NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

মহানবীর মাযহাব কি?


মহানবী (দ:)সরাসরি আল্লাহর হকুম আহকাম পালন করতেন,সাহাবীরা ৪ ইমামের মাধ্যমে এবং সরাসরি মহানবী কে অনসুরন করতেন।আর আমাদের জন্য রাসুলের মাধ্যমে আল্লাহর হকুম আহকাম পালন, রাসুলের আনুগত্য করা ফরজ,ফকিহ আলেমদের অনুসরন ওয়াজিব .

সাহাবীদের মাযহাব কি?
সাহাবায়ে কিরাম যারা সরাসরি রাসূল সাঃ এর কাছে ছিলেন তাদের জন্য রাসূল সাঃ এর ব্যাখ্যা অনুসরণ করা ছিল আবশ্যক। এছাড়া কারো ব্যাখ্যা নয়। কিন্তু যেই সকল সাহাবারা ছিলেন নবীজী সাঃ থেকে দূরে তারা সেই স্থানের বিজ্ঞ সাহাবীর মাযহাব তথা মত অনুসরণ করতেন। যেমন ইয়ামেনে হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ এর মত তথা মাযহাবের অনুসরণ হত। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ কে অনুসরণ করতেন ইরাকের মানুষ। রাসূল সাঃ যখন মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ কে ইয়ামানে পাঠাতে মনস্ত করলেন তখন মুয়াজ রাঃ কে জিজ্ঞেস করলেন-“যখন তোমার কাছে বিচারের ভার ন্যস্ত হবে তখন তুমি কিভাবে ফায়সাল করবে?” তখন তিনি বললেন-“আমি ফায়সালা করব কিতাবুল্লাহ দ্বারা”। রাসূল সাঃ বললেন-“যদি কিতাবুল্লাহ এ না পাও?” তিনি বললেন-“তাহলে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাত দ্বারা ফায়সালা করব”। রাসূল সাঃ বললেন-“যদি রাসূলুল্লাহ এর সুন্নাতে না পাও?” তখন তিনি বললেন-“তাহলে আমি ইজতিহাদ তথা উদ্ভাবন করার চেষ্টা করব”। তখন রাসূল সাঃ তাঁর বুকে চাপড় মেরে বললেন-“যাবতীয় প্রশংসা ঐ আল্লাহর যিনি তাঁর রাসূলের প্রতিনিধিকে সেই তৌফিক দিয়েছেন যে ব্যাপারে তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট”। {সূনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৩৫৯৪, সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-১৩২৭, সুনানে দারেমী, হাদিস নং-১৬৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২০৬১}
এই হাদীসে লক্ষ্য করুন-রাসূল সাঃ এর জীবদ্দশায় হযরত মুয়াজ রাঃ বলছেন যে, আমি কুরআন সুন্নাহ এ না পেলে নিজ থেকে ইজতিহাদ করব, আল্লাহর নবী বললেন-“আল হামদুলিল্লাহ”। আর ইয়ামেনের লোকদের উপর হযরত মুয়াজের মত তথা মাযহাব অনুসরণ যে আবশ্যক এটাও কিন্তু হাদীস দ্বারা



☑ *সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর যুগে চারজন ইমাম ছিলেন।
হাফেয ইবনে কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা লিখেছে যে সে লিখে, “মক্কা মোযাযযমায় ছিলেন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:), মদীনা মোনাওয়ারায় হযরত যায়দ বিন সাবেত (রা:), বসরা নগরীতে হযরত আনাস বিন মালেক (রা:) এবং কুফা শহরে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)। তাঁদের বেসালের (পরলোকে আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়ার) পরে তাবেঈনদের মধ্যেও ছিলেন বিখ্যাত চার ইমাম। এরা হলেন মদীনা মোনাওয়ারায় হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ:), মক্কা মোয়াযযমায় হযরত আতা ইবনে রাব’আ (রহ:), ইয়েমেনে হযরত তাউস্ (রহ:) এবং কুফায় হযরত ইবরাহীম (রহ:)। এছাড়াও অনেক ইমাম ছিলেন, তবে ওই চারজনই ছিলেন সর্বাধিক প্রসিদ্ধ।”
[হাফেয ইবনে কাইয়্যেম কৃত ‘আলা’ম-উল-মোওয়াকিয়ীন’, ১০ পৃষ্ঠা]
☑ প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পারস্যবাসীর এক ভাগ্যবান ব্যক্তির সুসংবাদ দিয়েছেন।
হযরত আবূ হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণনা করেছেন। মহানবী (দ:)ইরশাদ করেন-
-যদি দ্বীন সপ্তর্ষিমণ্ডলস্থ সুরাইয়া সেতারার কাছে গচ্ছিত থাকে তখনও পারস্যবাসীর এক ব্যাক্তি তা অর্জন করে নেবে।৩
মুহাদ্দিসগণ বলেছেন এ হাদীসটি ইমাম আ’যম আবূ হানিফা (রা:) এর উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে। এতে কোনো আলেম দ্বিমত পোষণ করেননি। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী শাফেয়ী (রহ:) “তাবয়িযূস সহিফা” কিতাবে এবং ইমাম ইবনে হাজার মক্কী (রহ:) “আল খায়রাতুল হিসান” এর মধ্যে “ইমাম আ’যম আবূ হানিফার (রা:) এর ব্যাপারে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুসংবাদ” শিরোণামে অধ্যায় রচনা করেছেন।
@০৩. মুসলিম শরীফ : আস সহীহ, কিতাবু ফাযায়িলিস সাহাবা, باب فضل فارس ৪/১৯৭২, হাদিস : ২৫৪৬।
☑হানাফী মাযহাব গঠন:
-------ইমাম আবু হানিফা (র ছিলেন তাবয়ী,তিনি সরাসরি সাহাবীদের দেখেছেন,তিনি সরাসিরি সাহাবীদের থেকে
হাদিস রেওয়ায়েত করেন,তিনি ইসলামের ৪ মাযহাবের এক মাযহাবের ইমাম ছিলেন।
ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত একটি উচ্চাঙ্গের ফিকহ-গবেষণা-বোর্ডকে 'ফিকহ-মজলিস' শিরোনামে উল্লেখ করা হল । এই মজলিস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা অনেকেই করেছেন । ড. মুস্তফা সিবায়ী (রহ.)-এর 'আসসুন্নাতু ওয়া মাকানাতুহা ফিত্ তাশরীইল ইসলামী', আবু যাহরা (রহ.)কৃত 'আবু হানীফা' ও ড. মুস্তফাকৃত 'আলআইম্মাতুল আরবায়া' গ্রন্থে এ বিষয়ে আলোচনা রয়েছে, যার সারকথা এই যে, ইমাম আবু হানীফা (রহ.) ফিকহ-সংকলনে তার ব্যক্তিগত জ্ঞান ও প্রজ্ঞার উপর নির্ভর করেননি; বরং চল্লিশজন শীর্ষস্থানীয় ফকীহ ও মুহাদ্দিসের সমন্বয়ে একটি মজলিস গঠন করেছিলেন, যেখানে এক এক মাসআলার উপর দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনা হত । সবশেষে যে সিদ্ধান্ত দলীলের আলোকে স্থির হত তা লিপিবদ্ধ করা হত । কখনো এক মাসআলাতে তিন দিন পর্যন্ত আলোচনা অব্যাহত থাকত । সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে এতটাই সাবধানতা অবলম্বন করা হত যে, মজলিসের একজন সদস্যও অনুপস্থিত থাকলে তাঁর অপেক্ষা করা হত এবং তাঁর মতামত উপস্থাপিত হওয়ার পরই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হত । সে সময়ের বড় বড় মুফাসসির, মুহাদ্দিস ও ফকীহ এই ফিকহ-মজলিসের সদস্য ছিলেন ।
তাই একথা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গেই বলা যায় যে, যে ফিকহ পরিপূর্ণভাবে কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াসের উপর ভিত্তিশীল এবং যা ইসলামের স্বর্ণযুগে যুগশ্রেষ্ঠ মনীষীদের তত্ত্বাবধানে সংকলিত হয়েছে এরপর আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা দান করেছেন তার স্থায়ীত্ব ও উপযোগিতা প্রশ্নাতীত এবং তা পরবর্তী যুগের লোকদের স্বীকৃতি ও সমর্থনের মুখাপেক্ষী নয় । অতএব কিছু মানুষের অস্বীকৃতি ও বিরোধীতা এর গ্রহণযোগ্যতাকে কিছুমাত্র হ্রাস করবে না ।
সুত্রঃ ইবনে কাছীর,আর বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১০ খন্ড,* আবু যাহরা, আবু হানীফা, দারুল ফিকরিল আরাবী, পৃ, 213; আস-সিবায়ী, আস-সুন্নাত ওয়া মাকানাতুহা ...., আল-মাকতাবুল ইসলামী, পৃ, 427; ড. মুসতফা, আল-আইম্মাতুল আরাবাআ, দারুল কুতুবিল মিসরিয়া, পৃ, 65