NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

সোনালী যোগের গল্প

Photo: ★★সোনালী যোগের গল্প★★
♣না পড়লে মিস করবেন♣

বায়তুল্লায় বসে তিন ব্যক্তি মতবিরোধ করতে লাগলো যে, এই সময়ে সবচেয়ে বেশি উদার কে? একজন বললোঃ আবদুল্লাহ বিন জাফর (রা), অপরজন বললোঃ কায়েস বিন সা'দ (রা), তৃতীয়জন বললোঃ না না আরাবা আওসী (রা)। তাদের কথাবার্তা দীর্ঘ হতে লাগলো এবং তাদের প্রত্যেকেই স্ব-স্ব দাবীর পক্ষে দলীলও পেশ করতে লাগলো। এতে করে তাদের কথার আওয়াজও উচ্চ হতে লাগলো, ফলে কিছু মানুষ তাদের পাশে জমা হয়ে গেলো। তাদের মধ্যে একজন বললোঃ ভাইগণ, তোমরা কেন উচ্চবাচ্য করছো? তোমরা এমন কর যে, প্রত্যেকে তার দাবীদারের নিকট গিয়ে কিছু চাও, আর যা পাও তা নিয়ে এসে এখানে পেশ কর, তাতেই প্রমাণিত হয়ে যাবে যে, কে বেশি উদার।

আবদুল্লাহ বিন জাফরের দাবীদার তার ঘরে গেল এবং বললো যে, হে আল্লাহর রাসূলের ভাতিজা! আমি মুসাফির মানুষ। আমার রাস্তা খরচ শেষ হয়ে গেছে, আমাকে কিছু সাহায্য করুন।
আবদুল্লাহ বিন জাফর তখন ঘোড়ায় চড়ে কোথাও যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখন তিনি ঘোড়া থেকে নেমে গিয়ে বললেনঃ ঘোড়ার পাদানীতে পা রাখ এবং তাতে আরোহণ কর, এখন এটি তোমার, এর মধ্যে একটি ব্যাগও আছে তার মধ্যে কিছু জিনিস আছে তাও তোমার এবং হ্যাঁ তাতে একটি তলোয়ারও আছে তাকে সাধারণ মনে করো না। এটি ছিল আলী (রাঃ) এর তলোয়ার।

কায়েস বিন সা'দ (রাঃ) এর দাবীদার যখন তার ঘরে গেল তখন তিনি শুয়ে ছিলেন। ক্রীতদাসী বললোঃ তুমি কি জন্য এসেছ?
সে বললোঃ আমি মুসাফির, আমার রাস্তা খরচ শেষ হয়ে গেছে।
ক্রীতদাসী বললোঃ তোমার এ সামান্য বিষয়ের জন্য তাঁকে উঠানো ঠিক হবে না। তুমি এ ব্যাগটি নাও, এতে সাতশত দিনার আছে, এ মুহূর্তে কায়েসের ঘরে এটুকুই আছে। আর বাড়ীর সামনে উট বাধা আছে, তোমার পছন্দমত একটি উট নিয়ে যাও এবং তোমার খেদমতের জন্য একজন ক্রীতদাসও নিয়ে যাও। 
কিছুক্ষণ পর কায়েসও ঘুম থেকে উঠে বসলো, ক্রীতদাসী তাঁকে ঘটনাটি বর্ণনা করলো। সে বললোঃ আমাকে উঠাতে সেটাই ভালো ছিল, আর আমি নিজে তার প্রয়োজন মিটাতাম। এখন তো বুঝতেছি না যে যা তুমি তাকে দিয়েছ তা তার প্রয়োজন মত ছিল কিনা। যাই হোক তুমি যে এই ভালো কাজ করলে এর বিনিময়ে আমি তোমাকে আযাদ করে দিলাম।

এদিকে আরাবা আওসী (রাঃ) এর দাবীদার তাঁর নিকট গিয়ে পৌঁছল, তখন নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল। আরাবা (রাঃ) বৃদ্ধ ছিলেন, চোখও অন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই তিনি দুই ক্রীতদাসের কাঁধে ভর করে আস্তে আস্তে মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন এ ব্যাক্তি গিয়ে বললোঃ হে আরাবা! আমার কথা কি শুনবেন?
তিনি বললেনঃ বল কি কথা?
লোকটি বললোঃ আমি মুসাফির, আমার রাস্তা খরচ শেষ হয়ে গেছে। আরাবা স্বীয় উভয় হাত ক্রীতদাসদের কাঁধ থেকে উঠিয়ে নিয়ে বাম হাত ডান হাতের উপর মজবুতভাবে রেখে বললোঃ আরাবা তার সমস্ত ধন-সম্পদ খরচ করে ফেলেছে, এখন শুধু এ দুই ক্রীতদাসই বাকী, তুমি এ দুজনকে নিয়ে যাও। এখন থেকে তারা তোমার।
লোকটি বললোঃ জনাব! এ কী করে হয়? এরা তো আপনার জন্য খুবই প্রয়োজন। আমি তাদেরকে নিব না। আরাবা (রাঃ) বললেনঃ শোন, এখন থেকে এরা তোমার, তুমি যদি না নাও তাহলে আমি তাদেরকে আযাদ করে দিব। তুমি যদি চাও তাহলে আযাদ করে দাও আর যদি চাও নিবে তাহলে নিয়ে যাও। একথা বলে তিনি সামনে গিয়ে দেয়ালের পাশে গিয়ে তা ধরে ধরে মসজিদের দিকে চলতে লাগলেন।
ঐ ব্যক্তি তখন তাদেরকে সাথে নিয়ে স্বীয় সাথীদের নিকট পৌঁছল। তিনজন পুনরায় মিলিত হল, প্রত্যেকে তার প্রাপ্তির কথা বর্ণনা করলো, এবং তাদের তিনজনেরই প্রশংসা করলো। নিঃসন্দেহে এরা তিনজনেই যথেষ্ঠ উদার এবং আল্লাহর পথে খরচকারী। তবে সবচেয়ে বেশী দানশীল কে এর ফায়সালা হলঃ আরাবা আওসী (রাঃ), কেননা তিনি নিজের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও সমস্ত মাল দান করে দিয়েছেন।

❥❥❥ আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১১/৩৫৬-৩৫৭ পৃষ্ঠা

♣না পড়লে মিস করবেন♣

বায়তুল্লায় বসে তিন ব্যক্তি মতবিরোধ করতে লাগলো যে, এই সময়ে সবচেয়ে বেশি উদার কে? একজন বললোঃ আবদুল্লাহ বিন জাফর (রা), অপরজন বললোঃ কায়েস বিন সা'দ (রা), তৃতীয়জন বললোঃ না না আরাবা আওসী (রা)। তাদের কথাবার্তা দীর্ঘ হতে লাগলো এবং তাদের প্রত্যেকেই স্ব-স্ব দাবীর পক্ষে দলীলও পেশ করতে লাগলো। এতে করে তাদের কথার আওয়াজও উচ্চ হতে লাগলো, ফলে কিছু মানুষ তাদের পাশে জমা হয়ে গেলো। তাদের মধ্যে একজন বললোঃ ভাইগণ, তোমরা কেন উচ্চবাচ্য করছো? তোমরা এমন কর যে, প্রত্যেকে তার দাবীদারের নিকট গিয়ে কিছু চাও, আর যা পাও তা নিয়ে এসে এখানে পেশ কর, তাতেই প্রমাণিত হয়ে যাবে যে, কে বেশি উদার।

আবদুল্লাহ বিন জাফরের দাবীদার তার ঘরে গেল এবং বললো যে, হে আল্লাহর রাসূলের ভাতিজা! আমি মুসাফির মানুষ। আমার রাস্তা খরচ শেষ হয়ে গেছে, আমাকে কিছু সাহায্য করুন।
আবদুল্লাহ বিন জাফর তখন ঘোড়ায় চড়ে কোথাও যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখন তিনি ঘোড়া থেকে নেমে গিয়ে বললেনঃ ঘোড়ার পাদানীতে পা রাখ এবং তাতে আরোহণ কর, এখন এটি তোমার, এর মধ্যে একটি ব্যাগও আছে তার মধ্যে কিছু জিনিস আছে তাও তোমার এবং হ্যাঁ তাতে একটি তলোয়ারও আছে তাকে সাধারণ মনে করো না। এটি ছিল আলী (রাঃ) এর তলোয়ার।

কায়েস বিন সা'দ (রাঃ) এর দাবীদার যখন তার ঘরে গেল তখন তিনি শুয়ে ছিলেন। ক্রীতদাসী বললোঃ তুমি কি জন্য এসেছ?
সে বললোঃ আমি মুসাফির, আমার রাস্তা খরচ শেষ হয়ে গেছে।
ক্রীতদাসী বললোঃ তোমার এ সামান্য বিষয়ের জন্য তাঁকে উঠানো ঠিক হবে না। তুমি এ ব্যাগটি নাও, এতে সাতশত দিনার আছে, এ মুহূর্তে কায়েসের ঘরে এটুকুই আছে। আর বাড়ীর সামনে উট বাধা আছে, তোমার পছন্দমত একটি উট নিয়ে যাও এবং তোমার খেদমতের জন্য একজন ক্রীতদাসও নিয়ে যাও।
কিছুক্ষণ পর কায়েসও ঘুম থেকে উঠে বসলো, ক্রীতদাসী তাঁকে ঘটনাটি বর্ণনা করলো। সে বললোঃ আমাকে উঠাতে সেটাই ভালো ছিল, আর আমি নিজে তার প্রয়োজন মিটাতাম। এখন তো বুঝতেছি না যে যা তুমি তাকে দিয়েছ তা তার প্রয়োজন মত ছিল কিনা। যাই হোক তুমি যে এই ভালো কাজ করলে এর বিনিময়ে আমি তোমাকে আযাদ করে দিলাম।

এদিকে আরাবা আওসী (রাঃ) এর দাবীদার তাঁর নিকট গিয়ে পৌঁছল, তখন নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল। আরাবা (রাঃ) বৃদ্ধ ছিলেন, চোখও অন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই তিনি দুই ক্রীতদাসের কাঁধে ভর করে আস্তে আস্তে মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন এ ব্যাক্তি গিয়ে বললোঃ হে আরাবা! আমার কথা কি শুনবেন?
তিনি বললেনঃ বল কি কথা?
লোকটি বললোঃ আমি মুসাফির, আমার রাস্তা খরচ শেষ হয়ে গেছে। আরাবা স্বীয় উভয় হাত ক্রীতদাসদের কাঁধ থেকে উঠিয়ে নিয়ে বাম হাত ডান হাতের উপর মজবুতভাবে রেখে বললোঃ আরাবা তার সমস্ত ধন-সম্পদ খরচ করে ফেলেছে, এখন শুধু এ দুই ক্রীতদাসই বাকী, তুমি এ দুজনকে নিয়ে যাও। এখন থেকে তারা তোমার।
লোকটি বললোঃ জনাব! এ কী করে হয়? এরা তো আপনার জন্য খুবই প্রয়োজন। আমি তাদেরকে নিব না। আরাবা (রাঃ) বললেনঃ শোন, এখন থেকে এরা তোমার, তুমি যদি না নাও তাহলে আমি তাদেরকে আযাদ করে দিব। তুমি যদি চাও তাহলে আযাদ করে দাও আর যদি চাও নিবে তাহলে নিয়ে যাও। একথা বলে তিনি সামনে গিয়ে দেয়ালের পাশে গিয়ে তা ধরে ধরে মসজিদের দিকে চলতে লাগলেন।
ঐ ব্যক্তি তখন তাদেরকে সাথে নিয়ে স্বীয় সাথীদের নিকট পৌঁছল। তিনজন পুনরায় মিলিত হল, প্রত্যেকে তার প্রাপ্তির কথা বর্ণনা করলো, এবং তাদের তিনজনেরই প্রশংসা করলো। নিঃসন্দেহে এরা তিনজনেই যথেষ্ঠ উদার এবং আল্লাহর পথে খরচকারী। তবে সবচেয়ে বেশী দানশীল কে এর ফায়সালা হলঃ আরাবা আওসী (রাঃ), কেননা তিনি নিজের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও সমস্ত মাল দান করে দিয়েছেন।

❥❥❥ আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১১/৩৫৬-৩৫৭ পৃষ্ঠা