NOTICE:- ------------------ ----------------- ---------------------------

সহীহ হাদীসকে জাল হাদীস বানানোর ভয়ংকর ষড়যন্ত্র-

বাতিল ক্লিনার's photo.
____________________________
নামধারী আহলে হাদীসের লিডার মুজাফফর বিন মুহসিন লিখেছেন, যে সালাত মিসওয়াক করে আদায় করা হয়, সেই সালাতে মিসওয়াক করা বিহীন
সালাত থেকে ৭০গুণ বেশী নেকী হয়। একথাটি জাল। এর কোন ভিত্তি নেই। দেখুন, জাল হাদীসের কবলে রাসুলুল্লাহ (সা) এর সালাত/৩১
___________________________
জবাবঃ
প্রথমেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি একটি সতর্কবাণী- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা আমার উপর মিথ্যাচার করোনা। কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর মিথ্যাচার করে সে যেন জাহান্নামে প্রবেশ করে।
(সহীহ আল বুখারী-১০৬ )
এবার মূল জবাবঃ
_________
হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত এ হাদীসটি বিভিন্ন সনদে এসেছে।
ﺍﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﺨﻄﻴﺐ ﺍﻟﺒﻐﺪﺍﺩﻱ ﻋَﻦ ﺍﺑْﻦ ﻟَﻬِﻴﻌَﺔ ﻋَﻦ ( ﺃﺑﻲ )
ﺍﻟْﺄﺳﻮﺩ ، ﻋَﻦ ﻋُﺮْﻭَﺓ ، ﻋَﻦ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔ ، ﻋَﻦ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲ - ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳﻠﻢ - ﻗَﺎﻝَ : « ﺻﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺃﺛﺮ ﺳﻮﺍﻙ
ﺃﻓﻀﻞ ﻣﻦ ﺳﺒﻌﻴﻦ ﺻﻼﺓ ﺑﻐﻴﺮ ﺳﻮﺍﻙ » .
হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন, যে সালাত মিসওয়াক করে আদায় করা হয়, সেই সালাত মিসওয়াক করা বিহীন সালাত থেকে ৭০গুণ বেশী উত্তম। এখানে রয়েছেন-
১/ইমাম খতীব বাগদাদী
২/ইবনু লাহি’আহ
৩/ আবুল আসওয়াদ
৩/উরওয়াহ বিন যুবাইর (রা) ইবনুল মুলকিন বলেছেন, হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন হাফিয আবু বাকর আল খাতীব ইবনু লাহী’আহ এর সুত্রে।
রেফারেন্সঃ আল বাদরুল মুনীর-২/১৭
আবার এ হাদিসটি আলী বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দিল্লাহ এর সুত্রে ও এসেছে-
) ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﻌﺪﻝ
ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺃﺣﻤﺪ ﺍﻟﻤﻘﺮﺉ
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺭﻭﺡ ﺑﻦ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻋﻔﻴﺮ ﺑﻪ .
এখানে বর্ণনাকারী রয়েছেন আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মাদ এবং রাওহ বিন ফারাজ এবং সায়ীদ বিন উফাইর।
রেফারেন্সঃ আল মুত্তাফাকু ওয়াল মুতাফাররাক-৫৭৬
এ হাদীসের বর্ণনাকারী গণ সকলেই নির্ভরযোগ্য।
১/ ইবনু লাহি’আহঃ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি সত্যবাদী, নির্ভরযোগ্য, উত্তম চরিত্রবান।
রেফারেন্সঃ তারীখু বাগদাদ-৬৫২৭
২/ আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদঃ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য।
রেফারেন্সঃ তারীখু বাগদাদ-৬৪৮৩
৩/ রাওহ বিন ফারাজ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য।
ইমাম কিনদী বলেন, তিনি অধিক নির্ভরযোগ্য ছিলেন।
রেফারেন্সঃ তাকরীবুত তাহযীব- ১৯৬৭
তাহযীবুল কামাল- ২৩৪১ (১৯৩৭ )
৪/ সায়ীদ বিন উফাইর ইবনু আদী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য।
আবু হাতিম বলেন, তিনি সত্যবাদী।
রেফারেন্সঃ সিয়ারু আ’লামিন নুবালা- আত তাবাকাতুস সানিয়াহ আশারা
৫/ আবুল আসওয়াদ ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি একজন তাবেয়ী এবং নির্ভরযোগ্য।
রেফারেন্সঃ সিয়ারু আ’লামিন নুবালা-আত তাবাকাতুর রাবি’আহ।
৬/ আলী বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দিল্লাহ ইমাম খতীব বাগদাদী বলেন, তিনি
সত্যবাদী। রেফারেন্সঃ
সিয়ারু আ’লামিন নুবালা- আত তাবাকাতুস সানিয়াহ ওয়াল ইশরূন
বিঃদ্রঃ
ইবনু লাহি’আহ এর জীবনে একটি ঘটনা ঘটেছিল। তার কিতাবাদি পুড়ে
গিয়েছিল এজন্য মুহাদ্দিসগণ বলেন, ঘটনাটি ঘটার আগে যারা তার নিকট
থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, সেগুলো সহীহ। এবং ঘটনাটির পর যারা তার নিকট থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাদের ঐ বর্ণনাগুলো দুর্বল।
আমাদের আলোচ্য হাদিসটি সায়ীদ বিন উফাইর (রাহ) ইবনু লাহি’আহ থেকে কিতাবাদি পুড়ে যাবার আগেই বর্ণনা করেছিলেন। এমনটাই বলেছেন, ইমাম ইবনু সায়্যিদিন নাস (রাহ)। সুতারাং হাদীসটি
সহীহ।
রেফারেন্সঃ আন নাফখুশ শাযি ফী শারহি জামিইত তিরমিযি- ৮০৪-২/৭৯৯
একই অর্থের হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) থেকে।
ﻓﻘﺪ ﺃﺧﺮﺟﻪُ ﺃَﺑُﻮ ﻧﻌﻴﻢ ﻋَﻦ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﺣﺒَﺎﻥ ، ﻋَﻦ ﺃﺑﻲ
ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻋَﺎﺻِﻢ ، ﻋَﻦ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺑﻜﺮ
ﺍﻟْﻤﻘﺪﻣِﻲ ، ﻋَﻦ ﻳﺰِﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ، ﺛَﻨَﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ
ﺃﺑﻲ ﺍﻟْﺤَﻮْﺭَﺍﺀ ﺃﻧَّﻪ ﺳﻤﻊ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺟُﺒَﻴﺮ ﻋَﻦ ﺍﺑْﻦ
ﻋَﺒَّﺎﺱ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﻟِﺄَﻥ ﺃُﺻَﻠِّﻲ ( ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴﻦ ) ﺑِﺴِﻮَﺍﻙٍ
ﺃَﺣَﺐُّ ﺇَﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺃﻥْ ﺃُﺻَﻠِّﻲ (ﺳَﺒْﻌِﻴﻦ ) ﺭَﻛْﻌَﺔ ﺑِﻐَﻴﺮِ ﺳِﻮَﺍﻙٍ »
হযরত ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, মেসওয়াক বিহীন ৭০ রাকাত সালাত আদায় করা থেকে
মেসওয়াক করে দু রাকাত সালাত আদায় করা আমার নিকট অধিক প্রিয়। ইমাম ছাখাওয়ী (রাহ) বলেন, ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত এ হাদীসটির সনদ ভাল। অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ। ইমাম মুনযিরী
(রাহ) ও একই কথা বলেছেন তার আত তারগীব ওয়াত তারহীব নামক গ্রন্থে। ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ও এটাকে সমর্থন করেছেন।
রেফারেন্সঃ আল মাকাসিদুল হাসানাহ-২/৪২৪
সনদ পর্যালোচনা-
১/মুহাম্মাদ বিন হিব্বান। তিনি মশহুর ইমাম।নির্ভরযোগ্য।
২/আবু বাকর বিন আবী আসিম। ইমাম আবু হাতিম রাযী (রাহ) বলেন, তিনি সত্যবাদী। আল জারহু ওয়াত তা’দীল-১২০
৩/মুহাম্মাদ বিন আবী বাকর আল মুকাদ্দামী।ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি
নির্ভরযোগ্য। সিয়ারু আ’লামিন নুবালা।আত তাবাকাতুস সানিয়্যাতা আশারাহ ।
৪/ইয়াযিদ বিন আব্দিল্লাহ।ইমাম ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য।
কিতাবুস সিকাত-১৬৪০৫
৫/আব্দুল্লাহ বিন আবিল হাওরা। উনি মূলত আব্দুল্লাহ বিন আবিল জাওযা। ইমাম ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য। কিতাবুস সিকাত-৯৩৯২
আরো প্রমাণ রয়েছে। সংক্ষেপ করতে গিয়ে সেগুলো আর উল্লেখ করা হলোনা। আশা করি আর বলার অপেক্ষা রাখছেনা যে, এসকল সুত্রে বর্ণিত হাদিসটি সহীহ। জাল তো দূরের কথা, দুর্বল হওয়ার ও প্রমাণ নেই। হাঁ, যাবার আগে আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। এ সনদগুলো উপেক্ষা করে নামধারী আহলে হাদিস লিডার মুজাফফর বিন মুহসিন এ হাদীসটি সম্পর্কে সরাসরি বলেছেন, এটি নাকি জাল!!!!!!!!!! বানানো!!!!!!!!!!!! — নাউজুবিললাহ

আযানের সময় বৃধাঙ্গুলি চুম্বন

আযানের মধ্যে যখন মুআয্যিন ‘আশহাদুআন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ’ ﺍَﺷْﻬَﺪُ ﺍَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺭَّﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ উচ্চারণ করে, তখন স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় বা শাহাদাত আঙ্গুল চুম্বন করে চুক্ষদ্বয়ে লাগানো মুস্তাহাব এবং মুস্তাহসান এতে দ্বীন ও দুনিয়া উভয় জাহানের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে অনেক হাদীছ বর্ণিত আছে ।
সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আলাইহিম আজমাইন থেকে এটা প্রমাণিত আছে এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অনুসারীগণ এই আমলকে মুস্তাহাব মনে করে পালন করেন।
প্রসিদ্ধ "সালাতে মাস্উদী" কিতাবের দ্বিতীয় খন্ড ﻧﻤﺎﺯ শীর্ষক অধ্যায়ে উল্লেখিত আছে-
হুযূর পুরনূর রাসুলে মক্ববুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত আছে-যে ব্যক্তি আযানে আমার নাম শুনে স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চোখের উপর রাখে, আমি ওকে কিয়ামতের কাতার সমূহে খোঁজ করবো এবং নিজের পিছে পিছে বেহেশতে নিয়ে যাব।
তাফসীরে রূহুল বয়ানে ষষ্ঠ পারার সূরা মায়েদার আয়াত ﻭَﺍِﺫَﺍ ﻧَﺎﺩَﻳْﺘُﻢْ ﺍِﻟَﻰ ﺍﻟﺼَّﻠﻮﺓِ ﺍﻻﻳﺔ এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উল্লেখিত আছে-
মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলার সময় নিজের শাহাদাতের আঙ্গুল সহ বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখে চুমু দেয়ার বিধানটা জঈফ রেওয়াতের সম্মত। কেননা যদিও এ বিধানটা মরফু হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। কিন্তু মুহাদ্দিছীন কিরাম এ ব্যাপারে একমত যে আকর্ষণ সৃষ্টি ও ভীতি সঞ্চারের বেলায় জঈফ হাদীছ অনুযায়ী আমল করা জায়েয।
ফাত্ওয়ায়ে শামীর প্রথম খন্ড ﺍﻻﺫﺍﻥ শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-
আযানের প্রথম ﺍَﺷْﻬَﺪُ ﺍَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺭَّﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ বলার সময়- ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻳَﺎﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ (সাল্লাল্লাহু আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ) বলা মুস্তাহাব এবং দ্বিতীয় শাহাদত বলার সময়- ﻗُﺮﺓُ ﻋَﻴْﻨِﻰْ ﺑِﻚَ ﻳَﺎﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ (কুর্রাতু আইনী বিকা ইয়া রাসুলাল্লাহ) বলবেন। অতঃপর নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ স্বীয় চোখদ্বয়ের উপর রাখবেন এবং বলবেন- ﺍﻟَﻠﻬُﻢَّ ﻣَﺘِّﻌْﻨِﻰْ ﺑِﺎﻟﺴَّﻤْﻊِ ﻭَﺍﻟْﺒَﺼَﺮِ (আল্লাহুম্মা মত্তায়েনী বিসসময়ে ওয়াল বসরে) এর ফলে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওকে নিজের পিছনে পিছনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন
অনুরূপ কনযুল ইবাদ ও কুহস্থানী গ্রন্থে বর্ণিত আছে।
ফাত্ওয়ায়ে সূফিয়াতেও তদ্রুপ উল্লেখিত আছে।
কিতাবুল ফিরদাউসে বর্ণিত আছে-
যে ব্যক্তি আযানে ‘আশহাদুআন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ‘ শুনে স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে, আমি ওকে আমার পিছনে বেহেশতে নিয়ে যাব এবং ওকে বেহেশতের কাতারে অন্তর্ভূক্ত করবো।
এর পরিপূর্ণ আলোচনা ‘বাহারুর রায়েক’ এর টীকায় বর্ণিত আছে।
উপরোক্ত ইবারতে ছয়টি কিতাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- শামী, কনযুল ইবাদ, ফাত্ওয়ায়ে সূফিয়া, কিতাবুল ফিরদাউস, কুহস্থানী এবং ‘বাহারুর রায়েক’ এর টীকা। ওই সব কিতাবে একে মুস্তাহাব বলা হয়েছে।
ﻣﻘﺎﺻﺪ ﺣﺴﻨﻪ ﻓﻰ ﺍﻻﺣﺎﺩﻳﺚ ﺍﻟﺪﺋﺮﻩ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺴﻨﺔ নামক গ্রন্থে ইমাম সাখাবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন-
ইমাম দায়লমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ‘ফিরদাউস’ কিতাবে হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন যে, মুয়াযযিনের কন্ঠ থেকে যখন ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রসুলুল্লাহ‘ শোনা গেল, তখন তিনি তাই বললেন এবং স্বীয় শাহাদতের আঙ্গুলদ্বয়ের ভিতরের ভাগ চুমু দিলেন এবং চক্ষুদ্বয়ে লাগালেন। তা’দেখে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ ফরমান, "যে ব্যক্তি আমার এই প্রিয়জনের মত করবে, তাঁর জন্য আমার সুপারিশ অপরিহার্য।” এ হাদীছটি অবশ্য বিশুদ্ধ হাদীছের পর্যায়ভুক্ত নয়।
উক্ত মাকাসেদে হাসনা গ্রন্থে আবুল আব্বাসের রাহমাতুল্লাহি আলাইহি রচিত মুজেযাত গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে-
হযরত খিযির (আঃ) থেকে বর্ণিত আছে- যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের কণ্ঠে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ’ শোনে যদি বলে-ﻣَﺮْﺣَﻴًﺎﺑِﺤَﺐِﻳْﺒِﻰْ ﻭَﻗُﺮَّﺓِ ﻋَﻴْﻨِﻰْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ (মারাহাবা বে হাবীবী ওয়া কুররাতে আইনী মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ) অতঃপর স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে লাগাবে, তাহলে ওর চোখ কখনও পীড়িত হবে না।
উক্তগ্রন্থে আরোও বর্ণনা করা হয়েছে-
হযরত মুহাম্মদ ইবনে বাবা নিজের একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন যে এক সময় জোরে বাতাস প্রবাহিত হয়েছিল। তখন তাঁর চোখে একটি পাথরের কনা পড়েছিল যা বের করতে পারেনি এবং খুবই ব্যথা অনুভব হচ্ছিল। যখন তিনি মুয়াযযিনের কণ্ঠে আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রসুলুল্লাহ শুনলেন, তখন তিনি উপরোক্ত দুআটি পাঠ করলেন এবং অনায়াসে চোখ থেকে পাথর বের হয়ে গেল।
একই ‘মকাসেদে হাসনা’ গ্রন্থে হযরত শামস মুহাম্মদ ইবনে সালেহ মদনী থেকে বর্ণিত আছে যে,
তিনি ইমাম আমজদ (মিসরের অধিবাসী পূর্ববর্তী উলামায়ে কিরামের অন্তর্ভূক্ত) কে বলতে শুনেছেন-যে ব্যক্তি আযানে হুযূর (সাল্লাল্লহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর নাম মুবারক শোনে স্বীয় শাহাদাত ও বৃদ্ধাঙ্গুলী একত্রিত করে-ﻭَﻗَﺒَّﻠَﻬُﻤَﺎ ﻭَﻣَﺴَﺢَ ﺑِﻬِﻤَﺎ ﻋَﻴْﻨَﻴْﻪِ ﻟَﻢْ ﻳَﺮْ ﻣُﺪْ ﺍَﺑَﺪًﺍ উভয় আঙ্গুলকে চুম্বন করে চোখে লাগাবে, কখনও তার চক্ষু পীড়িত হবে না।
ইরাক- আযমের কতেক মাশায়েখ বলেছেন যে, যিনি এ আমল করবেন, তাঁর চোখ রোগাক্রান্ত হবে না।
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻟِﻰْ ﻛُﻞّ ﻣِﻨْﻬُﻤَﺎ ﻣُﻨﺬُ ﻓَﻌَﻠْﺘُﻪُ ﻟَﻢْ ﺗَﺮْﻣُﺪْ ﻋَﻴْﻨِﻰ কিতাব রচয়িতা বলেছেন-
যখন থেকে আমি এ আমল করেছি আমার চক্ষু পীড়িত হয়নি।
কিছু অগ্রসর হয়ে উক্ত‘মকাসেদে হাসনা’গ্রন্থে আরও বর্ণিত হয়েছে-
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦِ ﺻَﺎﻟِﺢٍ ﻭَﺍَﻧَﺎ ﻣُﻨْﺬُ ﺳَﻤِﻌْﺘُﻪُ ﺍِﺳْﺘَﻌْﻤَﻠْﺘَﻪُ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺮْﻣُﺪْ ﻋَﻴْﻨِﻰْ ﻭَﺍَﺭْﺟُﻮْﺍ ﺍَﻥَّ ﻋَﺎﻓِﻴَﺘَﻬُﻤَﺎ ﺗَﺪُﻭْﻡُ ﻭَﺍِﻧِّﻰْ ﺍَﺳْﻠَﻢُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌَﻤﻰ ﺍِﻧْﺸَﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪُ
হযরত ইবনে সালেহ বলেছেন- যখন আমি এ ব্যাপারে জানলাম, তখন এর উপর আমল করলাম। এরপর থেকে আমার চোখে পীড়িত হয়নি। আমি আশা করি, ইনশাআল্লাহ এ আরাম সব সময় থাকবে এবং অন্ধত্ব মুক্ত থাকবো।
উক্ত কিতাবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে,
ইমাম হাসন (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ‘ শোনে যদি বলে এবংﻣَﺮْﺣَﺒًﺎ ﺑِﺤَﺒِﻴْﺒِﻰْ ﻭَﻗُﺮَّﺓُ ﻋَﻴْﻨِﻰْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে লাগাবে এবং বলবে ﻟَﻢْ ﻳَﻌْﻢَ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮْﻣَﺪْ তাহলে কখনও সে অন্ধ হবে না এবং কখনও তার চক্ষু পীড়িত হবে না।
মোট কথা হলো ‘মাকাসেদে হাসনা’ গ্রন্থে অনেক ইমাম থেকে এ আমল প্রমাণিত করা হয়েছে।
শরহে নেকায়ায় বর্ণিত আছে-
জানা দরকার যে মুস্তাহাব হচ্ছে যিনি দ্বিতীয় শাহাদতের প্রথম শব্দ শোনে বলবেন; ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ (সাল্লাল্লাহু আলাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ) এবং দ্বিতীয় শব্দ শোনে বলবেন-ﻗُﺮَّﺓُ ﻋَﻴْﻨِﻰْ ﺑِﻚَ ﻳَﺎﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ (কুররাতু আইনি বেকা ইয়া রাসুলাল্লাহ) এবং নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুক্ষদ্বয়ে রাখবেন, ওকে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের পিছনে পিছনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন।
অনুরূপ কনযুল ইবাদেও বর্ণিত আছে।
মাওলানা জামাল ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উমর মক্কী (কুঃ) স্বীয় ফাত্ওয়ার কিতাবে উল্লেখ করেছেন-
ﺗَﻘْﺒِﻴْﻞُ ﺍﻟْﺎِﺑﻬَﺎﻣَﻴْﻦِ ﻭَﻭَﺿْﻊُ ﻫُﻤَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻌَﻴْﻨَﻴْﻦِ ﻋِﻨْﺪَ ﺫِﻛْﺮِ ﺍﺳْﻤِﻪ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﻓِﻰ ﺍﻟْﺎَﺫَﺍﻥِ ﺟَﺎﺋِﺮ ﺑَﻞْ ﻣُﺴْﺘَﺤَﺐ ﺻَﺮَّﺡَ ﺑِﻪ ﻣَﺸَﺎﺋِﺨِﻨَﺎ
আযানে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দেয়া এবং চোখে লাগানো জায়েয বরং মুস্তাহাব। আমাদের মাশায়েখে কিরাম এ ব্যাপারে বিশদ বর্ণনা করেছেন। আল্লামা মুহাম্মদ তাহির (রাঃ) ﺗﻜﻤﻠﺔ ﻣﺠﻤﻊ ﺑﺨﺎﺭ ﺍﻻﻧﻮﺍﺭ গ্রন্থে উপরোক্ত হাদীছকে ‘বিশুদ্ধ নয়’ মন্তব্য করে বলেন- ﻭَﺭُﻭِﻯَ ﺗَﺠﺮِﺑَﺔ ﺫَﺍﻟِﻚَ ﻋَﻦْ ﻛَﺜِﻴْﺮِﻳْﻦَ “(কিন্তু এ হাদীছ অনুযায়ী আমলের বর্ণনা অনেক পাওয়া যায়।)” আরও অনেক ইবারত উদ্ধৃত করা যায়। কিন্তু সংক্ষেপ করার উদ্দেশ্যে এটুকুই যথেষ্ট মনে করলাম।
হযরত সদরুল আফাযেল মাওলানা সৈয়দ নঈম উদ্দীন সাহেব কিবলা মুরাদাবাদী বলেছেন,
লন্ডন থেকে প্রকাশিত ‘ইনজিল’ গ্রন্থের একটি অনেক পুরানো কপি পাওয়া গেছে, যেটার নাম ‘ইনজিল বারনাবাস’। ইদানীং এটা ব্যাপকভাবে প্রকাশিত এবং প্রত্যেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এর অধিকাংশ বিধানাবলীর সাথে ইসলামের বিধানাবলীর মিল রয়েছে। এ গ্রন্থের এক জায়গায় লিখা হয়েছে যে হযরত আদম (আঃ) যখন রূহুল কুদ্দুস (নুরে মুস্তাফা) কে দেখার জন্য আরজু করলেন, তখন সেই নুর তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলের নখে চমকানো হলো। তিনি মহব্বতের জোশে উক্ত নখদ্বয়ে চুমু দিলেন এবং চোখে লাগালেন। (রূহুল কুদ্দুসের অর্থ নুরে মুস্তফা কেন করা হল; এর ব্যাখ্যা ‘শানে হাবিবুর রহমানে’দেখুন। ওখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে ঈসা (আঃ) এর যুগে রূহুল কুদ্দুস নামেই হুযুর (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মশহুর ছিলেন।
হানাফী আলিমগণ ছাড়াও শাফেঈ ও মালেকী মাযহাবের আলিমগণও বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন মুস্তাহাব হওয়া সম্পর্কে একমত।
যেমন শাফেঈমযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব – ﺍﻋﺎﻧﺔ ﺍﻟﻄﺎﻟﺒﻴﻦ ﻋﻠﻰ ﺣﻞ ﺍﻟﻔﺎﻅ ﻓﺘﺢ ﺍﻟﻤﻤﻌﻴﻦ এর ২৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আছে-
ﺛُﻢَّ ﻳُﻘَﺒِّﻞَ ﺍِﺑْﻬَﺎ ﻣَﻴْﻪِ ﻭَﻳَﺠْﻌَﻞُ ﻫُﻤَﺎ ﻋَﻠﻰ ﻋَﻠْﻨَﻴْﻪِ ﻟَﻢْ ﻳَﻌْﻢِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮْﻣُﺪْ ﺍَﺑَﺪًﺍ “(অতঃপর নিজের বৃন্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দিয়ে চোখে লাগালে, কখনও অন্ধ হবে না এবং কখনও চক্ষু পীড়া হবে না।)”
মালেকী মযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব- ﻛﻔﺎﻳﺔ ﺍﻟﻄﺎﻟﺐ ﺍﻟﺮﺑﺎﻧﻰ ﻟﺮﺳﺎﻟﺔ ﺍﺑﻦ ﺍﺑﻰ ﺯﻳﺪ ﺍﻟﻘﻴﺮﺩﺍﻧﻰ এর প্রথম খন্ডের ১৬৯ পৃষ্ঠায় এ প্রসঙ্গে অনেক কিছু বলার পর লিখেছেন-
ﺛُﻢَّ ﻳُﻘَﺒِّﻞُ ﺍِﺑْﻬَﺎﻣَﻴْﻪِ ﻭَﻳَﺠْﻌَﻞُ ﻫُﻤَﺎ ﻋَﻠﻰ ﻋَﻴْﻨَﻴْﻪِ ﻟَﻢْ ﻳَﻌﻢِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮْﻣُﺪْ ﺍَﺑَﺪًﺍ
অতঃপর বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দেবে এবং চোখে লাগাবে, তাহলে কখনও অন্ধ হবে না এবং কখনও চক্ষু পীড়া হবে না।
এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আল্লামা শেখ আলী সাঈদী ﻋﺪﻭﻯ নামক কিতাবের ১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন- গ্রন্থকার বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বনের সময়ের কথা উল্লেখ করেনি। অবশ্য শেখ আল্লামা মুফাসসির নুরুদ্দীন খুরাসানী থেকে বর্ণিত আছে, তিনি কতেক লোককে আযানের সময় লক্ষ্য করেছেন যে যখন তারা মুয়ায্যিনের মুখে আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ শুনলেন, তখন নিজেদের বৃদ্ধাঙ্গুলে চুমু দিলেন এবং নখদ্বয়কে চোখের পলকে এবং চোখের কোণায় লাগালেন এবং কান পর্যন্ত বুলিয়ে নিলেন। শাহাদাতের সময় এ রকম একবার একবার করলেন। আমি ওদের একজনকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন আমি বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দিতাম কিন্তু মাঝখানে ছেড়ে দিয়েছিলাম। তখন আমার চক্ষু রোগ হয়। এর মধ্যে এক রাতে আমি হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) কে স্বপ্নে দেখলাম। তিনি (দঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন-
আযানের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চোখে লাগানো কেন ছেড়ে দিয়েছ? যদি তুমি চাও, তোমার চোখ পুনরায় ভাল হোক, তাহলে তুমি পুনরায় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চোখে লাগানো আরম্ভ কর।
ঘুম ভাঙ্গার পর আমি পুনরায় এ আমল শুরু করে দিলাম এবং আরোগ্য লাভ করলাম। আজ পর্যন্ত সেই রোগে আর আক্রান্ত হইনি। উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতিভাত হলো যে,
আযান ইত্যাদিতে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন ও চোখে লাগানো মুস্তাহাব, হযরত আদম (আঃ) সিদ্দিকে আকবর (রাঃ) ও ইমাম
হাসন (রাঃ) এর সুন্নাত। ফকীহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণ এটা মুস্তাহাব হওয়া সস্পর্কে একমত।
শাফীঈ ও মালেকী মযহাবের ইমামগণ এটা মুস্তাহাব হওয়া সস্পর্কে রায় দিয়েছেন।
প্রত্যেক যুগে এবং প্রত্যেক মুসলমান একে মুস্তাহাব মনে করেছেন এবং আমলও করছেন। এ আমল নিম্নবর্ণিত
ফায়দা গুলো রয়েছেঃ
  • আমলকারীর চোখ রোগ থেকে মুক্ত থাকবে,
  • ইনশাআল্লাহ কখনও অন্ধ হবে না,
  • যে কোন চক্ষু রোগীর জন্য বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বনের আমলটি হচ্ছে উৎকৃষ্ট চিকিৎসা। এটা অনেকবার পরীক্ষিত হয়েছে।
  • এর আমলকারী হুযুর (সাল্লাল্লাহু
আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর শাফায়াত লাভ করবে এবং ওকে কিয়ামতের কাতার থেকে খুঁজে বের করে তাঁর (সাল্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পিছনে বেহেশ্তে প্রবেশ করাবেন।
একে হারাম বলা মূর্খতার পরিচায়ক। যতক্ষণ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার সুস্পষ্ট দলীল পাওয়া যাবে না, ততক্ষণ একে নিষেধ করা যাবে না। মুস্তাহাব প্রমাণের জন্য মুসলমানগণ মুস্তাহাব মনে করাটা যথেষ্ট। কিন্তু হারাম বা মকরূহ প্রমাণের জন্য নির্দিষ্ট দলীলের প্রয়োজন।
বিঃ দ্রঃ
আযান সস্পর্কেতো সুস্পষ্ট এবং বিস্তারিত রিওয়ায়েত ও হাদীছ সমূহ মওজুদ আছে, যা উপরে বর্ণনা করা হয়েছে। তকবীর ও আযানের মত। হাদীছসমূহে তকবীরকে আযান বলা হয়েছে-দু’ আযানের মাঝখানে নামায আছে অর্থাৎ আযান ও তকবীরের মধ্যবর্তী। সুতরাং তকবীরে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ’ বলার সময়ও বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করা ফলপ্রসূ ও বরকতময়। আযান ও তকবীর ব্যতীতও যদি কেউ হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দেয়, তাতে কোন ক্ষতি নেই বরং সদুদ্দেশ্যে হলে তাতে ছওয়াব রয়েছে। বিনা দলীলে কোন কিছু নিষেধ করা যায় না। যেভাবেই হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের তাযীম করা হবে, ছওয়াব রয়েছে। -

বদর যুদ্ধঃ আল্লাহর অনুগ্রহ এবং রাসুল ﷺ -এর ইলমে গায়েবের বহিঃপ্রকাশ


ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী
---------------
ইসলামের ইতিহাসে বদর যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম। কাফেরদের বিরুদ্ধে এটাই ছিল সর্বপ্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ। এ যুদ্ধে হেরে গেলে হয়তো শিশু ইসলাম চিরতরে পৃথিবীর বুক থেকে বিদায় নিতো। তাই তো রাসুল্লুল্লাহ ﷺ আল্লাহ পাকের দরবারে সেজদায় পড়ে কায়মোনাবাক্যে কাঁদতে কাঁদতে ফরিয়াদ করেনঃ
"হে আল্লাহ! আমার এই অল্প সংখ্যক সাহাবী যদি শহীদ হয়ে যায়- তবে তোমার নাম কে নেবে? আমি তোমার নামের উছিলা ধরে সাহায্য প্রার্থনা করছি।"
আল্লাহ পাক পূর্বেই মুসলমানদের বিজয়ের ব্যাপারে রাসুল ﷺ -কে জানিয়ে দিয়েছিলেন, "দুটি দলের মধ্যে একটিতে তোমাদের বিজয় হবে।" (আনফাল - ৭, প্রথম দলটি আবু সুফিয়ানের এবং দ্বিতীয় দলটি আবু জাহেলের)। এ যুদ্ধে কুরাইশদের শোচনীয় পরাজয় হয়। আবু জাহেল, উতবা, ওলীদ, শাইবা, উমাইয়াসহ তাদের ৭০ জন নিহত আর ৭০ জন বন্দী হয়। মুসলমানদের পক্ষে ১৪ জন (৬ মুহাজির এবং ৮ আনসার সাহাবা) শহীদ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
বদর যুদ্ধের তাৎপর্য
----------
এ যুদ্ধের তাৎপর্য অনেক সুদূরপ্রসারী। এ যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহ পাক মুসলমানদের ফেরেশতাদের মাধ্যমে গায়েবী সাহায্যের অবতারণা করেন। যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে আল্লাহ পাক তাঁদেরকে নিজ জিম্মায় নিয়ে ফেরেশতা পাঠিয়ে সাহায্য করেন। এই যুদ্ধে নবীজী ﷺ -এর বেশ কিছু মু'জিজা এবং ইলমে গায়েব প্রকাশ পায়। সর্বোপরি শয়তান যে মানুষের প্রকাশ্য শত্রু এবং সেও যে আল্লাহর ভয়ে ভীত আল্লাহ পাক তা প্রমাণ করে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও সে মানুষের অনিষ্ট করতে পিছ পা হয় না। "আর যখন সুদৃশ্য করে দিল শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যকলাপকে এবং বলল যে, আজকের দিনে কোন মানুষই তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না আর আমি হলাম তোমাদের সমর্থক। অতঃপর যখন সামনাসামনী হল উভয় বাহিনী তখন সে অতি দ্রুত পায়ে পেছনে দিকে পালিয়ে গেল এবং বলল, আমি তোমাদের সাথে নাই- আমি দেখছি, যা তোমরা দেখছ না; আমি ভয় করি আল্লাহকে। আর আল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠিন।" (সুরা আনফালঃ ৪৮)
আল্লাহর অনুগ্রহ
------
আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনের বেশ কিছু সুরায় এই যুদ্ধে কাফেরদের পরাজয় এবং মুসলমানদের বিজয়ের আগাম সংবাদ এবং তাঁর অনুগ্রহ বর্ষণের কথা রাসুল ﷺ -কে জানিয়ে দেন।
"এ দল তো সত্ত্বরই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে।" (৫৪:৪৫)।
"যখন তিনি আরোপ করেন তোমাদের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন তা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রশান্তির জন্য এবং তোমাদের উপর আকাশ থেকে পানি অবতরণ করেন, যাতে তোমাদিগকে পবিত্র করে দেন এবং যাতে তোমাদের থেকে অপসারিত করে দেন শয়তানের অপবিত্রতা। আর যাতে করে সুরক্ষিত করে দিতে পারেন তোমাদের অন্তরসমূহকে এবং তাতে যেন সুদৃঢ় করে দিতে পারেন তোমাদের পা গুলো। তোমাদের পরওয়ারদেগার যখন ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দান করেন যে, আমি সাথে রয়েছি তোমাদের, সুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমূহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।" (৪:১১-১২)।
মহানবী ﷺ -এর মু'জিজা
-------------
যুদ্ধের শুরুতে মহানবী হযরত মোহাম্মদ ﷺ কুরাইশ বাহিনীর দিকে মুখ করে বললেন, ‘শাহাতিল উজুহ’ অর্থাৎ ওদের চেহারা বিগড়ে যাক। একথা বলেই তিনি কাফির সৈনিকদের প্রতি ধুলোবালি নিক্ষেপ করন। এ বালি কাফিরদের নাকে মুখে ও চোখে পড়ে। এমনকি ধুলোর কণা ওদের গলায় ডুকে পড়ে। ধুলোর আক্রমণ থেকে কাফির দলের কেউ বাদ যায়নি। তাই আল্লাহপাক বলেন- ‘এবং তখন তুমি নিক্ষেপ করোনি বরং আল্লাহ তা’য়ালাই নিক্ষেপ করেছিলেন’। (সূরা : আনফাল, আয়াত : ১৭)।
যুদ্ধের এক পর্যায়ে হযরত ওক্কাশা ইবনে মেহসান আসাদী (রাঃ)-এর তলোয়ার ভেঙে যায়। ওক্কাশা (রাঃ) নবী করীম ﷺ-এর কাছে উপস্থিত হলে তিনি তাকে এক টুকরো শুকনো খেজুরের ডাল দিয়ে বললেন ওক্কাশা এটি দিয়ে লড়াই কর। ওক্কাশা রাঃ সে ডাল হাতে নিয়ে হেলাতেই তা একটি ধারালো চকচকে তলোয়ারে পরিণত হয়। এরপর তিনি সে তলোয়ার দিয়ে লড়াই করতে লাগলেন। সে তলোয়ারের নাম হয় ‘আওন’ অর্থাৎ সাহায্য। সেটি ওক্কাশার কাছেই ছিল। তিনি বিভিন্ন যুদ্ধে এ তলোয়ার ব্যবহার করতেন। হযরত আবু বকরের খেলাফতের সময় ধর্মান্তরিত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সে সময়ও এ তলোয়ার তার কাছে ছিল।
সহীহ আক্বীদা ও ঈমান: Sahih Aqida and Iman's photo.
এ যুদ্ধে হযরত মুয়ায বিন আমর রাঃ -এর একটি হাত আবু জাহেলের পুত্র ইকরামার তরবারীর আঘাতে দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। তিনি হাতের খণ্ডিত অংশসহ নবী করীম ﷺ-এর খেদমতে উপস্থিত হলেন। হুজুর পাক ﷺ একটু থু থু মুবারক লাগিয়ে খণ্ডিত অংশ সংযুক্ত করে দিলেন। সাথে সাথে হাত জোড়া লেগে গেল। হযরত মুয়ায রাঃ উক্ত হাত নিয়ে সুস্থ অবস্থায় হযরত উসমান রাঃ এর খেলাফতকাল পর্যন্ত বেচে ছিলেন। সোবহানাআল্লাহ!
মহানবী ﷺ -এর ইলমে গায়েবের প্রকাশ
--------------------
"আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। … সাহাবীগণের সামনে কুরাইশের সাকীগণও উপনীত হল। তাদের মধ্যে বনী হাজ্জাজের একজন কৃষ্ণকায় দাস ছিল। সাহাবীগণ তাকে পাকড়াও করলেন। তারপর তাকে আবূ সুফিয়ান এবং তার সাথীদের সম্পর্কে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করলেনঃ তখন সে বলতে লাগলো, আবূ সুফিয়ান সম্পর্কে আমার কোন কিছু জানা নেই। তবে আবূ জাহল, উতবা, শায়বা এবং উমাইয়া ইবনু খালফ - (তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে) তাদের সম্বন্ধে বলতে পারি। যখন সে এরুপ বললো তখন তাঁরা তাকে প্রহার করতে লাগলেন। এমতাবস্হায় সে বলল, হ্যা, আমি আবূ সুফিয়ান সম্পর্কে খবর দিচ্ছি। তখন তাঁরা তাকে ছেড়ে দিলেন। এরপর যখন তারা পূনরায় আবূ সুফিয়ান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন, তখন সে বলল, আবূ সুফিয়ান সম্পর্কে আমার কোন কিছু জানা নেই। তবে আবূ জাহল, উতবা, শায়বা এবং উমাইয়া ইবনু খালফ সম্বন্ধে বলতে পারি। যখন সে পূনরায় এ একই কথা বলল, তখন তাঁরা আবার তাকে প্রহার করতে লাগলেন। সে সময় রাসুলুল্লাহ ﷺ নামাজে দন্ডায়মান ছিলেন। অতএব, যখন তিনি এ অবস্হা দেখলেন, তখন সালাত সমাপ্ত করার পর বললেনঃ, সে আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জান, যখন সে তোমাদের কাছে সত্য কথা বলে তখন তোমরা তাকে মারতে থাক আর যখন সে মিথ্যা বলে তখন তোমরা তাকে ছেড়ে দাও।" [মুসলিম ৪৪৭০]
হাদিসের ব্যাখ্যাকারগণ বলেন, এ বালক সত্য কথাই বলছিল। কিন্তু সাহাবাদের ধারণা ছিল না যে আবু জাহেল এক বিশাল বাহিনী নিয়ে তাঁদের আক্রমণ করতে আসছে। ফলে সে বালকের কথা তাঁরা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিন্তু নবী ﷺ ঠিকই জানতে পারলেন যে ওই বালকের কথাই সত্যি, কেননা ইতোমধ্যেই আবু জাহেল মুসলমানদের আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেছে।
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাঃ থেকে বর্ণিত। "তিনি বলেন, আমরা হযরত ওমর ফারুক রাঃ এর সাথে ছিলাম মক্কা ও মদিনা শরিফের মধ্যখানে। অতঃপর তিনি বদরবাসী সম্পর্কে হাদিস বর্ননা করলেন, তখন তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেরদিন নিহত কাফিরদের ধ্বংসের স্থান দেখিয়ে দিলেন। তিনি বলেছিলেন, ইনশাআল্লাহ এটি আগামীকাল অমুকের নিহতের স্থান হবে এবং এটি অমুকের নিহতের স্থান হবে। হযরত ওমর রাঃ বলেন, ঐ সত্তার কসম যিনি তাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন, যে কাফির সম্পর্কে যে সীমারেখা তিনি নির্দিষ্ট করেছেন তাদের মৃত্যু সে সীমারেখা থেকে তিল পরিমানও আগেপিছে হয়নি।"
[মুসলিমঃ ২৮৭৩ এবং ৪৪৭০]
যুদ্ধবন্দীদের মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। হযরতের চাচা আব্বাস রাঃ এর ভাগে পড়ে ৮০ উকিয়া যা প্রায় ৮০ হাজার টাকার সমান। এত বেশি অর্থ প্রদানে অক্ষমতা প্রকাশ করলে নবীজি ﷺ বলেন, “আপনি উম্মুল ফজলের নিকট যে অর্থ ও স্বর্ণ রেখে এসেছেন তা থেকে দিন।”
বিম্ময়ের সাথে হযরত আব্বাস বলে উঠলেন, আল্লাহর শপথ, উম্মুল ফজলের নিকট গচ্ছিত অর্থের বিষয় আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। আমি ঘোষণা দিচ্ছি, “নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল।”
[আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া, আল্লামা আব্দুল আব্দুল জলীল রহঃ এর "নূরনবী" পৃষ্ঠাঃ ১৫৮]
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাঃ থেকে এই হাদিসের শেষাংশে বর্ণিত। অতঃপর কাফেরদের মূত লাশ ভাজ করে বদরের কূপে নিক্ষেপ করা হয়। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের নিকটে গেলেন এবং বললেন, হে অমুকের ছেলে অমুক, তুমি ওই অঙ্গিকার পেয়েছ যা আল্লাহ এবং তার রাসুল তোমাদেরকে দিয়েছিলেন? নিশ্চয় আমি ওই অঙ্গিকার সত্য পেয়েছি। যা মহান আল্লাহ আমার
সাথে করেছেন। হযরত ওমর রাঃ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি ওই সব দেহের সাথে কিভাবে কথাবার্তা বলছেন যাদের মধ্যে রুহ নেই? তখন তিনি বললেন, যা আমি বলছি তা তোমরা মৃত কাফিরদের চেয়ে বেশী শ্রবনকারী নও অর্থ্যাত্‍ তারা মৃত ব্যক্তিরা তোমরা জিবীতদের চেয়ে বেশী শুনতে পায়। কিন্তু তারা উত্তর দিতে পারেনা ।
[মুসলিম, আস সহীহ, জান্নাত পর্ব, জান্নাতে মৃতের স্থান পেশ করা অধ্যায়, ২:৩৮৭, হাদিস: ২৮৭৩]
যুদ্ধবন্দীদের সাথে কেমন আচরণ হবে তা এই যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ্য করল। যারা যুদ্ধপণ দিতে অক্ষম তাদেরকে মুসলমানদের গৃহশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হল। পরবর্তীতে এদের সবাই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। একমাত্র ইসলামের পক্ষেই যুদ্ধবন্দীদের সাথে এমন আচরণ সম্ভব। অথচ বর্তমানে সালাফী নামধারী জংগী গোষ্ঠী বিজিত অঞ্চলের মানুষকে জবাই করছে। রোজা না রাখার অপরাধে ফাঁসি দিচ্ছে আইএস যা সবাই দেখেছেন। এরাই প্রকৃতপক্ষে ইসলামের দুষমন। যারা ইসলামকে কলংকিত করছে। কারণ বিধর্মীরা ইসলাম জানবে কুরআন-হাদিস আর ইসলামের ইতিহাস পড়ে নয়, বরং এরা ইসলাম সম্পর্কে জানবে মুসলমানদের কার্যকলাপ দেখে। ফলে আইএস সহ সকল জংগী গোষ্ঠী ইসলামকে কলঙ্কিত করছে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বদরের যুদ্ধের তাৎপর্য থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার তৌফিক দান করুণ! আমীন!

ত্রিশ হাজার সাহাবায়ে কেরামের ঈদে মীলাদুন্নবী (সাঃ) ‍উদযাপন

বর্তমানে যুক্তরাজ্য নিবাসী কাশ্মিরী সুন্নী আলেম হযরত পীর মুহাম্মদ সাকিব ইবনে ইকবাল শামী ঈদে মীলাদুন্নবী (সঃ) শীর্ষক একটি মাহফিলে মীলাদ শরীফ যে সাহাবাগণের খাস সুন্নত এবং এমনকি স্বয়ং রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খাস সুন্নত-- বিষয়ে হাদীস থেকে প্রামাণ্য দলীল উপস্থাপন করে আলোকপাত করেন "মওলিদের মহৎ উদ্দেশ্য" শীর্ষক এই ওয়াজের ভিডিওটি বাংলা ভাষাভাষী ভাই-বোনদের সুবিধার জন্য বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশ করছি (বিঃদ্রঃ ওয়াজ শরীফটি অনেক দীর্ঘ সময়ের হলেও আপলোডকৃত ভিডিওটি মাত্র ১২ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের)
(মীলাদ শরীফ সম্পর্কিত একটি হাদীস প্রসঙ্গে) আল্লামা মুহাম্মদ সাকিব ইবনে শামী ওয়াজে বলছেন, "..... ইমাম হাকিম (রঃ) এটা বর্ণনা করেছেন তাঁর 'মুস্তাদ্রাক'-এ। আর স্মরণ করুন, 'মুস্তাদ্রাক' কি? ইমাম হাকিম (রঃ)-এর 'মুস্তাদ্রাক' হচ্ছে এমন একটি হাদীসের কিতাব যাতে ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম (রঃ)-এর শর্তসমূহ অনুযায়ী হাদীস সংকলন করা হয়েছে।
সুতরাং ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম (রঃ) কর্তৃক অর্পিত () শর্তসমূহ, (যা সম্পর্কে) ইমাম মুসলিম (রঃ) স্বয়ং তাঁর 'সহীহ্মুসলিম' কিতাবের 'মুকাদ্দামা'-য় (ভূমিকা অংশে) বলেন, আপনারা (খুঁজে দেখলে) পাবেন যে, তারা সব সহীহ হাদীসসমূহ সংকলন করেন নি। বরং কিছু শর্ত আরোপ করেছেন। তাই ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম (রঃ) শর্ত অনুযায়ী তাদের পর উলামাগণ রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম)-এর হাদীস সংকলন করতেন। সকল সহীহ হাদীসই সংকলন করা (অর্থাৎ গ্রন্থে বর্ণনা করা) তাদের জন্য সম্ভবপর ছিল না। কিন্তু তারা কিছু শর্ত আরোপ করে গেছেন। আর 'মুস্তাদ্রাক' কিতাবের সকল হাদীসই ইমাম হাকিম (রঃ)-এর মতে, ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম (রঃ)-এর শর্ত অনুযায়ী সংকলিত। সুবহান আল্লাহ !
(এরপর তিনি হাদীসখানা বর্ণনা করতে শুরু করলেন) ইমাম হাকিম (রঃ) তাঁর 'মুস্তাদ্রাক'- বর্ণনা করেছেন, "হযরত খুরাইম ইবনে আউস (রাঃ) থেকে বর্ণিত..." (তবে এর পূর্বে) আমি আপনাদেরকে হাদীসটির পটভূমি বর্ণনা করছি। ইমাম ইবনে হাজর আস্কালানী (রঃ)-এর মতে (হাদীসে বর্ণিত) এই ঘটনাটি ঘটেছিল তাবূক যুদ্ধের পরে। তাবূক যুদ্ধের পর সাহাবাগণ (রাঃ) রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে এক সমাবেশে একত্রিত হন।
(হাদীসটি হচ্ছে) সাহাবী হযরত খুরাইম ইবনে আউস ইবনে হারিছা (রাঃ) বলেন, "আমরা রসূলে পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম এবং হঠাৎ সাইয়্যিদিনা হযরত আব্বাস (রাঃ) (নবীজীর (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাচা) বললেন যে, "ইয়া রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি (আপনার শানে) একটি নাত পরিবেশন করতে চাই। আপনার গুণকীর্তন করতে চাই। সুবহান আল্লাহ !"
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে দোয়া করে দিলেন, অনুমতি দিয়ে দিলেন।" এখন, ইমাম ইবনে হাজর আস্কালানী (রঃ) বলছেন,"তাবূক যুদ্ধের পর সংঘটিত এই সমাবেশটি ছিল (তৎকালীন সময়ের তুলনায়) বিশাল একটি সমাবেশ। এটা এমন একটি সমাবেশ যেখানে ৩০,০০০ সাহাবায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।" সুবহান আল্লাহ!
রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (তাঁর চাচাকে তো এটা) বলেন নি যে, "তুমি কেন যুদ্ধের পর আমার নাত পরিবেশন করতে চাও? " কিংবা "রাসূলের (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গুণকীর্তন করা গুরুত্বপূর্ণ নয় !" অথবা "তুমি এত বড় একটা যুদ্ধ করে এসেছ। তো কেন তুমি নাত গেয়ে তোমার সময় নষ্ট করছ এবং করছ তাই, যা আমি এখনই (আপনাদের) বলতে যাচ্ছি?" (কিন্তু) রসূলুল্লাহি (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসব (কোনটাই) বলেন নি। সুবহান আল্লাহ !
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আপনারা (আপনাদের অনেকে) ভাবেন যে, লোকজনকে মীলাদুন্নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পালন না করতে বলার মাধ্যমে আপনারা তাদেরকে বিদ্আত এবং শিরক থেকে রক্ষা করছেন। কিন্ত এটা রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শিক্ষা ছিল না। রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো তাকে (আব্বাস (রাঃ)) অনুমতি দিয়েছিলেনই, দোয়াও করে দিয়েছিলেন।
এরপর সাইয়্যিদিনা আব্বাস (রাঃ) নাত আবৃত্তি করলেন। আর এটাই ছিল 'মীলাদ' সুবহান আল্লাহ! তো মীলাদ কি? (মীলাদ হচ্ছে) রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্মের সময় যেসকল অলৌকিক ঘটনাবলী সংঘটিত হয়েছিল সেগুলো বর্ণনা করা। (আর) সেটাই হচ্ছে মীলাদ।
দুইটি জিনিস বলা হয়েছে; মীলাদুন্নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দু'টি অপরিহার্য উপাদান। এটা হচ্ছে দ্বিতীয়টি (অর্থাৎ জন্মের সময়কার অলৌকিক ঘটনাবলী বর্ণনা)
৩০,০০০ সাহাবীর সামনে সাইয়্যিদিনা আব্বাস (রাঃ) আবৃত্তি করলেন, "আপনার জন্ম হয়েছিল যেদিন (অর্থাৎ আপনার মীলাদ বা মওলিদ হয়েছিল যেদিন), সারা জাহান যে আলোকিত হয়েছিল আপনার নূরেরই রওশানীতে; জান্নাত আর আসমান তো আলোকিত হয়েছিল আপনার নূরেরই মহিমায়" সুবহান আল্লাহ !
কে বলেছিলেন এটা? সাইয়্যিদিনা আব্বাস (রাঃ) এটা একটা দীর্ঘ ক্বাসীদা। এর প্রতিটি পংক্তি, প্রতিটি শ্লোক (যা তিনি বর্ণনা করেছেন) হচ্ছে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মীলাদ।
হাদীসটি রয়েছে ইমাম হাকিম (রঃ)-এর 'মুস্তাদ্রাক'-এ। এছাড়াও বর্ণিত হয়েছে যেসকল কিতাবে সগুলোর মধ্যে রয়েছে-- ইমাম তাবারানী (রঃ)-এর 'মুয়াজ্জামুল কাবীর', ইমাম ইবনে হাজর হাইসামী (রঃ)-এর 'মাজমুয়া' জাওয়ায়ীদ', ইমাম আবূ নয়ীম (রঃ)-এর 'হিলিয়া', ইমাম কুরতুবী (রঃ)-এর 'জামে লি আদিল আহকামিল কুরআন', ইমাম হালাবী (রঃ)-এর 'সীরাতে হালাবীয়া', ইবনে কুরদামা (রঃ)-এর 'আল-মুগনী'
তো কতজন সাহাবা মীলাদশরীফ পালন করেছিলেন? ৩০,০০০ সাহাবা (রাঃ), একই মজলিসে, একই সমাবেশে তারা মওলুদ শরীফ পালন করলেন। এখন, Commemoration (স্মৃতিচারণ) বা Celebration (উদ্যাপন)-এর অর্থ কি? আপনারা অক্সফোর্ড কিংবা যেকোন ডিকশনারী খুললেই দেখবেন যে, এর অর্থ হচ্ছে অতীতে ঘটে গেছে এমন কিছু স্মৃতিরক্ষার্থে স্মরণ করা, (জীবিত অথবা মৃত এমন কারও) গুণকীর্তন করা এবং তার জন্য খুশি প্রকাশ করা। এটাই হচ্ছে উদ্যাপন।
তাঁরা (সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)) কি করছিলেন? তাঁরা রসূলে পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্মের সময়কার অলৌকিক ঘটনাবলী স্মরণ করছিলেন। তারা তো নবী পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মীলাদ শরীফই পালন করছিলেন। স্মরণ রাখবেন, নবী পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্মবৃত্তান্ত বর্ণনা করতে একত্রিত হওয়াই হচ্ছে মীলাদুন্নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর একদম সেটাই সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) করেছেন। ৩০,০০০ সাহাবা।
এর মানে কী দাঁড়ায়? ৩০,০০০ সাহাবা কিন্তু (হাতে-গোনা যায় এমন) ছোট-খাটো কোন সংখ্যা নয়। তাদের মধ্যে কেউই (সেদিন) এগিয়ে এসে বলেননি যে, "আপনারা যা করছেন তা বিদ্আত, নতুন উদ্ভাবনা ; তা শিরক, আপনারা আল্লাহ পাকের সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করছেন।" "কেউই না।" এর মানে কী দাঁড়াল? এর মানে হচ্ছে, মীলাদ শরীফ ৩০,০০০ সাহাবার (রাঃ) ঐকমত্যে প্রমাণিত। সুবহান আল্লাহ !
আর আমরা কেনই বা সাহাবায়ে কেরামের কথা বলছি? সেখানে তো রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। সুবহান আল্লাহ ! এই মওলুদ শরীফের মাহফিল, এটা হুযুরে পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুমতি নিয়েই সংঘটিত হয়েছিল। তিনি নিজে এটা উদ্যাপন করেছেন। তিনি এর (এই আয়োজনের) অংশ ছিলেন। এতটাই বড় আয়োজন হয়েছিল! সুবহান আল্লাহ !
(এছাড়াও অন্য একটি হাদীসে রয়েছে) কবি সাহাবী হযরত হাসান বিন সাবিত (রাঃ) আবৃত্তি করেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনার মীলাদ (জন্ম বা সৃষ্টি) এমনই যে এর চেয়ে অধিকতর উৎকৃষ্ট আর কোন মীলাদ নেই। আপনার মীলাদ এমনই যে তা যেকোন প্রকারের ত্রুটি থেকে মুক্ত, পবিত্র। আপনার মীলাদ এমনই যেন এভাবেই আপনি (জন্ম নিতে) ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন।"
তো এগুলো ছিল অগণিত দলীল মধ্য থেকে কতিপয় দলীল। (তবে এসব দলীল বুঝতে) আপনাদেরকে প্রথমে নিরূপন করতে হবে মওলিদ শরীফের সংজ্ঞা কি? এটা হচ্ছে (প্রথমত,) আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করা এজন্য যে, তিনি আমাদেরকে রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা রহমত দ্বারা অনুগ্রহ করেছেন এবং (দ্বিতীয়ত,) রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্মের সময়কার অলৌকিক ঘটনাবলী বর্ণনা করা। আর এটাই হচ্ছে মীলাদুন্নবী। এটা সাহাবায়ে কেরামের (রাঃ) সুন্নাহ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।
এখন, (এতদ সম্পর্কিত) এটা হচ্ছে ৩য় হাদীস শরীফ (যা আমি বর্ণনা করব) 'আল-হাভী লিল ফাতাওয়ী' হচ্ছে ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূতী (রঃ)-এর ফতোয়াসমূহের সংকলন গ্রন্থ যা থেকে তিনি তাঁর 'হুসনুল মাকাসিদ ফী আমালিল মাওলিদ' গ্রন্থে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন, যা হযরত ইমাম গাজ্জালী (রঃ) এবং ইমাম বায়হাকী (রঃ)- বর্ণনা করেছেন। আর তা হচ্ছেঃ
"সাইয়্যিদিনা আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিজের জন্য আকীকা করলেন। হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রঃ) হাদীসটির উপর মন্তব্য করেন যে, রসূলে পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি দুম্বা কুরবানী করলেন। এমনটি করার কারণ হচ্ছে (এর মাধ্যমে) তিনি আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করেছেন।"
আপনারা জানেন, ঈদে মীলাদুন্নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাহফিলে আমরা কি করি? আমরা লোকজনকে আপ্যায়ন করাই। নাকি করাই না? এখন একটা প্রশ্ন আমাদের মনে জাগে যে, যদি কাজটি বিদ্আত হয়ে থাকে? (আপনারা বলতে পারেন,) আমরা ঈদে মীলাদুনবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পালন করার জন্য একটা মাহফিলের আয়োজন করতে পারি কি না? ঠিক আছে, আপনি তো এটা প্রমাণই করে দিলেন যে, আমরা পারি। কিন্তু মীলাদুন্নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুষ্ঠানে কি লোকজনকে আপ্যায়ন করানো কিংবা লোকজনকে খাবার দেয়ার অনুমতি রয়েছে?
ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূতী (রঃ) বলেন যে, রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই আকীকা (অনুষ্ঠানটি) তাঁর জন্মের দিন পর অনুষ্ঠিত হয়। আর রসূলে পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দাদা সাইয়্যিদিনা আব্দুল মুত্তালিব (আঃ) তাঁর জন্মের দিন পর এই আকীকা (আয়োজন) করেন। ইমাম সুয়ূতী (রঃ) বলেন, আকীকা জীবনে একবারই (করতে) হয়। আর এই দুম্বা কুরবানীই ছিল রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- মওলিদ। সুবহান আল্লাহ !
এটা যেন-তেন কেউ বলেন নি, এটা বলেছেন হাফীযুল হাদীস ইমাম সুয়ূতী (রঃ) আমি তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত একটি বক্তব্য পেশ করতে পারি। তিনি ছিলেন রসূলে আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একজন মস্তবড় আশেক। (কিন্তু বিস্তারিত বলতে) সময় আমাকে অনুমতি দিচ্ছে না। আমরা তাঁর সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারি। তাঁর সম্বন্ধ ছিল রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য এমনই নিষ্কলুষতা ছিল তাঁর মধ্যে।
এই জালাল উদ্দীন সুয়ূতী (রঃ) বলেন যে, এটাই ছিল রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- মওলিদ যা প্রতীয়মান করে যে, মাওলিদের মাহফিলে লোকজনকে খাওয়ানো স্বয়ং রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। সুবহান আল্লাহ ! কেন তিনি লোকজনকে খাইয়েছেন, কেন তিনি দুম্বা কুরবানী করেছেন? আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করার জন্য।
(ভিডিও সমাপ্ত)