NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

91. হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নাকি মাটির সৃষ্টি মানুষ।


াউযুবিল্লাহ মিন যালিক।

তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য কুরআন শরীফ থেকে কিছু আয়াত শরীফ ভুল ভাবে উপস্থাপন করে।
যেসব আয়াত শরীফে মানুষ মাটির সৃষ্টি ইত্যাদি কথা বলা হয়েছে।
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে কুরআন শরীফে ১৪ খানা আয়াত শরীফ আছে যেখানে "মানুষ মাটির সৃষ্টি" এরকম কথা বলা হয়েছে। কিন্তু উক্ত ১৪ খানা আয়াত শরীফ এর তাফসীর খুলে দেখা যায় "মানুষ মাটির সৃষ্টি" বলতে শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে, আর দুনিয়ার কোন মানুষকেই মাটির সৃষ্টি বলা হয় নাই।
ওহাবীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে আপনাদের জন্য উক্ত ১৪ খানা আয়াত শরীফ এবং এর তফসীর ধারাবাহিক ভাবে উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ !!



মাটির মাটির তৈরি এর বিশ্লেষণ -

৩ নং আয়াত শরীফ :

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন-

ولقد خلقنا الانسان من سلالة من طين

অর্থ: আমি মানুষ মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।"

[ সূরা মু'মিনুন ১২ নং আয়াত শরীফ]

উক্ত আয়াত শরীফ এর তাফসীরে নির্ভরযোগ্য এবং সর্বজনমান্য মুফাসসিরানে কিরামগন কি বলেছেন দেখুন-->>

→ বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা আবু আবদুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আহমদ আনছারী আল কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا الانسان) الانسان هنا ادم عليه اصلاة والسلام قاله وغيره

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) এখানে "ইনসান" বা মানুষ দ্বারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে। হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং উন্যান্য মুফাসসিরগন এরূপই বলেছেন।"

দলীল-
√ তাফসীরে কুরতুবী ৬ষ্ঠ খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা।

→ ইমামুল হুদা, আল্লামা ক্বাজী ছানাউল্লাহ পানীপথি রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا) الجنس (الانسان) او ادم عليه السلام (سلالة من طين)

অর্থ: নিঃসন্দেহে আমি মানুষের জিনস অথবা আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।"

দলীল-
√ তাফসীরে মাযহারী ৬ষ্ঠ খন্ড ৩৬৭ পৃষ্ঠা।

→ বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা আবু লাইছ সামারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا الانسان مم سلالة من طين) يعني ادم عليه السلام قال الكلبي ومقاتل

অর্থ: ( নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে (মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি)। ক্বলবী ও মাকাতিল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের অভিমত এটাই।"

দলীল-
√ তাফসীরে সামারকান্দী ২য় খন্ড ৪০৯ পৃষ্ঠা।

→ ইমামুল মুফসসিরিন, আল্লামা আলাউদ্দীন আলী মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহিম বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا الانسان)... المراد من الانسان هو ادم عليه السلام

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ আদম আলাইহিস উনাকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।"

দলীল-
√ তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ৩০১ পৃষ্ঠা।

→ ইমামুল মুফাসসিরিন, আল্লামা ইমাম বাগবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

(ولقد خلقنا الانسان) اي ادم عليه السلام

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেছি (মাটির সারাংশ থেকে)।

দলীল-
√ তাফসীরে বাগবী ৩য় খন্ড ৩০১ পৃষ্ঠা।

→ উক্ত আয়াত শরীফ সম্পর্কে তাফসীরের কিতাবে আরো উল্লেখ আছে-

(ولقد خلقنا الانسام من سلالة من طين) اور مقرر پيدا كيا همنے ادم كو جو وه سب ادميوی كا باپ هے اچہی کسے اچہی گوند هي هوءي سے

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম যিনি সকল মানুষের পিতা, উনাকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।"

দলীল-
√ তাফসীরে মুদ্বিহুল কুরআন ৩৫১ পৃষ্ঠা।

সূতরাং "সূরা মু'মিনুন ১২ নং আয়াত শরীফ" এবং উক্ত আয়াত শরীফ এর ব্যাখ্যা এটাই প্রমান করে যে, সকল মানুষের পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনিই সরাসরি মাটি দ্বারা সৃষ্টি। অন্যকোন মানুষ নয়। যে কারনে মুফাসসিরিনে কিরামগন উক্ত আয়াত শরীফে "ইনসান" দ্বারা আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝিয়েছেন।

====================

৪ নং আয়াত শরীফ :

আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

واذ قال ربك للملءكة اني خالق بشرا من طين

অর্থ: যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগনকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করবো।'"

[সূরা ছোয়াদ ৭১ নং আয়াত শরীফ]

মূলত উক্ত আয়াত শরীফ এর তাফসীরে সকল তাফসীরের কিতাবেই এসেছে "মাটির মানুষ" হচ্ছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম।

→এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন, আল্লামা আবু লাইছ সমারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

(اني خالق بشرا من طين) يعني ادم عليه السلام

অর্থ: (নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টি করবো মাটি থেকে বাশার) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে।"

দলীল-
√ তাফসীরে সামারকান্দী ৩য় খন্ড ১৪১ পৃষ্ঠা।

→ ইনামুল মুফাসসিরিন, আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহিম বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(اني خالق بشرا من طين) يعني ادم عليه السلام

অর্থ: নিশ্চয়ই আমি মাটি থেকে বাশার অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেছি।"

এছাড়া উক্ত আয়াত শরীফে "খালিক্বুম বাশারাম মিন ত্বীন" দ্বারা পৃথিবীর সকল তাফসীরের কিতাবে শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই মাটির সৃষ্ট মানুষ বুঝানো হয়েছে।

দলীল -
√ মুদ্বিহুল কুরআন ৪৮১ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে ক্বাদেরী ২য় খন্ড ৩২৩ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে বাগবী।

√ তাফসীরে মাযহারী।

√ তাফসীরে রুহুল বয়ান।

√ তাফসীরে রুহুল মায়ানী।

√ তাফসীরে কবীর।

√ তাফসীরে কুরতুবী।

ইত্যাদি তাফসীরের কিতাব সহ দুনিয়ার সকল আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের তাফসীরের কিতাব দ্রষ্টব্য।

সূতরাং, পবিত্র কুরআন শরীফের "সূরা মু'মিনুন ১২ নং আয়াত শরীফ" এবং "সূরা ছোয়াদ ৭১ নং আয়াত শরীফ" উনার তাফসীরে জগৎ বিখ্যাত সকল তাফসীরর কিতাব থেকেই আমরা জানতে পারলাম উক্ত আয়াত শরীফ দ্বয়ে "মানুষ মাটির সৃষ্টি" বলতে শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে, পৃথিবীর আর কোন মানুষকে বুঝানো হয় নাই।

[পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় থাকুন]

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন
এবং লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন -->>>

Noor E Julfikar > the open sword