স্বয়ং আল্লাহ পাক নিজেই উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা সবকিছুর উপর বুলন্দ করে দিয়েছেন | আল্লাহ পাক এরশাদ মুবারক করেন -- " হে আমার হাবীব ! আমি আপনার যিকিরকে বুলন্দ করে দিয়েছি !" ( সূরা আলাম নাশরাহ ৪) এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিকির/আলোচনা/মর্যাদাকে কতটুকু বুলন্দ বা উঁচু করেছেন ?? উত্তর হচ্ছে, আল্লাহ পাক হচ্ছেন অসীম | তাই তিনি উনার হবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে মর্যাদা দিয়েছেন সেটাও অসীম ! সুবহানাল্লাহ্ !! কিন্তু দেওবন্দী/কওমী/তাবলীগী/ জামাতি/ লা মাযহাবী/ সালাফী সহ অন্যান্য বাতিল ফির্কার লোকেরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা বুঝতে চরম ভাবে ব্যার্থ হওয়ার করনে উনাকে নিজেদের মত মানুষ বলে থাকে ! নাউযুবিল্লাহ !! তারা তাদের এই বক্তব্যের সপক্ষে দলীল দিয়ে থাকে -- قل انما انا بشر مشلكم يوحي الي অর্থ : হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি বলুন আমি তোমাদের মেছাল একজন বাশার বা মানুষ , তবে আমার প্রতি ওহী নাযিল হয় !" ( সূরা কাহাফ ১১০) উক্ত এই আয়াত শরীফের মর্ম বুঝতে চরম ভাবে ব্যার্থ হওয়ার কারনে বাতিল পন্থিরা নিজেদের মত মানুষ বলে থাকে | মূলত উক্ত আয়াত শরীফ থেকেই কিন্তু প্রমান হয় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কারো মত নন ! আসুন আমরা উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যা করি | উক্ত আয়াত শরীফে بشر مثلكم একটা শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে | উক্ত " মেছাল" শব্দটা দৃষ্টান্তের জন্য ব্যাবহার হয় | যেটা কবি বলেছেন-- محمد بشر ليس كالبشر ياقوت حجر ليس كالحجر অর্থ - হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাশার তবে তিনি অন্য বাশারের মত নন | যেমন ইয়াকুত পাথর, অন্য পাথরের মত নয় |" সর্বপ্রথম আমাদের বুঝতে হবে, " বাশার" মানে কি ! بشر " বাশার" মানে হচ্ছে একটা প্রজাতির নাম | যেমন উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় "পাখি" | এই পাখি বলতে আমরা কি বুঝি ? পাখি হচ্ছে এক প্রজাতির প্রানী যা দুই ডানায় ভর করে আকাশে উড়ে থাকে | তার এই আকাশে উড়া এবং আনুষঙ্গিক বৈশিষ্ঠের কারনে পাখ বলা হয়ে থাকে | তদ্রুপ " বাশার" বা "মানুষ" হচ্ছে একটা প্রজাতির নাম | যারা দুই হাত, দুই চোখ, ব্যতিক্রম বুদ্ধিমত্তা, এবং শরীয়তের আদেশ পালনের জন্য বাধ্য এবং আদিষ্ট প্রজাতিই হচ্ছে " বাশার" বা " মানুষ" | এখন আল্লাহ পাক হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই মানব জাতিতে বা প্রেরন করেছেন | আর সেকারনেই মানুষ হয়েছে আশরাফুল মাখলুকাত ! হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু "বাশার" বা " মানুষ" প্রজাতির মাঝের তাশরিফ এনেছেন সেকারনে উনার বাহ্যিক আকৃতিও মানুষ প্রজাতির হবে এটাই স্বাভাবিক | আর সেটাই আয়াত শরীফে বলা হয়েছে | بشر مثلكم বা মানব প্রজাতির যে আকৃতি, মানুষের মাঝে আশার কারনে উনারও সে আকৃতি | আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বক্তব্যও হচ্ছে, আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত যত নবী-রসূল তাশরীফ এনেছেন সবাই বাশার ! এ প্রসঙ্গে আক্বায়িদের কিতাবে উল্লেখ আছে - الرسول انسان بعثه الله تعالي الي الخلق لتبليغ الاحكام অর্থ- শরীয়তের পরিভাষায় রসূল এমন একজন বাশার কে বলা হয়, যাকে আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির জন্য পাঠিয়েছেন !" দলীল- √ শরহে আক্বাইদে নসফী কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তিনি আমাদের মত মানুষ | প্রথমেই একটা আরবী কবিতা উল্লেখ করেছিলাম , যেখানে বলা ছিলে - " ইয়াকুত" পাথর , কিন্তু অন্য পাথরের মত নয় | প্রজাতিগত ভাবে ইয়াকুত পাথর হলেও কেউ কিন্তু রেল লাইনের পাথরের সাথে ইয়াকুত পাথরের তুলনা করার সাহসও পাবে না | কারন ইয়াকুত হচ্ছে অত্যন্ত মূল্যবান ! তদ্রুপ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও বাশার তবে অন্য বাশারের মত নন! একথাটা কিন্তু আমার নয়, এটা হাদীস শরীফেই বর্নিত হয়েছে ! আসুন হাদীস শরীফের দলীল গ্রহণ করি ! عن عبدالله بن عمرو رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم لست كاحد منكم অর্থ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন , আমি তোমাদের কারো মত নই !" দলীল- √ বুখারী শরীফ- কিতাবুস সিয়াম- ১ম খন্ড ২৬৩ পৃষ্ঠা - হাদীস ১৮৪০ √ মুসলিম শরীফ ১৫৮৭ √ আবু দাউদ শরীফ/১৩৭ عن عبد الله بن عمر رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم اني لست مثلكم অর্থ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনুরুপ নই |" দলীল- √ বুখারী শরীফ - কিতাবুস সিয়াম - ১ খন্ড ২৬৩ পৃষ্ঠ √ ফতহুল বারী ৪/১৬৪ عن ابي سعيد رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم اني لست كهيتكم অর্থ : হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি ছুরতান বা আকৃতিগত ভাবেও তোমাদের মত নই |" দলীল-- √ বুখারী ১/২৬৩ √ ফতহুল বারী ৪/১৬৫ عن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم ليكم مثلي অর্থ- হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে রয়েছো ? দলীল- √ বুখারী শরীফ ১/২৬৩ √ ফতহুল বারী ৪/১৬৭ উক্ত সহীহ হাদীস শরীফ থেকেই প্রমান হয়ে গেল, নবীজী নিজেই ফয়সালা করে দিলেন- তোমাদের কেউ আমার মত নয়, আমিও তোমাদের মত নই | সুবহানাল্লাহ্ !! এখন কেউ যদি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজের মত বলে সে উক্ত হাদীস শরীফ অস্বীকার করার অপরাধে কাফের হয়ে যাবে | এখন আসুন, আমরা দেখি এ ব্যাপারে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম, তাবেয়িন, ইমাম-মুস্তাহিদ গন কি বলেছেন ! খলীফাতুল মুসলিমিন, বাবুল ইলম ওয়াল হিকাম হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-- لم ارقبله و لا بعده مثله অর্থ : আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্বে এবং পরে উনার মত আর কাউকে দেখিনি !" দলীল-- √ তিরমীযি শরীফ - ২য় খন্ড ২০৫ পৃষ্ঠা- হাদীস নম্বার ৩৬৩৭ বিখ্যাত ইমাম, ইমামে আযম,ইমামুল আইয়িম্মা, তাবেয়ী, হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-- والله ياسين مثلك لم يكن في العالمين وحق من انباك অর্থ - আল্লাহ পাক উনার কসম ! হে ইয়াসিন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সারা জাহানে আপনার কোন মেছাল নাই !" দলীল- √ কাসীদায়ে নু'মান লি ইমাম আবু হানীফা -৩৭ নং পংক্তি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তুলনাতো দূরের কথা পূর্ববর্তী ইমামগন উনাদের বয়োজৈষ্ঠ ইমামদের প্রসংশা করে কি বলেন দেখেন ! ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে লক্ষ্য করে বলেন-- اشهد انه ليس في الدني مثلك অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, পৃথিবীতে আপনার মেছাল বা আপনার মত আরেকজন নাই ! দলীল- √ মীযানুল আখবার ৪৮ পৃষ্ঠা দেখুন, ছাহাবায়ে কিরাম,তাবেয়িন , ইমাম মুস্তাহিদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ওয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা সবাই বললেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন মেছাল নাই, উনার অনূরুপ কেউ নাই ! আর ওহাবী সম্প্রদায় এগুলা অস্বীকার করে নিজেদের মত বলে প্রচার করছে | এথেকে কি বুঝা যায় ? বুঝা যায়, ওহাবী/দেওবন্দীরা মুসলমান নয় ! মূলত নবী রসূল আলাহিমুস সালাম উনাদেরকে নিজেদের মত মানুষ বলাটা কাফের-মুশরিকদের রীতি | কারন কাফেররাই নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নিজেদের মত মানুষ মনে করতে | এর বহু প্রমাণ কুরআন শরীফে রয়েছে | কতিপয় উদাহরণ দেয়া হলো !-- হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার জাতির সর্দারেরা উনার রেসালতকে অস্বীকার করে নিজেদের অনুসারীদের বলতো, فقال الملؤا الذين كفروا من قومه ماهذا الابشر مثلكم অর্থ : তাঁর জাতির সর্দারেরা তাদের অনুসারীদের বলল, " এ লোকটি তোমাদের মতই একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু নয় !" দলীল- √ সূরা মু'মিনুন ২৪ আয়াত শরীফ সামুদ জাতির লোকেরা হযরত সালেহ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেছিলো -- قالوا انما انت من المسحرين ما انت الا بشر مثلنا অর্থ : তোমাকে যাদু করা হয়েছে | তুমি আমাদের মত মানুষ ছাড়া আর কি ? দলীল- √ সূরা শুয়ারা ১৫৩-১৫৪ ইনতাকিয়া শহরের অধিবাসীরাও ঈসা আলাইহিস সালাম উনার প্রতিনিধিদের বলেছিলো - قالوا ما انتم الا بشر مثلنا অর্থ - তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ !" দলীল- √ সূরা ইয়াসিন ১৫ ফেরাউন ও তার অনুসারীরা মুসা আলাইহিস সালাম ও হারুন আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেছিলো -- فقالوا انؤمن لبشرين مثلنا অর্থ : আমরা কি আমাদের মত দু'জন মানুষের উপর ঈমান আনব ? দলীল- √ সূরা মু'মিনুন ৪৭ শুধু তাই নয় হাবীবুল্লাহ, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে কাফেররা বলতো-- واسروا النجوي الذين ظلموا هل هذا الابشر متلكم অর্থ : এ জালেমরা পরস্পর এবলে কানাঘুষা করে যে, এ লোকটি ( নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মত মানুষ ছাড়া আর কি ?" দলীল- √ সূরা আম্বিয়া ৩ উপরোক্ত দলীল দ্বারা প্রমানিত হলো, এক মাত্র কাফের- মুশরিক রাই তাদের প্রতি প্রেরিত নবী- রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নিজেদের মত মানুষ মনে করতো | তারই ধারাবাহিকতায় মুসলমান নামধারী কাফেররা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মত মানুষ মনে করে থাকে | বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন এবং লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন -->>> Noor E Julfikar > the open swordn like MAZDA - TAC - OMAN. |
হে আল্লাহ তুমি আমাদের সবাইকে সহিহ ভাবে কোরআন, হাদিস,ইজমা, কিয়াস,শরিয়ত, তরিকত মেনে চলার তাওফিক দান করুন-আমিন
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন ! আল্লাহ পাক উনার পরেরই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্থান|
সার্চ করুন
ক্যাটাগরি
- অজানা তথ্য (2)
- অলৌকিক (1)
- আযান (1)
- আসহাবে কাহফ (1)
- ইমাম (1)
- ইলমে গায়েবে (7)
- ইসলামের হুকুম (1)
- ঈদে মীলাদুন্নবী (সাঃ) (2)
- উসিলা (1)
- এয়াযীদ (1)
- কবর (1)
- কোরআন (2)
- খাজা গরীবে নেওয়াজ (2)
- জানাযা নামাজ (1)
- জান্নাত (3)
- জাহান্নাম (2)
- ডাক্তার (1)
- তাবলীগ (1)
- তাবিজ ও ঝাড়ফুঁক (1)
- তাসাউফের অর্থ ও তাৎপর্য (1)
- দাজ্জাল (1)
- নাতে (সঃ) (1)
- নামাজ (8)
- নারীর পর্দা (1)
- নূরনবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (11)
- বায়াত (5)
- বেলায়াত ও কুরবাত (1)
- ভিডিও (1)
- মহাকবি শেখ সাদীর উপদেশ (1)
- মা - বাবা (1)
- মাজার (3)
- মাযহাব (1)
- মৃত্যু (2)
- মেরাজুন্নাবী (2)
- রওজা (2)
- রমজান (1)
- রসুলে পাক(দঃ)এর মুজেযা (1)
- লা-মাযহাবী (2)
- শবে বরাত (1)
- শবে-মেরাজ (1)
- সাহাবা (1)
- সৈয়দ আহমদ বেরেলভী (1)
- হাজের নাজের (1)
- হাদীস (4)
- হাসর (2)