হাদিসটি এইÑ
كل بدعة ضلالة وكل ضلالة سبيلها الى النار
‘‘কুল্লু বেদাতুন দালালাতুন ওয়া কুল্লু দালালাতুন সাবিলুহা ইলান্নার।”
“সমস্ত বেদাত গোমরাহী আর সব গোমরাহীর গন্তব্য হল নরক।” এর অর্থ হল, যে কোনো নতুন কাজ গোমরাহীর হলেই তা গোমরাহী বলে গণ্য হবে। অন্যথায় যে কোনো নতুন কাজকে গোমরাহী বলে আখ্যায়িত করা হলে, যেসব হাদিসে নতুন কাজকে উৎসাহিত করা হয়েছে সে হাদিসের কী জবাব দিবে? যথা হাদিসÑ
من سن فى الاسلام سنة بها فعمل بها بعده كتب له مثل اجر من عمل بها ولاينقص من اجرهم بشئ -
‘‘মান সুন্নাহ ফিল ইসলামী সুন্নাতু বিহা ফায়ামালা বিহা বায়াদাহু কিতাবুলাহু মিসলু আজ্রি মিন আমালা বিহা ওয়ালা ইয়ানকুদু মিন উজরাহুম বি শাইয়্যিন।’’
অর্থাৎ “কেউ যদি ইসলামে কোনো ভালো নিয়মনীতি চালু করে, অতঃপর তা অনুসরণ করা হয়, তাহলে সে উক্ত নিয়মনীতির অনুসারীদের সমপরিমাণ পুণ্য পাবে কিয়ামত পর্যন্ত। তবে তা অনুসারীদের পাওয়া থেকে কাটা হবে না।” (মুসলিম শরীফ)। আল্লাহর আপন ভাণ্ডার থেকে উক্ত নিয়মনীতি চালু কর্তাকে এটা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, উক্ত হাদিসটি বদান্যতা এবং এহসানের মৌলিকত্ব এবং মর্যাদার দলিল। অতএব এহসান সূত্রে উদ্ভাবিত বদান্যতা এবং ফরজ, ওয়াজেব, সুন্নত ও মোস্তাহাবের মতো বিশেষ ধরনের কার্যাদি সবই বদান্যতা এবং এহসান। বরং এহসান ও কল্যাণ তাতে মৌলিকভাবে যুক্ত। অতএব এহসান থেকে এহসান তথা কল্যাণ থেকে কল্যাণ কিয়ামত পর্যন্ত বহাল ও চালু থাকবে। অপরদিকে খারাপ ও মন্দ কাজ এর প্রতিদ্বন্দ্বী যা তেলাপোকার মতো আচড়ায়, এগুলো মূল বস্তুর প্রতিদ্বন্দ্বী এবং অন্ধকার। এজন্য এহসানকে বাতুল প্রমাণ করতে হলে এর গ্রহণযোগ্যতার অকাট্য দলিল প্রয়োজন। আর এহসান তথা বদান্যতামূলক কাজের জন্য কোনো দলিল প্রয়োজন নেই। কারণ তা নিজে ভালো এবং উত্তম। এর বাস্তবায়ন সর্বদা উত্তম। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একে হারাম বলে ফেকাহবিদদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ক্ষতি এড়ানো। উদাহরণস্বরূপ সমকামিতা। এতে বড় রকমের দুর্ঘটনার আশঙ্কা বিদ্যমান। এখানে অপরিষ্কার ও অপবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে।
তবে সুদের ব্যাপারে কোনো কোনো ফেকাহবিদ যে চানা, মটর ইত্যাদিকে সোনা, রূপা, আটা, গম, খুরমা ও লবণ ইত্যাদির সাথে তুলনা করেছেন, তা অনুমানের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এতে বড় রকমের ক্ষতি রয়েছে। এজন্য ‘দূররে মোক্তার’ গ্রন্থে ফেকাহবিদদের সে মতকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারণ এক জাতের বস্তু দ্বারা অন্য জাতের বস্তু কি বদল হতে পারে? উদাহরণস্বরূপ দু টাকা দামের এক থান কাপড়ের বদলে কেউ কি দশ টাকা দামের একথান কাপড় দেবে? দেবে না। বরং হাদিসে যে ছয়টি অসম বিনিময়কে হারাম করা হয়েছে সে ক্ষেত্রেও নীতিগত ব্যাখ্যায় সাধারণভাবে এহসান বা পারস্পরিক কল্যাণ বিবেচিত হয়। এতে সাধারণভাবে বস্তুর লেনদেনের হারাম প্রমাণ হয় না। যেমন বিশটাকার এক ভরি সোনার বদলে কেউ আশি টাকা দামের এক ভরি সোনা দিতে রাজি হবে? অবশ্যই হবে না। কারণ এ ক্ষেত্রে কেবল ওজনে সমান হলে হবে না মূল্য সমান হতে হবে। এবার প্রকৃত কল্যাণের প্রতি লক্ষ করোÑ কোনো বস্তুর মূল্য নির্ধারণ ও বিনিময়ের ক্ষেত্রে তার গুণাগুণ, মর্যাদা ও উপকারিতাই বিচার্য বিষয়। এ জাতীয় সমমানের বস্তুগুলোই কেবল সমজাতীয় বলে গণ্য হবে অন্যথায় গুণে মানে সমান না হলে, একই জাতের হলেও তাদেরকে সমজাতীয় ধরা হবে না। তাকে অন্য বস্তুর উপর নির্ভর করতে হবে। তা না হলে ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যথায় যেসব অঞ্চলে সোনা দিয়ে সোনা এবং রূপা দিয়ে রূপা বিনিময় হয়, সেসব অঞ্চলে বিনিময় বা বেচাকেনায় তার মূল্য-মানের প্রতি লক্ষ রাখা একান্ত প্রয়োজন, কিন্তু ওজনের প্রতি নয়। পণ্যের মূল্য ও মান তত্ত্বের প্রতি গুরুত্ব প্রদানের দিকেই ইশারা করে হাদিসটিতে বলা হয়েছে স্বর্ণের বদলে স্বর্ণ। এজন্য অবৈধ লেনদেন থেকে বাঁচতে হলে সোনা রূপা বা যে কোনো বস্তু বা পণ্যের বিনিময়ের ক্ষেত্রে তাদের উপযোগ এবং মূল্যমান বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। অন্যথায় ভালো বা উত্তম স্বর্ণের বদলে নিম্নমানের স্বর্ণের বিনিময় বা আশঙ্কা রয়েছে যা বৈধ নয়।
كل بدعة ضلالة وكل ضلالة سبيلها الى النار
‘‘কুল্লু বেদাতুন দালালাতুন ওয়া কুল্লু দালালাতুন সাবিলুহা ইলান্নার।”
“সমস্ত বেদাত গোমরাহী আর সব গোমরাহীর গন্তব্য হল নরক।” এর অর্থ হল, যে কোনো নতুন কাজ গোমরাহীর হলেই তা গোমরাহী বলে গণ্য হবে। অন্যথায় যে কোনো নতুন কাজকে গোমরাহী বলে আখ্যায়িত করা হলে, যেসব হাদিসে নতুন কাজকে উৎসাহিত করা হয়েছে সে হাদিসের কী জবাব দিবে? যথা হাদিসÑ
من سن فى الاسلام سنة بها فعمل بها بعده كتب له مثل اجر من عمل بها ولاينقص من اجرهم بشئ -
‘‘মান সুন্নাহ ফিল ইসলামী সুন্নাতু বিহা ফায়ামালা বিহা বায়াদাহু কিতাবুলাহু মিসলু আজ্রি মিন আমালা বিহা ওয়ালা ইয়ানকুদু মিন উজরাহুম বি শাইয়্যিন।’’
অর্থাৎ “কেউ যদি ইসলামে কোনো ভালো নিয়মনীতি চালু করে, অতঃপর তা অনুসরণ করা হয়, তাহলে সে উক্ত নিয়মনীতির অনুসারীদের সমপরিমাণ পুণ্য পাবে কিয়ামত পর্যন্ত। তবে তা অনুসারীদের পাওয়া থেকে কাটা হবে না।” (মুসলিম শরীফ)। আল্লাহর আপন ভাণ্ডার থেকে উক্ত নিয়মনীতি চালু কর্তাকে এটা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, উক্ত হাদিসটি বদান্যতা এবং এহসানের মৌলিকত্ব এবং মর্যাদার দলিল। অতএব এহসান সূত্রে উদ্ভাবিত বদান্যতা এবং ফরজ, ওয়াজেব, সুন্নত ও মোস্তাহাবের মতো বিশেষ ধরনের কার্যাদি সবই বদান্যতা এবং এহসান। বরং এহসান ও কল্যাণ তাতে মৌলিকভাবে যুক্ত। অতএব এহসান থেকে এহসান তথা কল্যাণ থেকে কল্যাণ কিয়ামত পর্যন্ত বহাল ও চালু থাকবে। অপরদিকে খারাপ ও মন্দ কাজ এর প্রতিদ্বন্দ্বী যা তেলাপোকার মতো আচড়ায়, এগুলো মূল বস্তুর প্রতিদ্বন্দ্বী এবং অন্ধকার। এজন্য এহসানকে বাতুল প্রমাণ করতে হলে এর গ্রহণযোগ্যতার অকাট্য দলিল প্রয়োজন। আর এহসান তথা বদান্যতামূলক কাজের জন্য কোনো দলিল প্রয়োজন নেই। কারণ তা নিজে ভালো এবং উত্তম। এর বাস্তবায়ন সর্বদা উত্তম। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একে হারাম বলে ফেকাহবিদদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ক্ষতি এড়ানো। উদাহরণস্বরূপ সমকামিতা। এতে বড় রকমের দুর্ঘটনার আশঙ্কা বিদ্যমান। এখানে অপরিষ্কার ও অপবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে।
তবে সুদের ব্যাপারে কোনো কোনো ফেকাহবিদ যে চানা, মটর ইত্যাদিকে সোনা, রূপা, আটা, গম, খুরমা ও লবণ ইত্যাদির সাথে তুলনা করেছেন, তা অনুমানের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এতে বড় রকমের ক্ষতি রয়েছে। এজন্য ‘দূররে মোক্তার’ গ্রন্থে ফেকাহবিদদের সে মতকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারণ এক জাতের বস্তু দ্বারা অন্য জাতের বস্তু কি বদল হতে পারে? উদাহরণস্বরূপ দু টাকা দামের এক থান কাপড়ের বদলে কেউ কি দশ টাকা দামের একথান কাপড় দেবে? দেবে না। বরং হাদিসে যে ছয়টি অসম বিনিময়কে হারাম করা হয়েছে সে ক্ষেত্রেও নীতিগত ব্যাখ্যায় সাধারণভাবে এহসান বা পারস্পরিক কল্যাণ বিবেচিত হয়। এতে সাধারণভাবে বস্তুর লেনদেনের হারাম প্রমাণ হয় না। যেমন বিশটাকার এক ভরি সোনার বদলে কেউ আশি টাকা দামের এক ভরি সোনা দিতে রাজি হবে? অবশ্যই হবে না। কারণ এ ক্ষেত্রে কেবল ওজনে সমান হলে হবে না মূল্য সমান হতে হবে। এবার প্রকৃত কল্যাণের প্রতি লক্ষ করোÑ কোনো বস্তুর মূল্য নির্ধারণ ও বিনিময়ের ক্ষেত্রে তার গুণাগুণ, মর্যাদা ও উপকারিতাই বিচার্য বিষয়। এ জাতীয় সমমানের বস্তুগুলোই কেবল সমজাতীয় বলে গণ্য হবে অন্যথায় গুণে মানে সমান না হলে, একই জাতের হলেও তাদেরকে সমজাতীয় ধরা হবে না। তাকে অন্য বস্তুর উপর নির্ভর করতে হবে। তা না হলে ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যথায় যেসব অঞ্চলে সোনা দিয়ে সোনা এবং রূপা দিয়ে রূপা বিনিময় হয়, সেসব অঞ্চলে বিনিময় বা বেচাকেনায় তার মূল্য-মানের প্রতি লক্ষ রাখা একান্ত প্রয়োজন, কিন্তু ওজনের প্রতি নয়। পণ্যের মূল্য ও মান তত্ত্বের প্রতি গুরুত্ব প্রদানের দিকেই ইশারা করে হাদিসটিতে বলা হয়েছে স্বর্ণের বদলে স্বর্ণ। এজন্য অবৈধ লেনদেন থেকে বাঁচতে হলে সোনা রূপা বা যে কোনো বস্তু বা পণ্যের বিনিময়ের ক্ষেত্রে তাদের উপযোগ এবং মূল্যমান বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। অন্যথায় ভালো বা উত্তম স্বর্ণের বদলে নিম্নমানের স্বর্ণের বিনিময় বা আশঙ্কা রয়েছে যা বৈধ নয়।