউদ দুরারী ৪/৪৩২;ফত হুল ক্বদীর ১/৪৩২]
বহু সাহাবী (রাঃ) দূর দুরান্তে শহীদ হয়েছে কেউ মারা গেছে কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আর কারও গায়েবানা জানাযা পড়েন নাই। ঈমাম শাফেয়ী (রঃ) ছাড়া বাকি ৩ ইমাম (রঃ) এর বিরোধি ছিল। তবে শাফেয়ীদের এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে- দূর দুরান্ত মাইয়েত যার জানাযা পড়ানো হয় নাই তার জন্য ই এ জানাযা সবাই একবার ই আদায় করা যাবে
[যাদুল মা'আদ লিবনেল কাইয়ুম]
হানাফী, মালেকী ও হাম্বলীদের ঊলামায়েকেরামদের মতে জানাযার নামাযে মৃত ব্যাক্তির সামনে থাকা জরুরী নতুবা গায়েবানা জানাযা পড়া যাবেনা আর গায়েবানা জানাযা সুন্নাহ সম্মত নয়।
[বাহরুর রায়েক; ফতোয়ায়ে শামী; আহকামুল মাইয়েত; বেহেশতী জেওয়ার; যাদুল মা'আদ- বাবে সলাতুল জানায়েয; আল মাজমূ'-৫/২৫৩; আল মুগনী ২/৩৮৬; যারকানী ২/১০; ইলাউস সুনান ২/২৩৪; ফয়দুল বারী ২/৪৬৯; মুগনী মুহতাজ ১/১৬৫; কাশফুল কান্না ২/১২৬; শরহুছ ছগীর ১/৫৬৯]
মারেফুল কুরানে মুফতী শফী রাহ, ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ রাহ তার মাজমূয়ায়ে ফতোয়া আর ইমাম ইবনুর কাইয়ুম রাহ, তার যাদু মা'আদ এ লিখেছেনঃ
‘যেই রাসুলুল্লাহর আমল থেকে ১ বার আর যেভাবে প্রমানিত হয়েছে সেই আমল জীবনে ১ বার ঠিক সেভাবেই আদায় করা হচ্ছে সুন্নাহ। এদিকে খেয়াল করলে প্রচলিত গায়েবানা জানাযার নামাজের কোন ভিত্তি ই থাকে না।
জামাতী ও আহলে হাদীস গংদের প্রিয় ২ নেতাও এই মত পোষন করেছে।
১. মুফতী কাজী ইবরাহীম আর
২. শাহ ওয়ালিউল্লাহ সাহেব
আরেকজন আলেম হচ্ছেন ফুরফুরা পীর সাহেবের জামাতা শাইখ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাংগীর আল হানাফী হাফিজাহুল্লাহ গায়েবানা জানাযার ব্যপারে লিখেনঃ
"জীবনে সর্বদা(রাসুল) যা বর্জন করেছেন এই ১টি ঘটনায় তিনি তা করলেন..... বিষয়টি তার জন্য খাছ ছিল। আল্লাহ তা'লা নাজাসীকে মর্যাদা প্রদান করে তার মৃতদেহ রাসুলুল্লাহর চাক্ষুস করে দেন (যার ফলে তিনি গায়েবানা নয় মাইয়েত কে সামনে রেখেই) তিনি জানাযা আদায় করেন...... কিন্তু কোন অবস্থায় আমরা রাসুলুল্লাহর একদিনের কাজ কে আমাদের রীতি বানিয়ে নিতে পারিনা। তাহলে তার(রাসুলের) সব সময়ের রীতি বর্জন করব। এভাবেই আমরা বিদ'আতে নিপতিত হব।"
[এহ ইয়াউস সুনানের ৫ম অধ্যায়ঃসুন্নত বনা খেলাফে সুন্নত পৃঃ৩৭৫]
ইবনে তাইমিয়া বলেনঃ
“নাজাশী যেহেতু কাফেরদের এলাকায় মারা গেছে আর তার জানাযা পড়ানো হয় নাই তাই রাসুল্লাহ তার জানাযা পড়িয়েছেন...... মনে রাখবেন রাসূলুল্লাহ থেকে গায়েবানা জানাযা নামাজ পড়া ও পরিত্যাগ করা ২ টাই প্রমানিত তবে প্রত্যেকটির ক্ষেত্র ভিন্ন”।
[যাদুল মা'আদ ১/৫০১]
ইবনুল কাইয়ুম ও তার যাদুল মা'আদের ১/৫০০ যার নামাজ অধ্যাকে অনুবাদ করেছে জামাত-শিবিরের নেতা ডঃআব্দুশ শহীদ নাসীন ও কুস্টিয়া ইসলামী ইউনিভার্সিটির ডঃ যাকারিয়া "আল্লাহর রসুল কিভাবে নামাজ পড়তেন" অনূদিত কিতাবের পৃঃ ১৯৮ তে ইবনুল কাইয়ুমের গায়েবানা জানাযার হুকুম উল্লেখ্য আছে যার সার সংক্ষেপ হচ্ছে- গায়েবানা জানাযা পড়া হাদীস ও সুন্নাহ সম্মত নয়"।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান দাঃবা রচিত ‘কাফন- দাফনের মাসয়ালা-মাসায়েল’ কিতাবে জানাযা ও গায়েবানা জানাযার হুকুম বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
মূল সারাংশ হল, গায়েবানা জানাযার নামাজের প্রধান শর্তই হলো লাশের উপস্থিত থাকা লাগবে, নতুবা তা হবে না। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় প্রত্যেকটা লাশই তাদের আত্বীয় স্বজনরা খুঁজে পায় এবং তারাই ব্যক্তিগতভাবে জানাযার নামাযের ব্যবস্থা করে। আর যে সব ক্ষেত্রে লাশই পাওয়া যায় না সে সব ক্ষেত্রে তো গায়েবে জানাযার প্রশ্নই আসে না। তাই গায়েবে জানাযার কোনো বিন্দুমাত্র দরকার হয় না। আল্লাহ তা’আলা আমাদের বিষয়টি বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন! সুম্মা আমীন!!
.
— with Md Kadir.জামাত-শিবির, লামাযহাবী আর বি.এন.পি গং এখন নতুন একটা নিয়ম বের করছে। কিছু হলেই "গায়েবানা জানাযা" নামক একটি প্রথা তৈরি করেছে। ২০০৫-৬ এর দিকে যা করেছিল আওয়ামিলীগ। মানে মৃতের অনুপস্থিতিতে তার দেহের জানাযা পড়া। আসুন "গায়েবানা জানাযার" হাক্বীকত তালাশ করি।
প্রথমত আল্লাহর রাসুল সঃ জীবনে ১বার হাবশার বাদশা নাজাশীর মৃত্যুতে সাহাবীদের নিয়ে তার গায়েবানা জানাযা আদায় করেছেন।
[সহীহ বুখারী ১/১৯৭,৪৪৩,৪৪৬, হাঃ১১৮৮,১২৫৪,১২৬৩ সহীহ মুসলিম ১/৬৫৬ হাঃ৯৫২]
ঘটনার সারসংক্ষেপঃ-
বাদশা নাজাশীরর দেশে সে ই মাত্র একজন মুসলিম ছিল। এবং সে আবিসিনিয়ায় আগত মুসলিমদের সর্বাত্তক সহযোগিতা করতো। এবং সে আল্লাহর রাসুল কে মহব্বত করতো। তিনি মুসলমানদের অনেক সাহায্য করতেন যদিও তার রাজ্যে এক জন মুসলিমও ছিল না। উনি যেখানে মারা গিয়েছিলেন সেখানে উনার জানাজার নামায পড়ানোর এক জনও ছিল না। আর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট এটা কষ্টকর ছিল যে, এক জন মুসলিম যিনি অন্যান্য মুসলমানদের সাহায্য করতেন কিন্তু তার জানাজা হল না! তাই তিনি গায়েবানা জানাযার নামায পড়িয়েছিলেন। কিন্তু উনি (সাঃ) যখন পড়াচ্ছিলেন তখন তাঁর (সাঃ) চোখের পর্দা সড়ে গিয়েছিল এবং নাজাশী বাদশাহের লাশ সামনে দেখতে পাচ্ছিলেন। আর তাই গায়েবে জানাযা শুধুমাত্র উনার (সাঃ) জন্যই খাস ছিল। আর কারও জন্য কখনই নয়।
ঐ একমাত্র ঘটনার পর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বা কোন সাহাবী (রাঃ) বা তাবেয়ী বা তাবে তাবেয়ীন (রঃ) কোনদিন কোন মুসলিমের গায়েবানা জানাযা পড়েছেন বলে জানা যায় না।
[লামেউদ দুরারী ৪/৪৩২;ফত হুল ক্বদীর ১/৪৩২]
বহু সাহাবী (রাঃ) দূর দুরান্তে শহীদ হয়েছে কেউ মারা গেছে কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আর কারও গায়েবানা জানাযা পড়েন নাই। ঈমাম শাফেয়ী (রঃ) ছাড়া বাকি ৩ ইমাম (রঃ) এর বিরোধি ছিল। তবে শাফেয়ীদের এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে- দূর দুরান্ত মাইয়েত যার জানাযা পড়ানো হয় নাই তার জন্য ই এ জানাযা সবাই একবার ই আদায় করা যাবে
[যাদুল মা'আদ লিবনেল কাইয়ুম]
হানাফী, মালেকী ও হাম্বলীদের ঊলামায়েকেরামদের মতে জানাযার নামাযে মৃত ব্যাক্তির সামনে থাকা জরুরী নতুবা গায়েবানা জানাযা পড়া যাবেনা আর গায়েবানা জানাযা সুন্নাহ সম্মত নয়।
[বাহরুর রায়েক; ফতোয়ায়ে শামী; আহকামুল মাইয়েত; বেহেশতী জেওয়ার; যাদুল মা'আদ- বাবে সলাতুল জানায়েয; আল মাজমূ'-৫/২৫৩; আল মুগনী ২/৩৮৬; যারকানী ২/১০; ইলাউস সুনান ২/২৩৪; ফয়দুল বারী ২/৪৬৯; মুগনী মুহতাজ ১/১৬৫; কাশফুল কান্না ২/১২৬; শরহুছ ছগীর ১/৫৬৯]
মারেফুল কুরানে মুফতী শফী রাহ, ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ রাহ তার মাজমূয়ায়ে ফতোয়া আর ইমাম ইবনুর কাইয়ুম রাহ, তার যাদু মা'আদ এ লিখেছেনঃ
‘যেই রাসুলুল্লাহর আমল থেকে ১ বার আর যেভাবে প্রমানিত হয়েছে সেই আমল জীবনে ১ বার ঠিক সেভাবেই আদায় করা হচ্ছে সুন্নাহ। এদিকে খেয়াল করলে প্রচলিত গায়েবানা জানাযার নামাজের কোন ভিত্তি ই থাকে না।
জামাতী ও আহলে হাদীস গংদের প্রিয় ২ নেতাও এই মত পোষন করেছে।
১. মুফতী কাজী ইবরাহীম আর
২. শাহ ওয়ালিউল্লাহ সাহেব
আরেকজন আলেম হচ্ছেন ফুরফুরা পীর সাহেবের জামাতা শাইখ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাংগীর আল হানাফী হাফিজাহুল্লাহ গায়েবানা জানাযার ব্যপারে লিখেনঃ
"জীবনে সর্বদা(রাসুল) যা বর্জন করেছেন এই ১টি ঘটনায় তিনি তা করলেন..... বিষয়টি তার জন্য খাছ ছিল। আল্লাহ তা'লা নাজাসীকে মর্যাদা প্রদান করে তার মৃতদেহ রাসুলুল্লাহর চাক্ষুস করে দেন (যার ফলে তিনি গায়েবানা নয় মাইয়েত কে সামনে রেখেই) তিনি জানাযা আদায় করেন...... কিন্তু কোন অবস্থায় আমরা রাসুলুল্লাহর একদিনের কাজ কে আমাদের রীতি বানিয়ে নিতে পারিনা। তাহলে তার(রাসুলের) সব সময়ের রীতি বর্জন করব। এভাবেই আমরা বিদ'আতে নিপতিত হব।"
[এহ ইয়াউস সুনানের ৫ম অধ্যায়ঃসুন্নত বনা খেলাফে সুন্নত পৃঃ৩৭৫]
ইবনে তাইমিয়া বলেনঃ
“নাজাশী যেহেতু কাফেরদের এলাকায় মারা গেছে আর তার জানাযা পড়ানো হয় নাই তাই রাসুল্লাহ তার জানাযা পড়িয়েছেন...... মনে রাখবেন রাসূলুল্লাহ থেকে গায়েবানা জানাযা নামাজ পড়া ও পরিত্যাগ করা ২ টাই প্রমানিত তবে প্রত্যেকটির ক্ষেত্র ভিন্ন”।
[যাদুল মা'আদ ১/৫০১]
ইবনুল কাইয়ুম ও তার যাদুল মা'আদের ১/৫০০ যার নামাজ অধ্যাকে অনুবাদ করেছে জামাত-শিবিরের নেতা ডঃআব্দুশ শহীদ নাসীন ও কুস্টিয়া ইসলামী ইউনিভার্সিটির ডঃ যাকারিয়া "আল্লাহর রসুল কিভাবে নামাজ পড়তেন" অনূদিত কিতাবের পৃঃ ১৯৮ তে ইবনুল কাইয়ুমের গায়েবানা জানাযার হুকুম উল্লেখ্য আছে যার সার সংক্ষেপ হচ্ছে- গায়েবানা জানাযা পড়া হাদীস ও সুন্নাহ সম্মত নয়"।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান দাঃবা রচিত ‘কাফন- দাফনের মাসয়ালা-মাসায়েল’ কিতাবে জানাযা ও গায়েবানা জানাযার হুকুম বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
মূল সারাংশ হল, গায়েবানা জানাযার নামাজের প্রধান শর্তই হলো লাশের উপস্থিত থাকা লাগবে, নতুবা তা হবে না। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় প্রত্যেকটা লাশই তাদের আত্বীয় স্বজনরা খুঁজে পায় এবং তারাই ব্যক্তিগতভাবে জানাযার নামাযের ব্যবস্থা করে। আর যে সব ক্ষেত্রে লাশই পাওয়া যায় না সে সব ক্ষেত্রে তো গায়েবে জানাযার প্রশ্নই আসে না। তাই গায়েবে জানাযার কোনো বিন্দুমাত্র দরকার হয় না। আল্লাহ তা’আলা আমাদের বিষয়টি বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন! সুম্মা আমীন!!
.