NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

সহীহ হাদীসকে জাল হাদীস বানানোর ভয়ংকর ষড়যন্ত্র-

বাতিল ক্লিনার's photo.
____________________________
নামধারী আহলে হাদীসের লিডার মুজাফফর বিন মুহসিন লিখেছেন, যে সালাত মিসওয়াক করে আদায় করা হয়, সেই সালাতে মিসওয়াক করা বিহীন
সালাত থেকে ৭০গুণ বেশী নেকী হয়। একথাটি জাল। এর কোন ভিত্তি নেই। দেখুন, জাল হাদীসের কবলে রাসুলুল্লাহ (সা) এর সালাত/৩১
___________________________
জবাবঃ
প্রথমেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি একটি সতর্কবাণী- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা আমার উপর মিথ্যাচার করোনা। কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর মিথ্যাচার করে সে যেন জাহান্নামে প্রবেশ করে।
(সহীহ আল বুখারী-১০৬ )
এবার মূল জবাবঃ
_________
হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত এ হাদীসটি বিভিন্ন সনদে এসেছে।
ﺍﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﺨﻄﻴﺐ ﺍﻟﺒﻐﺪﺍﺩﻱ ﻋَﻦ ﺍﺑْﻦ ﻟَﻬِﻴﻌَﺔ ﻋَﻦ ( ﺃﺑﻲ )
ﺍﻟْﺄﺳﻮﺩ ، ﻋَﻦ ﻋُﺮْﻭَﺓ ، ﻋَﻦ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔ ، ﻋَﻦ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲ - ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳﻠﻢ - ﻗَﺎﻝَ : « ﺻﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺃﺛﺮ ﺳﻮﺍﻙ
ﺃﻓﻀﻞ ﻣﻦ ﺳﺒﻌﻴﻦ ﺻﻼﺓ ﺑﻐﻴﺮ ﺳﻮﺍﻙ » .
হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন, যে সালাত মিসওয়াক করে আদায় করা হয়, সেই সালাত মিসওয়াক করা বিহীন সালাত থেকে ৭০গুণ বেশী উত্তম। এখানে রয়েছেন-
১/ইমাম খতীব বাগদাদী
২/ইবনু লাহি’আহ
৩/ আবুল আসওয়াদ
৩/উরওয়াহ বিন যুবাইর (রা) ইবনুল মুলকিন বলেছেন, হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন হাফিয আবু বাকর আল খাতীব ইবনু লাহী’আহ এর সুত্রে।
রেফারেন্সঃ আল বাদরুল মুনীর-২/১৭
আবার এ হাদিসটি আলী বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দিল্লাহ এর সুত্রে ও এসেছে-
) ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﻌﺪﻝ
ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺃﺣﻤﺪ ﺍﻟﻤﻘﺮﺉ
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺭﻭﺡ ﺑﻦ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻋﻔﻴﺮ ﺑﻪ .
এখানে বর্ণনাকারী রয়েছেন আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মাদ এবং রাওহ বিন ফারাজ এবং সায়ীদ বিন উফাইর।
রেফারেন্সঃ আল মুত্তাফাকু ওয়াল মুতাফাররাক-৫৭৬
এ হাদীসের বর্ণনাকারী গণ সকলেই নির্ভরযোগ্য।
১/ ইবনু লাহি’আহঃ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি সত্যবাদী, নির্ভরযোগ্য, উত্তম চরিত্রবান।
রেফারেন্সঃ তারীখু বাগদাদ-৬৫২৭
২/ আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদঃ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য।
রেফারেন্সঃ তারীখু বাগদাদ-৬৪৮৩
৩/ রাওহ বিন ফারাজ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য।
ইমাম কিনদী বলেন, তিনি অধিক নির্ভরযোগ্য ছিলেন।
রেফারেন্সঃ তাকরীবুত তাহযীব- ১৯৬৭
তাহযীবুল কামাল- ২৩৪১ (১৯৩৭ )
৪/ সায়ীদ বিন উফাইর ইবনু আদী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য।
আবু হাতিম বলেন, তিনি সত্যবাদী।
রেফারেন্সঃ সিয়ারু আ’লামিন নুবালা- আত তাবাকাতুস সানিয়াহ আশারা
৫/ আবুল আসওয়াদ ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি একজন তাবেয়ী এবং নির্ভরযোগ্য।
রেফারেন্সঃ সিয়ারু আ’লামিন নুবালা-আত তাবাকাতুর রাবি’আহ।
৬/ আলী বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দিল্লাহ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি
সত্যবাদী। রেফারেন্সঃ
সিয়ারু আ’লামিন নুবালা- আত তাবাকাতুস সানিয়াহ ওয়াল ইশরূন
বিঃদ্রঃ
ইবনু লাহি’আহ এর জীবনে একটি ঘটনা ঘটেছিল। তার কিতাবাদি পুড়ে
গিয়েছিল এজন্য মুহাদ্দিসগণ বলেন, ঘটনাটি ঘটার আগে যারা তার নিকট
থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, সেগুলো সহীহ। এবং ঘটনাটির পর যারা তার নিকট থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাদের ঐ বর্ণনাগুলো দুর্বল।
আমাদের আলোচ্য হাদিসটি সায়ীদ বিন উফাইর (রাহ) ইবনু লাহি’আহ থেকে কিতাবাদি পুড়ে যাবার আগেই বর্ণনা করেছিলেন। এমনটাই বলেছেন, ইমাম ইবনু সায়্যিদিন নাস (রাহ)। সুতারাং হাদীসটি
সহীহ।
রেফারেন্সঃ আন নাফখুশ শাযি ফী শারহি জামিইত তিরমিযি- ৮০৪-২/৭৯৯
একই অর্থের হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) থেকে।
ﻓﻘﺪ ﺃﺧﺮﺟﻪُ ﺃَﺑُﻮ ﻧﻌﻴﻢ ﻋَﻦ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﺣﺒَﺎﻥ ، ﻋَﻦ ﺃﺑﻲ
ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻋَﺎﺻِﻢ ، ﻋَﻦ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺑﻜﺮ
ﺍﻟْﻤﻘﺪﻣِﻲ ، ﻋَﻦ ﻳﺰِﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ، ﺛَﻨَﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ
ﺃﺑﻲ ﺍﻟْﺤَﻮْﺭَﺍﺀ ﺃﻧَّﻪ ﺳﻤﻊ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺟُﺒَﻴﺮ ﻋَﻦ ﺍﺑْﻦ
ﻋَﺒَّﺎﺱ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﻟِﺄَﻥ ﺃُﺻَﻠِّﻲ ( ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴﻦ ) ﺑِﺴِﻮَﺍﻙٍ
ﺃَﺣَﺐُّ ﺇَﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺃﻥْ ﺃُﺻَﻠِّﻲ (ﺳَﺒْﻌِﻴﻦ ) ﺭَﻛْﻌَﺔ ﺑِﻐَﻴﺮِ ﺳِﻮَﺍﻙٍ »
হযরত ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, মেসওয়াক বিহীন ৭০ রাকাত সালাত আদায় করা থেকে
মেসওয়াক করে দু রাকাত সালাত আদায় করা আমার নিকট অধিক প্রিয়। ইমাম ছাখাওয়ী (রাহ) বলেন, ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত এ হাদীসটির সনদ ভাল। অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ। ইমাম মুনযিরী
(রাহ) ও একই কথা বলেছেন তার আত তারগীব ওয়াত তারহীব নামক গ্রন্থে। ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ও এটাকে সমর্থন করেছেন।
রেফারেন্সঃ আল মাকাসিদুল হাসানাহ-২/৪২৪
সনদ পর্যালোচনা-
১/মুহাম্মাদ বিন হিব্বান। তিনি মশহুর ইমাম।নির্ভরযোগ্য।
২/আবু বাকর বিন আবী আসিম। ইমাম আবু হাতিম রাযী (রাহ) বলেন, তিনি সত্যবাদী। আল জারহু ওয়াত তা’দীল-১২০
৩/মুহাম্মাদ বিন আবী বাকর আল মুকাদ্দামী।ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি
নির্ভরযোগ্য। সিয়ারু আ’লামিন নুবালা।আত তাবাকাতুস সানিয়্যাতা আশারাহ ।
৪/ইয়াযিদ বিন আব্দিল্লাহ।ইমাম ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য।
কিতাবুস সিকাত-১৬৪০৫
৫/আব্দুল্লাহ বিন আবিল হাওরা। উনি মূলত আব্দুল্লাহ বিন আবিল জাওযা। ইমাম ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য। কিতাবুস সিকাত-৯৩৯২
আরো প্রমাণ রয়েছে। সংক্ষেপ করতে গিয়ে সেগুলো আর উল্লেখ করা হলোনা। আশা করি আর বলার অপেক্ষা রাখছেনা যে, এসকল সুত্রে বর্ণিত হাদিসটি সহীহ। জাল তো দূরের কথা, দুর্বল হওয়ার ও প্রমাণ নেই। হাঁ, যাবার আগে আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। এ সনদগুলো উপেক্ষা করে নামধারী আহলে হাদিস লিডার মুজাফফর বিন মুহসিন এ হাদীসটি সম্পর্কে সরাসরি বলেছেন, এটি নাকি জাল!!!!!!!!!! বানানো!!!!!!!!!!!! — নাউজুবিললাহ